ভারত-পাকিস্তান পারমাণবিক যুদ্ধের ঝুঁকি কতটা বাস্তব
Published: 15th, May 2025 GMT
ভারত-পাকিস্তান সর্বশেষ সংঘাতে পারমাণবিক যুদ্ধের কোনো চূড়ান্ত হুমকি ছিল না, পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের আশঙ্কাও তেমন ছিল না।
তবু পাল্টাপাল্টি হামলা, পরোক্ষ ইঙ্গিত ও দ্রুত আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক তৎপরতা—সবকিছু নীরবে এ অঞ্চলের সবচেয়ে ভয়ানক আতঙ্কের কথা মনে করিয়ে দিয়েছে।
ভারত ও পাকিস্তানের সর্বশেষ এ সংঘাত পারমাণবিক যুদ্ধ পর্যন্ত গড়ায়নি, কিন্তু এটি আবারও স্মরণ করিয়ে দিয়েছে, এ অঞ্চলে সামরিক উত্তেজনা কীভাবে মুহূর্তে সেই ভয়ের ভূত ডেকে আনতে পারে। এমনকি বিজ্ঞানীরাও মডেলের মাধ্যমে দেখিয়েছেন, কী সহজেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।
২০১৯ সালে বৈশ্বিক বিজ্ঞানীদের একটি দল তাদের মডেলে দুঃস্বপ্নের এক দৃশ্যপট তুলে ধরেছেন, যেখানে ২০২৫ সালে ভারতের পার্লামেন্টে কোনো একটি হামলা কীভাবে ভারত ও পাকিস্তানকে পারমাণবিক যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিতে পারে তা দেখানো হয়েছে।
পাকিস্তানে এনসিএ পারমাণবিক অস্ত্র ও সেগুলোর সম্ভাব্য ব্যবহার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে। তাদের বৈঠক আয়োজনের খবর প্রতীকী, কৌশলগত নাকি বাস্তবেই হুঁশিয়ারি ছিল, তা হয়তো আমরা কোনোদিনই জানতে পারব না।ওই মডেল দাঁড় করানোর ছয় বছর পর, বাস্তবে দুই দেশের মুখোমুখি অবস্থান একটি সর্বাত্মক যুদ্ধের আশঙ্কাকে উসকে দিয়েছে। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় গত শনিবার দেশ দুটি একটি যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে।
তবে ভারত-পাকিস্তান সাম্প্রতিকতম এ মুখোমুখি অবস্থান আবারও মনে করিয়ে দিয়েছে, এ অঞ্চলের স্থিতিশীলতা কতটা নাজুক।
ওই সংঘাতে উত্তেজনা যখন বাড়ছিল, তখন পাকিস্তান ‘দ্বৈত বার্তা’ দিয়েছিল। দেশটি সামরিকভাবে পাল্টা হামলা চালানোর পাশাপাশি তাদের ন্যাশনাল কমান্ড অথোরিটির (এনসিএ) বৈঠকে বসার ঘোষণা এসেছিল। প্রকৃতপক্ষে এটা ছিল কৌশলে নিজেদের পারমাণবিক সক্ষমতার বিষয়টি প্রতিপক্ষকে মনে করিয়ে দেওয়া।
পাকিস্তানে এনসিএ পারমাণবিক অস্ত্র সম্পর্কিত বিষয় ও এর সম্ভাব্য ব্যবহার নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে থাকে। তাদের এ পদক্ষেপ প্রতীকী, কৌশলগত নাকি বাস্তবেই হুঁশিয়ারি ছিল, তা হয়তো আমরা কোনোদিনই জানতে পারব না।
গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, বৈঠকের ঘোষণা ঠিক সেই সময়ে শোনা গিয়েছিল, যখন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও পরিস্থিতি শান্ত করতে হস্তক্ষেপ করেছিলেন। পরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন।
ট্রাম্প বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র শুধু একটি যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠা করেনি, এটি একটি পারমাণবিক সংঘাত এড়াতেও সক্ষম হয়েছে।
পরে সোমবার জাতির উদ্দেশে এক ভাষণে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘পারমাণবিক অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে এখানে কোনো লাভ নেই। ভারত পারমাণবিক অস্ত্রের (ব্যবহারের) হুমকিতে ভয় পাবে না। এ অজুহাতে সন্ত্রাসীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে কোথাও কার্যক্রম পরিচালিত হতে দিলে তা সুনির্দিষ্ট ও চূড়ান্ত হামলার সম্মুখীন হবে।’
পারমাণবিক অস্ত্রে কে কতটা শক্তিশালী
স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট (এসআইপিআরআই) এর তথ্য অনুযায়ী, ভারত ও পাকিস্তান প্রত্যেকের হাতে প্রায় ১৭০টি করে পারমাণবিক অস্ত্র আছে।
২০২৪ সালের জানুয়ারিতে এসআইপিআরআইয়ের একটি হিসাব অনুযায়ী, বিশ্বে এখন ১২ হাজার ১২১টি পারমাণবিক যুদ্ধাস্ত্র আছে। এর মধ্যে প্রায় ৯ হাজার ৫৮৫টি সামরিক গুদামে সংরক্ষিত, বাকিগুলো সক্রিয়ভাবে মোতায়েন করা, যা ২০২৩ সালের তুলনায় ৬০টি বেশি।
ভারত ও পাকিস্তান সরকার অতীতেও এ ধরনের পরিস্থিতি সামাল দিয়েছে। তাই ঝুঁকি তুলনামূলকভাবে কম। কিন্তু পারমাণবিক অস্ত্রের ক্ষেত্রে এমনকি সামান্য ঝুঁকিও অনেক বড় বিষয়।জন ইরাথ, ‘সেন্টার ফর আর্মস কন্ট্রোল অ্যান্ড নন-প্রোলিফারেশন’–এর জ্যেষ্ঠ নীতি পরিচালকবিশ্বে সবচেয়ে বেশি পারমাণবিক অস্ত্র আছে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার হাতে। এরা ৮ হাজারের বেশি পারমাণবিক অস্ত্রের মালিক।
যুক্তরাষ্ট্রের আলবানি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তাবিষয়ক বিশেষজ্ঞ ক্রিস্টোফার ক্ল্যারি বলেছেন, ভারত ও পাকিস্তানের মোতায়েন করা অস্ত্রভান্ডারের বেশির ভাগই তাদের ভূমি থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্রের বহর। তবে উভয় দেশই তাদের পারমাণবিক অস্ত্র বহনে সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্র বহরের উন্নয়ন করছে। এসব ক্ষেপণাস্ত্র স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে পারমাণবিক যুদ্ধাস্ত্র নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছে দিতে সক্ষম হবে।
বিবিসিকে ক্ল্যারি আরও বলেন, ‘ভারতের হাতে সম্ভবত পাকিস্তানের চেয়ে বেশি আকাশভিত্তিক বহর (পারমাণবিক অস্ত্র বহনে সক্ষম বিমান) আছে। যদিও আমাদের কাছে পাকিস্তানের নৌভিত্তিক বহর সম্পর্কে তেমন কোনো তথ্য নেই। তবে এটা ধরে নেওয়া যৌক্তিক হবে যে ভারতের নৌভিত্তিক পারমাণবিক শক্তি পাকিস্তানের তুলনায় বেশি উন্নত ও সক্ষম।’
২০২২ সালের মার্চে, ভারত ভুলক্রমে একটি পারমাণবিক অস্ত্র বহনে সক্ষম ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করে। সেটি ১২৪ কিলোমিটার উড়ে পাকিস্তানের ভূখণ্ডে গিয়ে বিধ্বস্ত হয়। সেটির আঘাতে বেসামরিক সম্পদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল বলে সে সময়ে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশ পেয়েছিল।কেন এমন মনে হচ্ছে, তার কারণ ব্যাখ্যায় এই নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিন নির্মাণে ভারত যতটা সময় বা অর্থ বিনিয়োগ করেছে, পাকিস্তান তার ধারেকাছে নেই। ফলে নৌ পারমাণবিক সক্ষমতায় মানের দিক থেকে ভারত স্পষ্টত একটি সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে।’
১৯৯৮ সালে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার পর থেকে এখন পর্যন্ত পাকিস্তান কখনোই আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের কোনো পারমাণবিক নীতিমালা ঘোষণা করেনি।
অন্যদিকে ভারত, একই বছর নিজেদের পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষার পর প্রথমে এ অস্ত্র ব্যবহার না করার নীতিমালা ঘোষণা করেছে। যদিও দেশটির সেই অবস্থানে অটল না থাকার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।
২০০৩ সালে ভারত ঘোষণা করে যে রাসায়নিক বা জৈবিক হামলার শিকার হলে জবাবে তারা পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের অধিকার সংরক্ষণ করবে; যার অর্থ, নির্দিষ্ট কিছু পরিস্থিতিতে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের অনুমোদন।
পাকিস্তানের পারমাণবিক নীতিমালা এখনো স্পষ্ট না হলেও, ২০০১ সালে এনসিএর কৌশলগত পরিকল্পনা বিভাগের তৎকালীন প্রধান খালিদ কিদওয়াই কোনো কোনো ক্ষেত্রে পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহার হতে পারে তার চারটি সীমারেখা উল্লেখ করেছিলেন। সেগুলো হলো—বড় আকারের ভূখণ্ড হারানো, গুরুত্বপূর্ণ সামরিক সম্পদ ধ্বংস, অর্থনৈতিক অবরোধ ও রাজনৈতিক অস্থিরতা।
২০০২ সালে পাকিস্তানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফ বিষয়টি আরও স্পষ্ট করে দেন। তিনি বলেছিলেন, ‘পারমাণবিক অস্ত্র শুধু ভারতের দিকে তাক করে রাখা আছে এবং এগুলো তখনই ব্যবহৃত হবে যখন রাষ্ট্র হিসেবে পাকিস্তানের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়বে।’
১৯৯৯ সালে কারগিল যুদ্ধের সময় পাকিস্তানের তৎকালীন পররাষ্ট্রসচিব শামশাদ আহমেদ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছিলেন, নিজেদের ভূখণ্ড রক্ষায় তাঁর দেশ ‘যেকোনো অস্ত্র ব্যবহার করতে পিছপা হবে না’।
এর কয়েক বছর পর, মার্কিন কর্মকর্তা ব্রুস রাইডেল বলেছিলেন, তাঁদের কাছে গোয়েন্দা তথ্য ছিল, পাকিস্তান খুব সম্ভবত তাদের পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েনের প্রস্তুতি নিচ্ছিল।
পারমাণবিক যুদ্ধের উত্তেজনা কখন বাড়তে পারে
সব সময় শুধু সংঘাতের জেরে নয়; বরং দুর্ঘটনাবশতও পারমাণবিক যুদ্ধ উত্তেজনা বাড়তে পারে। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নিউজার্সির রাটগার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অ্যালান রোবক বিবিসিকে বলেন, মানব ত্রুটি, হ্যাকার, সন্ত্রাসী, কম্পিউটারে ত্রুটি, স্যাটেলাইট থেকে ভুল তথ্য ও অস্থির নেতাদের দিয়ে এমনটা হতে পারে।
২০২২ সালের মার্চে, ভারত ভুলক্রমে একটি পারমাণবিক অস্ত্র বহনে সক্ষম ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করে। সেটি ১২৪ কিলোমিটার উড়ে পাকিস্তানের ভূখণ্ডে গিয়ে বিধ্বস্ত হয়। সেটির আঘাতে বেসামরিক সম্পদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল বলে সে সময়ে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশ পেয়েছিল।
আরও পড়ুনভারত-পাকিস্তানকে উত্তেজনা প্রশমনের আহ্বান মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর০৯ মে ২০২৫পাকিস্তান ওই সময় বলেছিল, এ ঘটনার পর ভারত দুই দিন ধরে সামরিক হটলাইন ব্যবহার করেনি অথবা প্রকাশ্যে কোনো বিবৃতি দেয়নি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি ওই ঘটনা সামরিক উত্তেজনা বৃদ্ধির মধ্যে ঘটত, তবে পরিণতি গুরুতর হতে পারত।
ওই ঘটনার কয়েক মাস পর ভারত সরকার তাদের বিমানবাহিনীর তিন কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করেছিল।
তুলনামূলক কম হলেও এখনো ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সামরিক যুদ্ধ বেঁধে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে বলে মনে করেন অধ্যাপক ক্ল্যারি।
এ সম্পর্কে অলাভজনক সংস্থা ‘সেন্টার ফর আর্মস কন্ট্রোল অ্যান্ড নন-প্রোলিফারেশন’–এর জ্যেষ্ঠ নীতি পরিচালক জন ইরাথ বিবিসিকে বলেন, যেখানে পারমাণবিক অস্ত্র জড়িত, সেখানে অগ্রহণযোগ্য মাত্রায় ঝুঁকি সব সময়ই থাকে।
এই বিশ্লেষক আরও বলেন, ‘ভারত ও পাকিস্তান সরকার অতীতেও এ ধরনের পরিস্থিতি সামাল দিয়েছে। তাই ঝুঁকি তুলনামূলকভাবে কম। কিন্তু পারমাণবিক অস্ত্রের ক্ষেত্রে এমনকি সামান্য ঝুঁকিও অনেক বিরাট কিছু।’
আরও পড়ুনকোন কূটনৈতিক চালে পারমাণবিক যুদ্ধের দ্বারপ্রান্ত থেকে সরে এল ভারত ও পাকিস্তান১৪ মে ২০২৫আরও পড়ুনশুরুতে নির্লিপ্ত থাকলেও পারমাণবিক যুদ্ধের শঙ্কায় শেষমেশ ভারত-পাকিস্তান দ্বন্দ্বে হস্তক্ষেপ ট্রাম্প প্রশাসনের১১ মে ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবহ র র বল ছ ল ন পর স থ ত অবস থ ন পর চ ল এনস এ
এছাড়াও পড়ুন:
শেখ মুজিবের মৃত্যুবার্ষিকীতে দোয়া মাহফিল, গ্রেপ্তার ৪
নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। পরে দোয়া মাহফিলের আয়োজক দুই যুবলীগ নেতা এবং দোয়া পরিচালনা করা স্থানীয় মসজিদের ঈমাম ও মুয়াজ্জিনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) রাতে উপজেলার চাপরাশিরহাট ইউনিয়নের সাতবাড়িয়া জামে মসজিদ এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। শনিবার (১৬ আগস্ট) নোয়াখালী ৯নং আমলি আদালতের বিচারক তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
কারাগারে পাঠানো আসামিরা হলেন, উপজেলার চাপরাশিরহাট ইউনিয়নের রামেশ্বপুর গ্রামের বাসিন্দা ও মসজিদের ঈমাম মেহেদী হাসান সুমন, একই গ্রামের বাসিন্দা ও মসজিদের মুয়াজ্জিন আব্দুল করিম, বাহার উদ্দিনের ছেলে যুবলীগ নেতা নজরুল ইসলাম ও ছদিক মিয়ার ছেলে যুবলীগ নেতা নিজাম উদ্দিন।
আরো পড়ুন:
কিশোরগঞ্জে শেখ মুজিবের মৃত্যুবার্ষিকী পালন, ২ শিক্ষক জেলে
মধ্যরাতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য, দুপুরে ভাঙচুর
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) বিকালে চাপরাশিরহাট ইউনিয়নের সাতবাড়িয়া এলাকার ছাত্রলীগের সাবেক নেতা মরহুম স্বপন মোল্লার বাড়িতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাদের পরিবারের নিহত সদস্যদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল করা হয়। সাবেক ছাত্রলীগ নেতা স্বপন মোল্লা স্মৃতি ফাউন্ডেশনের ব্যানারে ছাত্রলীগ ও যুবলীগ এই কর্মসূচির আয়োজন করে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সাতবাড়িয়া জামে মসজিদের ইমাম ও মুয়াজ্জিন ওই মিলাদ ও দোয়া মাহফিল পরিচালনা করেন। দলীয় নেতাকর্মীরা মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের ভিডিও ফেসবুকে শেয়ার দেন। এটি স্থানীয় প্রশাসনের নজরে এলে তারা ভিডিও দেখে অভিযানে নামে।
একই দিন রাত ৮টার দিকে অভিযান চালিয়ে ইমাম, মুয়াজ্জিন এবং দুই যুবলীগ নেতাসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে কবিরহাট থানা পুলিশ। কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়া আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনের কর্মসূচির প্রতিবাদে রাতেই উপজেলার চাপরাশিরহাট বাজারে যুবদল ও জামায়াতের যুব বিভাগের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল করেন।
কবিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীন মিয়া জানান, দোয়া মাহফিলের ঘটনায় সন্ত্রাস দমন আইনে ২৯ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করা হয়েছে। ৪০-৪৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। পুলিশ তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেপ্তার করে। পরে বিচারিক আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
ঢাকা/সুজন/বকুল