মাগুরার শিশু ধর্ষণ ও হত্যা মামলার রায় আজ
Published: 17th, May 2025 GMT
মাগুরায় আলোচিত শিশু ধর্ষণ ও হত্যা মামলার রায় হবে আজ শনিবার। মাগুরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল এই রায় ঘোষণা করবেন। অভিযোগ গঠন বা বিচার শুরুর ২১ দিনের মাথায় আলোচিত এই মামলার বিচার কার্যক্রম শেষ হলো।
আরও পড়ুনমাগুরার সেই শিশুটি কি অভিশাপ দিয়েছিল১৩ মার্চ ২০২৫আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মনিরুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত ২৭ এপ্রিল মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। ছুটির দিন বাদে টানা শুনানি চলেছে। আদালতে আসামিদের উপস্থিতিতে এ শুনানি হয়। মামলায় শিশুটির বোনের শ্বশুরের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯ / ২ ধারায় (ধর্ষণের ফলে মৃত্যুর অপরাধ), শিশুটির বোনের স্বামী ও ভাশুরের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৫০৬ ধারার দ্বিতীয় অংশ (ভয়ভীতি প্রদর্শন) এবং বোনের শাশুড়ির বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ২০১ ধারায় (অপরাধের আলামত নষ্টের অভিযোগ) অভিযোগ গঠন করা হয়।
আরও পড়ুনমাগুরা শিশু ধর্ষণ ও হত্যা মামলার বিচার কার্যক্রম ২১ দিনে শেষ, রায় শনিবার১৩ মে ২০২৫গত ১৩ এপ্রিল মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও মাগুরা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো.
গত ১৫ মার্চ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সব্যসাচী রায়ের আদালতে শিশুটির বোনের শ্বশুর ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
আরও পড়ুনমাগুরার সেই শিশুটিকে বাঁচানো গেল না১৩ মার্চ ২০২৫আরও পড়ুনমাগুরায় আলোচিত শিশু ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ০৭ মে ২০২৫শিশুটি বড় বোনের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিল। ৬ মার্চ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তাকে অচেতন অবস্থায় মাগুরার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে ১৩ মার্চ ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটির মৃত্যু হয়। এর আগে ৮ মার্চ শিশুটির মা মাগুরা সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা করেন।
৬ মার্চ ঘটনার দিন থেকে গণনা করলে ৭৩ দিনের মাথায় আজ এ মামলার রায় ঘোষণা হচ্ছে। এর মধ্যে তদন্ত শেষে পুলিশ ৩৭ দিনের মধ্যে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়।
আরও পড়ুনমাগুরার আলোচিত শিশু ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় যুক্তিতর্ক উপস্থাপন১২ মে ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আল চ ত
এছাড়াও পড়ুন:
অপহরণের একুশ দিন পেরিয়ে গেলেও উদ্ধার হয়নি ২ বোন, গ্রেপ্তার ১
নোয়াখালী সদর উপজেলায় অপহরণের ২১ দিন পরও দুই বোনকে উদ্ধার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তবে, পুলিশ বলছে মামলা দায়েরের পর আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ও তাকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। অন্যদিকে, দুই বােন উদ্ধার না হওয়ায় দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছে তাদের পরিবার।
শনিবার (১৭ মে) দুপুরের দিকে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সুধারাম থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ফখরুল ইসলাম বলেন, গতকাল শুক্রবার এ ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের সাত ধারায় মামলা নেওয়া হয়েছে এবং আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এর আগে, গত ২৬ এপ্রিল সন্ধ্যায় উপজেলার চরমটুয়া ইউনিয়নের রামানন্দী গ্রামের ফয়েজ মিস্ত্রি বাড়ি থেকে দুই বোন এসএসসি পরীক্ষার্থী তাহরিম হারুন ফালাহ (১৬) ও তার ছোট বোন তাছনুবা হারুন তাহা (১২) অপহরণের শিকার হন।
দুই স্কুল ছাত্রীর মা ফরিদা আক্তার জানান, তার বড় মেয়ে তাহরিম হারুন ফালাহ স্থানীয় পানা মিয়া টি.এফ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে চলতি এসএসসি দিচ্ছিল ও ছোট মেয়ে তাছনুবা হারুন তাহা স্থানীয় খাদিজাতুল কোবরা মহিলা মাদরাসার সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী। বড় মেয়ে তাহরিম বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসার পথে উপজেলার চর বাঞ্চারাম গ্রামের ওমর ফারুকের ছেলে সাজ্জাদুর রহমান শাওন তার মেয়েকে দীর্ঘদিন যাবৎ উত্যক্ত করে আসছে। বিষয়টি তিনি শাওনের পরিবারের সদস্যদের অবগত করেন। এতে শাওন ক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠে।
তিনি আরো জানান, গত ২৬ এপ্রিল সন্ধ্যায় আমার ঘরের বাইরে অবস্থানের সুযোগে পূর্বের ঘটনার জের ধরে শাওন ও তার সহযোগীরা ঘরে ঢুকে দুই মেয়ে তাহরিম হারুন ফালাহ ও তাছনুবা হারুন তাহাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে বহু জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে তাদেরকে না পেয়ে শাওনের পরিবারকে বিষয়টি অবগত করলে তারা এই বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানান।
দুই স্কুল ছাত্রীর মামা ওয়াহিদুর রহমান অপু বলেন, “গত ২১দিন ধরে আমার দুটি ভাগ্নি অপহৃত অবস্থায় রয়েছে। আমরা থানায় অভিযোগ করার পরও পুলিশ তাদেরকে উদ্ধার করতে পারেনি। এই নিয়ে একাধিকবার পুলিশ অভিযুক্ত সাজ্জাদুর রহমান শাওনের পরিবারের সঙ্গে থানায় বৈঠকও করেছে। কিন্তু কোন সন্ধান বের করতে পারেনি। সর্বশেষ গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে শাওনের পরিবারকে নিয়ে থানায় বৈঠক করলেও আমার ভাগ্নিদের কোন তথ্য না পাওয়ায় থানা পুলিশ আমার বড়বোন ফরিদা আক্তার থেকে এজাহার গ্রহণের পর অভিযুক্ত শাওনকে গ্রেপ্তার করে।”
অপহৃত ছাত্রীদের বাবা হারুন অর রশিদ বলেন, “আমার বড় মেয়ে এসএসসি পরীক্ষার ৬টি বিষয় শেষ করে। ২৬ এপ্রিল সন্ধ্যায় পড়ার টেবিলে পরের দিনের পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। ওই সময় বখাটে শাওন ও তার সহযোগীরা আমার বড় মেয়ের সঙ্গে সঙ্গে ছোট মেয়েকেও অপহরণ করে নিয়ে যায়। জানি না আমার মেয়েরা কোথায় আছে, কেমন আছে। এখন তথ্য-প্রযুক্তির যুগ, কিন্তু ঘটনার ২১ দিন পেরিয়ে গেলেও পুলিশ এখনো আমার মেয়েদের উদ্ধার করতে পারেনি। আমি আমার মেয়েদের সন্ধান চাই।”
সুধারাম মডেল থানার এসআই ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ফখরুল ইসলাম বলেন, “এ ঘটনায় অভিযুক্ত সাজ্জাদুর রহমান শাওন (২০) নামে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করে বিচারিক আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। অপহরণের শিকার দুই বোনকে উদ্ধারের জন্য চেষ্টা অব্যাহত আছে।”
ঢাকা/সুজন/টিপু