রাজধানী ঢাকার বাড্ডার আফতাবনগরের একটি বাসায় গ্যাস লিকেজ থেকে আগুন লাগার ঘটনায় একই পরিবারের তিন শিশুসহ পাঁচজন দগ্ধ হয়েছেন।

গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে আফতাব নগরের দক্ষিণ আনন্দনগর এলাকার আনসার ক্যাম্প বাজার–সংলগ্ন একটি তিনতলা ভবনের নিচতলায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

দগ্ধ ব্যক্তিরা হলেন তোফাজ্জল হোসাইন (৪৫), তাঁর স্ত্রী মানসুরা বেগম (৪৫) এবং তাঁদের তিন কন্যা তানজিলা (১১), মিথিলা (৭) ও তানিসা (৪)। তোফাজ্জল হোসাইনের বাড়ি ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চিলারং গ্রামে। তিনি পেশায় একজন নির্মাণশ্রমিক এবং পরিবারসহ আফতাব নগরে বসবাস করেন।

দগ্ধ ব্যক্তিদের উদ্ধার করে রাতে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন চিকিৎসক শাওন বিনতে রহমান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘পাঁচজনকেই জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তারা সবাই দগ্ধ। সবার অবস্থা গুরুতর।’

হাসপাতালের তথ্য বলছে, তোফাজ্জল হোসাইনের শরীরের ৮০ শতাংশ পুড়েছে। তাঁর স্ত্রীরও শরীরের ৬৫ শতাংশ পুড়েছে। তাঁদের তিন সন্তানের মধ্যে তানিশার ৩০ শতাংশ ও অন্য দুজনের ৬০ শতাংশ করে পুড়েছে।

প্রতিবেশী মো.

শরীফ প্রথম আলোকে বলেন, আনন্দ নগর এলাকার নিচতলার ওই ফ্ল্যাটে কোনোভাবে গ্যাস লিক হয়ে পুরো ঘরে গ্যাস জমে ছিল। পরে রান্নার চুলা জ্বালাতে গিয়ে গ্যাসের বিস্ফোরণ ঘটে। এতে মুহূর্তেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে এবং বাসায় থাকা সবাই দগ্ধ হন।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ইসরায়েলিদের হামলা-নির্যাতন: অতিষ্ঠ বেদুইন পরিবারগুলো ছাড়ছে পশ্চিম তীর

ইসরায়েলের সেনাদের আশ্রয়–প্রশ্রয়ে অবৈধ ইহুদি বসতি স্থাপনকারীদের নির্যাতন, হামলা ও হয়রানিতে অতিষ্ঠ হয়ে অধিকৃত পশ্চিম তীরের অন্তত ৫০টি ফিলিস্তিনি বেদুইন পরিবার তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ও স্থানীয় মানবাধিকার সংগঠনের বরাতে এ তথ্য জানা গেছে।

ফিলিস্তিনের সরকারি বার্তা সংস্থা ওয়াফা জানায়, গতকাল শুক্রবার সকালে জেরিকোর উত্তর-পশ্চিমে আরব মলেইহাত বেদুইন জনগোষ্ঠীর ৩০টি পরিবারকে জোরপূর্বক সেখান থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। আগের দিন গত বৃহস্পতিবারও সেখান থেকে ২০টি পরিবার সরে যেতে বাধ্য হয়।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে পশ্চিম তীরে দখলদার ইসরায়েলি সেনা ও অবৈধ বসতি স্থাপনকারীদের হামলা বেড়েই চলেছে।

জোরপূর্বক উচ্ছেদের শিকার হওয়ার আগে ওই এলাকায় ৮৫টি বেদুইন পরিবারের প্রায় ৫০০ জনের বসবাস ছিল।

স্থানীয় অধিকার সংগঠন ‘আল-বাইদার অর্গানাইজেশন ফর দ্য ডিফেন্স অব বেদুইন রাইটস’-এর পরিচালক হাসান মলেইহাত জানান, বছরের পর বছর ধরে কোনো সহায়তা ছাড়াই টিকে থাকার চেষ্টা করে আসছিল এ পরিবারগুলো। তবে শেষ পর্যন্ত তারা এলাকা ছাড়তে বাধ্য হয়।

বছরের পর বছর ধরে কোনো সহায়তা ছাড়াই টিকে থাকার চেষ্টা করে আসছিল বেদুইন পরিবারগুলো। তবে শেষ পর্যন্ত তারা এলাকা ছাড়তে বাধ্য হয়।হাসান মলেইহাত, ‘আল-বাইদার অর্গানাইজেশন ফর দ্য ডিফেন্স অব বেদুইন রাইটস’-এর পরিচালক

ওয়াফাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আলিয়া মলেইহাত নামের এক বেদুইন নারী জানান, সশস্ত্র ইহুদি বসতি স্থাপনকারীরা বন্দুক দেখিয়ে তাঁকে ও আশপাশের পরিবারগুলোকে হুমকি দেন। পরে জেরিকোর দক্ষিণের আকবাত জাবর শরণার্থী শিবিরে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন তাঁরা।

একই সম্প্রদায়ের বাসিন্দা সাত সন্তানের বাবা মাহমুদ মলেইহাত (৫০) বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘আমরা আর সহ্য করতে পারছিলাম না, তাই চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। অস্ত্রধারী বসতি স্থাপনকারীরা আমাদের ওপর হামলা চালান আর ইসরায়েলি সেনাবাহিনী তাঁদের রক্ষা করে। আমরা কিছুই করতে পারি না।’

ইসরায়েলি হামলার মুখে শরণার্থীশিবির ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছেন ফিলিস্তিনিরা। পশ্চিম তীরের জেনিনে

সম্পর্কিত নিবন্ধ