চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) বহুল প্রতীক্ষিত পঞ্চম সমাবর্তন আগামীকাল বুধবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে সমাবর্তনের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
দীর্ঘ ৯ বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এ সমাবর্তনে অংশ নেবেন প্রায় ২৩ হাজার গ্র্যাজুয়েট। সমাবর্তনে অংশ নিতে একদিন আগেই ক্যাম্পাসে চলে এসেছেন অধিকাংশ গ্র্যাজুয়েট। এই সমাবর্তন বিশ্বের একক কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে বড় সমাবর্তন হিসেবে দাবি করছেন চবিয়ানরা। তবে এ দাবির পরিপ্রেক্ষিতে কোনো তথ্যসূত্র জানাতে পারেননি তারা।
জানা গেছে, প্রতি বছর সমাবর্তন হওয়ার কথা থাকলেও প্রতিষ্ঠার ৫৯ বছরে চবিতে মাত্র চারবার অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনেকদিন পর হওয়ায় এবারের সমাবর্তনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীর সংখ্যাও বেশি। অনুষদভিত্তিক অংশগ্রহণের দিক থেকে শীর্ষে রয়েছে কলা ও মানববিদ্যা অনুষদ। এই অনুষদের ৪ হাজার ৯৮৭ জন গ্র্যাজুয়েট সমাবর্তনে অংশ নেবেন।
আরো পড়ুন:
চবির সমাবর্তন বুধবার, সনদ পাবেন ২৩ হাজার শিক্ষার্থী
চবিতে পরীক্ষামূলকভাবে চালু হচ্ছে ই-কার সেবা
এছাড়া ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ৪ হাজার ৫৯৬ জন, সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ৪ হাজার ১৫৮ জন ও বিজ্ঞান অনুষদের ২ হাজার ৭৬৭ জন গ্র্যাজুয়েট সমাবর্তনে অংশে নেবেন। শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অতিথিসহ প্রায় ২৫ হাজার মানুষের জন্য প্রস্তুত হয়েছে সমাবর্তন প্যান্ডেল।
আগামীকাল বুধবার (১৪ মে) দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে অনুষ্ঠিত হবে সমাবর্তনের মূল অনুষ্ঠান। সমাবর্তনে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেলজয়ী অধ্যাপক ও চবির সাবেক শিক্ষক ড.
পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান ও শিক্ষা উপদেষ্টা অংশগ্রহণ করবেন। এ সুবিশাল আয়োজনে সভাপতিত্ব করবেন চবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার।
অংশগ্রহণকারীদের যা জানা প্রয়োজন
অংশগ্রহণকারী গ্র্যাজুয়েটরা সোমবার ও মঙ্গলবার (১২ ও ১৩ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিস চলাকালে (সকাল ৯টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত) সমাবর্তনের গাউন সংগ্রহ করতে পারবেন। সমাবর্তনের দিন সকাল ৭টা থেকে বাকি গাউন দেওয়া হবে।
বুধবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১২টার মধ্যে বিভিন্ন বিভাগ ও ইন্সটিটিউট থেকে সমাবর্তনে অংশগ্রহণকারীরা খাবার সংগ্রহ করবেন। তাদের প্রত্যেককে ব্যাগ, স্মরণিকা, কলম, পিন, মোবাইল ওয়ালেট দেওয়া হবে।
সমাবর্তন অনুষ্ঠান শেষে বিকাল সাড়ে ৪টা থেকে রাত সাড়ে ১০টার মধ্যে সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও ইন্সটিটিউট বুথে গাউন ফেরত দিয়ে মূল সনদ ও উপহার সামগ্রী সংগ্রহ করা যাবে।
সমাবর্তনের দিন নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স (এসএসএফ)। শিক্ষার্থীদের সিঙ্গেল লাইনে সমাবর্তনস্থলে প্রবেশ করতে হবে এবং দুপুর ১টার পর কাউকে ঢুকতে দেওয়া হবে না। অতিথি বাদে কোনো ধরনের ব্যক্তিগত গাড়ি ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারবে না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নম্বর ফটকে থাকবে পার্কিং ও বাস ট্রান্সফারের ব্যবস্থা। যাতায়াতের জন্য শহরের বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে ছাড়বে ১০০টি বিশেষ বাস এবং চলবে চারটি বিশেষ শাটল ট্রেন। ক্যাম্পাসে অভ্যন্তরীণ চলাচলের জন্য থাকবে শাটল বাস সার্ভিস।
অনুষ্ঠান সূচি
অনুষ্ঠান শুরু হবে দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে অতিথিদের আসন গ্রহণের মাধ্যমে। এরপর ১টা ৪৫ মিনিটে অনুষ্ঠিত হবে সমাবর্তন শোভাযাত্রা। বিকেল ২টা থেকে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হবে এবং ২টা ৫ মিনিটে পবিত্র ধর্মগ্রন্থসমূহ থেকে পাঠ করা হবে। ২টা ১৫ মিনিটে সমাবর্তনের সভাপতি ও উপাচার্য সমাবর্তনের উদ্বোধন ঘোষণা করবেন। পরবর্তী সময়ে ২টা ১৬ মিনিটে উপ-উপাচার্য (অ্যাকাডেমিক) স্বাগত বক্তব্য প্রদান করবেন।
এরপর বিকেল ২টা ২০ মিনিটে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ডি.লিট ডিগ্রি প্রদান করা হবে এবং ২টা ৩০ মিনিটে উপাচার্য বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীদের ডিগ্রি প্রদান করবেন। ৩টা থেকে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করবেন। এরপর যথাক্রমে ইউজিসি চেয়ারম্যান (৩টা ৫ মিনিট), শিক্ষা উপদেষ্টা (৩টা ১০ মিনিট) এবং সমাবর্তন বক্তা (৩টা ১৫ মিনিট) বক্তব্য প্রদান করবেন।
বিকেল ৩টা ৪০ মিনিটে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হবে। এরপর ৩টা ৫০ মিনিটে সভাপতি তার বক্তব্য প্রদান করে সমাবর্তন অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করবেন। অনুষ্ঠান শেষ হবে ৪টা থেকে জাতীয় সংগীত পরিবেশন ও ৪টা ১ মিনিটে সমাবর্তন বক্তার প্রস্থান করার মাধ্যমে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তুতি
সমাবর্তন উপলক্ষে খরচ হবে প্রায় ১৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে সাড়ে ৬ কোটি টাকা এসেছে শিক্ষার্থীদের নিবন্ধন ফি থেকে। বাকি টাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ইউজিসি ও স্পন্সরদের থেকে নেওয়া হবে। সমাবর্তন অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচার করবে বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি)। যারা মূল অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পারবেন না, তাদের জন্য ক্যাম্পাসে শহীদ মিনার, জারুলতলা, সায়েন্স ফ্যাকাল্টি চত্বরসহ পাঁচটি স্থানে থাকবে এলইডি স্ক্রিনে সরাসরি সম্প্রচারের ব্যবস্থা।
এরইমধ্যে সমাবর্তন উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় সাজছে নতুন করে। পুরো ক্যাম্পাস কে ঢেলে সাজানো হয়েছে। পরিচ্ছন্নতার আওতায় আনা হয়েছে রাস্তাঘাট, ক্যান্টিন, হল ও ফ্যাকাল্টি। বিভিন্ন আলপনা ও রঙ দিয়ে সাজানো হয়েছে সবকিছু।
সমাবর্তন উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক ড. মো. এনায়েত উল্যা পাটওয়ারী বলেন, “একক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে এটি দেশের সবচেয়ে বড় সমাবর্তন। সবাই নিয়মতান্ত্রিকভাবে এতে অংশ নিবেন, এটাই প্রত্যাশা। এছাড়া জরুরি নির্দেশনাগুলো সমাবর্তনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে দেওয়া হবে। সেখান থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য পেয়ে পাবেন সমাবর্তী শিক্ষার্থীরা।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, “৫৮ বছরের ইতিহাসে মাত্র চারটি সমাবর্তন হয়েছে। এবার আমরা ইতিহাস গড়তে যাচ্ছি। একই সমাবেশস্থলে এত শিক্ষার্থীদের একসঙ্গে সমাবর্তন বিশ্বের ইতিহাসে এটিই হবে প্রথম।”
ঢাকা/মিজান/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপ চ র য অন ষ ঠ ত অন ষ ঠ ন র জন য ন অন ষ
এছাড়াও পড়ুন:
ভারতের বিষ্ণোই গ্যাংকে কেন কানাডায় ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ ঘোষণা করা হলো
ভারতের সংঘবদ্ধ অপরাধে জড়িত কুখ্যাত বিষ্ণোই গ্যাংকে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ ঘোষণা করেছে কানাডা। গত সোমবার দেশটির জননিরাপত্তামন্ত্রী গ্যারি আনন্দাসাঙ্গারি এ ঘোষণা দেন।
এই ঘোষণার ফলে দেশটির কর্তৃপক্ষ এখন বিষ্ণোই গ্যাংয়ের সম্পদ জব্দ, তহবিল বন্ধ এবং সদস্যদের বিরুদ্ধে ‘সন্ত্রাসবিরোধী’ আইনের আওতায় মামলা চালাতে পারবে। ঘোষণায় গ্যারি আনন্দাসাঙ্গারি বলেছেন, বিষ্ণোই গ্যাং কানাডায় ভারতীয় প্রবাসী সম্প্রদায়ের মধ্যে ভীতি ছড়িয়েছে এবং সহিংসতার মাধ্যমে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করেছে।
আনন্দাসাঙ্গারি বলেন, ‘বিষ্ণোই গ্যাং নির্দিষ্ট সম্প্রদায়কে সন্ত্রাস, সহিংসতা আর ভয়ভীতি প্রদর্শনের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে। এ গোষ্ঠীকে অপরাধী সন্ত্রাসী হিসেবে তালিকাভুক্ত করায় আমরা আরও কার্যকর হাতিয়ার পাচ্ছি, যা দিয়ে তাদের অপরাধ বন্ধ করা সম্ভব হবে।’
অটোয়া জোর দিয়ে বলছে, কানাডায় সহিংসতা ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপের কোনো স্থান নেই, বিশেষ করে যখন তা নির্দিষ্ট সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করে।
ভারতের কুখ্যাত গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোইর নেতৃত্বে পরিচালিত হয় এই বিষ্ণোই গ্যাং। কানাডার কর্মকর্তারা এই গ্যাংকে একটি আন্তদেশীয় অপরাধ চক্র হিসেবে বর্ণনা করেছেন। গ্যাংটির কার্যক্রম মূলত ভারতে হলেও কানাডায় তাদের উপস্থিতি আছে।
৩২ বছর বয়সী লরেন্স বিষ্ণোই এক দশক ধরে ভারতের কারাগারে আছেন। তবে অভিযোগ আছে, সেখান থেকেই তিনি শত শত সদস্যের নেটওয়ার্ক পরিচালনা করছেন। গ্যাংটির সদস্যরা মাদক পাচার, অস্ত্র চোরাচালান, চাঁদাবাজি ও নিশানাভিত্তিক হত্যাকাণ্ডে জড়িত।
কানাডার পুলিশ এর আগে অভিযোগ করেছিল, ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলো খালিস্তান আন্দোলনের সমর্থকদের হত্যাকাণ্ড ও সহিংস ভয়ভীতি দেখানোর জন্য বিষ্ণোইয়ের সহযোগীদের ব্যবহার করেছে। খালিস্তান আন্দোলন ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যে শিখ সংখ্যালঘুদের জন্য একটি স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের দাবি করে আসছে।
ভারত অবশ্য এসব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। নয়াদিল্লি বলছে, অটোয়া কোনো প্রমাণ দিচ্ছে না এবং বিষ্ণোই-সংশ্লিষ্ট অভিযুক্তদের প্রত্যর্পণের অনুরোধগুলো উপেক্ষা করছে।
কানাডার সরকার বলছে, ‘সন্ত্রাসী’ তালিকাভুক্ত করার ফলে গ্যাংয়ের সম্পদ ও অর্থ জব্দ করা ছাড়াও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো তাদের নিয়োগ, অর্থায়ন ও আন্তর্জাতিক ভ্রমণ কার্যক্রম ব্যাহত করার সুযোগ পাবে।
কানাডার বিরোধী দল এবং আলবার্টা ও ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার প্রাদেশিক সরকার বিষ্ণোই গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানাচ্ছিল। এ নিয়ে অটোয়ার ওপর রাজনৈতিক চাপও বাড়ছিল। কানাডায় বর্তমানে ৭ লাখ ৭০ হাজারের বেশি শিখ বসবাস করে, যা দেশটির মোট জনসংখ্যার প্রায় ২ শতাংশ।
‘ভারতের প্রতি কড়া বার্তা’
কানাডা ও ভারতের মধ্যে বিস্তৃত কূটনৈতিক টানাপোড়েনের প্রেক্ষাপটে বিষ্ণোই গ্যাংয়ের কুখ্যাতি বেড়ে যায়। ২০২৩ সালের জুনে ভ্যাঙ্কুভারের কাছে গুরুদুয়ারার বাইরে খালিস্তান আন্দোলনের কর্মী শিখ সম্প্রদায়ের হরদীপ সিং নিজ্জরকে হত্যার পর থেকে কানাডা-ভারতের কূটনৈতিক টানাপোড়েন আরও তীব্র হয়।
কানাডার অভিযোগ, ভারতীয় কর্মকর্তারা বিদেশে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকারের সমালোচকদের চুপ করাতে ‘লরেন্স বিষ্ণোইয়ের মতো অপরাধী সংগঠনকে’ ব্যবহার করছে। ভারত অবশ্য এ অভিযোগও প্রত্যাখ্যান করেছে।
নয়াদিল্লি বলছে, তারা বিষ্ণোই গ্যাংয়ের সদস্যদের বিষয়ে দুই ডজনের বেশি প্রত্যর্পণের অনুরোধ করেছে। কিন্তু অটোয়া তা উপেক্ষা করেছে এবং এখনো ভারতে অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের আশ্রয় দিয়ে যাচ্ছে।
তীব্র অচলাবস্থার মধ্যেও গত সপ্তাহে কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নির জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা নাতালি দ্রুইন বলেছেন, ভারতীয় কর্মকর্তারা চলমান তদন্তে সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এবং সীমান্তপারের দমননীতি থেকে বিরত থাকতে সম্মত হয়েছেন।
লরেন্স বিষ্ণোই কে
দ্য ইকোনমিক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ১৯৯৩ সালে ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যে লরেন্স বিষ্ণোইয়ের জন্ম। ২০১০ সাল পর্যন্ত তাঁর জীবন কেটেছে রাজ্যের আবোহার শহরে। এরপর তিনি ডিএভি কলেজে ভর্তি হতে চণ্ডিগড়ে পাড়ি জমান। ২০১১ সালে যোগ দেন পাঞ্জাব ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাস স্টুডেন্টস কাউন্সিলে। সেখানে তাঁর পরিচয় হয় ‘গ্যাংস্টার’ গোল্ডি ব্রারের সঙ্গে। এরপর ধীরে ধীরে অপরাধে জড়িয়ে পড়েন তিনি।
বিষ্ণোইয়ের বিরুদ্ধে দুই ডজনের বেশি ফৌজদারি মামলা রয়েছে। রয়েছে হত্যা ও চাঁদাবাজির অভিযোগ। যদিও এসব অভিযোগের কোনোটাই স্বীকার করেননি তিনি। ভারতজুড়ে তাঁর গ্যাংয়ে ৭০০ বন্দুকধারী রয়েছে বলে ধারণা করা হয়। নিজের গ্যাংয়ের এই সদস্যদের মাধ্যমে কারাগারে বসেও বাইরের অপরাধজগৎ নিয়ন্ত্রণ করেন তিনি।
২০১০ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে চণ্ডীগড়ে অপরাধ কর্মকাণ্ড শুরু করেন বিষ্ণোই। ২০১৩ সাল নাগাদ তিনি ত্রাস সৃষ্টিকারী এক চরিত্রে পরিণত হন। কয়েকটি হত্যার ঘটনার সঙ্গে তাঁর নাম জড়িয়ে পড়ে। পরে তাঁর গ্যাং মদ বেচাকেনা ও অস্ত্র চোরাচালানে অর্থ লগ্নি করা শুরু করেন। হত্যাকারীসহ ভয়ংকর সব অপরাধীকেও আশ্রয় ও সুরক্ষা দিয়ে আসছেন তাঁরা।
কারাগারে বিষ্ণোই
২০১৪ সালে রাজস্থান পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধ হয় লরেন্স বিষ্ণোইয়ের। এরপর তিনি কারাবন্দী হন। সেখান থেকেই আরও সংঘবদ্ধভাবে অপরাধজগৎ নিয়ন্ত্রণ করছেন তিনি। কারাগারে থাকাকালে জস্বিন্দর সিং ওরফে রকি নামের আরেক অপরাধীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে তাঁর। ২০১৬ সালে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন রকি।
বন্দী অবস্থায়ও লরেন্স বিষ্ণোইয়ের প্রভাব–প্রতিপত্তি বেড়েই চলেছিল। রাজস্থানের ভরতপুর জেলায় যে কারাগারে তিনি বন্দী ছিলেন, সেখানকার কর্মকর্তাদের হাত করে নানা কার্যসিদ্ধি করতেন। ২০২১ সালে তাঁকে সেখান থেকে দিল্লির তিহার কারাগারে সরিয়ে নেওয়া হয়। এই কারাগারের কর্মকর্তাদের ভাষ্যমতে, আইপি কলের মাধ্যমে গ্যাংয়ের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন বিষ্ণোই।