রাজশাহীতে ওসির বিচারের দাবিতে আইনজীবীদের মানববন্ধন
Published: 12th, May 2025 GMT
রাজশাহী নগরের চন্দ্রিমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মতিয়ার রহমানের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছেন আইনজীবীরা। সোমবার (১২ মে) সকালে রাজশাহী আদালতের সামনে মানববন্ধন করেন তারা।
এ সময় আইনজীবীরা চন্দ্রিমা থানার ওসি মতিয়ার রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করার দাবি জানান। এছাড়া তদন্ত সাপেক্ষে তাকে স্থায়ীভাবে চাকরি থেকে বরখাস্ত এবং তার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার দ্রুত তদন্ত শেষ করে বিচারের মুখোমুখি করারও দাবি জানান আইনজীবীরা।
মানববন্ধনে আইনজীবীরা ওসি মতিয়ারের ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘‘তার ক্ষমতার উৎস কী? কার ক্ষমতার বলে তিনি এত অন্যায়-অবিচার করার পরও এখন পর্যন্ত টিকে আছেন?’’
আরো পড়ুন:
হাসনাতের ওপর হামলায় বিএনপি নেতা আসামি, প্রতিবাদে মানববন্ধন
পাবনায় গ্রাহকদের সাড়ে ৭ কোটি টাকা নিয়ে উধাও এনজিও
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন রাজশাহী অ্যাডভোকেট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আবুল কাশেম, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী লিয়াকত আলী, আব্দুর রশিদ বাবু, হযরত আলী, ফিরোজ আলী প্রমুখ।
এর আগে সম্প্রতি ওসি মতিয়ার রহমান থানায় যাওয়া আইনজীবীদের নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেন বলে অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে গত ৮ মে আইনজীবী আব্দুর রশিদ বাবু ওসির বিরুদ্ধে মানহানি ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগে আদালতে মামলা করেন।
আইনজীবীদের অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে চন্দ্রিমা থানার ওসি মতিয়ার রহমান বলেন, ‘‘আমি জানি না যে আমার বিরুদ্ধে মানববন্ধন হয়েছে। আমি শুনেছিলাম যে মানববন্ধন হবে।’’
রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) মোহাম্মদ রকিবুল হাসান ইবনে রহমান বলেন, ‘‘এ ধরনের অভিযোগ আসলে গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হবে।’’
ঢাকা/কেয়া/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আইনজ ব আইনজ ব র মত য় র র
এছাড়াও পড়ুন:
মাগুরার আলোচিত শিশু ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় যুক্তিতর্ক উপস্থাপন
মাগুরার আলোচিত সেই শিশু ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় আদালতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন হয়েছে। আজ সোমবার অনুষ্ঠিত এ শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের আইনজীবীরা অংশ নেন। দুপুর ১২টার দিকে মাগুরা জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম জাহিদ হাসানের আদালতে এ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়। মঙ্গলবার আবারও এ মামলায় যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করবেন আইনজীবীরা।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) মনিরুল ইসলাম মুকুল সাংবাদিকদের জানান, এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ ২৯ জন সাক্ষী উপস্থাপন করেছে। আদালত ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৪২ ধারায় আসামিদের শনাক্ত করা ও তাঁদের বক্তব্য শুনেছেন। এখন যুক্তিতর্ক চলছে। আগামীকালও যুক্তিতর্ক হবে। এরপর রায় ঘোষণার তারিখ জানাবেন আদালত। আসামির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিসহ যেসব প্রমাণ রয়েছে, তাতে আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি হবে বলে আশা করা যায়।
অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী সোহেল আহম্মেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘যুক্তিতর্কে আমি অংশ নিয়েছি। মামলায় সকল সাক্ষী বলেছেন তাঁরা শুনেছেন। কেউই এই ঘটনা দেখেননি। বিষয়গুলো আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে।’
আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত ২৭ এপ্রিল মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। ছুটির দিন বাদে টানা শুনানি চলছে। আদালতে আসামিদের উপস্থিতিতে এ শুনানি হয়। মামলায় শিশুটির বোনের শ্বশুরকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯/২ ধারায় (ধর্ষণের ফলে মৃত্যুর অপরাধ), শিশুটির বোনের স্বামী ও ভাশুরকে দণ্ডবিধির ৫০৬ ধারার দ্বিতীয় অংশ (ভয়ভীতি প্রদর্শন) এবং বোনের শাশুড়ির বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ২০১ ধারায় (অপরাধের আলামত নষ্টের অভিযোগ) অভিযোগ গঠন করা হয়েছে।
গত ১৩ এপ্রিল মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও মাগুরা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আলাউদ্দিন আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। পরে ১৭ এপ্রিল মামলাটি চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয় এবং ২০ এপ্রিল অভিযোগপত্র গ্রহণ করা হয়। এর আগে গত ১৫ মার্চ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সব্যসাচী রায়ের আদালতে শিশুটির বোনের শ্বশুর ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তিনি বলেন, ৬ মার্চ সকালে বোনের স্বামীর কক্ষে শিশুটিকে একা পেয়ে ধর্ষণ ও হত্যার চেষ্টা করেন।
মামলার এজাহার ও অভিযোগপত্র বিশ্লেষণ করে জানা যায়, আসামির জবানবন্দির সঙ্গে বাদীর এজাহারে কিছু অমিল আছে। এজাহারে বলা হয়েছে, ঘটনা ঘটেছিল ৫ তারিখ (মার্চ) দিবাগত রাতে এবং শিশুটির বোনের স্বামী ঘরের দরজা খুলে দেওয়ার পর তাঁর বাবা শিশুটিকে বাইরে নিয়ে ধর্ষণ করেন। অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ঘটনা ঘটেছে ৬ মার্চ সকালে শিশুটির বোনের কক্ষে। এ সময় শিশুটির বোন ওই বাড়ির মধ্যে ছিলেন।
শিশুটি বড় বোনের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিল। ৬ মার্চ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তাকে অচেতন অবস্থায় মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে ১৩ মার্চ ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটির মৃত্যু হয়। এর আগে ৮ মার্চ শিশুটির মা মাগুরা সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা করেন।