কোচ হিসেবে রিয়ালে ফিরলেন জাবি আলোনসো
Published: 12th, May 2025 GMT
স্প্যানিশ ফুটবলের ইতিহাসে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় রচিত হতে যাচ্ছে। রিয়াল মাদ্রিদ তাদের প্রিয় সাবেক মিডফিল্ডার জাবি আলোনসোকে প্রধান কোচ হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে। আগামী মৌসুমের আগেই ক্লাব বিশ্বকাপ থেকে নতুন দায়িত্বে দেখা যাবে তাকে।
কয়েক সপ্তাহ ধরেই চলছিল গুঞ্জন—আসছে মৌসুমে রিয়ালের ডাগআউটে দেখা যেতে পারে আলোনসোকে। এবার সেই জল্পনার অবসান ঘটিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে তাকে ক্লাবের প্রধান কোচের দায়িত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ‘লস ব্লাঙ্কোস’। বিশ্বস্ত ফুটবল সাংবাদিক ফ্যাব্রিজিও রোমানোর ঘোষণায় বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়, যিনি নিজের সিগনেচার বাক্য ‘হেয়ার উই গো’ দিয়ে আলোনসোর ফেরার খবর নিশ্চিত করেন।
তিন বছরের একটি চুক্তিতে স্প্যানিশ এই কিংবদন্তিকে দলে ভেড়ানো হয়েছে। শুধু খেলোয়াড় হিসেবেই নয়, কোচ হিসেবেও তিনি নিজেকে প্রমাণ করেছেন। বায়ার লেভারকুসেনের কোচ হিসেবে তার সময়টা ছিল অনন্য। জার্মান ক্লাবটিকে তিনি এনে দিয়েছেন বুন্দেসলিগা ও ডিএফবি পোকাল শিরোপা এবং তা একেবারে অপরাজিত মৌসুম শেষে। যদিও ইউরোপা লিগের ফাইনালে হোঁচট খেতে হয়েছিল তাদের।
আরো পড়ুন:
৭ গোলের এল ক্লাসিকো জিতে শিরোপার দুয়ারে বার্সা
ঘাম ঝরানো জয়ে টিকে রইলো রিয়াল
আলোনসোর আগমন নিয়ে কিছুটা দ্বিধা থাকলেও রিয়াল শেষপর্যন্ত আনুষ্ঠানিকতা দ্রুত সেরে ফেলেছে। শুরুতে ধারণা করা হচ্ছিল, ক্লাব বিশ্বকাপ পর্যন্ত কোনো অন্তর্বর্তী কোচকেই দায়িত্বে রাখা হতে পারে অথবা বর্তমান কোচ কার্লো আনচেলত্তিকে সাময়িক সময়ের জন্য ধরে রাখা হবে। কিন্তু এসব সম্ভাবনার অবসান ঘটিয়ে রিয়াল নতুন ভবিষ্যতের পথে পা বাড়াল।
রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে খেলা আলোনসোর ফিরে আসাটা অনেকটাই ‘ঘরের ছেলের ঘরে ফেরা’। তার সহকারী স্টাফ এবং অন্যান্য প্রশাসনিক বিষয়গুলোও ইতিমধ্যে চূড়ান্ত হয়েছে। এখন শুধু অপেক্ষা—মাঠে আলোনসোর কৌশলে আবার কেমন জাদু ছড়ায় কিংবদন্তিদের ক্লাবটি।
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে মারাত্মক সংকটে তিস্তা নদী
আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। আর প্রস্তাবিত তিস্তা প্রকল্প নিয়েও কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না।
রোববার রাজধানীর প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশে (পিআইবি) ‘সংকটে তিস্তা নদী: সমাধানের পথ কী?’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ কথা বলেন। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক (বেন) যৌথভাবে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।
মতবিনিময় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাপার সহসভাপতি অধ্যাপক মো. খালেকুজ্জমান। প্রবন্ধে তিনি উল্লেখ করেন, ভারতের সঙ্গে কোনো পানিবণ্টন চুক্তি না থাকায় এবং আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে আর বর্ষাকালে নিয়ন্ত্রণহীন পানিনির্গমনের ফলে বাংলাদেশ অংশে বন্যা ও ভাঙনের ঝুঁকি বাড়ছে।
মতবিনিময় সভায় বিশেষজ্ঞরা তিস্তা সমস্যার সমাধানে ভারতের সঙ্গে গঠনমূলক সম্পৃক্ততা, আন্তর্জাতিক আইনের প্রয়োগ এবং প্রকল্পে স্থানীয় জনগণের মতামত গ্রহণের ওপর জোর দেন। তাঁরা তিস্তা মহাপরিকল্পনা সম্পর্কে স্বচ্ছতা ও পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানান।
অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘সরকারের কাছে তিস্তা মহাপরিকল্পনার কোনো তথ্য নেই। বিগত বছরগুলোতে উন্নয়নের নামে দেশের নদীগুলোকে সংকুচিত করা হয়েছে। আমরা আর সংকুচিত করার উন্নয়ন চাই না। নদীকে নদীর মতোই রাখতে হবে।’
আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, দেশের উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে ব্যক্তিস্বার্থকে উপেক্ষা করে দেশের স্বার্থকে বড় করে দেখতে হবে। যেসব প্রকল্প দীর্ঘমেয়াদি, সেসব প্রকল্প গ্রহণের আগে অবশ্যই জনগণের মতামত নিতে হবে।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব সামর্থ্য অনুযায়ী প্রকল্প নেওয়া উচিত। নদীকে রক্ষা করতে হবে কিন্তু তাকে খালে পরিণত করে নয়। এই প্রকল্প পুনর্মূল্যায়ন করা প্রয়োজন।
বাপার প্রতিষ্ঠাতা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বাপা কখনো উন্নয়নবিরোধী নয়। আমরাও চাই দেশের উন্নয়ন হোক। কিন্তু সেই উন্নয়ন হতে হবে দেশের প্রাণপ্রকৃতি, পরিবেশ ও নদীকে ঠিক রেখে। তিস্তা প্রকল্প নিয়ে কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না। সরকার ও বিরোধী দল উভয়ই চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে সংবেদনশীল হওয়ায় এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে।’
বাপার সভাপতি অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবিরের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, পরিবেশবিদ, গবেষক ও তিস্তাপাড়ের বাসিন্দারা অংশ নেন।