পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার বলেছেন, ‘ওরা থামলে আমরাও থামব। আমরা ধ্বংস ও সম্পদের অপচয় চাই না।’ আজ শনিবার পাকিস্তানের গণমাধ্যম জিও নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।

আজ ভোরে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র মজুতাগার ও একাধিক সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে পাল্টা হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান। এই অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘বুনইয়ান-উন-মারসুস’। ইসলামাবাদ বলেছে, গত মঙ্গলবার মধ্যরাতে পাকিস্তানের বিভিন্ন স্থানে চালানো ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জবাবে এই পাল্টা হামলা চালানো হয়েছে।

ভারতের অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছিল ‘অভিযান সিঁদুর’। ইসলামাবাদের আজকের হামলার জবাব এরই মধ্যে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছে নয়াদিল্লি।

এই উত্তেজনাপূর্ণ মুহূর্তে আশার বাণী শোনালেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে উত্তেজনা কমাতে বিশ্বব্যাপী কূটনৈতিক উদ্যোগ শুরু হয়েছে। ফলে দুই দেশের মধ্যে আলোচনা শুরু হতে পারে।

ইসহাক দার বলেন, ‘ভারতের যদি সামান্যতম বোধবুদ্ধি থাকে, তবে ওদের থামা উচিত। ওরা থামলে আমরাও থামব। আমরা ধ্বংস কিংবা অর্থের অপচয় চাই না। আপনারা জানেন, দুই দেশের অর্থনীতি ভিন্ন। আমরা কোনো দেশের আধিপত্য চাই না। আমরা সাধারণভাবে শান্তি চাই।’

ইসলামাবাদ অভিযোগ করেছে, শনিবার ভোরে ভারত তিনটি পাকিস্তানি বিমানঘাঁটি লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। এর একটি ছিল রাজধানী ইসলামাবাদের কাছাকাছি। তবে পাকিস্তানি আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা বেশির ভাগ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করতে সক্ষম হয়েছে বলে দাবি করেছে ইসলামাবাদ।

গত কয়েক দিনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা প্রসঙ্গে সাক্ষাৎকারে ইসহাক দার বলেন, ‘আমার সাম্প্রতিক কিছু কূটনৈতিক যোগাযোগ অত্যন্ত ইতিবাচক ছিল। আমি বিশ্বাস করি, এখন আলোচনার পথ খুলে যাবে।’

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, গতকাল শুক্রবার সকালে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনিরকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ফোন করেছেন।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, ‘তিনি [রুবিও] উভয় পক্ষকে উত্তেজনা প্রশমনের উপায় খুঁজে বের করার আহ্বান জানিয়েছেন এবং ভবিষ্যতে সংঘাত এড়াতে গঠনমূলক আলোচনার সূচনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা প্রস্তাব করেছেন।’

শুক্রবার সাত দেশের জোট জি-৭ ভারত-পাকিস্তানকে সর্বোচ্চ সংযম দেখাতে আহ্বান জানিয়েছে। পাশাপাশি সরাসরি আলোচনায় বসতে পারমাণবিক শক্তিধর এই দুই দেশকে উদ্বুদ্ধ করেছে।

চীনও আজ শনিবার ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধিতে ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করেছে। দেশ দুটির মধ্যকার সংঘাতের শান্তিপূর্ণ সমাধানে ‘গঠনমূলক ভূমিকা’ রাখার প্রস্তাব দিয়েছে। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এ কথাগুলো বলা হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পরর ষ ট র ইসল ম ব দ

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই অভ্যুত্থানকে নস্যাতের ষড়যন্ত্র রুখে দিতে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা–৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলাকে জুলাই অভ্যুত্থান নস্যাৎ করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে উল্লেখ করে রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা বলেছেন, এই ষড়যন্ত্র রুখে দিতে তারা ঐক্যবদ্ধ অবস্থানে রয়েছেন।

শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এই অঙ্গীকার করেন বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর নেতারা। বৈঠকে বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি, ইনকিলাব মঞ্চের নেতারা এবং আইন উপদেষ্টা উপস্থিত ছিলেন।

আরো পড়ুন:

বিএনপির প্রতিবাদ কর্মসূচি: নয়াপল্টনে এসে মিলছে সব পথের মিছিল

তারেক রহমান দেশে ফিরছেন ২৫ ডিসেম্বর: মির্জা ফখরুল

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “ওসমান হাদির ওপর হামলা ছিল পূর্বপরিকল্পিত এবং গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ। এর পেছনে বড় শক্তি কাজ করছে, যাদের লক্ষ্য নির্বাচন বানচাল করা। তিনি বলেন, হামলাটি ছিল প্রতীকী শক্তি প্রদর্শন এবং প্রাপ্ত তথ্যে প্রশিক্ষিত শুটার ব্যবহারের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। এসব মোকাবিলায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।”

বিএনপির সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “এই পরিস্থিতিতে পরস্পরের দোষারোপ বন্ধ করে ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে একযোগে আওয়াজ তুলতে হবে।”

তিনি অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার করার পরামর্শ দেন।

জামায়াত নেতা মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, “নিজেদের মধ্যে দোষারোপের প্রবণতায় বিরোধীরা সুযোগ নিচ্ছে।”

ক্ষুদ্র দলীয় স্বার্থে জাতিকে বিভক্ত করা থেকে সরে আসার আহ্বান জানান তিনি।

এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থানকে খাটো করতে সুসংগঠিত অপতৎপরতা চলছে। মিডিয়া, প্রশাসন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর ন্যারেটিভ তৈরি করা হচ্ছে।”

তিনি বলেন, “অনৈক্যই ষড়যন্ত্রকারীদের সবচেয়ে বড় শক্তি।”

তিন দলের নেতারা জুলাই অভ্যুত্থানের স্পিরিট ধরে রাখতে ঐক্যবদ্ধ থাকার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। 

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ