দুই দিন ধরে গাইবান্ধা শহরের কলেজ রোড মাঝিপাড়া এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে একটি মুখপোড়া হনুমান। অনেকে প্রাণীটিকে উত্ত্যক্ত করছে। এতে হনুমানটি এক জায়গায় স্থির থাকতে পারছে না। কখনো বাড়ির ছাদে, কখনো গাছের ডালে ঘুরে বেড়াচ্ছে। হনুমানটি কোথা থেকে কীভাবে এসেছে কেউ বলতে পারেননি।

আজ বুধবার বিকেলে মাঝিপাড়া এলাকার বাসিন্দা ব্যাংক কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা হনুমানটি দেখে শিক্ষার্থীদের পরিবেশবাদী সংগঠন ‘টিম ফর এনার্জি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চের’ (তীর) গাইবান্ধা সরকারি কলেজ শাখার সদস্যদের খবর দেন।

খবর পেয়ে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক রুপম মিয়া ও প্রচার সম্পাদক মো.

মিজবাহের নেতৃত্বে কয়েকজন সদস্য মাঝিপাড়া এলাকায় যান। তাঁরা প্রাণীটির ছবি তুলে রাজশাহী বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের পরিদর্শক জাহাঙ্গীর কবিরের হোয়াটসঅ্যাপে পাঠালে তিনি প্রাণীটি মুখপোড়া হনুমান বলে নিশ্চিত করেন। পরে তীর সদস্যরা হনুমানটিকে বিরক্ত না করতে এলাকাবাসীকে অনুরোধ করেন।

জাহাঙ্গীর কবির মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, এটি মুখপোড়া হনুমান (Capped langur)। এরা খুবই নিরীহ প্রাণী। এরা বীজের বিস্তার ও উদ্ভিদের অঙ্কুরোদগমে ভূমিকা রাখে। আবাসস্থল ও খাদ্যসংকটের কারণে কিংবা পথ ভুলে লোকালয়ে এসেছে। প্রাণীটিকে বিরক্ত না করার পরামর্শ দেন তিনি।

ব্যাংক কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘গত সোমবার থেকে এটি আমার বাসার ছাদে ও আশপাশের গাছের ডালে ছুটে বেড়াতে দেখছি। তবে কারও ক্ষতি করেনি। খাবার দিলে খাচ্ছে।’

বিকেলে মাঝিপাড়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, একটি হনুমান ছোটাছুটি করছে। কখনো বাড়ির ছাদে, কখনো গাছের ডালে ঘুরে বেড়াচ্ছে। শিশুরা আনন্দ নিয়ে দেখছে। কেউ কেউ ঢিলও ছুড়ছে। অনেকে দূর থেকে বিস্কুট, কলা খাবার ছুড়ে দিচ্ছেন। শিশু রিফাত বলে, ‘হনুমান দেখেছি। কলা ও বিস্কুট দিয়েছিলাম। হনুমান কলা খেয়েছে। হনুমান দেখে আমি খুশি।’

তীরের গাইবান্ধা সরকারি কলেজ শাখার সভাপতি মোশারফ হোসেন বলেন, হনুমান খাদ্যসহ নানা কারণে মাঝেমধ্যে লোকালয়ে চলে আসে। কেউ বিরক্ত না করলে আপনা-আপনি চলে যায়। তাঁরা এলাকায় প্রচারণা চালাচ্ছেন, যাতে কেউ প্রাণীটিকে বিরক্ত না করে।

তীরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি রিফাত হাসান জানান, মুখপোড়া হনুমান সাধারণত দলবদ্ধভাবে বসবাস করে। এটি আইইউসিএনের তালিকা অনুযায়ী সংকটাপন্ন বন্য প্রাণী। তিনি বলেন, মাঝেমধ্যে দলছুট হনুমান দেখা যায়। উত্তরবঙ্গে বনভূমি না থাকায় এদের দেখা যায় না। আবাসস্থল–সংকটের কারণে হনুমানের এই প্রজাতিও হুমকির সম্মুখীন।

গাইবান্ধা বন বিভাগের কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম বলেন, এসব মুখপোড়া হনুমান সাধারণত পাশের দেশ থেকে সবজির ট্রাকে উঠে এ দেশে আসে। কয়েক দিন থেকে আবার ফিরে যায়। এগুলো কারও ক্ষতি করে না।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: হন ম ন এল ক য়

এছাড়াও পড়ুন:

শুঁটকিপল্লির ব্যস্ত সময়

২ / ৮টুকরি থেকে মাছগুলো ঢালা হচ্ছে

সম্পর্কিত নিবন্ধ