আমরা আমাদের জমির যেকোনো স্থানে বৃক্ষ রোপণ করতে পারি, তাতে কারও কোনো সমস্যা থাকার কথা নয়। কিন্তু জমির সীমানা ঘেঁষে রোপণ করা বৃক্ষটি যখন বড় ও মোটাকৃতির হয়ে ওঠে, তখন আমাদের প্রতিবেশীকে নানামুখী সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। যেমন বৃক্ষ বৃহদাকার হওয়ার কারণে প্রতিবেশীর দেয়াল ফেটে যায়, বৃক্ষের ফুল-ফল-পাতা প্রতিবেশীর বাড়ির উঠানে ঝরে পড়ে আঙিনা নোংরা হয়।
বিশেষ করে ঝড়বৃষ্টির দিন প্রতিবেশীর ঘরের ওপর গোটা বৃক্ষ ভেঙে পড়েছে বা বৃক্ষের মোটা ডাল ভেঙে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেছে—এমন সংবাদ নতুন নয়। তবু আমরা বৃক্ষ রোপণ করার সময় প্রতিবেশীর দুর্ভোগের কথা একেবারেই ভাবি না; বরং নিজের খেয়ালখুশিমতো নির্বাচিত স্থানে বৃক্ষ রোপণ করে থাকি।
বৃক্ষ রোপণের ক্ষেত্রে ভবিষ্যতের কথা ভেবে যথোপযুক্ত স্থান নির্বাচন করতে হবে এবং প্রতিবেশীর কোল ঘেঁষে বৃক্ষ রোপণ না করে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখার ব্যাপারে সবাইকে সচেতন হতে হবে।
হাসিবুল হাসান ভূঁইয়া
শিক্ষার্থী, ওয়ালী নেওয়াজ খান কলেজ, কিশোরগঞ্জ
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শনের ক্ষেত্রে শর্ত যোগ করার প্রস্তাব জামায়াতের
দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে রাষ্ট্রপতির ক্ষমার ক্ষেত্রে শর্ত যোগ করার প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় এ প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলে জানান দলটির নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংস্কার প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় ধাপের নবম দিনের আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা শেষে আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা আজ নতুন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যোগ করেছি। যদি কোনো ব্যক্তিগত অপরাধ, যেমন হত্যাকাণ্ড ঘটে এবং দোষী ব্যক্তিকে দণ্ড দেওয়া হয়, তাহলে ভুক্তভোগী পরিবারের সম্মতি ছাড়া রাষ্ট্রপতি বা কমিটি এককভাবে সেই সাজা মাফ করতে পারবেন না। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার সম্মতি দিলে, তবেই ক্ষমা বিবেচনায় আসবে। এতে ইনসাফ (ন্যায়বিচার) নিশ্চিত হবে।’
ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শনের ক্ষেত্রে বিচারপ্রার্থীর পরিবার বা ভুক্তভোগীর সম্মতি ছাড়া কাউকে ক্ষমা না করার নীতিতে রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়েছে বলেও জানান জামায়াতের এই নায়েবে আমির।
অতীতে রাষ্ট্রপতির একক সিদ্ধান্তে চিহ্নিত অপরাধীদের ক্ষমা করার ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করে জামায়াতের এই নেতা বলেন, এটা ছিল ন্যায়বিচারের পরিপন্থী। তিনি বলেন, সেই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবারের প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শনের আগে একটি সুপারিশ কমিটি গঠন করা হবে। এ কমিটি নির্দিষ্ট মানদণ্ড অনুযায়ী রাষ্ট্রপতিকে ক্ষমার বিষয়ে পরামর্শ দেবে।
হাইকোর্টের বিকেন্দ্রীকরণ নিয়েও ব্যাপক আলোচনা হয় বলে জানান আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। তিনি বলেন, ২০ কোটি মানুষের দেশে সবাই ঢাকায় এসে বিচার পাওয়ার সুযোগ রাখে না। তাই বিভাগীয় শহরে হাইকোর্ট বেঞ্চ স্থাপন সময়ের দাবি। এর মাধ্যমে বিচারসেবা মানুষের আরও কাছাকাছি পৌঁছাবে।
জামায়াতের এই নায়েবে আমির বলেন, বিচারপতি ও দক্ষ আইনজীবীর ঘাটতির কথা এলেও প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, মেধাবী ব্যক্তিদের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ, প্রশিক্ষণ ও প্রয়োজনীয় বাজেট বরাদ্দের মাধ্যমে এ ঘাটতি পূরণ সম্ভব।
আর সংবিধানে একটি একক সুপ্রিম কোর্ট রাখার বিষয়টি অপরিবর্তিত রেখে বিভাগীয় শহরে হাইকোর্ট বেঞ্চ স্থাপনের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এখন স্পষ্ট ঐকমত্য তৈরি হয়েছে বলেও জানান আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আজকের আলোচনায় বিএনপিসহ ৩০টি রাজনৈতিক দল অংশ নেয়। কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজের সভাপতিত্বে কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, বদিউল আলম মজুমদার ও মো. আইয়ুব মিয়া এতে উপস্থিত ছিলেন। আলোচনা সঞ্চালনা করেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (জাতীয় ঐকমত্য কমিশন) মনির হায়দার।