ফিলিস্তিনিদের পক্ষে সোচ্চার ইহুদি পরিবারগুলোতে অসন্তোষ তুঙ্গে, ঘটছে ভাঙন পর্যন্ত
Published: 15th, May 2025 GMT
ডিসেম্বরের এক শীতের দিন। বড়দিনের ছুটিতে ডালিয়া সারিগের ৮০ বছর বয়সী বাবা তাঁর ভিয়েনার বাড়িতে এলেন। এর আগে সারিগ স্কিইং ট্রিপ থেকে ফিরেছেন।
সারিগের বাবা এসেছিলেন তাঁর সৎমেয়েকে নিয়ে যেতে। সে সারিগের পরিবারের সঙ্গে ছুটি কাটাতে এসেছিল।
সারিগ নিশ্চিত ছিলেন, এটি হয়তো তাঁর বাবার সঙ্গে শেষ দেখা হতে যাচ্ছে। কারণ, তাঁদের রাজনৈতিক মতবিরোধ এবার তুঙ্গে উঠতে চলেছে।
‘আমি বিদায় বলেছিলাম। তাঁকে জড়িয়ে ধরেছিলাম,’ আল–জাজিরাকে বলেন সারিগ। ‘যখন বিদায় বলি, তখন জানতাম, হয়তো আর কখনো দেখা হবে না।’
সারিগের সঙ্গে তাঁর পরিবারের টানাপোড়েন চলছে অনেক বছর ধরেই। ৫৬ বছর বয়সী সারিগ একজন ফিলিস্তিনপন্থী কর্মী। তিনি তাঁর পরিবারের বেশির ভাগ সদস্যের সঙ্গে রাজনৈতিকভাবে দ্বিমত পোষণ করেন।
সারিগের বাবা-মা জায়োনিজমে বিশ্বাসী। এ জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক মতবাদ (যেকোনো পন্থায়) একটি ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানায়, যা ফিলিস্তিনিদের কাছে তাঁদের জন্য এক দুর্দশা ও নিপীড়নমূলক ব্যবস্থা হিসেবে বিবেচিত।
ডালিয়া সারিগের সঙ্গে তাঁর পরিবারের টানাপোড়েন চলছে অনেক বছর ধরেই। ৫৬ বছর বয়সী সারিগ একজন ফিলিস্তিনপন্থী কর্মী। তিনি তাঁর পরিবারের বেশির ভাগ সদস্যের সঙ্গে রাজনৈতিকভাবে দ্বিমত পোষণ করেন।ডিসেম্বরে বাবার সঙ্গে ওই সাক্ষাতের সময় সারিগ জানতেন যে জানুয়ারিতে পার্লামেন্ট ভবনের সামনে তিনি ফিলিস্তিনপন্থী একটি বিক্ষোভ করবেন, যা একটি টেলিভিশন চ্যানেল সম্প্রচার করবে। তিনি যে কর্মী দলের সদস্য, তারা তাঁকে টিভি সাক্ষাৎকারের জন্য মনোনীত করেছে। গাজায় ইসরায়েলি নিধনের প্রতিবাদে আগেও তিনি এগিয়ে গেছেন।
‘পরে সাক্ষাৎকার প্রচারিত হয়। দ্রুতই সেটা আমার পরিবারের কাছে পৌঁছে যায়,’ বলেন সারিগ।
সাক্ষাৎকার প্রচারিত হওয়ার পর সারিগ শুনেছিলেন, তাঁর বাবা, বন্ধুদের বলেছিলেন, ‘আমার কাছে সে (সারিগ) মৃত।’ তিনি (বাবা) নিজেও ভিয়েনা থাকতেন।
‘কিন্তু তিনি (বাবা) কখনো এ নিয়ে আমার সঙ্গে কথা বলেননি, কখনো কিছু জানাননি। তিনি সম্পর্কটাই ছিন্ন করে দেন।’
সারিগের ৭৭ বছর বয়সী মা জার্মানিতে থাকেন। এক সপ্তাহ পর তিনি একটি বার্তা পাঠান।
এখনো সেটা (মায়ের বার্তা) আমার ফোনে আছে। সেখানে লেখা, ‘আমি তোমার রাজনৈতিক কর্মসূচি মেনে নিতে পারি না। তুমি একজন বিশ্বাসঘাতক, তুমি নিজের বাসা নোংরা করছ…আর যদি কখনো তোমার মত বদলাও, তবে আমরা আবার স্বাভাবিক সম্পর্ক রাখতে পারি। সুস্থ থেকো।’ডালিয়া সারিগ, ফিলিস্তিনপন্থী ইহুদি নারীসারিগ বলেন, ‘এখনো সেটা আমার ফোনে আছে। সেখানে লেখা, “আমি তোমার রাজনৈতিক কর্মসূচি মেনে নিতে পারি না। তুমি একজন বিশ্বাসঘাতক, তুমি নিজের বাসা নোংরা করছ…আর যদি কখনো তোমার মত বদলাও, তবে আমরা আবার স্বাভাবিক সম্পর্ক রাখতে পারি। সুস্থ থেকো।”’
এর পর থেকে সারিগ আর মা–বাবার সঙ্গে কথা বলেননি।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে ইসরায়েল—ইহুদি পরিবারে মতবিরোধ অস্বাভাবিক নয়। তবে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর থেকে এ বিভাজন আরও প্রকট হয়েছে।
ওই দিন ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস দক্ষিণ ইসরায়েলে হামলা চালায়। ইসরায়েলের দাবি, এতে ১ হাজার ১৩৯ জন নিহত হন ও দুই শতাধিক মানুষকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয়।
এদিকে হামলার জবাবে ৭ অক্টোবর থেকেই গাজায় বিরামহীন তাণ্ডব শুরু করেছে ইসরায়েল। এর পর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি বোমা হামলায় এই উপত্যকায় ৬১ হাজার ৭০০–এর বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।
‘আমার মতে, উদারপন্থী জায়োনিস্টদের মধ্যে সবচেয়ে মজার দিক হলো, ৭ অক্টোবরের পর বেশির ভাগ ডান পন্থায় ঝুঁকলেও সংখ্যালঘু একটি অংশ ইসরায়েল ও জায়োনিজম থেকে আরও বিমুখ হয়েছে,’ বলেন লেখক ও জায়োনিজমবিরোধী বুদ্ধিজীবী ইলান প্যাপে।
শৈশবে সারিগ ইহুদি উৎসব পালন করতেন ও বয়োজ্যেষ্ঠদের থেকে জায়োনিজম সম্পর্কে শিখতেন। তাঁকে শেখানো হয়েছিল, ‘ফিলিস্তিনিরা শত্রু, তারা সব ইহুদিকে হত্যা করতে চায়…আর ইসরায়েলে থাকা ইহুদিরা শান্তি চায়, কিন্তু আরবরা তা চায় না।’‘আমি আমার ইহুদি কমিউনিটিকে হারিয়েছি’
সারিগের পূর্বপুরুষেরা ১৯৩৮ সালে নাৎসি জার্মানির অস্ট্রিয়া দখলের সময় পালিয়ে সার্বিয়ায় যান। পরে ব্রিটিশশাসিত ফিলিস্তিনে স্থায়ী হন, যা এখনকার ইসরায়েল। তবে ১৯৫০-এর দশকে তাঁদের অধিকাংশ আত্মীয়স্বজন আবার অস্ট্রিয়ায় ফিরে আসেন, যেখানে সারিগের জন্ম।
শৈশবে সারিগ ইহুদি উৎসব পালন করতেন ও বয়োজ্যেষ্ঠদের থেকে জায়োনিজম সম্পর্কে শিখতেন। তাঁকে শেখানো হয়েছিল, ‘ফিলিস্তিনিরা শত্রু, তারা সব ইহুদিকে হত্যা করতে চায়…আর ইসরায়েলে থাকা ইহুদিরা শান্তি চায়, কিন্তু আরবরা তা চায় না।’
১৮ বছর বয়সে সারিগ ইসরায়েলে যান, সেখানে তিনি বামপন্থী জায়োনিস্ট যুব সংগঠনে যোগ দেন।
১৩ বছর ইসরায়েলে থাকার সময় সারিগ একটি কিবুৎজে (সমবায়ভিত্তিক বসতি) যোগ দেন, সেনাবাহিনীতে অফিসের কাজ করেন ও বিয়ে করেন। তবে হাইফা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতি ও মধ্যপ্রাচ্যের ইতিহাস পড়ার সময় তাঁর বৈশ্বিক দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে শুরু করে। সেখানে তিনি এক ফিলিস্তিনি অধ্যাপকের সঙ্গে পরিচিত হন এবং পরে ফিলিস্তিনি অধিকারের পক্ষে কাজ শুরু করেন।
সারিগ বলেন, ‘এক সন্ধ্যায় লনে বসে ওই শিক্ষক ছোট একটি গ্রাম থেকে তাঁর পরিবার উচ্ছেদ হওয়ার গল্প বলছিলেন। আমি বুঝতে পারি, আমি যা জেনেছি, সেই জায়োনিস্ট বয়ান ভুল। ভাবতে শুরু করি, আমি যদি কোনো ইহুদি রাষ্ট্র বসবাসকারী ফিলিস্তিনি হতাম, যার পূর্বপুরুষদের তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, তবে আমি কেমন অনুভব করতাম।’
অস্ট্রিয়ায় ফিরে আসার পর পরিবারের সঙ্গে সারিগের ফিলিস্তিন ও ইসরায়েল নিয়ে তর্ক-বিতর্ক লেগেই থাকত। কখনো ঠিক করতেন, এ নিয়ে আর আলোচনা করবেন না। কিন্তু আবার কথা বলতেন, আবার ঝগড়া হতো।
আমার মতে, উদারপন্থী জায়োনিস্টদের মধ্যে সবচেয়ে মজার দিক হলো, ৭ অক্টোবরের পর বেশির ভাগ ডান পন্থায় ঝুঁকলেও সংখ্যালঘু একটি অংশ ইসরায়েল ও জায়োনিজম থেকে আরও বিমুখ হয়েছে।ইলান প্যাপে, লেখক ও জায়োনিজমবিরোধী বুদ্ধিজীবী২০১৫ সালে সারিগ জায়োনিজমের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হিসেবে তাঁর ইসরায়েলি নাগরিকত্ব ত্যাগ করেন।
‘এটা আমার আন্দোলন চালানোকে সহজ করে তোলে,’ বলেন সারিগ। ‘আমি আমার ইহুদি কমিউনিটি হারিয়েছি, কারণ আমি একদিকে “অদ্ভুত” আবার অন্যদিকে “বিশ্বাসঘাতক” হিসেবে বিবেচিত হই।’
কিন্তু পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলে—বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
‘৭ অক্টোবরের পরও আমার দৃষ্টিভঙ্গি খুব একটা বদলায়নি’
নিউরোসায়েন্টিস্ট ও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডির ছাত্র ফাইসাল শরিফ জানান, গবেষণায় দেখা গেছে, ‘সামাজিক বিচ্ছিন্নতা শারীরিক ব্যথার মতোই মস্তিষ্কে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। অর্থাৎ সামাজিক বেদনা শুধু রূপক নয়, এটি জীববৈজ্ঞানিকভাবে বাস্তবও।’
ফাইসাল আরও বলেন, একেকটি পরিবার প্রায়ই নিজস্ব ছোট সংস্কৃতি গড়ে তোলে, যেখানে নিজস্ব নিয়মনীতি ও রাজনৈতিক অবস্থান থাকে। তিনি বলেন, ‘সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে পরিবারগুলোর উচিত বিতর্ক নয়, কৌতূহল নিয়ে কথা বলা।’
‘এটাই এখন মূল ইস্যু’
ইসরায়েলে জন্ম নেওয়া সংগীতশিল্পী জনাথন অফির। ১৯৯০-এর দশকের শেষ দিকে ডেনমার্কে চলে যান তিনি। ২০০৯ সালে প্রথম বুঝতে পারেন যে তিনি একটি পক্ষপাতদুষ্ট বয়ানের অংশ ছিলেন, যেখানে ফিলিস্তিনিদের দৃষ্টিভঙ্গি বাদ পড়েছিল। তিনি ইলান প্যাপের বই ‘দ্য এথনিক ক্লিনজিং অব প্যালেস্টাইন’ পড়েন। এটি তাঁর জন্য একটি ‘মোড় ঘোরানো’ মুহূর্ত ছিল।
২০১৪ সালে গাজায় ইসরায়েলি যুদ্ধের সময় অফির প্রথম তাঁর সমালোচনামূলক মতামত প্রকাশ্যে আনেন। ৫০ দিনের ওই যুদ্ধে ৫৫১টি শিশুসহ দুই হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হন।
অফির ফেসবুকে একটি ছবি পোস্ট করেছিলেন। তা ছিল, ইসরায়েলিরা গাজার আগুন দেখছেন একটি পাহাড় থেকে, যা দ্য নিউইয়র্ক টাইমসে ছাপা হয়েছিল।
দ্রুতই অফিরের এক আত্মীয় তাঁকে ই–মেইলে লেখেন, তিনি যেন ‘ইন্টারনেটে পোস্ট দেওয়া বন্ধ করেন।’ বছর কয়েক পর অফির জানেন, তাঁর পরিবার রাজনৈতিক আলোচনা এড়িয়ে চলে, যাতে তাঁর মতামত স্বীকৃতি না পায়।
৭ অক্টোবরের পর অফির তাঁর আত্মীয়দের খোঁজ নেন। হামাসের হামলার স্থলের কাছাকাছি থাকতেন তাঁরা। কিন্তু তাঁর ফিলিস্তিনপন্থী অবস্থান বদলায়নি।
‘আমার দৃষ্টিভঙ্গি তেমন বদলায়নি। কিন্তু ইসরায়েলি সমাজ বদলে গেছে। সেদিক থেকে বলা যায়, আমরা আরও রাজনৈতিকভাবে দূরে সরে গেছি,’ বলেন অফির।
নেদারল্যান্ডসে বসবাসকারী ৪৪ বছর বয়সী ড্যানিয়েল ফ্রিডম্যান দক্ষিণ আফ্রিকায় বড় হয়েছেন। তাঁর বাবা স্টিভেন একজন শিক্ষাবিদ ও স্পষ্টভাষী জায়োনিজমবিরোধী। তাঁর মা একসময় বর্ণবাদের বিরুদ্ধে কাজ করতেন।
বাবা এখনো তাঁর জায়োনিস্টবিরোধী অবস্থান ধরে রেখেছেন। তবে ২০২৩ সাল থেকে গাজায় চলমান গণহত্যা নিয়ে ফ্রিডম্যান ও তাঁর মায়ের মধ্যে মতবিরোধ বাড়ছে।
আরও পড়ুনইসরায়েলে এত বড় বিক্ষোভ-ধর্মঘটের কারণ কী০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪‘এটাই এখন মূল ইস্যু। কিছু ইহুদি কমিউনিটির মধ্যে কথা বলা আর সম্পর্কের ওপরে এ একটা বিষয়ই এখন সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলছে,’ বলেন ফ্রিডম্যান।
ফ্রিডম্যান ও তাঁর মায়ের মধ্যে একটি বিষয় নিয়ে বিতর্ক ছিল। সেটি হলো, ৭ অক্টোবরের ঘটনায় ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ নিয়ে। এটি পরে মিথ্যা প্রমাণিত হয়। হোয়াটসঅ্যাপে বিভিন্ন লিংক পাঠিয়ে তাঁরা (মা–ছেলে) একে অপরকে প্রমাণ দিতে চেষ্টা করতেন। পরে তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন, রাজনীতি নিয়ে আর কথা বলবেন না।
‘আমি মাকে ভালোবাসি, কিন্তু আমার বিশ্বাস অনেকটাই কমে গেছে,’ বলেন ফ্রিডম্যান।
আরও পড়ুনজিম্মিদের উৎসর্গ করে হলেও যুদ্ধে জিততে চান নেতানিয়াহু, বিভক্তি বাড়ছে ইসরায়েলে১৯ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুনইসরায়েলবিরোধী ব্যাপক বিক্ষোভ ২২ মার্চ ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ফ ল স ত নপন থ র পর ব র র র র জন ত ক র ইসর য ইসর য় ল র র পর ম র মত আরও প করত ন র সময
এছাড়াও পড়ুন:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে নিহত ১, অগ্নিসংযোগ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে নিয়াজুল মিয়া (৪৫) নামে একজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ১৬ জন।
বুধবার (১৪ মে) বিকেলে সদর উপজেলার নাটাই গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ মোজাফ্ফর হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহত নিয়াজুল মিয়া একই গ্রামের তোতা মিয়ার ছেলে।
আরো পড়ুন:
গাইবান্ধায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ১
গাজীপুরে সংঘর্ষে আহত ৪, কৃষকের হাতের কব্জি বিচ্ছিন্ন
স্থানীয়রা জানান, নাটাই ইউনিয়নের চান্দের গোষ্ঠীর সঙ্গে সলিমের গোষ্ঠীর দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। গত সোমবার সলিম গোষ্ঠীর একজন যুবক চান্দের গোষ্ঠীর এক বাড়িতে মাদক সেবন করতে যান। এ সময় চান্দের গোষ্ঠীর লোকজন বাধা দিলে তাদের সঙ্গে ওই যুবকের বাকবিতণ্ডা হয়। এ নিয়ে একাধিকবার দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়ায়।
আজ বুধবার বিকেলে উভয় পক্ষ আবারো সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় টেঁটার আঘাতে চান্দের গোষ্ঠীর নিয়াজুল মিয়াসহ অন্তত ১৬ জন আহত হন। হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে রাত ৮টার দিকে নিয়াজুল মিয়া মারা যান। তার মৃত্যুর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে প্রতিপক্ষের প্রায় ১০টি ঘর লুটপাট ও ভাঙচুরের পর অগ্নিসংযোগ করে চান্দের গোষ্ঠীর লোকজন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ মোজাফ্ফর হোসেন বলেন, “সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন। দোষীদের শনাক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।”
তিনি বলেন, “অন্তত ১০টি ঘরে নিহতের পক্ষের লোকজন আগুন দিয়েছেন। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিস কাজ করছে।”
ঢাকা/মনিরুজ্জামান/মাসুদ