বিশ্ববিখ্যাত ফরাসি অভিনেত্রী জুলিয়েট বিঞ্চ এবারের ৭৮তম কান চলচ্চিত্র উৎসব ২০২৫-এ জুরি সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন।   এর আগে ২০১০ সালে আব্বাস কিয়ারোস্তামির Copie conforme ছবিতে অনবদ্য অভিনয়ের জন্য এই উৎসবেই সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পেয়েছিলেন তিনি। 

 উৎসবে অংশ নিতে গত ১২ মে উৎসব শহর লা ক্রোয়াজ়েতে পা রাখেন বিঞ্চ।  সেখানে ফ্রান্স ইন্টারকে সাক্ষাৎকার দেন তিনি। সেখানেই  এউ উৎসব ও ক্যারিয়ারের নানা প্রসঙ্গ নিয়ে আলাপ করেন তিনি।  সাক্ষাৎকারের প্রথমেই তিনি বলেন, আমি যেন এখানেই জন্মেছিলাম। চলচ্চিত্র নিয়েই জন্মেছিলাম। তবে  সাংবাদিকরাই আমাকে এখানে আজকের এই অবস্থানে তুলে এনেছিল।”

 ৪০ বছরের স্মৃতি রোমন্থন করতে গিয়ে জুলিয়েট বিঞ্চ বলেন ১৯৮৫ সালে মাত্র ২১ বছর বয়সে, Rendez-vous ছবির জন্য প্রথমবার কানের মঞ্চে পা রেখেছিলাম। তখন মানুষের ভালোবাসা পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা ছিল প্রবল। আমি জানতাম না কোথায় যাচ্ছি, কী হবে। তবু ‘হ্যাঁ’ বলেছিলাম জীবনের সব ডাককে। ভয় নয়, এমন জায়গায় উপস্থিত থাকার প্রবল ইচ্ছা কাজ করেছিল।  প্রশ্নের উত্তর দেওয়া, ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানো, নিজেকে সাহসের সঙ্গে তুলে ধরার প্রবল চেষ্টা ছিল আমার মাঝে।


জুরি সভাপতির ভূমিকায় তিনি পরিস্কার জানিয়ে দেন — কোন ছবি পুরস্কার পাবে, সেই প্রশ্ন তাঁকে খুব একটা ভাবায় না। তার ভাষ্য, এটা নির্ধারণমূলক হলেও এক অর্থে স্বেচ্ছাচারী সিদ্ধান্ত। আমি মনে করি, আমি বা আমরা ইতিহাস নয়, সিনেমার বর্তমান সময়ের জন্য কাজ করছি।”

তিনি আরও বলেন, “জুরিতে আমার কণ্ঠ শুধু একটি সিদ্ধান্ত সম্মিলিত।”

জুলিয়েট বিঞ্চ ২০২৪ সালেপাম দ’অর সম্মাননা তুলে দেন মেরিল স্ট্রিপের হাতে। সে মুহূর্তে আবেগ ধরে রাখতে পারেননি, কেঁদে ফেলেছিলেন। বিষয়টি সামনে এনে তিনি বলেন, তিনি নারীদের জন্য অনেক কিছু করেছেন। যখন তিনি ক্যারিয়ার শুরু করেন, তখনকার সৌন্দর্যের প্রচলিত ধারণার মধ্যে তিনি পড়তেন না। তবু তিনি সব বদলে দেন। তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন, একজন অভিনেত্রীর বার্বি ডলের মতো চেহারা না হলেও তার শিল্পে কোনো ঘাটতি নেই।”

একজন অভিনেত্রীকে সকল প্রশ্নের ও অবহেলার প্রতিশোধ তার কাজ দিয়েও দিতে হয়। বিশেষ কর মিটু আন্দোল নিয়েও সরব তিনি। তার ভাষ্য, নারীরা কী বলছেন, সেটা শুধু মুখে নয় — তাদের অভিনীত চরিত্রগুলোর ভেতরেও খুঁজে পাওয়া যায়।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ক ন চলচ চ ত র উৎসব র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

রবীন্দ্রসরোবরে সুরে–ছন্দে জমজমাট নবান্ন উৎসব

অগ্রহায়ণের প্রথম দিনে নবান্ন উৎসব হলো রাজধানীতে। নাচ, গান, আবৃত্তি, আলোচনায় রোববার ধানমন্ডির রবীন্দ্রসরোবর উন্মুক্ত মঞ্চে উদ্‌যাপন করা হলো ঋতুভিত্তিক এই ঐতিহ্যবাহী উৎসব।

হেমন্তের বেলা শেষে ষড়ঋতু উদ্‌যাপন জাতীয় পর্ষদ আয়োজিত নবান্ন উৎসবের কার্যক্রম শুরু হয়েছিল সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে। এরপর ছিল ফারহানা করিমের নেতৃত্বে সমবেত নৃত্য।

নবান্নকথনে অংশ নেন আয়োজক সংগঠনের সভাপতি এহসান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘আবহমানকাল থেকে আমাদের কৃষিপ্রধান দেশে অগ্রহায়ণে কৃষকের ঘরে নতুন ফসল ওঠে। নতুন ধান তাঁদের জীবনে নিয়ে আসে সচ্ছলতা। নিয়ে আসে আনন্দ। তবে নবান্ন কেবল ফসলের আনন্দই নয়, আমাদের লোকসংস্কৃতির একটি শক্তিশালী উপাদান। নাগরিক পরিবেশে ঋতুভিত্তিক এই উৎসবকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে নবান্ন উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় বসন্ত, বর্ষা, শরৎসহ ঋতুভিত্তিক উৎসবগুলো আয়োজন করা হবে।’

নবান্ন উৎসব উপলক্ষে রবীন্দ্রসরোবর মঞ্চ ও মঞ্চের চারপাশের স্থান বর্ণাঢ্যভাবে সাজিয়ে তোলা হয়। এর সঙ্গে ছিল ঐতিহ্যবাহী পিঠাপুলির স্টল।

আলোচনার পরে শুরু হয় গানের পালা। সাগর বাউল শুরু করেছিলেন ভবা পাগলার গান ‘বারে বারে আসা হবে না’ গেয়ে। এরপর তিনি পরিবেশন করেন লালন সাঁইয়ের গান ‘লোকে বলে লালন ফকির কোন জাতের ছেলে’ এবং রাধারমণ দত্তের গান ‘অবলারে কান্দাইয়া’। ঢোল, একতারার বাজনা, বাঁশির সুর আর লোকসাধকদের এসব মরমি গানে গানে সাগর বাউল শ্রোতাদের মাতিয়ে তোলেন।

অনুষ্ঠানে নজরুলসংগীত পরিবেশনের কথা ছিল শিল্পী ফেরদৌস আরার। তবে তিনি অসুস্থতার জন্য সংগীত পরিবেশন করতে পারেননি। এই চমৎকার অনুষ্ঠানের জন্য আয়োজকদের ধন্যবাদ ও শ্রোতাদের শুভেচ্ছা জানান।

লোকশিল্পী আলেয়া বেগম পরিবেশন করেন ‘মালা কার লাগিয়া গাঁথি’সহ বেশ কয়েকটি গান। গানের ফাঁকে ফাঁকে ছিল আবৃত্তি ও কবিদের কবিতা পাঠ। এই পর্বে অংশ নেন কবি রাসেল রায়হান, রিক্তা রিনি, সানাউল্লাহ সাগর, জব্বার আল নাইম, ইসমত শিল্পীসহ অনেকে।

সংগীতশিল্পীদের মধ্যে কোহিনূর আক্তার পরিবেশন করেন লালন সাঁইয়ের গান ‘তিন পাগলের হইল মেলা’। ডলি মণ্ডল পরিবেশন করেন ‘সব লোক কয় লালন কী জাত সংসারে’। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ষড়ঋতু উদ্‌যাপন জাতীয় পর্ষদের সদস্যসচিব দীপান্ত রায়হান।

শীতের মৃদু পরশ লেগেছে রাজধানীর হাওয়ায়। হালকা কুয়াশাও জমছে আকাশে। নাতিশীতোষ্ণ পরিবেশে সুরে-ছন্দে বেশ খানিকটা রাত অবধি জমজমাট হয়ে উঠেছিল এই নাগরিক নবান্ন উৎসব।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জানা গেল রাজামৌলির ছবির নাম, থাকছেন মহেশ বাবু-প্রিয়াঙ্কা
  • দেশের প্রথম নারী এভারেস্টজয়ী নিশাত মজুমদারের জয়ের গল্প আসছে
  • নানা আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘আদি নববর্ষ’ উদ্‌যাপন
  • মুগ্ধ করল নবান্ন উৎসবে ধান কাটার প্রতিযোগিতা
  • রবীন্দ্রসরোবরে সুরে–ছন্দে জমজমাট নবান্ন উৎসব
  • নবান্নের পিঠায় সুবাসিত রাবি
  • ঘূর্ণির জাদুতে বিশ্বজয় 
  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তারুণ্যের উৎসব রোববার
  • পয়লা অগ্রহায়ণে ‘নববর্ষ’ উদ্‌যাপন করবে ডাকসু
  • দিনভর আনন্দ আয়োজনে সাফল্য উদ্‌যাপন