কথা উঠেছে, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট শারাকে হত্যা না করতে যুক্তরাষ্ট্রকে হুঁশিয়ারি দিয়েছিল জর্ডান
Published: 18th, May 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্র যেন সিরিয়ার নতুন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারাকে হত্যা না করে, এ হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জর্ডানের বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহ। এটা তিনি দেন গত সপ্তাহে ট্রাম্পের সঙ্গে শারার বৈঠকের আগে। যুক্তরাষ্ট্রের এক সিনেট সদস্য গত বৃহস্পতিবার এসব কথা বলেন।
ট্রাম্প প্রশাসনের একটি অংশ শারার প্রতি কতটা বৈরী মনোভাব পোষণ করে, ডেমোক্রেটিক পার্টির সিনেট সদস্য জিন শাহিনের এই বক্তব্য থেকে স্পষ্ট। তাঁর এই কথার স্বর ট্রাম্পের একটি বক্তব্যও সমর্থন করছে। গত বুধবার (১৪ মে) শারার সঙ্গে বৈঠকের পর ট্রাম্প বলেছিলেন, বিদেশি নেতারা শারাকে একটি সুযোগ দিতে তাঁকে সরাসরি অনুরোধ করেছিলেন, কিন্তু তাঁর নিজের উপদেষ্টারা এ বিষয়ে সন্দিহান।
গত বৃহস্পতিবার সিনেটের এক শুনানিতে জিন শাহিন বলেন,‘প্রশাসনের পররাষ্ট্রনীতি-সংক্রান্ত কিছু মহলে এমন কিছু গুজব শুনেছি, যা নিয়ে আমি উদ্বিগ্ন.
শাহিন বলেন, জর্ডানের বাদশা দ্বিতীয় আবদুল্লাহ আহমেদ আল-শারাকে হত্যা নিয়ে কথিত প্রস্তাবের কথা জানতে পেরে এ বিষয়ে সতর্ক করেছিলেন।
সিনেট সদস্য শাহিন আরও বলেন, ‘বাদশাহ আবদুল্লাহ আমাদের বলেছিলেন, এই ধরনের নেতৃত্বের পরিবর্তন সিরিয়ায় পুরোদমে গৃহযুদ্ধ বাধাতে পারে। আর তা এই মুহূর্তে দেশটিকে এগিয়ে নেওয়ার যে সুযোগ তৈরি হয়েছে, সেটার জন্য ভালো কিছু হবে না।’
শাহিন মে মাসে ওয়াশিংটন ডিসিতে বাদশাহ আবদুল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ধারণা করা হচ্ছে, সিরিয়ার ওপর থেকে সব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ঘোষণা এবং আল-শারার সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠকের ঠিক আগেই তাঁদের মধ্যে ওই কথাবার্তা হয়েছিল।
বৃহস্পতিবার সিনেটে শুনানি চলাকালে ট্রাম্প প্রশাসনের নিকট প্রাচ্যবিষয়ক পররাষ্ট্র দপ্তরের আন্ডারসেক্রেটারি পদের জন্য ট্রাম্পের মনোনয়নপ্রাপ্ত জোয়েল রেইবার্নকে নানা প্রশ্ন করেন সিনেট সদস্য শাহিন। শুনানির একপর্যায়ে তিনি আল-শারাকে হত্যার পরিকল্পনা-সংক্রান্ত মন্তব্যগুলো করেন।
এই সপ্তাহের ঘটনাবলির পটভূমিতে এই উক্তি তাৎপর্যপূর্ণ। বিশেষ করে এই সপ্তাহের ঘটনাপ্রবাহের প্রেক্ষাপটে তাঁর মন্তব্যগুলো গুরুত্বসহকারে নেওয়ার দাবি রাখে। মধ্যপ্রাচ্য সফরে গিয়ে সিরিয়ার ওপর থেকে সব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়ে ট্রাম্প তাঁর প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তা ও ইসরায়েলকে রীতিমতো চমকে দিয়েছেন।
তারপর গত বুধবার রিয়াদে শারার সঙ্গে বৈঠকটি করেন ট্রাম্প। বৈঠক শেষে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে বহনকারী উড়োজাহাজ ‘এয়ার ফোর্স ওয়ান’-এ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। সেখানে ট্রাম্প শারার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন। ট্রাম্প বলেন, শারা একজন ‘তরুণ, আকর্ষণীয় মানুষ। শক্ত মানুষ। অতীত জোরালো। যোদ্ধা।’
আল-শারাকে গুপ্তহত্যার বিকল্প উদ্যোগের বিষয়ে জানতে চাইলে জোয়েল রেইবার্ন বলেন, ‘আমি এমন কোনো উদ্যোগের কথা জানি না। তবে স্পষ্টতই তা প্রেসিডেন্টের উদ্দেশ্যের সঙ্গে কিংবা গত কয়েক দিনে তিনি শারাকে নিয়ে যা বলেছেন, তার সঙ্গে মিলছে না।’
সিরিয়ার অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা, সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সৌদি আরবের রিয়াদে, ১৪ মে ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আহম দ আল শ র স ন ট সদস য আবদ ল ল হ আল শ র ক
এছাড়াও পড়ুন:
বাংলাদেশিদের সিগারেট নিয়ে মালদ্বীপ না যাওয়ার পরামর্শ
দক্ষিণ এশিয়ার দ্বীপরাষ্ট্র মালদ্বীপে ভ্রমণরত বাংলাদেশিদের জন্য বিশেষ সতর্কতা জারি করেছে দেশটিতে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশন।
মালেতে অবস্থিত হাইকমিশন রবিবার (১৮ মে) এক বিজ্ঞপ্তিতে, মালদ্বীপে ভ্রমণের সময় বিড়ি, সিগারেট বা অন্য কোনো ধূমপান সংশ্লিষ্ট দ্রব্য সঙ্গে না নিতে অনুরোধ করেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “সকলের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, মালদ্বীপে বিড়ি, সিগারেট বা অন্য ধূমপান-সংশ্লিষ্ট দ্রব্যের ওপর বিভিন্ন ধরনের বিধি-নিষেধ রয়েছে। ফলে, এসব দ্রব্য নিয়ে আসা আইনগতভাবে দণ্ডনীয় অপরাধ।”
হাইকমিশনের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়, কেউ এই নির্দেশনা অমান্য করলে তাকে জেল অথবা বড় অঙ্কের জরিমানা গুণতে হতে পারে। এ ধরনের পরিস্থিতি এড়াতে বাংলাদেশিদের সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানানো হয়েছে।
মালদ্বীপ সরকার সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জনস্বাস্থ্য রক্ষায় ধূমপান নিয়ন্ত্রণে কঠোর আইন কার্যকর করছে। ইতোমধ্যে দেশটিতে ই-সিগারেট আমদানিও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ হাইকমিশনের পক্ষ থেকে মালদ্বীপগামী সব বাংলাদেশি নাগরিকদের স্থানীয় আইন মেনে চলা ও সম্মান জানানোর জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।
মালদ্বীপ সরকার ২০২৫ সালের ১ নভেম্বর থেকে একটি নতুন আইন কার্যকর করতে যাচ্ছে, যার আওতায় ২০০৭ সালের ১ জানুয়ারি বা তার পরবর্তী সময়ে জন্মগ্রহণকারী ব্যক্তিদের কাছে তামাকজাত পণ্য বিক্রি নিষিদ্ধ করা হবে। এই আইনের উদ্দেশ্য ভবিষ্যত প্রজন্মকে ধূমপান থেকে মুক্ত রাখা এবং দেশব্যাপী ধূমপান কমানো। আইনটি পর্যটকদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে।
এই আইনটি মালদ্বীপের জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ সুরক্ষায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তবে, নতুন আইনের লঙ্ঘনের শাস্তি সম্পর্কে এখনো বিস্তারিত ঘোষণা করা হয়নি, তবে কর্মকর্তারা বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনগুলোকে নতুন আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার জন্য কাজ করছেন।
ঢাকা/হাসান/মাসুদ