দেশে পত্রিকার পাঠকদের ৫৭% প্রথম আলো পড়েন
Published: 14th, May 2025 GMT
দেশের সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা প্রথম আলো। সারা দেশে পত্রিকার পাঠকদের ৫৭ শতাংশের বেশি প্রথম আলো পড়েন। শহরের মতো পল্লি এলাকায়ও সবচেয়ে বেশি পাঠক প্রথম আলোর। এ তথ্য উঠে এসেছে ‘গণমাধ্যম বিষয়ে জাতীয় জনমত জরিপ ২০২৫’-এ।
অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) জনমত জরিপটি চালায়। গত ১ থেকে ৭ জানুয়ারি দেশের ৬৪ জেলায় এই জরিপ চালানো হয়।
জাতীয় পর্যায়ে সর্বাধিক পঠিত পত্রিকার তালিকায় প্রথম আলোর পর দ্বিতীয় অবস্থানে আছে বাংলাদেশ প্রতিদিন।
জরিপের বিস্তারিত ফলাফল নিয়ে প্রকাশিত বিবিএসের প্রতিবেদনে জাতীয়, এলাকাভিত্তিক, বিভাগভিত্তিক এবং নারী-পুরুষ পাঠকের ক্ষেত্রে সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা–সম্পর্কিত তথ্য উপস্থাপন করা হয়। সব ক্ষেত্রেই শীর্ষস্থানে রয়েছে প্রথম আলো। জেলাভিত্তিক সর্বাধিক পঠিত পত্রিকার তালিকায় ৬১ জেলায় শীর্ষস্থানে আছে প্রথম আলো।
বিবিএসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জরিপে দেশের ৬৪ জেলার প্রতিটি জেলা থেকে দৈবচয়ন পদ্ধতিতে ৩৬টি করে ‘নমুনা এলাকা’ নির্বাচন করা হয়। প্রতিটি নমুনা এলাকা থেকে নমুনায়নের মাধ্যমে নির্বাচিত ২০টি সাধারণ খানা (পরিবার বা যাঁরা এক চুলায় রান্না করেন) থেকে তথ্য সংগ্রহের পরিকল্পনা করা হয়। অর্থাৎ সারা দেশে মোট ৪৬ হাজার ৮০টি খানা থেকে তথ্য সংগ্রহের পরিকল্পনা ছিল। নির্বাচিত প্রতিটি সাধারণ খানা থেকে ১০ বছর ও তার বেশি বয়সী সব সদস্যের মধ্য থেকে ‘ক্রিশ গিল্ড’ পদ্ধতিতে একজন উত্তরদাতা নির্বাচন করে তাঁর কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে সংগ্রহের সময় খানা সদস্যদের অনুপস্থিতি, উত্তর দিতে অস্বীকৃতি ইত্যাদি কারণে ১ হাজার ৩৫টি খানা থেকে তথ্য সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি। বাকি ৪৫ হাজার ৪৫টি খানার তথ্য সংগ্রহ করা হয়। অর্থাৎ ৪৫ হাজার ৪৫ জন এই জরিপে মতামত দিয়েছেন।
জরিপে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে ‘কম্পিউটার অ্যাসিস্টেড পারসোনাল ইন্টারভিউয়িং (সিএপিআই)’ প্রযুক্তি ব্যবহারে ‘ফেস টু ফেস ইন্টারভিউ’ পদ্ধতিতে। এটি তথ্য সংগ্রহের একটি পদ্ধতি, যেখানে সাক্ষাৎকার গ্রহীতা মুখোমুখি সাক্ষাৎকার নেন এবং উত্তরদাতার প্রতিক্রিয়া রেকর্ড করতে কম্পিউটার বা ট্যাব ব্যবহার করা হয়।
জরিপের ফলাফলে দেখা গেছে, ২৬ দশমিক ৯৬ শতাংশ উত্তরদাতা জানিয়েছেন, তাঁরা নিয়মিত বা মাঝেমধ্যে বা কদাচিৎ পত্রিকা পড়েন।
জরিপে একটি প্রশ্ন ছিল, সাধারণত কোন পত্রিকাগুলো পড়েন? অধিকাংশ সময়ে আপনার পঠিত পত্রিকার নামগুলো বলুন (সর্বোচ্চ তিনটি)। এ প্রশ্নের উত্তরের ‘অপশনে (বিকল্প)’ ঢাকা থেকে প্রকাশিত বাংলা ও ইংরেজি মিলিয়ে মোট ৬৩টি পত্রিকার নাম উল্লেখ ছিল। এর বাইরে অন্য কোনো পত্রিকার নাম ও স্থানীয় পত্রিকার নাম উল্লেখ করার সুযোগ ছিল।
জরিপের ফলাফলে দেখা গেছে, জাতীয় পর্যায়ে ৫৭ দশমিক ৩৮ শতাংশ পাঠক প্রথম আলো পড়েন। অর্থাৎ দেশের পত্রিকার বাজারের অর্ধেকের বেশি শেয়ার প্রথম আলোর। প্রসঙ্গত, এখানে একাধিক উত্তর দেওয়ার সুযোগ ছিল। অর্থাৎ একই ব্যক্তি একসঙ্গে একাধিক পত্রিকা পড়ে থাকলে তা বলার সুযোগ ছিল। এই প্রশ্নের মোট উত্তরদাতা ছিলেন ১১ হাজার ২৬০ জন।
বিশ্লেষণে দেখা যায়, পুরুষদের মধ্যে প্রথম আলো পড়েন ৫৭ দশমিক ১৭ শতাংশ। আর নারীদের মধ্যে প্রথম আলো পড়েন ৫৭ দশমিক ৭১ শতাংশ। শহর এলাকার ৫৯ দশমিক ৫৮ শতাংশ মানুষ প্রথম আলো পড়েন। পল্লি এলাকায় প্রথম আলো পড়েন ৫৬ দশমিক ৪৭ শতাংশ।
জানতে চাইলে জরিপটি করার সঙ্গে যুক্ত বিবিএসের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, মাঠপর্যায় থেকে যা তথ্য-উপাত্ত পাওয়া গেছে, তা-ই জরিপে তুলে ধরা হয়েছে। গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের অনুরোধে বিবিএস জরিপটি করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, কমিশন প্রশ্নপত্র তৈরি করে দিয়েছে। বিবিএস শুধু মাঠপর্যায় থেকে তথ্য এনে দিয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রথম আল পর য য় অর থ ৎ ব ব এস দশম ক
এছাড়াও পড়ুন:
ডাক্তারদের হাতের লেখা ঠিক করার নির্দেশ দিলো আদালত
এমন এক সময়ে যখন বেশিরভাগ মানুষ লেখার জন্য কিবোর্ড ব্যবহার করে, তখন হাতের লেখা কি আসলেই গুরুত্বপূর্ণ? ভারতীয় আদালতের মতে, অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ, যদি সেই লেখক হন একজন চিকিৎসক।
ডাক্তারদের বাজে হাতের লেখা নিয়ে ভারতসহ সারাবিশ্বেই রসিকতা করা হয়। কারণ অনেক ক্ষেত্রে এই লেখা কেবল ফার্মাসিস্টরাই বুঝতে পারেন, রোগী কিংবা অন্য কেউ নয়। কিন্তু স্পষ্ট হাতের লেখার গুরুত্বের উপর জোর দিয়ে পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্ট সম্প্রতি একটি আদেশ জারি করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, ‘মেডিকেল প্রেসক্রিপশন পাঠ একটি মৌলিক অধিকার।’ কারণ এটি জীবন ও মৃত্যুর মধ্যে পার্থক্য তৈরি করতে পারে।
আদালতের এই আদেশ এমন একটি মামলায় এসেছে, যেখানে লিখিত শব্দের সাথে কোনো সম্পর্ক নেই। মামলায় একজন নারীকে ধর্ষণ, প্রতারণা এবং জালিয়াতির অভিযোগ ছিল এবং বিচারপতি জসগুরপ্রীত সিং পুরি জামিনের জন্য পুরুষের আবেদনের শুনানি করছিলেন।
ওই নারী অভিযোগ করেছিলেন, লোকটি তাকে সরকারি চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে তার কাছ থেকে টাকা নিয়েছে, তার ভুয়া সাক্ষাৎকার নিয়েছে এবং তাকে যৌন শোষণ করেছে।
অভিযুক্ত অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছেন, তাদের সম্মতিতে সম্পর্ক ছিল এবং অর্থ নিয়ে বিরোধের কারণে মামলাটি দায়ের করা হয়েছিল।
বিচারপতি পুরি জানান, যখন ওই নারীকে পরীক্ষা করা এক সরকারি চিকিৎসকের মেডিকেল রিপোর্টটি দেখেন, তখন এর কিছুই তিনি বুঝতে পারেননি।
বিচারপতি তার আদেশে লিখেছেন, “এটি এই আদালতের বিবেককে নাড়া দিয়েছে। কারণ একটি শব্দ বা একটি অক্ষরও স্পষ্টভাবে পড়া যায়নি।”
বিবিসি রায়ের একটি কপি দেখেছে যার মধ্যে প্রতিবেদন এবং দুই পৃষ্ঠার একটি প্রেসক্রিপশন রয়েছে। পুরো প্রেসিক্রিপশন ও রিপোর্ট অপাঠ্য।
বিচারপতি পুরি লিখেছেন, “যেহেতু প্রযুক্তি ও কম্পিউটার সহজলভ্য, তবুও এটা অবাক করার মতো যে সরকারি ডাক্তাররা এখনো হাতে প্রেসক্রিপশন লিখছেন যা সম্ভবত কিছু রসায়নবিদ ছাড়া অন্য কেউ পড়তে পারে না।”
আদালত সরকারকে মেডিকেল স্কুলের পাঠ্যক্রমের মধ্যে হাতের লেখার পাঠ অন্তর্ভুক্ত করতে এবং ডিজিটালাইজড প্রেসক্রিপশন চালু করার জন্য দুই বছরের সময়সীমা নির্ধারণ করতে বলেছে।
বিচারপতি পুরি জানিয়েছেন, যতদিন না এটি বাস্তবায়ন না হয়, ততদিন পর্যন্ত সব ডাক্তারকে বড় অক্ষরে স্পষ্টভাবে প্রেসক্রিপশন লিখতে হবে।
ঢাকা/শাহেদ