পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের মেয়ে তাহসীন রাইসা বিনতে বেনজীরের নামে বিদেশে থাকা সম্পদ জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের স্ত্রী লুৎফুল তাহমিনা খানের নামে থাকা একটি বাড়ি জব্দের আদেশ দেওয়া হয়েছে।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো.

জাকির হোসেন আজ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন।

দুদকের তথ্য অনুযায়ী, বেনজীর আহমেদের মেজ মেয়ে তাহসীন রাইসা বিনতে বেনজীরের একটি অ্যাপার্টমেন্ট জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। ওই অ্যাপার্টমেন্ট সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) দুবাইয়ে থুনাই আবাসিক এলাকায়। অবৈধভাবে অর্জিত টাকা বিদেশে পাচার করে বেনজীর আহমেদের মেয়ে সম্পদ কিনেছেন বলে আদালতকে জানিয়েছে দুদক। এ ছাড়া দুবাইয়ে তাঁর (বেনজীরের মেয়ে) নামে থাকা দুটি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত

এর আগে গত বছরের মে মাসে বেনজীর আহমেদ, তাঁর স্ত্রী ও তিন মেয়ের স্থাবর সম্পদ জব্দের আদেশ দিয়েছিলেন আদালত। একই সঙ্গে এ পাঁচজনের নামে থাকা ব্যাংক হিসাব এবং বিভিন্ন কোম্পানিতে তাঁদের নামে থাকা শেয়ার অবরুদ্ধ করার আদেশও দেওয়া হয়।

সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর স্ত্রীর সম্পদ জব্দের আদেশ:

সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের স্ত্রী লুৎফুল তাহমিনা খানের নামে থাকা একটি চারতলা বাড়ি জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া জমি, ছয়টি ব্যাংক হিসাব ও দুটি কোম্পানির শেয়ার অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালত আজ এ আদেশ দেন।

দুদকের তথ্য অনুযায়ী, লুৎফুল তাহমিনা খানের ব্যাংক হিসাবে ৭ কোটি ৫৮ লাখ টাকা জমা রয়েছে। তাঁর নামে থাকা তেজগাঁওয়ের মণিপুরিপাড়ায় চারতলা ভবন জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

এর আগে গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর আসাদুজ্জামান খান, তাঁর স্ত্রী লুৎফুল তাহমিনা খানসহ ১০ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত।

গত বছরের অক্টোবরে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আসাদুজ্জামান খান কামাল, তাঁর স্ত্রী, ছেলে শাফি মোদ্দাছির খান, মেয়ে শাফিয়া তাসনিম খানের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক। এসব মামলায় তাঁদের বিরুদ্ধে মোট ৭৯ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। দুদক আদালতে লিখিতভাবে বলেছে, আসাদুজ্জামান অসাধু উপায়ে জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ ১৬ কোটি ৪১ লাখ ৫৭ হাজার ৫৭৪ টাকার সম্পদের মালিকানা অর্জন ও দখলে রেখেছেন।

আরও পড়ুনবেনজীর আহমেদের সম্পদ জব্দ করার আদেশ ২৩ মে ২০২৪

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

পূজামণ্ডপের নিরাপত্তায় ২ লাখ আনসার-ভিডিপি

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা নিরাপদ ও নির্বিঘ্নভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে ২ অক্টোবর পর্যন্ত টানা ৯ দিন সারাদেশের ৩১,৫৭৬ পূজামণ্ডপে মোতায়েন থাকবেন দুই লাখ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত আনসার-ভিডিপি সদস্য।

মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) আনসার সদর দপ্তর থেকে জানানো হয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী এই বিশাল নিরাপত্তা কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ সদর দপ্তর ও মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা, কর্মচারী, আনসার ব্যাটালিয়ন সদস্য এবং আনসার-ভিডিপি সদস্যদের যথাযথ দিকনির্দেশনা প্রদান করেন। তিনি দায়িত্ব পালনে সর্বোচ্চ সতর্কতা, আন্তরিকতা এবং জনগণবান্ধব মনোভাবের ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেন।

আরো পড়ুন:

ঝুঁকিপূর্ণ মণ্ডপে সেনা মেতায়েন চায় সনাতনী জোট

দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতে পাঠানো হলো ৫০০ কেজি চিনিগুঁড়া চাল

বাহিনীর চলমান সংস্কার কার্যক্রমের আওতায় প্রায় দুই লাখ তরুণকে ইতোমধ্যে গণপ্রতিরক্ষার নতুন ধারায় প্রশিক্ষণ দিয়ে বাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। নব সংযোজিত ‘এভিএমআইএস’ সফটওয়্যারের মাধ্যমে সব সদস্যের রেজিস্ট্রেশন ও হালনাগাদ তথ্য যাচাই করে পূজার নিরাপত্তা দায়িত্ব নির্ধারণ করা হচ্ছে। উৎসবকালীন দায়িত্ব পালনে যথাযথতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে বাহিনীতে ‘এসটিডিএম’ সফটওয়্যার চালু করা হয়েছে। এছাড়া, পূজা উৎসবে কুচক্রী মহলের গুজব প্রতিরোধ এবং যেকোনো অশুভ শক্তি মোকাবেলায় ডিউটিরত সদস্যদের জন্য ‘ইনসিডেন্ট রিপোর্ট’ কার্যক্রম চালু হওয়ায় নিরাপত্তা পরিধি আরো শক্তিশালী হয়েছে। পাশাপাশি, দক্ষ ও যোগ্য সদস্য বাছাইয়ের ক্ষেত্রে বাহিনী সর্বস্তরে অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনা ও দায়বদ্ধতাকে যেকোনো প্রভাবমুক্ত রাখার ব্যাপক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

আনসার সদর দপ্তর থেকে আরো জানানো হয়, আসন্ন দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে পূজামণ্ডপগুলোকে নিরাপত্তা ঝুঁকির ভিত্তিতে তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে। অধিক গুরুত্বপূর্ণ পূজামণ্ডপে আটজন, গুরুত্বপূর্ণ পূজামণ্ডপে ছয়জন এবং সাধারণ পূজামণ্ডপে ছয়জন করে আনসার-ভিডিপি সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। একইসঙ্গে দেশের ৬৪ জেলায় ৯২টি ব্যাটালিয়ন আনসার স্ট্রাইকিং ফোর্স টিম মোতায়েন থাকবে। প্রতিটি টিমে ছয়জন করে সদস্য থাকবেন, যারা নিয়মিত টহলের পাশাপাশি যেকোনো আপদকালীন পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকবেন।

এবারের নিরাপত্তা কার্যক্রমকে আরো কার্যকর ও প্রযুক্তিনির্ভর করতে মোতায়েনকৃত সদস্যরা তাদের নির্ধারিত দায়িত্বের পাশাপাশি ‘শারদীয় সুরক্ষা অ্যাপ’ ব্যবহার করে দুর্ঘটনা, গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা বা অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তাৎক্ষণিকভাবে রিপোর্ট করবেন। এসব তথ্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী অন্যান্য বাহিনীর সঙ্গে ভাগাভাগি করে সমন্বিত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ঢাকা/এমআর/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ