পৃথক দুটি মামলায় গ্রেপ্তার সাবেক সংসদ সদস্য কৃষক লীগের নেত্রী শামীমা আক্তার খানম এবং ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহকারী প্রেস সচিব আশরাফ সিদ্দিকীকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত শনিবার এ আদেশ দেন।

আদালতসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, যুবদল নেতা শামীম মোল্লা হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে সাবেক সংসদ সদস্য শামীমা আক্তার খানমকে আদালতে হাজির করে পল্টন থানা–পুলিশ। আসামিপক্ষ থেকে জামিন চেয়ে আবেদন করেন তাঁর আইনজীবী ফারজানা ইয়াসমিন। আদালত জামিন আবেদন নাকচ করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

অপর দিকে রমনা থানায় দায়ের করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেস সচিব আশরাফ সিদ্দিকীকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। তাঁর আইনজীবী আদালতে জামিন আবেদন করেন। শুনানি নিয়ে আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

সুনামগঞ্জ থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন শামীমা আক্তার খানম। আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র আশরাফ সিদ্দিকী আওয়ামী লীগের গবেষণা শাখা সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনে (সিআরআই) কাজ করেন। পরে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহকারী প্রেস সচিব হিসেবে নিয়োগ পান।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আশর ফ স দ দ ক র সহক র

এছাড়াও পড়ুন:

হেফাজতে মৃত্যু: এক আসামির যাবজ্জীবন, একজনের ১০ বছর কারাদণ্ড, আরেকজন খালাস

এক দশকের বেশি সময় আগে পুলিশি হেফাজতে থাকা অবস্থায় নির্যাতনে গাড়িচালক ইশতিয়াক হোসেন ওরফে জনির মৃত্যুতে করা মামলায় রাজধানীর পল্লবী থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) জাহিদুর রহমানের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট।

বিচারিক আদালতের রায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত পল্লবী থানার তৎকালীন সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) রাশেদুল হাসানের সাজা পরিবর্তন করে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন হাইকোর্ট। আর বিচারিক আদালতের রায়ে সাত বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত রাসেল নামে এক আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান ও বিচারপতি এ কে এম রবিউল হাসানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার এ রায় দেন।

২০১৩ সালে নির্যাতন এবং হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন প্রণয়ন করা হয়। ইশতিয়াককে নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনায় ২০১৪ সালের ৭ আগস্ট মামলা করা হয়। এটা ওই আইনে করা প্রথম কোনো মামলা। এই মামলায় ২০২০ সালের ৯ সেপ্টেম্বর রায় দেন ঢাকার মহানগর দায়রা জজ।

বিচারিক আদালতের রায়ে পল্লবী থানার তৎকালীন এসআই জাহিদুর, এএসআই রাশেদুল ও কামরুজ্জামানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়। তাঁদের প্রত্যেককে দুই লাখ টাকা করে বাদী বা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতেও নির্দেশ দেওয়া হয়।

অপর দুই আসামি পুলিশের তথ্যদাতা (সোর্স) সুমন ও রাসেলের ৭ বছর করে কারাদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা করে জরিমানার আদেশ দেন বিচারিক আদালত।

বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে তিন আসামি ২০২০ সালে হাইকোর্টে পৃথক আপিল করেন। তাঁরা হলেন জাহিদুর, রাশেদুল ও রাসেল।

২০২১ সালে হাইকোর্ট আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন। দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে তিন আসামির আপিলের ওপর একসঙ্গে গত ৯ জুলাই হাইকোর্টে শুনানি শুরু হয়। ৭ আগস্ট শুনানি শেষে আদালত রায়ের জন্য ১০ আগস্ট তারিখ নির্ধারণ করেছিলেন।

গতকাল রোববার বেলা পৌনে ১১টায় রায় দেওয়া শুরু করেন আদালত। মাঝে দুপুরে এক ঘণ্টা বিরত দিয়ে বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত রায় ঘোষণা চলে। এর ধারাবাহিকতায় আজ সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে অসমাপ্ত রায় ঘোষণা শুরু করেন আদালত, যা দুপুর ১২টা ৩৮ মিনিটে শেষ হয়।

রাষ্ট্রপক্ষের তথ্য অনুসারে, বিচারিক আদালতে দণ্ডিত পাঁচ আসামির মধ্যে কামরুজ্জামান শুরু থেকে পলাতক। অপর আসামি সুমন সাজা ভোগ করে বেরিয়েছেন।

আদালতে আসামিপক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান ও মো. সরওয়ার আহমেদ এবং আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক ও নাজমুল করিম শুনানি করেন।

রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বদিউজ্জামান তপাদার শুনানি করেন। বাদীপক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী এস এম রেজাউল করিম।

রায় ঘোষণার দুই দিন পুরোটা সময় মামলার বাদী নিহত ইশতিয়াকের ভাই ইমতিয়াজ হোসেন ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

ঘটনা সম্পর্কে মামলার বিবরণে বলা হয়েছে, ২০১৪ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় পল্লবীর ১১ নম্বর সেকশনের বি ব্লকের ইরানি ক্যাম্পের বাসিন্দা মো. বিল্লালের গায়েহলুদের অনুষ্ঠান ছিল। অনুষ্ঠানে পুলিশের সোর্স সুমন নারীদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেন। এ সময় সেখানে থাকা ইশতিয়াক ও তাঁর ভাই ইমতিয়াজ সুমনকে চলে যেতে বলেন। এ নিয়ে সুমনের সঙ্গে দুই ভাইয়ের বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। এরপর সুমনের ফোন পেয়ে পল্লবী থানা-পুলিশ এসে ইশতিয়াক ও ইমতিয়াজকে ধরে নিয়ে যায়। থানায় নিয়ে দুই ভাইকে নির্যাতন করা হয়। নির্যাতনে ইশতিয়াকের শারীরিক অবস্থা খারাপ হলে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় ২০১৪ সালের ৭ আগস্ট ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে নির্যাতন এবং হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে ইশতিয়াকের ভাই ইমতিয়াজ তৎকালীন পল্লবী থানার এসআই জাহিদুরসহ আটজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। আদালত বিচার বিভাগীয় তদন্তের আদেশ দেন।

বিচার বিভাগীয় তদন্ত শেষে ২০১৫ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়। সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে প্রতিবেদনে পাঁচজনকে অভিযুক্ত এবং পাঁচজনকে অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়। তদন্তকালে এএসআই রাশেদুল ও কামরুজ্জামানকে মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

মামলায় ২০১৬ সালের ১৭ এপ্রিল ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালত পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • হেফাজতে মৃত্যু: এক আসামির যাবজ্জীবন, একজনের ১০ বছর কারাদণ্ড, আরেকজন খালাস
  • সংরক্ষিত বনাঞ্চল ও সন্নিকটের নয়টি বালুমহালের ইজারা কার্যক্রম স্থগিত
  • কুমিল্লায় সাবেক বিএনপি নেতাকে আইনজীবী হত্যা মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন
  • নিজেকে ড. ইউনূস ও হাসিনার দ্বন্দ্বের বলির পাঠা বলে দাবি করলেন টিউলিপ
  • এনবিআর বিলুপ্ত করে দুটি বিভাগ করার অধ্যাদেশের বৈধতা নিয়ে রিট খারিজ
  • দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আসামিদের আপিলের ওপর রায় প্রদান শুরু
  • সুনামগঞ্জে সড়কের নিরাপত্তা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস জেলা সদরে স্থাপনের দাবিতে মানববন্ধন
  • আইনজীবী আজাদ হত্যা: সাবেক এমপি বাহারের বিরুদ্ধে চার্জশিট
  • চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যা মামলার অভিযোগপত্র নিয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আপত্তি, শুনানি ২৫ আগস্ট
  • খুলনায় আইনজীবীর বিরুদ্ধে সম্পত্তি দখলের অভিযোগ ভাতিজার