কক্সবাজারের চকরিয়ায় বাসের ধাক্কায় দুজন পথচারী নিহত হয়েছেন। গতকাল রোববার দিবাগত রাত ১২টার দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে উপজেলার ফাঁসিয়াখালী রাস্তার মাথা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। পুলিশ বাসটি জব্দ করলেও চালক পালিয়ে গেছেন।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন চকরিয়া পৌরসভার ঘনশ্যাম বাজার এলাকার বাসিন্দা ও পৌর কিচেন মার্কেটের নিরাপত্তাকর্মী জাফর আলম (৫২) ও উপজেলার পূর্ব বড় ভেওলা ইউনিয়নের মাইজপাড়া এলাকার আবদুল মালেক (৪৬)।

চিরিংগা হাইওয়ে পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাত ১২টার দিকে কক্সবাজার থেকে ঢাকাগামী আইকনিক এক্সপ্রেসের একটি বাস ফাঁসিয়াখালী এলাকায় দুজনকে ধাক্কা দেয়। ঘটনাস্থলে একজন নিহত হন। গুরুতর আহত অবস্থায় আরেকজনকে চকরিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনিও মারা যান।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জায়নুল আবেদীন বলেন, দুই পথচারীকে বাস ধাক্কা দেওয়ার পর একজনকে মৃত ও আরেকজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। তবে আহত ব্যক্তিও হাসপাতালে আনার সাত থেকে আট মিনিটের মধ্যে মারা যান। নিহত দুজনের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, দুর্ঘটনার পর বাসটি জব্দ করা হয়েছে। তবে চালক পালিয়ে গেছেন। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: চকর য়

এছাড়াও পড়ুন:

সামিউরকে কেন হত্যা করা হলো, নিশ্চিত করে বলতে পারছে না কেউ

গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় জিগাতলা বাসস্ট্যান্ড–সংলগ্ন পাতাম রেস্টুরেন্ট এলাকায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছিলেন সামিউর রহমান (আলভি)। হঠাৎ ১৫ থেকে ২০ জনের একটি সংঘবদ্ধ দুর্বৃত্ত দল এসে রড, লাঠিসোঁটা দিয়ে মারধর শুরু করে। মারধর থেকে বাঁচতে দৌড় দিয়ে রাস্তার অপর পাশের একটা গলির ভেতর ঢুকে পড়লে সেখানেই তাঁকে ধারালো ছুরি দিয়ে আঘাত করা হয়। আর তাতেই মারা যান সামিউর। তবে তাঁকে কেন এভাবে হত্যা করা হলো, সেটা পরিষ্কারভাবে বলতে পারছেন না তাঁর পরিবারের সদস্যরা। পুলিশও এখন পর্যন্ত নিশ্চিত তথ্য পায়নি।

দুর্বৃত্ত দলের সদস্যরা পাশের এলাকা রায়েরবাজার ও মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে এসেছে বলে স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে। ওই দুর্বৃত্ত দল ওই এলাকায় সক্রিয় এক শীর্ষ সন্ত্রাসীর অনুসারী বলে জানা গেছে। অপর দিকে সামিউর যাঁদের সঙ্গে জিগাতলায় আড্ডা দিতেন, তাঁরা কোনো দলের সঙ্গে যুক্ত কি না, সে ব্যাপারেও নিশ্চিত করে তথ্য পাওয়া যায়নি।

পুলিশ বলছে, পূর্বশত্রুতার জের ধরে সামিউরকে হত্যা করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। হত্যায় জড়িত থাকা সন্দেহে কয়েকজনকে শনাক্ত করা গেছে। তাদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকাবাসী জানান, সামিউরের এক বন্ধুর সঙ্গে সাব্বিরের কয়েক দিন আগে মারামারি হয়। তাতে সাব্বিরের এক অনুসারী বেশ আহত হয়। যার জেরে শুক্রবার জিগাতলা বাসস্ট্যান্ড–সংলগ্ন ধানমন্ডি লেকপাড় এলাকায় সামিউর ও তাঁর বন্ধুদের ওপর হামলা করে সাব্বিরের অনুসারীরা। হামলার এক পর্যায়ে সামিউর ও তাঁর বন্ধুদের লেকপাড় থেকে ধাওয়া করে জিগাতলায় দারোগা মার্কেটের পাশের গলির ভেতরে নির্মাণাধীন ভবনের সামনে নিয়ে যায়। সেখানেই সামিউরকে ধারালো ছুরি দিয়ে আঘাত করা হয়। পরে সঙ্গে থাকা বন্ধুরা তাঁকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন। এ সময় তাঁর বন্ধু আশরাফুল, ইসমাইল হোসেন, জাকারিয়া ও দৃশ্যকেও মারধর করা হয়। তবে তাঁদের আঘাত গুরুতর না হওয়ায় হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন তাঁরা।

সামিউর রহমান ধানমন্ডির ডক্টর মালিকা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। থাকতেন হাজারীবাগ বিডিআর ৫ নম্বর গেট এলাকায় বাসের আলী কলোনিতে। তাঁর বাবা মশিউর রহমান ঠিকাদারি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। চার ভাইবোনের মধ্যে সামিউর ছিলেন সবার বড়। তাঁর ছোট তিন বোন রয়েছে। তাঁরা মামার বাসায় ভাড়া থাকেন। সামিউরের মামি মাহিয়া রহমান প্রথম আলোকে বলেন, সামিউর পড়াশোনার পাশাপাশি গুলিস্তানে একটা ট্রাউজারের দোকানে কাজ করত। কারও সঙ্গে কোনো ঝামেলায় জড়াত না। তিনি বলেন, ঘটনার দিন সকাল থেকেই সামিউর বাসায় ছিল। বিকেল পাঁচটার দিকে বাসা থেকে বের হয়ে জিগাতলায় যায়। বন্ধুদের সঙ্গে থাকার কারণে সামিউর আক্রমণের শিকার হয়েছে।

যেখানে সামিউরকে মারা হয়েছে, সেখানকার একটি বাড়ির নিরাপত্তা প্রহরীর সঙ্গে প্রথম আলোর কথা হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, ‘রাতে যখন ওই ছেলেকে মারধর করা হয়, তখন আমি ডিউটিতেই ছিলাম। ১৫ থেকে ২০ জনের একটি দল ছেলেটাকেসহ (সামিউর) কয়েকজনকে মারধর করে। সবার হাতে রড, চাকু ছিল। ৫ মিনিটের মধ্যেই মারধর শেষ করে ওরা চলে যায়। আমি ছেলেটাকে ধরে রিকশায় তুলে দিই। পরে শুনেছি ছেলেটা মারা গেছে।’ তিনি জানান, যারা মেরেছে, তাদের কাউকে তিনি চিনতে পারেননি।

এদিকে হত্যার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে হাজারীবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘পূর্বশত্রুতার জেরে ছেলেটাকে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছি। দুই পক্ষের মধ্যে আগে থেকেই শত্রুতা ছিল। এ ঘটনায় সামিউরের বাবা মশিউর রহমান বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেছেন। আমরা কয়েকজনকে শনাক্ত করতে পেরেছি। তাদের ধরতে আমাদের অভিযান চলছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সামিউরকে কেন হত্যা করা হলো, নিশ্চিত করে বলতে পারছে না কেউ