চীনে প্রথমবারের মতো ফুটবল ম্যাচে অংশ নিল এআইচালিত রোবট
Published: 2nd, July 2025 GMT
বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তিনির্ভর অনেক প্রযুক্তির বিকাশ ঘটছে। রোবোটিকসের দুনিয়াতেও এআই ভিন্ন চমক তৈরি করছে। সম্প্রতি চীনের বেইজিংয়ে প্রথমবারের মতো এআইনির্ভর রোবটের একটি ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেই ম্যাচের ফুটবল মাঠ ছাড়া বাকি সবই ছিল কৃত্রিম উপাদানে তৈরি। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কাজে লাগিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম বুস্টার রোবোটিকসের তৈরি একাধিক হিউম্যানয়েড রোবট মাঠে নেমেছিল ফুটবল খেলতে।
যাঁরা ভবিষ্যতের দুনিয়া রোবোটের হয়ে যাবে বলে বিশ্বাস করেন, তাঁরা এআইনির্ভর রোবটের ফুটবল ম্যাচ দেখে বেশ মন খারাপ করতে পারেন। তবে ফুটবল খেলার আধুনিক কৌশল এখনো পুরোপুরি রপ্ত করতে পারেনি রোবটগুলো। আর তাই এআই রোবটগুলো শিগগিরই মেসি বা এমবাপ্পের মতো বিখ্যাত ফুটবলার বিকল্প হবে না। ভিডিওতে দেখা গেছে, ফুটবল খেলার সময় বলে লাথি মারতে বা সোজা থাকতে বেশ লড়াই করেছে এআই রোবটগুলো। মাটিতে পরে যাওয়ায় রীতিমতো স্ট্রেচারে করে মাঠের বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে একটি রোবটকে।
রোবটগুলোর নির্মাতাপ্রতিষ্ঠান বুস্টার রোবোটিকসের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও চেং হাও বলেন, ‘ক্রীড়া প্রতিযোগিতার মাধ্যমে হিউম্যানয়েড রোবট পরীক্ষার সুযোগ আছে। ভবিষ্যতে মানুষ রোবটদের সঙ্গে খেলতে পারে। বেইজিংয়ের ফুটবল মাঠের খেলা দেখে বলা যায়, হিউম্যানয়েডদের ফুটবল খেলতে এখনো অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে। ভবিষ্যতে আমরা রোবটদের মানুষের সঙ্গে ফুটবল খেলার ব্যবস্থা করতে পারি।’
চীনের প্রতিযোগিতাটি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের রোবট দলের মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়। বিভিন্ন দল নিজস্ব অ্যালগরিদমের মাধ্যমে রোবটদের নিজেদের মতো পরিচালিত করেন। ফাইনাল ম্যাচে, সিনহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএইচইউ রোবোটিকস চায়না এগ্রিকালচার বিশ্ববিদ্যালয়ের মাউন্টেন সি দলকে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হয়।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ফ টবল খ ল ফ টবল ম র ফ টবল র বটগ ল
এছাড়াও পড়ুন:
জুনে রেমিট্যান্স এসেছে ২৮২ কোটি ডলার
২০২৪–২৫ অর্থবছরের শেষ মাস জুনে ২৮২ কোটি ডলার সমপরিমাণ অর্থ দেশে এসেছে। আগের অর্থবছরের একই মাসে এসেছিল ২৫৪ কোটি ডলার। গত জুনে বেড়েছে প্রায় ২৮ কোটি ডলার বা ১১ শতাংশ। সব মিলিয়ে গত অর্থবছর প্রথমবারের মতো প্রবাসী আয় ৩০ বিলয়ন ডলারের মাইলফলক ছাড়িয়েছে। রেমিট্যান্সে উচ্চ প্রবৃদ্ধিসহ বিভিন্ন কারণে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে জুন শেষে গ্রস ৩১ দশমিক ৬৮ বিলিয়ন ডলার হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪–২৫ অর্থবছর বৈধ চ্যানেলে মোট ৩০ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন বা ৩ হাজার ৩৩ কোটি ডলার দেশে এসেছে। আগের অর্থবছর এসেছিল ২ হাজার ৩৯১ কোটি ডলার। এর মানে রেমিট্যান্স বেড়েছে ৬৪১ কোটি ডলার বা ২৬ দশমিক ৮২ বিলিয়ন ডলার। এর আগে করোনার প্রকোপ শুরুর পর ২০২০–২১ অর্থবছরে সর্বোচ্চ ২৪ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলার দেশে এসেছিল।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ঋণ জালিয়াতি ও অর্থ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কঠোর অবস্থানের কারণে হুন্ডি চাহিদা কমেছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরিবার এবং তার ঘনিষ্ঠ ১০ ব্যবসায়ী–রাজনৈতিকের অনিয়ম–দুর্নীতির বিষয়ে ১১টি যৌথ তদন্ত দল কাজ করছে। এরই মধ্যে ব্রিটেনে কিছু সম্পদ জব্দ হয়েছে। এসব কারণে চাপের মুখে রয়েছে পাচারকারীরা। যে কারণে প্রবাসী আয়ের বড় অংশই এখন বৈধ চ্যানেলে দেশে আসছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি জুন মাসের এ রেমিট্যান্স একক মাস হিসেবে তৃতীয় সর্বোচ্চ। এখন পর্যন্ত এক মাসে সর্বোচ্চ ৩৩০ কোটি ডলার এসেছে, গত মার্চ মাসে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৯৭ কোটি ডলার এসেছিল, গত মে মাসে। ঈদের কারণে গত মাসের প্রথম দিকে টানা ১০দিন বন্ধ থাকার পরও এভাবে রেমিট্যান্স বেড়েছে।
রেমিট্যান্সে উচ্চ প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি রপ্তানি আয়ে ৯ শতাংশের মতো প্রবৃদ্ধি হয়েছে। আবার বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, এডিবিসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে ৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি ঋণ পেয়েছে সরকার। সব মিলিয়ে জুন শেষে বৈদেশিক মুদ্রার গ্রস রিজার্ভ ৩১ দশমিক ৬৮ বিলিয়ন ডলার হয়েছে। গত ২৮ মাসের মধ্যে যা সর্বোচ্চ। সবশেষ ২০২৩ সালের মার্চের শুরুতে রিজার্ভ ৩২ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমেছিল। এরপর ওই মাসের ১৫ তারিখ সর্বোচ্চ ৩১ দশমিক ২৯ বিলিয়ন ডলার হয়। এছাড়া সব সময়ই এখনকার চেয়ে রিজার্ভ কম ছিল।
আইএমএফের ঋণ কর্মসূচি চালুর পর থেকে ইডিএফসহ বিভিন্ন তহবিলে যোগন দেওয়া ঋণসহ গ্রস রিজার্ভের হিসাব করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আর বিভিন্ন তহবিলে যোগন দেওয়া ঋণ বাদ দিয়ে আইএমএফের বিপিএম৬ ম্যানুয়াল অনুযায়ী হিসাব প্রকাশ করা হয়। বিপিএম৬ অনুযায়ী রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৬ দশমিক ৬৬ বিলিয়ন ডলার। গত বছরের আগস্টে আওয়ামী লীগ পতনের পর যা ২০ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলারে নেমেছিল। দেশের ইতিহাসে রিজার্ভ প্রথমবারের মতো ৪৮ বিলিয়ন ডলারের ঘর অতিক্রম করে ২০২১ সালের আগস্টে। অর্থপাচার ব্যাপক বেড়ে যাওয়াসহ বিভিন্ন কারণে তা তলানিতে নেমে যায়।