সঞ্চয়পত্র কেনায় রিটার্ন জমার প্রমাণ দেখানোর বাধ্যবাধকতা থাকছে না
Published: 8th, May 2025 GMT
সঞ্চয়পত্র কেনায় আয়কর রিটার্ন দাখিলের প্রমাণপত্র দেখানোর বাধ্যবাধকতা উঠিয়ে দেওয়া হতে পারে। বর্তমানে পাঁচ লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র কিনতে আগের বছরের আয়কর রিটার্ন দাখিলের প্রমাণপত্র (পিএসআর) জমা দিতে হতো। এতে ভোগান্তিতে পড়েন সীমিত ও মধ্যম আয়ের মানুষ।
আগামী অর্থবছরের বাজেটে সঞ্চয়পত্র কেনায় পিএসআর দেখানোর বাধ্যবাধকতা তুলে দেওয়া হতে পারে কিংবা একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ সঞ্চয়পত্র কেনার সীমা পর্যন্ত এই সুবিধা দেওয়া হতে পারে। অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বাজেট বক্তৃতায় এই ঘোষণা দিতে পারেন। ফলে আগের মতোই শুধু কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) সনদ দেখালেই হবে।
আগামী ২ জুন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা দেওয়া হবে। এবার জাতীয় সংসদ না থাকায় জাতির উদ্দেশ্যে টেলিভিশন বক্তৃতার মাধ্যমে বাজেট দেওয়া হবে।
বর্তমানে চার ধরনের সঞ্চয়পত্র বিক্রি করে থাকে জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর। এগুলো হলো পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র; তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র, পরিবার সঞ্চয়পত্র এবং পেনশনার সঞ্চয়পত্র। তবে পরিবার সঞ্চয়পত্রের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। শুধু নারীরা এই সঞ্চয়পত্র কিনতে পারেন। দেশে এমন অনেক মানুষ আছেন, যাঁদের করযোগ্য আয় নেই, সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করে মুনাফার টাকায় উপার্জন করেন—এমন করদাতাদের বাধ্য হয়ে রিটার্ন জমা দিতে হয়।
জানা যায়, বর্তমানে দেশে ৪৫টি সরকারি-বেসরকারি সেবা পেতে গেলে রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র বা পিএসআর দেখাতে হয়। রিটার্ন দাখিলকারীর সংখ্যা বাড়াতে এই উদ্যোগ নেয় এনবিআর। অনেক করদাতা শুধু পিএসআর দেখানোর বাধ্যবাধকতার কারণে শূন্য রিটার্ন জমা দেন।
এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর ১৬ লাখ করদাতা অনলাইনের রিটার্ন জমা দেন। এর মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশ শূন্য রিটার্ন দিয়েছেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প এসআর
এছাড়াও পড়ুন:
চলতি অর্থবছরে ৫% জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস এডিবির; ৪ কারণে চাপে প্রবৃদ্ধি
চলতি অর্থবছর মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) কিছুটা বাড়বে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। এডিবির পূর্বাভাস অনুসারে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৫ শতাংশ হতে পারে। গত অর্থবছরের জন্য জিডিপি প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন হলো ৪ শতাংশ।
এডিবি আরও বলেছে, তৈরি পোশাক রপ্তানি স্থিতিশীল থাকলেও রাজনৈতিক পরিবর্তন, ঘন ঘন বন্যা, শিল্প খাতে শ্রমিক অস্থিরতা এবং বিরাজমান উচ্চ মূল্যস্ফীতি কারণে দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা দুর্বল হয়ে পড়েছে। এই চার কারণে প্রভাব পড়ছে সামগ্রিক প্রবৃদ্ধিতে।
আজ মঙ্গলবার এডিবি এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক (এডিও) সেপ্টেম্বর সংস্করণ প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি সম্পর্কে এমন পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
এডিবি আরও বলেছে, চলতি অর্থবছরে ভোগ্যব্যয় বাড়বে। কারণ, রেমিট্যান্সের প্রবৃদ্ধি পাবে। এ ছাড়া আসন্ন নির্বাচনসংক্রান্ত নানা ধরনের খরচের কারণেও ভোগব্যয় বাড়াবে।
বাংলাদেশে এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হো ইউন জিয়ং বলেন, ‘ভবিষ্যৎ প্রবৃদ্ধিনির্ভর করবে ব্যবসায়িক পরিবেশ উন্নয়নের মাধ্যমে প্রতিযোগিতা বাড়ানো, বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা এবং নির্ভরযোগ্য জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করার ওপর। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের বাণিজ্যে মার্কিন শুল্কের প্রভাব এখনো স্পষ্ট নয়। দেশের ব্যাংক খাতের দুর্বলতা অব্যাহত রয়েছে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য জরুরি।
এডিবির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০২৬ অর্থবছরের জন্য কিছু ঝুঁকি রয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যসংক্রান্ত অনিশ্চয়তা, ব্যাংক খাতের দুর্বলতা এবং নীতি বাস্তবায়নের অনাগ্রহ প্রবৃদ্ধির অগ্রগতিতে বাধা হতে পারে। এ জন্য সঠিক সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বজায় রাখা এবং কাঠামোগত সংস্কার দ্রুততর করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৭ শতাংশ। গত অর্থবছরের তা বেড়ে দাঁড়ায় ১০ শতাংশ। এর পেছনে রয়েছে পাইকারি বাজারে সীমিত প্রতিযোগিতা, বাজার তথ্যের ঘাটতি, সরবরাহ শৃঙ্খলে বাধা এবং টাকার অবমূল্যায়ন।
এডিবি বলছে, চলতি অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি হবে ভোগব্যয়, যা শক্তিশালী রেমিট্যান্স প্রবাহ ও নির্বাচন-সংশ্লিষ্ট ব্যয়ের কারণে বাড়বে। তবে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি ও রাজস্বনীতি এবং বিনিয়োগকারীদের সতর্ক মনোভাব বিনিয়োগকে মন্থর করতে পারে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রপ্তানির ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নে প্রতিযোগিতা বাড়ায় রপ্তানি খাত এবং এর প্রবৃদ্ধি চাপ বাড়াবে। ফলে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে রপ্তানিকারকদের মূল্য কমাতে হতে পারে।