শেওড়াপাড়ার বাসা থেকে দুই বোনের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার
Published: 10th, May 2025 GMT
রাজধানীর শেওড়াপাড়ার বাসা থেকে দুই নারীর রক্তাক্ত মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তারা হলেন– বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মরিয়ম বেগম (৬১) ও তাঁর বোন সুফিয়া বেগম (৫২)। গতকাল শুক্রবার রাতে তাদের লাশ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়। পুলিশের ধারণা, ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে তাদের হত্যা করা হয়েছে। তবে কে বা কারা এতে জড়িত; কী কারণে হত্যা করা হয়েছে– তাৎক্ষণিক জানা যায়নি।
যে ভবনে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, সেটির মালিক বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসরীন জাহানের বাবা। ছয়তলা বাড়ির চতুর্থ তলায় সচিব তাঁর বাবার সঙ্গে থাকেন বলে জানা গেছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের মিরপুর অঞ্চলের সহকারী কমিশনার মিজানুর রহমান সমকালকে বলেন, মরিয়ম বেগম ২০ বছরের বেশি সময় ধরে ওই বাসায় ভাড়া থাকতেন। তাঁর স্বামী বন বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাজী আলাউদ্দিন। তাদের সঙ্গে দুই মেয়েও বাসায় থাকেন। আর কিছুদিন ধরে সুফিয়াও বোনের বাসায় থাকতেন। তিনি ছিলেন অবিবাহিত।
সংশ্লিষ্টরা জানান, পশ্চিম শেওড়াপাড়ার তোরাব আলী মসজিদের পাশে ৬৪৯ নম্বর বাড়ি ‘নার্গিস’। এর দোতলার বি-১ ফ্ল্যাটে পরিবারের সঙ্গে থাকতেন মরিয়ম। গতকাল সকালে কর্মস্থলের উদ্দেশে বাসা থেকে বের হন তাঁর মেয়ে অস্ট্রেলিয়ান প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা নুসরাত জাহান। তিনি রাত ৮টার দিকে ফিরে ফ্ল্যাটের দরজা বাইরে থেকে তালাবদ্ধ দেখতে পান। পরে তালা খুলে ঘরে ঢুকে তিনি দেখেন, মা ও খালার রক্তাক্ত মৃতদেহ পড়ে আছে। তাঁর চিৎকার শুনে অন্য ফ্ল্যাটের বাসিন্দারা এগিয়ে যান। তারা ৯৯৯ নম্বরে কল করে বিষয়টি জানিয়ে পুলিশি সহায়তা চান। রাত ৯টার পর ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। পরে সিআইডি, র্যাব ও পিবিআইর আলাদা দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। ঘটনার সময় মরিয়মের স্বামী কাজী আলাউদ্দিন তাঁর গ্রামের বাড়ি বরিশালের বাবুগঞ্জের বাসায় ছিলেন। খবর পেয়ে তিনি রাতে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন।
মিরপুর থানার এএসআই মোহাম্মদ মহসীন বলেন, জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে কল পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। পরে ওই ফ্ল্যাটে দুই নারীর মৃতদেহ পাওয়া যায়। পুলিশ লাশ উদ্ধারের পর সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে। নিরাপত্তাকর্মী মো.
পুলিশ সূত্র জানায়, ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে বেশ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। দ্রুত হত্যাকাণ্ডের রহস্য ভেদ ও জড়িতদের আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ল শ উদ ধ র
এছাড়াও পড়ুন:
দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন
হাইকোর্ট বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীকে চেয়ারম্যান করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ গঠন করেছে সরকার। তিন সদস্য বিশিষ্ট ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মঞ্জুরুল বাছিদ এবং মাদারীপুরের জেলা ও দায়রা জজ নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর।
আজ বৃহস্পতিবার আইন ও বিচার বিভাগ থেকে তাদের নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইন মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা ড. রেজাউল করিম।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রাপ্ত অভিযোগ ও অভিযুক্তের সংখ্যা, দ্রুত বিচার-নিষ্পত্তির প্রয়োজন, কাজের চাপ ইত্যাদি বিবেচনায় দ্বিতীয় এই ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হলো।
জানা গেছে, জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থনের সময় হত্যা, গণহত্যা, গুমসহ মানবতাবিরোধী নানা ধরনের অপরাধের বিচার কার্যক্রম দ্রুত করতে দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হলো।
এর আগে একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় বিরোধীতাকারীদের বিভিন্ন মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার করতে ২০১০ সালের ২৫ মার্চ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। এরপর বিচারের গতি দ্রুত বাড়াতে ২০১২ সালের ২২ মার্চ আরেকটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। তিন বছর পর মামলার চাপ কমে যাওয়ায় ২০১৫ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর দুই ট্রাইব্যুনালকে একীভূত করে একটি ট্রাইব্যুনাল করা হয়। যা এখনও অব্যাহত রয়েছে।
আজ আইন ও বিচার বিভাগের সচিব শেখ আবু তাহের স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এর চেয়ারম্যান ও সদস্যরা হাইকোর্ট বিভাগের বিচারকের প্রাপ্য বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সুবিধা প্রাপ্ত হবেন।
এছাড়া প্রজ্ঞাপনে বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদার, বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত বিদ্যমান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালকে ১ নম্বর হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
এর আগে গত ২৩ এপ্রিল চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, জুলাই-আগস্ট মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য সরকার দ্বিতীয় আরেকটি ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ বিষয়ে ইতিমধ্যে কাজ শুরু হয়েছে। বর্তমানে একটি ট্রাইব্যুনালে বিচারিক কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। নতুন আরেকটি ট্রাইব্যুনাল গঠিত হলে বিচার কার্যক্রম আরও তরান্বিত হবে বলেও জানান চিফ প্রসিকিউটর।