দেশের সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা প্রথম আলো। সারা দেশে পত্রিকার পাঠকদের ৫৭ শতাংশের বেশি প্রথম আলো পড়েন। শহরের মতো পল্লি এলাকায়ও সবচেয়ে বেশি পাঠক প্রথম আলোর। এ তথ্য উঠে এসেছে ‘গণমাধ্যম বিষয়ে জাতীয় জনমত জরিপ ২০২৫’-এ।

অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) জনমত জরিপটি চালায়। গত ১ থেকে ৭ জানুয়ারি দেশের ৬৪ জেলায় এই জরিপ চালানো হয়।

জাতীয় পর্যায়ে সর্বাধিক পঠিত পত্রিকার তালিকায় প্রথম আলোর পর দ্বিতীয় অবস্থানে আছে বাংলাদেশ প্রতিদিন।

জরিপের বিস্তারিত ফলাফল নিয়ে প্রকাশিত বিবিএসের প্রতিবেদনে জাতীয়, এলাকাভিত্তিক, বিভাগভিত্তিক এবং নারী-পুরুষ পাঠকের ক্ষেত্রে সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা–সম্পর্কিত তথ্য উপস্থাপন করা হয়। সব ক্ষেত্রেই শীর্ষস্থানে রয়েছে প্রথম আলো। জেলাভিত্তিক সর্বাধিক পঠিত পত্রিকার তালিকায় ৬১ জেলায় শীর্ষস্থানে আছে প্রথম আলো।

বিবিএসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জরিপে দেশের ৬৪ জেলার প্রতিটি জেলা থেকে দৈবচয়ন পদ্ধতিতে ৩৬টি করে ‘নমুনা এলাকা’ নির্বাচন করা হয়। প্রতিটি নমুনা এলাকা থেকে নমুনায়নের মাধ্যমে নির্বাচিত ২০টি সাধারণ খানা (পরিবার বা যাঁরা এক চুলায় রান্না করেন) থেকে তথ্য সংগ্রহের পরিকল্পনা করা হয়। অর্থাৎ সারা দেশে মোট ৪৬ হাজার ৮০টি খানা থেকে তথ্য সংগ্রহের পরিকল্পনা ছিল। নির্বাচিত প্রতিটি সাধারণ খানা থেকে ১০ বছর ও তার বেশি বয়সী সব সদস্যের মধ্য থেকে ‘ক্রিশ গিল্ড’ পদ্ধতিতে একজন উত্তরদাতা নির্বাচন করে তাঁর কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে সংগ্রহের সময় খানা সদস্যদের অনুপস্থিতি, উত্তর দিতে অস্বীকৃতি ইত্যাদি কারণে ১ হাজার ৩৫টি খানা থেকে তথ্য সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি। বাকি ৪৫ হাজার ৪৫টি খানার তথ্য সংগ্রহ করা হয়। অর্থাৎ ৪৫ হাজার ৪৫ জন এই জরিপে মতামত দিয়েছেন।

জরিপে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে ‘কম্পিউটার অ্যাসিস্টেড পারসোনাল ইন্টারভিউয়িং (সিএপিআই)’ প্রযুক্তি ব্যবহারে ‘ফেস টু ফেস ইন্টারভিউ’ পদ্ধতিতে। এটি তথ্য সংগ্রহের একটি পদ্ধতি, যেখানে সাক্ষাৎকার গ্রহীতা মুখোমুখি সাক্ষাৎকার নেন এবং উত্তরদাতার প্রতিক্রিয়া রেকর্ড করতে কম্পিউটার বা ট্যাব ব্যবহার করা হয়।

জরিপের ফলাফলে দেখা গেছে, ২৬ দশমিক ৯৬ শতাংশ উত্তরদাতা জানিয়েছেন, তাঁরা নিয়মিত বা মাঝেমধ্যে বা কদাচিৎ পত্রিকা পড়েন।

জরিপে একটি প্রশ্ন ছিল, সাধারণত কোন পত্রিকাগুলো পড়েন? অধিকাংশ সময়ে আপনার পঠিত পত্রিকার নামগুলো বলুন (সর্বোচ্চ তিনটি)। এ প্রশ্নের উত্তরের ‘অপশনে (বিকল্প)’ ঢাকা থেকে প্রকাশিত বাংলা ও ইংরেজি মিলিয়ে মোট ৬৩টি পত্রিকার নাম উল্লেখ ছিল। এর বাইরে অন্য কোনো পত্রিকার নাম ও স্থানীয় পত্রিকার নাম উল্লেখ করার সুযোগ ছিল।

জরিপের ফলাফলে দেখা গেছে, জাতীয় পর্যায়ে ৫৭ দশমিক ৩৮ শতাংশ পাঠক প্রথম আলো পড়েন। অর্থাৎ দেশের পত্রিকার বাজারের অর্ধেকের বেশি শেয়ার প্রথম আলোর। প্রসঙ্গত, এখানে একাধিক উত্তর দেওয়ার সুযোগ ছিল। অর্থাৎ একই ব্যক্তি একসঙ্গে একাধিক পত্রিকা পড়ে থাকলে তা বলার সুযোগ ছিল। এই প্রশ্নের মোট উত্তরদাতা ছিলেন ১১ হাজার ২৬০ জন।

বিশ্লেষণে দেখা যায়, পুরুষদের মধ্যে প্রথম আলো পড়েন ৫৭ দশমিক ১৭ শতাংশ। আর নারীদের মধ্যে প্রথম আলো পড়েন ৫৭ দশমিক ৭১ শতাংশ। শহর এলাকার ৫৯ দশমিক ৫৮ শতাংশ মানুষ প্রথম আলো পড়েন। পল্লি এলাকায় প্রথম আলো পড়েন ৫৬ দশমিক ৪৭ শতাংশ।

জানতে চাইলে জরিপটি করার সঙ্গে যুক্ত বিবিএসের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, মাঠপর্যায় থেকে যা তথ্য-উপাত্ত পাওয়া গেছে, তা-ই জরিপে তুলে ধরা হয়েছে। গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের অনুরোধে বিবিএস জরিপটি করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, কমিশন প্রশ্নপত্র তৈরি করে দিয়েছে। বিবিএস শুধু মাঠপর্যায় থেকে তথ্য এনে দিয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রথম আল পর য য় অর থ ৎ ব ব এস দশম ক

এছাড়াও পড়ুন:

যানজটে রেললাইনে আটকা পড়া অটোকে ট্রেনের ধাক্কা, মা ও ছেলে নিহত

ফেনীতে যানজটে রেললাইনে আটকা পড়া সিএনজিচালিত একটি অটোরিকশাকে ধাক্কা দেয় ট্রেন। এতে হাফিজুল ইসলাম (৪২) ও তার মা ফাতেমাতুজ জোহরা (৬২) নিহত হয়েছেন।

শনিবার সন্ধ্যায় শহরের গোডাউন কোয়ার্টার রেলগেট এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে আহত হয়েছেন অটোরিকশাচালক।

নিহত হাফিজুল ইসলাম ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার পাঠাননগর ইউনিয়নের পাঠানগড় গ্রামের মিয়াজী বাড়ির বাসিন্দা মৃত হারেস আহম্মেদ সন্তু মিয়ার ছেলে। তিনি একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করতেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী চট্টলা এক্সপ্রেস ট্রেনটি গোডাউন কোয়ার্টার রেলগেট অতিক্রম করার সময় সড়কে আটকে পড়া একটি অটোরিকশাকে ধাক্কা দেয়। এ সময় যানজটে রেললাইনের ওপর দাঁড়িয়ে ছিল অটোরিকশা। এতে অটোরিকশাটি দুমড়ে-মুচড়ে যায় এবং ঘটনাস্থলে থাকা তিনজনই গুরুতর আহত হন।

আহতদের তাৎক্ষণিকভাবে উদ্ধার করে ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক হাফিজুল ইসলামকে মৃত ঘোষণা করেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তার মাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হলে পথে তিনি মারা যান। আহত অটোচালককে আটক করা হয়েছে।

রেলের গেইটম্যান বাবু বলেন, ‘আমি ৭টা ২০ মিনিটে গেট বন্ধ করি। কিন্তু উল্টো পথে অনেক গাড়ি আসায় যানজট সৃষ্টি হয়। এ সময় একটি অটোরিকশা রেললাইনের ওপর আটকে যায়। বারবার সরাতে চেষ্টা করেও ব্যর্থ হই। ট্রেনটিকে লাল সিগনাল দিয়ে থামাতে চাইলেও দূরত্ব কম থাকায় তা সম্ভব হয়নি।’

ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক রায়হান উদ্দিন বলেন, ‘ট্রেনের ধাক্কায় গুরুতর আহত অবস্থায় দু’জনকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল। তাদের একজন হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই মারা যান। অপরজনের মাথা ও পায়ে মারাত্মক জখম রয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।’

ফেনী রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মোহাম্মদ ইকবাল বলেন, গোডাউন কোয়ার্টার রেলগেটে চট্টগ্রামগামী চট্টলা এক্সপ্রেস ট্রেনের সঙ্গে সিএনজিচালিত অটোরিকশার ধাক্কা লেগে একজন নিহত ও দু’জন গুরুতর আহত হওয়ার খবর শুনেছি। তাদের খোঁজখবর নিতে অফিসার হাসপাতালে গেছেন।

ফেনী মডেল থানার ওসি শামসুজ্জামান বলেন, ট্রেন-অটোরিকশার সংঘর্ষে একজন নিহত, দুইজন আহত আছেন। একজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রামে পাঠানো হয়। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে রাখা আছে। পুলিশ সেখানে গেছে। অভিযোগ পেলে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সরকারি স্কুলের গাছ কেটে বাড়ি নিলেন বিএনপির নেতা
  • রামেক হাসপাতালে আরও এক ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু 
  • চট্টগ্রামে মুঠোফোন দেখে পরীক্ষাকেন্দ্রে নকল করছিলেন পরীক্ষার্থী, বহিষ্কার
  • ‘একজনের পক্ষে মেসিকে আটকানো অসম্ভব’, সতর্ক করলেন এনরিকে
  • রামেক হাসপাতালে ডেঙ্গুতে নারীর মৃত্যু
  • টাকার মালা গলায় ঝুলিয়ে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতার আনন্দ মিছিল
  • মাইকেলের হাতে রামাদি চরিত্র
  • চট্টগ্রাম ও সিলেটে করোনায় আরও দুইজনের মৃত্যু
  • সালমান প্রতিদিন কতটুকু ভাত খান
  • যানজটে রেললাইনে আটকা পড়া অটোকে ট্রেনের ধাক্কা, মা ও ছেলে নিহত