উদ্বোধনী জুটিতে বাংলাদেশ ৯ ওভারে তুলেছে বিনা উইকেটে ৯০ রান। আরব আমিরাত বাংলাদেশের চেয়ে এক কাঠি সরেস। উদ্বোধনী জুটিতে ৯ ওভারে তারা তুলেছে বিনা উইকেটে ৯৬। শেষ পর্যন্ত অবিশ্বাস্য ঘটনাই ঘটেছে। টেস্ট খেলুড়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে টি–টোয়েন্টিতে প্রথম জয় পেয়েছে আমিরাত, সেটিও এই সংস্করণে তাদের সর্বোচ্চ রান তাড়া করে পাওয়া জয়। ১ বল হাতে রেখে ২ উইকেটের এই জয়ে অবশ্য বাংলাদেশের ‘অবদান’ই বেশি!

আরও পড়ুনহেরেই গেল বাংলাদেশ, আমিরাতের নাটকীয় জয়৫ ঘণ্টা আগে

জয়ের জন্য শেষ দুই ওভারে ২৯ রান দরকার ছিল আমিরাতের। শরীফুল ১৯তম ওভারে ১ উইকেট নিলেও ১৭ রান দেওয়ায় শেষ ওভারে ১২ রান দরকার পড়ে স্বাগতিকদের। শেষ ওভারে তানজিম ওয়াইড দিয়ে বোলিং শুরুর পর দ্বিতীয় বলে ছক্কা হজম করায় সমীকরণটা দাঁড়ায় ৪ বলে ৪ রানের। পরের বলেই উইকেট নেন তানজিম। কিন্তু চতুর্থ বলে আসে ১ রান। পঞ্চম বলটি হায়দার আলীর বুকসমান উচ্চতায় করায় ‘নো’ হয়। পরের বলে দৌড়েই ২ রান নিয়ে আরব আমিরাতকে অবিস্মরণীয় এক জয় উপহার দেন ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় টি–টোয়েন্টি খেলতে নামা হায়দার (৬ বলে ১৫*)।

দ্বিতীয় রানটা নিতে গিয়ে আমিরাতের দুই ব্যাটসম্যান যেমন দ্বিধায় ভুগেছেন, তেমনি ফিল্ডার তাওহিদ হৃদয় দেরি করেছেন থ্রো করতে। অথচ সময়মতো থ্রোটা করতে পারলে রান আউটও হতে পারতেন হায়দার।

টি–টোয়েন্টিতে টেস্ট খেলুড়ে কোনো দলের বিপক্ষে সহযোগী কোনো দেশের সর্বোচ্চ রান তাড়া করা জয় এখন এটিই। আমিরাতের এই জয়ে সিরিজে এখন ১–১ সমতা। বিসিবির অনুরোধে এই সিরিজে আরও একটি ম্যাচ সংযুক্ত করা না হলে সিরিজ জয়ের শেষ সুযোগটাও পেত না বাংলাদেশ। আগের দুই ম্যাচের মতো শারজাতেই বুধবার সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচ।

আরও পড়ুনহর্শাল ও অভিষেকের রেকর্ড, লক্ষ্ণৌকেও ডোবাল আগেই ডুবে যাওয়া হায়দরাবাদ১ ঘণ্টা আগে

সিরিজের প্রথম ম্যাচে পারভেজ হোসেনের সেঞ্চুরির পরও দুই শ করতে পারেনি বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচে আবার বাংলাদেশ দুই শর দেখা পেলেও সর্বোচ্চ ৫৯ রান এসেছে তানজিদের ব্যাট থেকে। প্রথম পাঁচ ব্যাটসম্যানই কমবেশি রান পেয়েছেন। তবে অধিনায়ক লিটন দাস ৩২ বলে ৪০ করলেও স্বস্তিতে ব্যাট করতে পারেননি। দুই ছক্কা ও তিন চারে তাওহিদ হৃদয়ের ২৪ বলে ৪৫ ও জাকের আলীর ৬ বলে ১৮ রানে ২৪ ম্যাচ পর দুই শর দেখা পায় বাংলাদেশ।

প্রথম ম্যাচে ব্যাটিংয়ের অধারাবাহিকতাটুকু দ্বিতীয় ম্যাচে ভর করে বোলিংয়ে। টি–টোয়েন্টিতে অভিষিক্ত নাহিদ রানা নিজের প্রথম ওভারেই দেন ১৮ রান, প্রথম দুটি বলই ছিল ‘নো’ (দ্বিতীয়টি বিমার)! নাহিদ নিজের দ্বিতীয় ওভারে দেন ১৪ রান। শরীফুল ইসলাম, রিশাদ হোসেন ও তানজিমদের বাজে বলেও রান তুলেছেন আমিরাতের দুই ওপেনার মুহাম্মদ ওয়াসিম ও মুহাম্মদ জোহাইব।

৩৮ রান করা জোহাইবকে ১১তম ওভারের প্রথম বলে স্পিনার তানভীর ফিরিয়ে দেওয়ার পর ধীরে ধীরে ম্যাচে ফিরেছিল বাংলাদেশ। রিশাদের করা পরের ওভারে রাহুল চোপড়াকে হারায় আমিরাত। ১৪তম ওভারে তানজিম ২০ রান দেওয়ায় জয়ের জন্য শেষ ৬ ওভারে ৬০ রান দরকার ছিল আমিরাতের।

পরের ওভারে শরীফুল মাত্র ৩ রান দিয়ে পথের কাঁটা ওয়াসিমকে (৮২) তুলে নেওয়ার পর কিছুটা দুশ্চিন্তামুক্ত হয় বাংলাদেশ। তবে শঙ্কা তখনো ছিল। আর ছিল ক্যাচ ছাড়ার ক্ষত। ওয়াসিমের ক্যাচ ছাড়ার পর ১৬তম ওভারে সগীর খানের ক্যাচ যৌথ প্রযোজনায় মিস করেন বাংলাদেশের তিন ফিল্ডার!

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ২০৫/৫ (তানজিদ ৫৯, লিটন ৪০, নাজমুল ২৭, হৃদয় ৪৫, জাকের ১৮, শামীম ৬*, রিশাদ ২*; জাওয়াদউল্লা ৩/৪৫, সগীর ২/৩৬)।

আরব আমিরাত: ১৯.

৫ ওভারে ২০৬/৮ (ওয়াসিম ৮২, জোহাইব ৩৮, আসিফ ১৯, আলিশান ১৩, হায়দার ১৫*; রিশাদ ২/২৮, শরীফুল ২/৩৪, নাহিদ ২/৫০, তানভীর ১/৩৭, তানজিম ১/৫৫)।

ফল: আরব আমিরাত ২ উইকেটে জয়ী।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: মুহাম্মদ ওয়াসিম।

সিরিজ: ৩ ম্যাচের সিরিজে ১–১–এ সমতা।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আম র ত র উইক ট প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

বড় জয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগ শুরু চ্যাম্পিয়ন পিএসজির

চ্যাম্পিয়নস লিগের শিরোপাধারী প্যারিস সেইন্ট জার্মেই (পিএসজি) শিরোপা রক্ষার অভিযানে নেমেই দেখাল নিজেদের শক্তি। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে পার্ক দেস প্রিন্সের জমকালো রাতের ম্যাচে আতালান্তাকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিল লুইস এনরিকের শিষ্যরা।

মাঠে নেমে ম্যাচের মাত্র তৃতীয় মিনিটেই প্রথম গোল পায় পিএসজি। ব্র্যাডলি বারকোলার দারুণ পাস থেকে ফাবিয়ান রুইজ বল সাজিয়ে দেন মারকুইনহোসকে। পিএসজির অধিনায়ক নির্ভুল শটে দলকে এগিয়ে নেন ১-০ গোলে।

আরো পড়ুন:

জুভেন্টাস-বরুশিয়ার ৮ গোলের নাটকীয় ম্যাচে জয় পায়নি কেউ

এমবাপ্পের জোড়া গোলে চ্যাম্পিয়নস লিগে রিয়ালের রোমাঞ্চকর জয়

এরপর আরও কয়েকটা গোল হতে পারত। কিন্তু একবার একেবারে সামনে থেকে শট উড়িয়ে ফেলেন নুনো মেন্ডেস। আরেকবার বারকোলার শট দুর্দান্ত সেভে রক্ষা করেন আতালান্তা গোলরক্ষক মার্কো কার্নেসেচ্চি।

তবুও প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার আগে আক্রমণের ঝড় থামেনি। ৩৯ মিনিটে জর্জিয়ার উইঙ্গার খভিচা কাভারাটস্কেলিয়া ডান দিক থেকে ভেতরে ঢুকে অসাধারণ এক বাঁকানো শটে বল জড়িয়ে দেন জালে। স্কোরলাইন দাঁড়ায় ২-০।

বিরতিতে যাওয়ার আগে ব্যবধান আরও বাড়াতে পারত পিএসজি। ৪১ মিনিটে মারকুইনহোসকে ফাউল করে পেনাল্টি উপহার দেন আতালান্তার মার্কিন মিডফিল্ডার ইউনুস মুসাহ। তবে বারকোলার নেওয়া দুর্বল শট ঠেকিয়ে দেন আতালান্তার গোলরক্ষক কার্নেসেচ্চি। তাতে ২-০ তে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় দুই দল।

বিরতির ছয় মিনিট পরই ব্যবধান বাড়ে। বারকোলার দারুণ থ্রু বল ধরে বাঁ দিক থেকে নুনো মেন্ডেস এগিয়ে গিয়ে কঠিন কোণ থেকেও ঠাণ্ডা মাথায় শট পাঠান জালে। স্কোর হয় ৩-০।

শেষ বাঁশি বাজার আগ মুহূর্তে আসে চতুর্থ গোল। আতালান্তার ক্লান্ত ডিফেন্ডারের ভুল পাস কুড়িয়ে নিয়ে পর্তুগিজ স্ট্রাইকার গনসালো রামোস নির্ভুল ফিনিশে শেষ করেন গোল উৎসব।

গেল মে মাসে ফাইনালে ইন্টার মিলানকে ৫-০ গোলে হারিয়ে প্রথমবার ইউরোপ সেরার মুকুট পরেছিল পিএসজি। সেই ধারাবাহিকতায় নতুন মৌসুমের শুরুতেও লিগে টানা চার ম্যাচ জিতে সবার ওপরে তারা। এবার ইউরোপের মাঠেও দেখাল নিজেদের ভয়ংকর রূপ। জানান দিলো এবারও তারা চ্যাম্পিয়ন হতে চায়।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ