রাতে ঘুমাতে গেলেই ত্বক চুলকানো কিসের লক্ষণ
Published: 2nd, July 2025 GMT
ঘুমানোর জন্য রাতে বিছানায় যাওয়ার পরই অনেকের ত্বক চুলকাতে শুরু করে। এখানে-ওখানে চুলকানির কারণে বিরক্তিবোধ হয়। ব্যাঘাত ঘটে ঘুমের। অনেক সময় এর কোনো কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না। রাতে এভাবে ত্বক চুলকানো হতে পারে নানা রোগের লক্ষণ।
স্ক্যাবিস: খোসপাঁচড়া বা স্ক্যাবিস একধরনের পরজীবী সংক্রমণের কারণে হয়। এ রোগের অন্যতম প্রধান উপসর্গ ফুসকুড়ি ও প্রচণ্ড চুলকানি। এই চুলকানি রাতে তীব্র হয়। ধারণা করা হয়, এই পরজীবীগুলো রাতে বেশি সক্রিয় হয়ে ওঠে, প্রদাহ সৃষ্টি করতে থাকে। ত্বকে ডিম পাড়ে। রাতে ত্বকের তাপমাত্রা সামান্য বাড়ে, যা এদের আরও সক্রিয় করে তোলে।
শুষ্ক ত্বক: যাঁদের ত্বক শুষ্ক, তাঁদেরও রাতে এই সমস্যা বাড়ে। থাইরয়েডের সমস্যা, জেরোসিস, সোরিয়াসিসের কারণে ত্বক অতিমাত্রায় শুষ্ক হতে পারে। এই শুষ্কতা বাড়ে রাতে। শীতাতপনিয়ন্ত্রিত কক্ষে শুষ্কতা আরও বাড়তে পারে।
ডায়াবেটিস: ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথি বা স্নায়ুজনিত সমস্যার কারণে পায়ের ত্বকের আর্দ্রতা ও ঘাম নিঃসরণে সমস্যা হয়। এই স্নায়ুজনিত সমস্যা রাতেই বেশি হয়। ফলে পা জ্বালাপোড়া, কামড়ানোর সঙ্গে শুরু হতে পারে চুলকানি।
স্ক্যাবিস বা খোসপাঁচড়া হলে বাড়ির বা পরিবারের সবার আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। তাই এমন হলে বাড়ির সবাইকে একসঙ্গে চিকিৎসা নিতে হবে।গর্ভাবস্থা: অনেক সময় গর্ভাবস্থায় ত্বকের চুলকানি বাড়ে। এই চুলকানিও রাতে বেশি হতে পারে। রাতে বেশির ভাগ হরমোনের মাত্রা কমে আসে বলে এমনটা হয়।
ক্যানসার: লিমফোমা, লিউকেমিয়া জাতীয় রক্ত ক্যানসারের একটি লক্ষণ রাতে ত্বকে চুলকানি, রাতে ঘাম বেশি হওয়া ইত্যাদি।
অ্যালার্জি: অনেক সময় বিছানায় বা চাদরে, ঘরের পর্দায়, মাদুরে ছারপোকা বা অন্য পোকামাকড় থাকতে পারে। রাতে মশার কামড়ের কারণেও চুলকানি হয়।
কী করবেন
স্ক্যাবিস বা খোসপাঁচড়া হলে বাড়ির বা পরিবারের সবার আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। তাই এমন হলে বাড়ির সবাইকে একসঙ্গে চিকিৎসা নিতে হবে। চিকিৎসার পর বাড়ির সব বিছানার চাদর, বালিশের কভার, পোশাক ও তোয়ালে গরম পানিতে ধুয়ে কড়া রোদে শুকাতে হবে।
ত্বক শুষ্ক হলে রাতে ঘুমানোর আগে ভালো করে ত্বকে ইমোলিয়েন্ট (ত্বক মসৃণকারী পদার্থ) লাগিয়ে ঘুমাবেন, বিশেষ করে পায়ে। অতিরিক্ত শুষ্কতা হলে থাইরয়েড, ডায়াবেটিস বা অন্য কোনো রোগ আছে কি না, পরীক্ষা করে নিন।
ঘুমানোর আগে গোসল করা যায়। বিছানায় পরিষ্কার চাদর ও বালিশ ব্যবহার করুন।
রাতে ঘুমানোর আগে অ্যান্টিহিস্টামিন জাতীয় ওষুধ খেতে পারেন। প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
ডা.
মো. আসিফুজ্জামান: অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, চর্মরোগ বিভাগ, গ্রিন লাইফ মেডিকেল কলেজ, ঢাকা
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
একসঙ্গে জন্ম দেওয়া মোকসেদার ছয় সন্তানের পাঁচজনই মারা গেল
একসঙ্গে জন্ম দেওয়া মোকসেদা আক্তারের ছয় সন্তানের মধ্যে পাঁচজনই মারা গেল। গতকাল রোববার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে জন্ম নেওয়ার পরপরই একটি শিশু মারা যায়। আজ সোমবার দুপুর পর্যন্ত চিকিৎসাধীন অবস্থায় একে একে আরও চার নবজাতকের মৃত্যু হয়।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ কর্মকর্তা মো. ফারুক প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার খাজুরিয়া গ্রামের মোকসেদা আক্তার রোববার সকালে একসঙ্গে এই ছয় সন্তানের জন্ম দেন। তাঁর স্বামী মো. হানিফ কাতারপ্রবাসী। মোকসেদা আক্তারের ননদ লিপি বেগম আজ প্রথম আলোকে বলেন, বেঁচে থাকা একমাত্র নবজাতকের অবস্থাও বেশি ভালো নয়।
ঢামেক হাসপাতালের গাইনি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, মোকসেদা তিন ছেলে ও তিন মেয়েসন্তান প্রসব করেন। সন্তানেরা ২৭ সপ্তাহ পূর্ণ হওয়ার আগেই জন্ম নেয়। জন্মের সময় প্রত্যেকের ওজন ছিল ৬০০ থেকে ৯০০ গ্রামে মধ্যে। এ কারণে তাদের সবার অবস্থাই ছিল সংকটজনক।
আরও পড়ুনঢাকা মেডিকেলে একসঙ্গে ছয় সন্তানের জন্ম, নবজাতকদের অবস্থা সংকটাপন্ন২২ ঘণ্টা আগেঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নবজাতক বিভাগে আইসিইউতে পর্যাপ্ত শয্যা খালি না থাকায় তিনজনকে অন্য একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে বেঁচে থাকা একমাত্র নবজাতকটি বেসরকারি হাসপাতালে আছে।