গাইবান্ধার লোকালয়ে ‘পথভোলা’ মুখপোড়া হনুমান
Published: 14th, May 2025 GMT
দুই দিন ধরে গাইবান্ধা শহরের কলেজ রোড মাঝিপাড়া এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে একটি মুখপোড়া হনুমান। অনেকে প্রাণীটিকে উত্ত্যক্ত করছে। এতে হনুমানটি এক জায়গায় স্থির থাকতে পারছে না। কখনো বাড়ির ছাদে, কখনো গাছের ডালে ঘুরে বেড়াচ্ছে। হনুমানটি কোথা থেকে কীভাবে এসেছে কেউ বলতে পারেননি।
আজ বুধবার বিকেলে মাঝিপাড়া এলাকার বাসিন্দা ব্যাংক কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা হনুমানটি দেখে শিক্ষার্থীদের পরিবেশবাদী সংগঠন ‘টিম ফর এনার্জি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চের’ (তীর) গাইবান্ধা সরকারি কলেজ শাখার সদস্যদের খবর দেন।
খবর পেয়ে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক রুপম মিয়া ও প্রচার সম্পাদক মো.
জাহাঙ্গীর কবির মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, এটি মুখপোড়া হনুমান (Capped langur)। এরা খুবই নিরীহ প্রাণী। এরা বীজের বিস্তার ও উদ্ভিদের অঙ্কুরোদগমে ভূমিকা রাখে। আবাসস্থল ও খাদ্যসংকটের কারণে কিংবা পথ ভুলে লোকালয়ে এসেছে। প্রাণীটিকে বিরক্ত না করার পরামর্শ দেন তিনি।
ব্যাংক কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘গত সোমবার থেকে এটি আমার বাসার ছাদে ও আশপাশের গাছের ডালে ছুটে বেড়াতে দেখছি। তবে কারও ক্ষতি করেনি। খাবার দিলে খাচ্ছে।’
বিকেলে মাঝিপাড়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, একটি হনুমান ছোটাছুটি করছে। কখনো বাড়ির ছাদে, কখনো গাছের ডালে ঘুরে বেড়াচ্ছে। শিশুরা আনন্দ নিয়ে দেখছে। কেউ কেউ ঢিলও ছুড়ছে। অনেকে দূর থেকে বিস্কুট, কলা খাবার ছুড়ে দিচ্ছেন। শিশু রিফাত বলে, ‘হনুমান দেখেছি। কলা ও বিস্কুট দিয়েছিলাম। হনুমান কলা খেয়েছে। হনুমান দেখে আমি খুশি।’
তীরের গাইবান্ধা সরকারি কলেজ শাখার সভাপতি মোশারফ হোসেন বলেন, হনুমান খাদ্যসহ নানা কারণে মাঝেমধ্যে লোকালয়ে চলে আসে। কেউ বিরক্ত না করলে আপনা-আপনি চলে যায়। তাঁরা এলাকায় প্রচারণা চালাচ্ছেন, যাতে কেউ প্রাণীটিকে বিরক্ত না করে।
তীরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি রিফাত হাসান জানান, মুখপোড়া হনুমান সাধারণত দলবদ্ধভাবে বসবাস করে। এটি আইইউসিএনের তালিকা অনুযায়ী সংকটাপন্ন বন্য প্রাণী। তিনি বলেন, মাঝেমধ্যে দলছুট হনুমান দেখা যায়। উত্তরবঙ্গে বনভূমি না থাকায় এদের দেখা যায় না। আবাসস্থল–সংকটের কারণে হনুমানের এই প্রজাতিও হুমকির সম্মুখীন।
গাইবান্ধা বন বিভাগের কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম বলেন, এসব মুখপোড়া হনুমান সাধারণত পাশের দেশ থেকে সবজির ট্রাকে উঠে এ দেশে আসে। কয়েক দিন থেকে আবার ফিরে যায়। এগুলো কারও ক্ষতি করে না।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
নুরাল পাগলার দরবার থেকে চুরি হওয়া জেনারেটর উদ্ধার, যুবক গ্রেপ্তার
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নুরাল পাগলার দরবার থেকে চুরি হওয়া একটি জেনারেটর উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় মো. মিজানুর রহমান (২৪) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়।
গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নে অভিযান চালিয়ে মিজানুরকে গ্রেপ্তার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ও গোয়ালন্দ ঘাট থানা-পুলিশ। মিজানুরের বাড়ি রাজবাড়ী সদর উপজেলার লক্ষ্মীকোল সোনাকান্দর গ্রামে।
আরও পড়ুননিহতের বাবার মামলায় গ্রেপ্তার আরও ২, দেড় কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতির দাবি১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫এ নিয়ে দুই মামলায় মোট ২৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. শরীফ আল রাজীব।
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ৫ সেপ্টেম্বর গোয়ালন্দের নুরাল পাগলার দরবারে বিক্ষুব্ধ জনতা হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। এ সময় মিজানুর রহমান জেনারেটর চুরি করে নিয়ে যাচ্ছেন—এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরে ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে মিজানুরকে শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা হয়। মিজানুরকে দরবারে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, লাশ পোড়ানো ও হত্যার ঘটনায় হওয়া মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে তাঁকে রাজবাড়ীর আদালতে সোপর্দ করার প্রস্তুতি চলছে।
আরও পড়ুননুরাল পাগলার দরবারে হামলায় হত্যা মামলা, মসজিদের ইমামসহ চারজন গ্রেপ্তার০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ওই দিন পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় উপপরিদর্শক (এসআই) সেলিম মোল্লা বাদী হয়ে প্রায় তিন হাজার থেকে সাড়ে তিন হাজার অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করে ৬ সেপ্টেম্বর মামলা করেন। এই মামলায় মোট ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদিকে দরবারে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, হত্যা ও কবর থেকে লাশ তুলে মহাসড়কে পুড়িয়ে ফেলার ঘটনায় নিহত ভক্ত রাসেল মোল্লার বাবা আজাদ মোল্লা বাদী হয়ে ৮ সেপ্টেম্বর মামলা করেন। ওই মামলায় সাড়ে তিন হাজার থেকে চার হাজার অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় এখন পর্যন্ত মিজানুরসহ নয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।