মেঘনা নদীতে মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে গত ৩০ এপ্রিল। নিষেধাজ্ঞা শেষে আরো ১৮ দিন অতিবাহিত হলেও লক্ষ্মীপুরের ২৮ হাজার জেলে এখনো সরকারি বরাদ্দকৃত চাল পাননি। এ নিয়ে জেলেদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

জেলা মৎস্য বিভাগ সূত্র জানায়, জেলায় নিবন্ধিত ৩৮ হাজার ৫৭৫ জন জেলে রয়েছে। এর মধ্যে, নিষেধাজ্ঞাকালীন খাদ্য সহায়তার চাল পান ২৮ হাজার ৩৪৪ জন জেলে। গত মার্চে প্রথম ধাপের চাল বিতরণ করা হলেও দ্বিতীয় ধাপেরটি এখনো আসেনি।

জেলেরা জানান, ৮০ কেজি করে দুই ধাপে তারা মোট ১৬০ কেজি চাল পান। এর মধ্যে, প্রথম ধাপের চাল পেলেও দ্বিতীয় ধাপের চালের খবর নেই। এছাড়া, নিষেধাজ্ঞা শেষে নদীতে মিলছে না কাঙ্ক্ষিত ইলিশ। জাল ফেললে পাঙাশের পোনা, ছোট আকারের ট্যাংরা ও পোয়া উঠছে। এতে খরচের টাকাই উঠছে না।

সদরের চররমনী গ্রামের জেলে আব্দুল মান্নান জানান, যারা নদীতে মাছ শিকার করেন, তারা অন্য কাজ জানেন না বললেই চলে। মাছ ধরেই সংসার চলে তাদের। নিষেধাজ্ঞাকালীন সময় সরকারের দেওয়া চাল পর্যাপ্ত নয়। সেই সময় ধারদেনা করেই চলতে হয়। কিন্তু, নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে ১৮ দিন। এখনো জেলেদের জন্য বরাদ্দকৃত দ্বিতীয় ধাপের চাল আসেনি। এছাড়া, নদীতে জাল ফেললে মাছ তেমন পাওয়া যায় না। ৭-৮ হাজার টাকা খরচ করে নদীতে জাল ফেললে ২-৩ হাজার টাকার মাছ ধরা পড়ে। কয়েকজনকে তো ফিরতে হয় খালি হাতে।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘‘নদীতে পানি বেশি ও আবহাওয়া খারাপ থাকায় মাছ কম ধরা পড়ছে। আশা করছি, শিগগিরই জেলেদের জালে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ ধরা পড়বে।’’

তিনি আরো বলেন, ‘‘জেলেদের জন্য বরাদ্দকৃত প্রথম ধাপের চাল বিতরণ করা হয়েছে। কিন্তু, দ্বিতীয় ধপের চাল এখনো আসেনি। চাল এলেই তাদের হাতে তুলে দেওয়া হবে।’’

ঢাকা/লিটন/রাজীব

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

অস্বস্তিকর পরিস্থিতি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে

প্রায় দুই সপ্তাহ আগে পররাষ্ট্রসচিবের পদ থেকে মো. জসীম উদ্দিনকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিয়োগ-বদলি ও শৃঙ্খলাসংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকেও এ বিষয়ে আলোচনা হয়। যদিও কোনো এক অজানা কারণে নতুন পররাষ্ট্রসচিব নিয়োগের বিষয়ে গতকাল রোববার পর্যন্ত কোনো দাপ্তরিক আদেশ জারি হয়নি। এই পরিস্থিতিতে মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি অন্যান্য মন্ত্রণালয় ও বিভিন্ন দেশের সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যোগাযোগের ক্ষেত্রে তৈরি হয়েছে সমস্যা। সব মিলিয়ে হযবরল অবস্থা চলছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে।

অবশ্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা গত শনিবার প্রথম আলোকে জানান, শনিবার দুপুরে জসীম উদ্দিনের উত্তরসূরি বেছে নিতে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন পাঁচ কূটনীতিকের নাম প্রস্তাব করে একটি সারসংক্ষেপ তৈরি করেছেন। ওই তালিকায় থাকা পাঁচ কূটনীতিকের সবাই বিসিএস (পররাষ্ট্র ক্যাডার) ১৫তম ব্যাচের কর্মকর্তা।

গতকাল বিকেলে সরকারের নীতিনির্ধারক পর্যায়ের একজন কর্মকর্তা এই প্রতিবেদককে জানান, জসীম উদ্দিন আর পররাষ্ট্রসচিব থাকছেন না, তা নিশ্চিত। তাঁর স্থলাভিষিক্ত কে হবেন, তা আগামী দু-তিন দিনের মধ্যে চূড়ান্ত হতে পারে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নানা পর্যায়ের বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মূলত পররাষ্ট্রসচিব পরিবর্তনকে ঘিরে ১০ দিনের বেশি সময় ধরে অস্বস্তিকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে মন্ত্রণালয়ে। এরই মধ্যে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের মৌখিক নির্দেশনায় গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন মন্ত্রণালয়ের সচিব (পূর্ব) মো. নজরুল ইসলাম।

দেশে ও দেশের বাইরের বিভিন্ন বৈঠকে পররাষ্ট্রসচিব জসীম উদ্দিনের অনুপস্থিতির বিষয়টি মন্ত্রণালয়ের অস্বস্তিকর পরিস্থিতিকে দৃশ্যমান করেছে বলে মনে করেন ঢাকার কর্মকর্তারা। ১৫ মে টোকিওতে জাপানের সঙ্গে পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকে বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেন মো. নজরুল ইসলাম। কর্মকর্তারা বলছেন, এই দুই দেশের সম্পর্কের পাঁচ দশকের মধ্যে এ ধরনের বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিবের পরিবর্তে অন্য কোনো কর্মকর্তার নেতৃত্ব দেওয়ার নজির এবারই প্রথম। গত ১০ দিনে আন্তমন্ত্রণালয়ের কোনো বৈঠকে জসীম উদ্দিন ছিলেন না। বৈঠকগুলোতে সচিব পদমর্যাদার অন্য দুই কর্মকর্তা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।

পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিন

সম্পর্কিত নিবন্ধ