ঘুমানোর জন্য রাতে বিছানায় যাওয়ার পরই অনেকের ত্বক চুলকাতে শুরু করে। এখানে-ওখানে চুলকানির কারণে বিরক্তিবোধ হয়। ব্যাঘাত ঘটে ঘুমের। অনেক সময় এর কোনো কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না। রাতে এভাবে ত্বক চুলকানো হতে পারে নানা রোগের লক্ষণ।

স্ক্যাবিস: খোসপাঁচড়া বা স্ক্যাবিস একধরনের পরজীবী সংক্রমণের কারণে হয়। এ রোগের অন্যতম প্রধান উপসর্গ ফুসকুড়ি ও প্রচণ্ড চুলকানি। এই চুলকানি রাতে তীব্র হয়। ধারণা করা হয়, এই পরজীবীগুলো রাতে বেশি সক্রিয় হয়ে ওঠে, প্রদাহ সৃষ্টি করতে থাকে। ত্বকে ডিম পাড়ে। রাতে ত্বকের তাপমাত্রা সামান্য বাড়ে, যা এদের আরও সক্রিয় করে তোলে।

শুষ্ক ত্বক: যাঁদের ত্বক শুষ্ক, তাঁদেরও রাতে এই সমস্যা বাড়ে। থাইরয়েডের সমস্যা, জেরোসিস, সোরিয়াসিসের কারণে ত্বক অতিমাত্রায় শুষ্ক হতে পারে। এই শুষ্কতা বাড়ে রাতে। শীতাতপনিয়ন্ত্রিত কক্ষে শুষ্কতা আরও বাড়তে পারে।

ডায়াবেটিস: ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথি বা স্নায়ুজনিত সমস্যার কারণে পায়ের ত্বকের আর্দ্রতা ও ঘাম নিঃসরণে সমস্যা হয়। এই স্নায়ুজনিত সমস্যা রাতেই বেশি হয়। ফলে পা জ্বালাপোড়া, কামড়ানোর সঙ্গে শুরু হতে পারে চুলকানি।

স্ক্যাবিস বা খোসপাঁচড়া হলে বাড়ির বা পরিবারের সবার আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। তাই এমন হলে বাড়ির সবাইকে একসঙ্গে চিকিৎসা নিতে হবে।

গর্ভাবস্থা: অনেক সময় গর্ভাবস্থায় ত্বকের চুলকানি বাড়ে। এই চুলকানিও রাতে বেশি হতে পারে। রাতে বেশির ভাগ হরমোনের মাত্রা কমে আসে বলে এমনটা হয়।

ক্যানসার: লিমফোমা, লিউকেমিয়া জাতীয় রক্ত ক্যানসারের একটি লক্ষণ রাতে ত্বকে চুলকানি, রাতে ঘাম বেশি হওয়া ইত্যাদি।

অ্যালার্জি: অনেক সময় বিছানায় বা চাদরে, ঘরের পর্দায়, মাদুরে ছারপোকা বা অন্য পোকামাকড় থাকতে পারে। রাতে মশার কামড়ের কারণেও চুলকানি হয়।

কী করবেন

স্ক্যাবিস বা খোসপাঁচড়া হলে বাড়ির বা পরিবারের সবার আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। তাই এমন হলে বাড়ির সবাইকে একসঙ্গে চিকিৎসা নিতে হবে। চিকিৎসার পর বাড়ির সব বিছানার চাদর, বালিশের কভার, পোশাক ও তোয়ালে গরম পানিতে ধুয়ে কড়া রোদে শুকাতে হবে।

ত্বক শুষ্ক হলে রাতে ঘুমানোর আগে ভালো করে ত্বকে ইমোলিয়েন্ট (ত্বক মসৃণকারী পদার্থ) লাগিয়ে ঘুমাবেন, বিশেষ করে পায়ে। অতিরিক্ত শুষ্কতা হলে থাইরয়েড, ডায়াবেটিস বা অন্য কোনো রোগ আছে কি না, পরীক্ষা করে নিন।

ঘুমানোর আগে গোসল করা যায়। বিছানায় পরিষ্কার চাদর ও বালিশ ব্যবহার করুন।

রাতে ঘুমানোর আগে অ্যান্টিহিস্টামিন জাতীয় ওষুধ খেতে পারেন। প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

ডা.

মো. আসিফুজ্জামান: অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, চর্মরোগ বিভাগ, গ্রিন লাইফ মেডিকেল কলেজ, ঢাকা

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: চ লক ন সমস য

এছাড়াও পড়ুন:

শাহরুখের অজানা এই সাত তথ্য জানেন?

বলিউড বাদশা শাহরুখ খান। অভিনয় গুণে কোটি কোটি ভক্তের হৃদয়ে দোলা দিয়েছেন তিনি। দীর্ঘ অভিনয় ক্যারিয়ারে যশ-খ্যাতি যেমন পেয়েছেন, তেমনি আয় করেছেন মোটা অঙ্কের অর্থও। রবিবার (২ নভেম্বর) ৬০ বছর পূর্ণ করে একষট্টিতে পা দেবেন এই তারকা। চলুন, বিশেষ এই দিনে শাহরুখ খানের অজানা সাতটি তথ্য জেনে নিই—

এক. ১৯৯২ সালে ‘দিওয়ানা’ সিনেমার মাধ্যমে বলিউডে পা রাখেন শাহরুখ খান। রোমান্টিক ঘরানার এ সিনেমায় অভিনয় করে নজর কাড়েন তিনি। সিনেমাটিতে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের কারণে সেরা নবাগত অভিনেতা হিসেবে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার লাভ করেন শাহরুখ। কিন্তু সিনেমাটিতে শাহরুখ খানের চরিত্রে অভিনয় করার কথা ছিল তারকা পুত্র আরমান কোহলির। অভিজ্ঞ পরিচালক রাজ কুমার কোহলির রাগী ছেলে আরমান সিনেমাটির একটি শিডিউল শেষ করে পরিচালক রাজ কানওয়ারের সঙ্গে ঝগড়া করে সেট ছেড়ে চলে যান। প্রযোজকরা তখন তড়িঘড়ি করে একটি নতুন মুখ খুঁজতে থাকেন, যে চরিত্রটির সঙ্গে মানানসই। তারপর আরমানের চরিত্রটি রূপায়নের সুযোগ পান নবাগত শাহরুখ খান।

আরো পড়ুন:

পাকিস্তানের সন্ত্রাসী তালিকায় সালমান খান কেন?

নেচে প্রেমের গুঞ্জন উসকে দিলেন শাহরুখকন্যা

দুই. দক্ষিণী সিনেমার বরেণ্য অভিনেতা কমল হাসানের ‘হে রাম’ সিনেমায় শাহরুখের চরিত্রের নাম ছিল আমজাদ খান। ‘শোলে’ সিনেমায় গব্বর সিংয়ের চরিত্রে অভিনয় করেন আমজাদ খান। তার নাম অনুসারে ‘হে রাম’ সিনেমার আমজাদ চরিত্রের নামকরণ করা হয়। কারণ কমল হাসান ও আমজাদ খানের খুব ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিলেন। এই সিনেমায় অভিনয়ের জন্য এক টাকাও পারিশ্রমিক নেননি শাহরুখ। এক সাক্ষাৎকারে শাহরুখ খান বলেছিলেন—“কমল হাসানের মতো অভিনেতার সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেয়ে কেউ টাকা নেয় না।”

তিন. শাহরুখ ও আমির খান কখনো একসঙ্গে কোনো সিনেমায় কাজ করেননি। তবে আমির খানের কাজিন মনসুর আলীর ‘জোশ’ সিনেমায় একসঙ্গে কাজ করার বিষয়টি প্রায় চূড়ান্ত হয়েছিল। মনসুর চেয়েছিলেন, সিনেমার গল্পে আমির খান ঐশ্বরিয়ার প্রেমিক চরিত্রে অভিনয় করুক। কিন্তু আমির চেয়েছিলেন, ঐশ্বরিয়ার জমজ ভাইয়ের চরিত্র। কিন্তু তা হয়নি। ফলে কাজটি ছেড়ে দেন আমির খান। সর্বশেষ পরিচালকের নির্ধারিত চরিত্রে (ম্যাক্স ডিয়াস অর্থাৎ ঐশ্বরিয়ার ভাই) অভিনয় করেন শাহরুখ খান।

চার. শাহরুখ খান প্রয়াত বলিউড অভিনেত্রী শ্রীদেবীর বিপরীতে অভিনয়ের জন্য মুখিয়ে ছিলেন। সর্বশেষ ‘আর্মি’ সিনেমায় সেই সুযোগ হয়। যদিও সিনেমাটিতে ক্যামিও চরিত্রে (মেজর অর্জুন) অভিনয়ের সুযোগ পান, তারপরও এটি লুফে নেন শাহরুখ খান। 

পাঁচ. ‘কয়লা’ সিনেমায় শঙ্কর চরিত্রে অভিনয় করেন শাহরুখ। চরিত্রটি ছিল বোবার। প্রথমে তার কোনো সংলাপই ছিল না। কিন্তু এ নিয়ে চলচ্চিত্র পরিবেশকরা আপত্তি জানান। তারা প্রশ্ন তুলেন—‘সুপারস্টারের মুখে একটি কথাও থাকবে না?’ তাই পরিচালক-প্রযোজক রাকেশ রোশান বাধ্য হয়ে স্বপ্নদৃশ্যে শাহরুখের কিছু সংলাপ যোগ করে দেন।

ছয়. বলিউড বাদশা শাহরুখ খান তার সব সহ-অভিনয়শিল্পীদেরই ভালোবাসেন। কিন্তু তার প্রিয় হলেন রাখি গুলজার। ‘করন অর্জুন’ সিনেমায় শাহরুখের মায়ের চরিত্রে অভিনয় করেন এই অভিনেত্রী। শাহরুখ তাকে নিজের মায়ের মতোই ভালোবাসেন।

সাত. শাহরুখ খান অনেকবার নিজের নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। ১৯৯৮ সালে ‘আচানাক’ সিনেমায় প্রথমবার শাহরুখ চরিত্রে অভিনয় করেন। যদিও গোবিন্দ অভিনীত সিনেমাটিতে শাহরুখের ক্যামিও চরিত্র ছিল। এর দুই বছর পর এম. এফ. হোসেনের ‘গজ গামিনি’ সিনেমায় নিজের চরিত্রে অভিনয় করেন। এটিও ক্যামিও চরিত্র ছিল। 

১৯৯৫ সালে শাহরুখ খানের সাংবাদিক বন্ধু সমর খান, শাহরুখের উপর একটি প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করেন। তাতে শাহরুখ খান নিজের নামে অভিনয় করেন। ২০০৯ সালে জোয়া আখতারের ‘লাক বাই চান্স’, ২০১১ সালে নবাগত পরিচালক সাহিল সাংঘার ‘লাভ ব্রেকআপস জিন্দেগি’, ২০১০ সালে মকরন্দ দেশপান্ডের শাহরুখ বোলা ‘খুবসুরত হ্যায় তু’ সিনেমায় শাহরুখ নিজের নাম নিয়েই পর্দায় হাজির হন।

তথ্যসূত্র: বলিউড হাঙ্গামা

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সব সিম লক রেখে কিস্তিতে স্মার্টফোন বিক্রির সুযোগ পাচ্ছে অপারেটররা
  • আগামী বছর নির্বাচনের পর বিশ্ব ইজতেমা: ধর্ম উপদেষ্টা
  • শাহরুখের ব্যাপারে সাবধান করলেন জুহি চাওলা
  • শাহরুখের অজানা এই সাত তথ্য জানেন?