অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়ার গ্রেপ্তার নিয়ে প্রশ্ন, ক্ষোভ
Published: 20th, May 2025 GMT
বিদেশযাত্রার সময় গত রোববার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়াকে হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেপ্তার ও কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অভিনেতা-অভিনেত্রীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
ভাটারা থানার হত্যাচেষ্টা মামলায় গতকাল সোমবার ফারিয়াকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের শুনানি শেষে এ আদেশ দেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারাহ ফারজানা হক। এরপর বেলা আড়াইটার দিকে অভিনেত্রীকে কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে জুলাই অভ্যুত্থানের সময় তারকাদের মধ্যে যারা সোচ্চার ছিলেন, তারাও ফারিয়ার গ্রেপ্তার নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী তাঁর ফেসবুক পেজে এ বিষয়ে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন।
গতকাল রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) বলেছে, নুসরাত ফারিয়ার গ্রেপ্তার ও কারাগারে পাঠানোর ঘটনার বিচার প্রক্রিয়াকে প্রহসনে পরিণত করছে। জুলাই গণহত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় না এনে এ ধরনের লোক দেখানো, ঢালাওভাবে আসামি করা মামলায় গ্রেপ্তার ও জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানোর ঘটনা গণহত্যার বিচার প্রক্রিয়াকে লঘু করে দেখানোর প্রবণতা সৃষ্টি করছে।
হত্যা ও হত্যাচেষ্টা মামলায় ঢালাও আসামি এবং গ্রেপ্তার নিয়ে অনেক দিন ধরে মানবাধিকার সংস্থাসহ নানা মহল থেকে প্রশ্ন ওঠে। এরপর ঢালাও মামলার আসামিদের গ্রেপ্তার বন্ধ হচ্ছে না। অনেকে বলছেন, ফারিয়ার গ্রেপ্তারের ঘটনা ‘প্রতিহিংসামূলক’ আচরণ। শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনীনির্ভর চলচ্চিত্র ‘মুজিব’ সিনেমায় অভিনয় করেন ফারিয়া। ‘মুজিব’ সিনেমায় অভিনয়ের ‘অপরাধে’ রাষ্ট্রীয় প্রতিহিংসার প্রতিফলন হিসেবে দেখছেন কেউ কেউ।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অবশ্য বলছেন, ‘ফ্যাসিস্ট হাসিনার সহযোগী হওয়ার কারণে নুসরাত ফারিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
গতকাল সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ফারিয়াকে ঢাকার সিএমএম আদালতের হাজতখানায় আনা হয়। সকাল ১০টার পর তাঁকে হাজির করা হয় আদালতে। এ সময় তাঁকে সাদা মাস্ক, হেলমেট ও বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরানো হয়েছিল। নারী পুলিশ সদস্যরা তাঁকে আদালতের দোতলায় হাঁটিয়ে নিয়ে যান। এরপর তাঁর হেলমেট খুলে কাঠগড়ায় তোলা হয়। তখন সাদা মাস্ক মুখ থেকে একটু নামিয়ে তিনি হাঁপাতে থাকেন। পরে পুলিশের কাছ থেকে বোতল নিয়ে পানি পান করেন। এরপর তিনি উল্টো দিকে ফিরে নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে থাকেন।
এ সময় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ভাটারা থানার উপপরিদর্শক মো.
তবে এদিন আদালতে শুনানি চলাকালে কোনো কথা বলেননি অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়া। শুনানিতে মাথা নিচু করে মলিন মুখে দাঁড়িয়ে ছিলেন। আদালতেও কথা বলেননি।
শুনানিতে যা হলো
আসামিপক্ষের কয়েকজন আইনজীবী ফারিয়ার জামিন আবেদন করেন। তাদের মধ্য ফারহান মোহাম্মদ আয়াজ আদালতে কথা বলেন। তিনি বলেন, ফারিয়া দেশের স্বনামধন্য নায়িকা। তাঁর সঙ্গে কোনো রাজনৈতিক দলের সম্পর্ক নেই। তিনি রাজনৈতিক দলের সদস্যও না। জুলাই আন্দোলনের সময় তিনি কানাডায় ছিলেন। সেজন্য আমরা তাঁর পাসপোর্ট আদালতে দাখিল করেছি। আন্দোলনের পরও সিনেমা ও শুটিংয়ের কাজে তিনবার বিদেশে যান। তাঁর পালিয়ে যাওয়ার কোনো ইচ্ছে ছিল না। তিনি কোনো অপরাধ করেননি। আন্দোলনের সময় ছাত্রদের পক্ষেও স্ট্যাটাস দিয়েছেন। ফারিয়াকে নির্দোষ দাবি করে আইনজীবী আয়াজ বলেন, ২৫৮ আসামির মধ্যে নুসরাত ফারিয়ার ক্রম ২০৭ নম্বরে।
এ পর্যায়ে ঢাকা মহানগর জজ আদালতের পিপি ওমর ফারুক ফারুকী জামিনের বিরোধিতা করে বলেন, ‘হাসিনার পক্ষে ছিল, সে একজন ফ্যাসিস্টের সমর্থক। আন্দোলনের সময় ছাত্রদের বিরোধিতা করে এবং মদদ দেয় অন্যদের মতো। বিভিন্ন ঘটনায় তার সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে।’ শুনানি চলাকালে কাঠগড়ায় চোখ মুছতে দেখা যায় ফারিয়াকে।
মায়ের সঙ্গে দেখা হয়নি
ফারিয়াকে একনজর দেখার জন্য ঢাকার আদালত চত্বরে এসেছিলেন মা ফেরদৌসী বেগম। তিনি সকাল সাড়ে ৮টার দিকে আদালত চত্বরে আসেন। অবস্থান করেন ঢাকার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের চত্বরে। পরে তিনি যান হাজতখানার সামনে। তবে গণমাধ্যমকর্মীর ভিড় দেখে তিনি আবার চলে যান জেলা প্রশাসক চত্বরে থাকা কৃষ্ণচূড়া গাছের নিচে। ফারিয়াকে আদালতে তোলার সময় উপচে পড়া ভিড় দেখে তাঁর মা আর আদালতের সামনে যাননি।
হরেদরে মামলা
এনসিপি বিবৃতিকে বলছে, বিদ্যমান রাষ্ট্রকাঠামো ও প্রশাসনের মধ্যে থাকা একটি পক্ষ এ ধরনের অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে ‘জুলাই গণহত্যা’ এবং এর বিচার প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায়। অথচ এখন পর্যন্ত এই গণহত্যার বিচারে আমরা দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি দেখতে পাচ্ছি না। বিচার কার্যক্রমকে গতিশীল করতে অন্তর্বর্তী সরকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ গঠনের সিদ্ধান্ত নিলেও এখন পর্যন্ত এর বাস্তবায়নে আমরা কোনো প্রজ্ঞাপন দেখতে পাইনি।
এনসিপি আগামী জুলাইয়ের মধ্যে গণহত্যার বিচার প্রক্রিয়ায় দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখতে চায় উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘সেই লক্ষ্যে অন্তর্বর্তী সরকারকে আশু ও যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার জোর দাবি জানাই আমরা।’ এ ছাড়াও হরেদরে মামলা এবং মামলা-বাণিজ্যের বিষয়টিকে আমলে নিয়ে মামলা গ্রহণের ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে এনসিপি।
যা বললেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
মামলা থাকায় ফারিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। গতকাল সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘কারও বিরুদ্ধে মামলা থাকলে ছেড়ে দেওয়া যায় না। তাঁর নামে মামলা থাকলে কী করবেন। ছাইড়া দিলে আপনিই বলবেন ছাইড়া দিছেন। বিদেশযাত্রায় নিষেধ আছে কিনা, একটা পলিসি আছে।’
‘গ্রেপ্তার বিব্রতকর’
সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী নুসরাত ফারিয়াকে গ্রেপ্তারের সমালোচনা করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন। ফারুকী লেখেন, ‘আমি সাধারণত চেষ্টা করি আমার মন্ত্রণালয়ের কাজের বাইরে কথা না বলতে। কিন্তু আমার তো একটা পরিচয় আছে, আমি এই ইন্ডাস্ট্রিরই মানুষ ছিলাম এবং দুই দিন পর সেখানেই ফিরে যাবো। নুসরাত ফারিয়ার গ্রেপ্তার বিব্রতকর একটা ঘটনা হয়ে থাকল আমাদের জন্য।’
মামলা
গণঅভ্যুত্থান চলাকালে গত ১৯ জুলাই রাজধানীর ভাটারা এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন ছাত্রদল নেতা এনামুল হক। গত ৩ মে ভুক্তভোগী এনামুল বাদী হয়ে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে মামলা করেন। সেই মামলায় তিনি নুসরাত ফারিয়াকেও আসামি করেন। এতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়াও ১৭ অভিনয় শিল্পীকে আসামি করা হয়। মামলায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে আওয়ামী লীগের অর্থ জোগানদাতা হিসেবে আসামি করা হয়েছে ফারিয়াকে।
ক্ষোভ ও প্রতিবাদ
ফারিয়ার গ্রেপ্তারকে অনেকেই দেখছেন ‘মুজিব’ সিনেমায় অভিনয়ের কারণে রাষ্ট্রীয় প্রতিহিংসার প্রতিফলন হিসেবে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয়েছে আলোচনা-সমালোচনা। প্রতিবাদে মুখর হয়েছেন দেশের অভিনয় শিল্পী, নির্মাতা ও সংস্কৃতিকর্মীরা।
জুলাই আন্দোলনে সরাসরি অংশ নেওয়া অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন ফারিয়ার একটি ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, “কী এক লজ্জা! ফ্যাসিস্ট সরকার যা করেছে, সেখানে এই মেয়েটির কিছুই করার ছিল না। আমি এই সিস্টেম নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। ‘ন্যায্য অধিকার’ শব্দটা আজ অপার্থিব মনে হয়।”
নির্মাতা আশফাক নিপুণ লিখেছেন, ‘আসল অপরাধী বাদ দিয়ে সফট টার্গেট তৈরি করা হচ্ছে।’ ছোট পর্দার অভিনেতা খায়রুল বাসার প্রশ্ন তুলে লিখেছেন, ‘শুধু একটি সিনেমায় অভিনয়ের কারণে একজন শিল্পীকে কেন হেনস্তা হতে হবে? রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়াও কি এখন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে শিল্পীদের জন্য?’
বরেণ্য নির্মাতা শিহাব শাহীন এটিকে সরাসরি ‘হয়রানি’ বলেছেন। গিয়াস উদ্দিন সেলিম ব্যঙ্গ করে লিখেছেন, ‘উদ্ভট উটের পিঠে চলেছে স্বদেশ!’ নির্মাতা ও অভিনেতা শরাফ আহমেদ জীবন লিখেছেন, ‘মুজিব সিনেমায় অভিনয় করা কি অপরাধ? আমি হলে আমিও করতাম।’
সংগীতশিল্পী দিনাত জাহান মুন্নী লিখেছেন, ‘জেলখানার আর দরকার কী? চারপাশটাই তো জেলখানা!’ অভিনেতা সোহেল রানা বলেন, ‘এই রাষ্ট্রে শিল্পী কীভাবে কাজ করবে– দায়িত্ব নিয়ে কেউ বলেন।’
চিত্রনায়িকা পরীমণি ব্যঙ্গ করে লিখেছেন, ‘কথা হচ্ছে, কোনোকালেই কথা বলতে পারবা না মনু। ঘুমাও, ঘুমাও। ঘুমই উত্তম।’ চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়ায় লিখেছেন, ‘কী লজ্জা! তিনি একজন শিল্পী!’ নায়ক বাপ্পী চৌধুরী লিখেছেন, ‘যদি সত্যিই অপরাধে জড়িত থাকেন, তবে আইন অনুযায়ী বিচার হোক। কিন্তু মিথ্যা মামলা দিয়ে হেনস্তা করা হলে তা দুঃখজনক।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র ব চ র প রক র য় গণহত য র উপদ ষ ট আইনজ ব র জন য ন কর ন অপর ধ র ঘটন র সময় এনস প গতক ল
এছাড়াও পড়ুন:
নিম্ন আদালতের বিচারকদের নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলাসংক্রান্ত ১১৬ অনুচ্ছেদ নিয়ে রুল শুনানি মুলতবি
অধস্তন আদালতের নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলাসংক্রান্ত সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ এবং বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠা প্রশ্নে রুলের ওপর শুনানি ১৬ জুলাই পর্যন্ত মুলতবি করেছেন হাইকোর্ট। রাষ্ট্রপক্ষে সময়ের আরজির পরিপ্রেক্ষিতে আজ বৃহস্পতিবার বিচারপতি আহমেদ সোহেল ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ শুনানি মুলতবি করেন।
বর্তমান সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, বিচার-কর্ম বিভাগে নিযুক্ত ব্যক্তিদের এবং বিচার বিভাগীয় দায়িত্ব পালনরত ম্যাজিস্ট্রেটদের নিয়ন্ত্রণ (কর্মস্থল-নির্ধারণ, পদোন্নতি ও ছুটি মঞ্জুরিসহ) ও শৃঙ্খলা বিধান রাষ্ট্রপতির ওপর ন্যস্ত। সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শক্রমে রাষ্ট্রপতি তা প্রয়োগ করে থাকেন। সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ, ২০১৭ সালের জুডিশিয়াল সার্ভিস (শৃঙ্খলা) বিধিমালার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে এবং বিচার বিভাগীয় পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠার নির্দেশনা চেয়ে গত ২৫ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টের সাত আইনজীবী রিট করেন।
রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট গত বছরের ২৭ অক্টোবর রুল দেন। রুলে সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ এবং এ–সংক্রান্ত ২০১৭ সালের জুডিশিয়াল সার্ভিস (শৃঙ্খলা) বিধিমালা কেন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। একই সঙ্গে বিচার বিভাগীয় পৃথক সচিবালয় কেন প্রতিষ্ঠা করা হবে না, তাও জানতে চাওয়া হয় রুলে। আইন মন্ত্রণালয়ের দুই সচিব ও সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
এরপর বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ গত ১৪ জানুয়ারি রুলের শুনানির জন্য নির্ধারণ করেন। গত ২৯ জানুয়ারি এ মামলায় অ্যামিকাস কিউরি (আদালতের আইনি সহায়তাকারী) হিসেবে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শরীফ ভূইয়াকে নিয়োগ দেন আদালত। ওই বেঞ্চে রুল শুনানি ও নিষ্পত্তির অপেক্ষায় ছিল। এর মধ্যে গত ২৫ মার্চ বিচারপতি ফারাহ মাহবুব আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। পরে প্রধান বিচারপতি বিষয়টি শুনানি ও নিষ্পত্তির জন্য বিচারপতি আহমেদ সোহেলের নেতৃত্বধীন বিশেষ বেঞ্চ গঠন করে দেন।
বিচারপতি আহমেদ সোহেলের নেতৃত্বাধীন দ্বৈত বেঞ্চে গত ২৩ এপ্রিল রুলের ওপর শুনানি শুরু হয়। আগের ধারাবাহিকতায় গতকাল শুনানি হয়। আজও মধ্যাহ্নবিরতির পর শুনানির জন্য সময় ধার্য ছিল। আজ রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান সময়ের আরজি জানান। আদালত ১৬ জুলাই পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন।
পরে রিট আবেদনকারী আইনজীবী মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেলের সময়ের আরজির পরিপ্রেক্ষিতে আদালত দুই সপ্তাহের জন্য শুনানি মুলতবি করেছেন। আগামী ১৬ জুলাই শুনানি হবে।’
রিট আবেদন থেকে জানা যায়, ১৯৭২ সালের সংবিধানে অধস্তন আদালতের দায়িত্ব পালনরত ম্যাজিস্ট্রেটদের নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলা বিধানের দায়িত্ব সুপ্রিম কোর্টের ওপর ন্যস্ত ছিল। ১৯৭৪ সালে সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে এই দায়িত্ব রাষ্ট্রপতির ওপর ন্যস্ত করা হয়। পরে সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে ‘এবং সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শক্রমে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক তা প্রযুক্ত হবে’ শব্দগুলো যুক্ত করা হয়। আপিল বিভাগ পঞ্চম সংশোধনী আইন অসাংবিধানিক ঘোষণা করে। ২০১১ সালে পঞ্চদশ সংশোধন আইনের মাধ্যমে বর্তমান ১১৬ অনুচ্ছেদে ওই বিধানটি পুনরায় প্রতিস্থাপন করা হয়।