সাবেক আইজিপি বেনজীরের মেয়ের দুবাইয়ের সম্পদ ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামানের স্ত্রীর বাড়ি জব্দের আদেশ
Published: 8th, May 2025 GMT
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের মেয়ে তাহসীন রাইসা বিনতে বেনজীরের নামে বিদেশে থাকা সম্পদ জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের স্ত্রী লুৎফুল তাহমিনা খানের নামে থাকা একটি বাড়ি জব্দের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো.
দুদকের তথ্য অনুযায়ী, বেনজীর আহমেদের মেজ মেয়ে তাহসীন রাইসা বিনতে বেনজীরের একটি অ্যাপার্টমেন্ট জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। ওই অ্যাপার্টমেন্ট সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) দুবাইয়ে থুনাই আবাসিক এলাকায়। অবৈধভাবে অর্জিত টাকা বিদেশে পাচার করে বেনজীর আহমেদের মেয়ে সম্পদ কিনেছেন বলে আদালতকে জানিয়েছে দুদক। এ ছাড়া দুবাইয়ে তাঁর (বেনজীরের মেয়ে) নামে থাকা দুটি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত
এর আগে গত বছরের মে মাসে বেনজীর আহমেদ, তাঁর স্ত্রী ও তিন মেয়ের স্থাবর সম্পদ জব্দের আদেশ দিয়েছিলেন আদালত। একই সঙ্গে এ পাঁচজনের নামে থাকা ব্যাংক হিসাব এবং বিভিন্ন কোম্পানিতে তাঁদের নামে থাকা শেয়ার অবরুদ্ধ করার আদেশও দেওয়া হয়।
সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর স্ত্রীর সম্পদ জব্দের আদেশ:সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের স্ত্রী লুৎফুল তাহমিনা খানের নামে থাকা একটি চারতলা বাড়ি জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া জমি, ছয়টি ব্যাংক হিসাব ও দুটি কোম্পানির শেয়ার অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালত আজ এ আদেশ দেন।
দুদকের তথ্য অনুযায়ী, লুৎফুল তাহমিনা খানের ব্যাংক হিসাবে ৭ কোটি ৫৮ লাখ টাকা জমা রয়েছে। তাঁর নামে থাকা তেজগাঁওয়ের মণিপুরিপাড়ায় চারতলা ভবন জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
এর আগে গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর আসাদুজ্জামান খান, তাঁর স্ত্রী লুৎফুল তাহমিনা খানসহ ১০ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত।
গত বছরের অক্টোবরে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আসাদুজ্জামান খান কামাল, তাঁর স্ত্রী, ছেলে শাফি মোদ্দাছির খান, মেয়ে শাফিয়া তাসনিম খানের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক। এসব মামলায় তাঁদের বিরুদ্ধে মোট ৭৯ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। দুদক আদালতে লিখিতভাবে বলেছে, আসাদুজ্জামান অসাধু উপায়ে জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ ১৬ কোটি ৪১ লাখ ৫৭ হাজার ৫৭৪ টাকার সম্পদের মালিকানা অর্জন ও দখলে রেখেছেন।
আরও পড়ুনবেনজীর আহমেদের সম্পদ জব্দ করার আদেশ ২৩ মে ২০২৪উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বেহাল ৫ কিলোমিটার সড়ক যান চলাচলে ঝুঁকি
হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজার জেলার সংযোগ সড়ক পানিউমদা-শমশেরনগর সড়কটি দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় চলাচলের অনুপযোগী হয়ে উঠেছে। ব্যস্ত এ সড়কে প্রতিদিনই ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। অবিলম্বে সড়কটি সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, নবীগঞ্জ উপজেলার পানিউমদা বাজার থেকে মৌলভীবাজার জেলার শমশেরনগর পর্যন্ত সড়কে গত ১০ বছরেরও কোনো সংস্কারকাজ হয়নি। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের লোকজন নিয়মিত মাপজোক করে সংস্কারের আশ্বাস দিলেও কাজের কাজ কিছুই হয় না। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে এ সড়কে চলাচলে কষ্টের শেষ থাকে না।
সরেজমিন দেখা যায়, প্রায় ৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সড়কে ছোট-বড় খানাখন্দে ভরপুর। কয়েকটি গর্ত বেশ গভীর। যার মধ্যে দুই ও তিন চাকার যান উল্টে যেতে পারে। চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় চালক ও যাত্রীদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। স্থানীয়রা জানান, এ সড়কে চলাচল করতে তাদের কষ্টের পাশাপাশি সবসময় দুর্ঘটনার ঝুঁকি তাড়া করে বেড়ায়।
নবীগঞ্জ উপজেলা সিএনজি শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অনু আহমদের ভাষ্য, গত এক মাসে মৌলভীবাজার-শমশেরনগর টু নবীগঞ্জ পানিউমদা সড়কে ২০টি সিএনজিচালিত অটোরিকশা দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। এতে অন্তত ৫০ জন আহত হন। বিশেষ করে সড়কের টঙ্গিটিলা, ভেড়ামারা, মোকামবাজার, পূর্ব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকা, শমশেরনগর লেবু বাগান এলাকায় সড়কের অবস্থা খুবই খারাপ। বর্ষা মৌসুমে খানাখন্দে পানি জমলে গাড়ি চালানো সম্ভব হয় না।
পানিউমদা গ্রামের ব্যবসায়ী অনু আহমদ জানান, এই সড়কের গুরুত্ব শুধু স্থানীয় পর্যায়ে সীমাবদ্ধ নয়। এটি হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজার জেলার মানুষের যোগাযোগের অন্যতম সড়ক। স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ীসহ সব শ্রেণির মানুষের যাতায়াত এই পথেই। অথচ এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত।
স্থানীয় এক বাসিন্দা আশরাফুল ইসলাম বলেন, এলাকাবাসীর চলাচলের এটিই একমাত্র সড়ক। প্রতিদিন এ সড়কে চলাচল করতে গিয়ে তাদের কষ্টের শেষ থাকে না। ক’দিন পরপর মাপজোক হয়; কিন্তু সংস্কার আর হয় না।
অটোরিকশা চালক কুদ্দুছ মিয়া জানান, রাস্তায় বড় বড় গর্ত হওয়ায় যাত্রী সংখ্যা কমে গেছে। এতে তাদের আয়-রোজগারও কমে গেছে।
পানিউমদা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইজাজুর রহমান বলেন, বেহাল সড়কটি এলাকাবাসীর দুঃখকষ্টের অন্যতম কারণ। তিনি মাসিক উন্নয়ন ও সমন্বয় কমিটির সভায় সড়কটি সংস্কারের কথা অসংখ্যবার বলেছেন। বারবার আশ্বাস দেওয়া হলেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না।
নবীগঞ্জ উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকৌশলী মো. জোনায়েদ আলম বলেন, গুরুত্ব বিবেচনা করে পানিউমদা-শমশেরনগর সড়ক সংস্কারে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রকল্পের প্রাক্কলন তৈরি করে সংশ্লিষ্ট কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।