বাকৃবি শিক্ষার্থীকে ছুরিকাঘাতের চেষ্টা দোকানির
Published: 17th, May 2025 GMT
তুচ্ছ ঘটনায় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) দুই শিক্ষার্থীকে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে এক দোকানির বিরুদ্ধে।
শনিবার (১৭ মে) বিকেল সাৃড়ে ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ পোল্ট্রি মোড়ে এই ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী দুইজনই ভেটেরিনারি অনুষদের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. সাইফ আরমান এবং আনাস তালুকদার। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলের আবাসিক শিক্ষার্থী।
অপরদিকে, অভিযুক্ত দোকানির নাম মাসুদ রানা। তিনি বাকৃবির পোল্ট্রি মোড়ে চা বিক্রি করেন বলে জানা গেছে।
আরো পড়ুন:
সাম্য হত্যায় জড়িতদের বিশেষ ট্রাইব্যুনালে দ্রুত বিচারের সিদ্ধান্ত
জবি ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগে বর্তমান-সাবেকদের মিলনমেলা
এ ঘটনায় শনিবার রাত ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা ‘আমার ভাই আহত কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘বহিরাগত অস্ত্র হাতে, প্রশাসন কী করে?’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মো.
তিনি বলেন, “বিষয়টি দেখে আনাস ফেরাতে এলে তাকেসহ আমাকে ছুরি দিয়ে আঘাত করার জন্য তেড়ে আসে। এরপর কোনোমতে স্থানীয় লোকজন দোকানিকে থামিয়ে শান্ত করেন। তারপর স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে এগিয়ে এলে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করা হয়।”
ভুক্তভোগী বলেন, “প্রক্টর স্যারকে ১৫-২০ বার কল দেওয়ার পরে স্যার কল ধরেন। বিস্তারিত শোনার পর তিনি লোক পাঠানোর কথা জানান। প্রায় দেড় থেকে দুই ঘন্টা পরে স্থানীয় মানুষ এবং আমাদের হলের ভাইদের সহায়তায় আমরা ওই দোকানির থেকে লিখিত নিয়ে ঘটনার মিমাংসা করা হয়। শেষে যখন আমরা সবাই হলে ফিরছিলাম, তখন প্রক্টরিয়াল বডির গাড়ি আসে এবং আমাদের সঙ্গে খামার এলাকায় সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক মো. আনিসুর রহমান মজুমদারের সঙ্গে দেখা হয়।”
এ বিষয়ে সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আনিসুর রহমান মজুমদার বলেন, “প্রক্টর স্যার আমাকে যখন জানিয়েছেন, আমরা তখনই ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছি। সাড়ে ৫টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে আমরা কাউকে পাইনি।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আবদুল আলীম বলেন, “আমাকে ছাত্ররা কল করেন ৫টা ২১ মিনিটে এবং আমি কল ব্যাক করি ৫টা ৩৬ মিনিটে। তাদের থেকে ঘটনা শোনার পরই আমি প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যদের ঘটনাস্থলে যাওয়ার নির্দেশ দিই। পরে প্রক্টরিয়াল বডির তৎপরতায় ওই দোকান বন্ধ করা হয়েছে।”
ঢাকা/লিখন/মেহেদী
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে রাখাইনে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সম্মিলিত দায়িত্ব: বাংলাদেশ
জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত তারেক মো. আরিফুল ইসলাম বলেছেন, রাখাইনে রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছা, নিরাপদ, সম্মানজনক ও টেকসই প্রত্যাবাসনের মাধ্যমে রোহিঙ্গা সংকটের একটি স্থায়ী সমাধান খুঁজে বের করার জন্য বাংলাদেশ সব পক্ষের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। রাখাইনে রোহিঙ্গাদের অধিকার ও মর্যাদা সমুন্নত রাখা এবং তাদের প্রত্যাবাসনের জন্য দ্রুত একটি অনুকূল পরিস্থিতি সৃষ্টি করা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সম্মিলিত দায়িত্ব।
শুক্রবার বিকেলে জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের চলমান ৫৯তম অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। ওআইসির উদ্যোগে উত্থাপিত ‘মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিম এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার পরিস্থিতি’ শীর্ষক রেজ্যুলুশন গৃহীত হওয়ার আগে মানবাধিকার পরিষদে দেওয়া বক্তব্যে তারেক মো. আরিফুল ইসলাম এসব কথা বলেন।
জাতিসংঘে স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, রাখাইনে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী এবং ‘আরাকান আর্মি’র মতো সশস্ত্র গোষ্ঠীসমূহের মধ্যকার চলমান সংঘাত মানবিক সহায়তা কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করছে এবং রোহিঙ্গাদের দুর্দশা আরও বাড়িয়ে তুলছে। এ সময় বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মানবাধিকার পরিষদকে অবহিত করে উল্লেখ করেন যে, রাখাইন রাজ্যে চলমান হত্যাযজ্ঞ, নিপীড়ন এবং সহিংসতা এড়াতে শুধুমাত্র ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় এক লাখ ১৮ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে।
এ ছাড়াও আগামী সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কে রোহিঙ্গা বিষয়ে আয়োজিতব্য উচ্চ পর্যায়ের সম্মেলনে রোহিঙ্গা সংকটের সমাধানকল্পে বাস্তবমুখী এবং সময়াবদ্ধ সমাধান খুঁজে বের করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
প্রসঙ্গত, জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের চলমান ৫৯তম অধিবেশনে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিমদের মানবাধিকার পরিস্থিতি সম্পর্কিত রেজ্যুলুশনটি সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। রেজুল্যুশনে রোহিঙ্গাদের জন্য ক্রমহ্রাসমান মানবিক সহায়তার বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মানবিক সহায়তার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অধিকতর দায়িত্ব গ্রহণের বিষয়ে জোর দেওয়া হয়। এ ছাড়াও এতে জাতিসংঘ ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সংস্থাসমূহকে রাখাইনে নিরবিচ্ছিন্ন এবং পর্যাপ্ত মানবিক সহায়তা প্রদানের আহ্বান জানানো হয়।
রেজ্যুলুশনটিতে রাখাইনে বিচারহীনতা ও দায়মুক্তির সংস্কৃতি অবসানের জন্য জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার ওপর জোর দেওয়া হয়। এর পাশাপাশি রাখাইন রাজ্যের সব স্তরের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় রোহিঙ্গা মুসলমানদের অংশগ্রহণ এবং অর্থপূর্ণ প্রতিনিধিত্বের মাধ্যমে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক শাসন কাঠামো স্থাপনের আহ্বান জানানো হয়।
উল্লেখ্য, গত ১৬ জুন ২০২৫ তারিখে শুরু হওয়া জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের চলমান ৫৯তম অধিবেশন আগামী ৯ জুলাই ২০২৫ তারিখে সমাপ্ত হবে।