বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে শপথ না পড়ানোর নির্দেশনা চেয়ে উচ্চ আদালতে দায়ের করা রিট আবেদনের শুনানি কার্যতালিকায় রয়েছে।

মঙ্গলবার (২০ মে) দুপুরে হাইকোর্টের বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে রিটটি শুনানির জন্য রয়েছে।

ইশরাক হোসেনের আইনজীবী ব্যারিস্টার এ কে এম এহসানুর রহমান বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান।

আরো পড়ুন:

যারা একটি দলের প্রতিনিধির কাজ করেছে, তাদের পদত‍্যাগ করতে হবে: ইশরাক 

অবৈধ নির্বাচনের মেয়র হতে চাইলে সেটা কি বৈধ হয়, প্রশ্ন সারজিসের

এদিকে, আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করবেন আইনজীবী মোহাম্মদ হোসেন।

২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন হয়। তাতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপস মেয়র নির্বাচিত হন। নির্বাচন কমিশন ২ ফেব্রুয়ারি ভোটের ফলের গেজেট প্রকাশ করে। এরপর শপথ নিয়ে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন তাপস।

সেই নির্বাচনে ঢাকা দক্ষিণের মেয়র পদে তাপস পেয়েছিলেন সোয়া চার লাখ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির ইশরাক পান দুই লাখ ৩৬ হাজার ভোট। নির্বাচনে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ফল বাতিল চেয়ে ২০২০ সালের ৩ মার্চ মামলা করেন ইশরাক হোসেন।

গত ২৭ মার্চ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২০২০ সালের নির্বাচনে ফজলে নূর তাপসকে বিজয়ী ঘোষণার ফল বাতিল করে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করেন ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো.

নুরুল ইসলাম।

আদালত ১০ দিনের মধ্যে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ দেন। এ রায় পাওয়ার পর ২৭ এপ্রিল গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন।

ইশরাককে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে শপথ না পড়ানোর নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়। সেই সঙ্গে রিটে বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করা ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালের বিচারকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনাও চাওয়া হয়েছে।

রিটে নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়। বুধবার (১৪ মে) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট আবেদনটি করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বাসিন্দা মো. মামুনুর রশিদের পক্ষে আইনজীবী কাজী আকবর আলী।

এদিকে, বিএনপির প্রয়াত নেতা ও অখণ্ড ঢাকা সিটি করপোরেশনের মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইশরাককে মেয়র হিসেবে পেতে গত কয়েকদিন ধরে নগর ভবনে তালা দিয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে আসছেন তার সমর্থকরা।

ঢাকা/এম/ইভা 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ ড এসস স ইশর ক হ স ন শপথ ন ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

‘সাংবাদিক নির্যাতন-বাকস্বাধীনতা হরণের’ নিন্দা জানাল ৮৮ প্রবাসী সাংবাদিক-অধিকারকর্মী

বাংলাদেশে গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে সাংবাদিকদের ওপর অবর্ণনীয় নির্যাতন চালানো হচ্ছে  দাবি করে এর নিন্দা জানিয়েছেন ৮৮ প্রবাসী সাংবাদিক, সাহিত্যিক, শিক্ষক-গবেষক, সংস্কৃতি ও অধিকারকর্মী।

আজ বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তারা বলেন, ‘বাংলাদেশে গণমাধ্যম ও সামাজিকমাধ্যমে মতপ্রকাশে নানা রকম লিখিত ও অলিখিত নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে বাকস্বাধীনতা হরণ করা হচ্ছে, যা অত্যন্ত লজ্জাজনক ও ঘৃণ্য পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত।’

বিবৃতিতে অধিকারকর্মীরা বলেন, ‘আমরা প্রবাসে বসবাস করলেও বরাবরের মতোই দেশের ভালো-মন্দ নিয়ে উৎকণ্ঠায় থাকি। সে কারণে দেশের অমঙ্গলের সমালোচনা ও প্রতিবাদ করা নৈতিক দায়িত্ব বলে মনে করি।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘শান্তিতে নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের ১১ মাসে বিভিন্ন পর্যায়ে ও বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় ধারাবাহিক সাংবাদিক নির্যাতন চলছে। এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য মতে, বিগত ১১ মাসে অন্তত ৪১২ জন সাংবাদিককে হত্যা মামলাসহ হয়রানিমূলক বিভিন্ন মামলায় আসামি করা হয়েছে। ৩৯ জন সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’

তারা বলেন, ‘বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে তিন শতাধিক সাংবাদিকের ওপর। শতাধিক সাংবাদিকের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ। হেনস্থামূলক দুর্নীতির মামলা হয়েছে দুর্নীতি দমন কমশিনে। ঢাকাসহ সারা দেশের সহস্রাধিক সাংবাদিকের চাকরিচ্যুতি, ১৬৮ সাংবাদিকের প্রেস অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড বাতিল, জাতীয় প্রেসক্লাবসহ সারা দেশের প্রেসক্লাবগুলো থেকে ১০১ জন সাংবাদিকের সদস্যপদ স্থগিত, বাতিল ও বহিষ্কার এবং মিডিয়া দখলের মতো নজিরবিহীন ঘটনা ঘটেছে বাংলাদেশে।’

বিবৃতিতে শিক্ষক-গবেষকরা বলেন, ‘জুলাই-আগস্ট আন্দোলন ও পরবর্তী সময়ে ১০ জন সাংবাদিক নিহত এবং অগণিত সাংবাদিক আহত হলেও সরকারের তরফ থেকে আক্রান্ত সাংবাদিক ও তাদের পরিবারের প্রতি সহযোগিতার হাত প্রসারিত হয়নি, বরং নির্যাতনের কালো হাতের সম্প্রসারণ ঘটেছে। পত্রিকা অফিসের সামনে ‘মব’ সৃষ্টি করে ‘জেয়াফতের’ মতো ঘটনাও দেখেছে দেশবাসী, যা শুধু বাংলাদেশ নয়, গোটা বিশ্বেও সম্ভবত বিরল ঘটনা।’

তারা আরও বলেন, এসব নির্যাতন ও নিপীড়নের ফলে অনেক সাংবাদিক ও তাদের পরিবার অবর্ণনীয় মানসিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক কষ্ট ভোগ করছে এবং মানবেতর জীবনযাপন করছে।

বিবৃতিদাতারা বলেন, ‘আমরা মনে করি, এসব নির্যাতনমূলক কর্মকাণ্ড বাকস্বাধীনতাকে হরণ করছে, যার ফলে সর্বত্র দেশের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। এমনকি, এসব ঢালাও মামলা ও চাকরিচ্যুতিসহ অন্যান্য নির্যাতনমূলক ঘটনার প্রতিকারে সরকারের তরফ থেকে কোনো উদ্যোগ লক্ষ করা যায়নি। এতে আমাদের সন্দেহ জেগেছে যে, খোদ সরকারই নির্যাতন প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত।’

এতে আরও বলা হয়, ‘আমাদের ভূ-খণ্ডের ইতিহাসে সাংবাদিকদের ওপর এমন নির্যাতন-নিপীড়ন, চাকরিচ্যুতি ও গণমাধ্যমের মুখ বন্ধ ও কলম থামিয়ে দেওয়ার ঘটনা অতীতে ঘটেনি। গণতান্ত্রিক বিশ্বের কোথাও ঘটেছে বলে আমাদের জানা নেই। আমরা সাংবাদিকদের ওপর নজিরবিহীন নির্যাতন ও বাস্বাধীনতা হরণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’

কানাডাপ্রবাসী সাংবাদিক শওগাত আলী সাগরের পাঠানো এ বিবৃতিতে সই করেছেন- সৈয়দ বদরুল আহসান, সিনিয়র সাংবাদিক; ড. মুকিদ চৌধুরী, কথাসাহিত্যিক, সাংবাদিক ফজলুল বারী, সুজাত মনসুর, সাংবাদিক ও প্রাবন্ধিক; আশেকুন নবী চৌধুরী, সাংবাদিক; সৈয়দ আনাস পাশা, সাংবাদিক ও সম্পাদক; মোহাম্মদ মকিস মনসুর, সাংবাদিক; সৈয়দ এনামুল ইসলাম, সাপ্তাহিক সিলেটের ডাকের সাবেক সম্পাদক, টি এম আহমদ কায়সার, কবি; জেসমিন চৌধুরী, মানবাধিকার ও সামাজিক ন্যায়বিচার অ্যাক্টিভিস্ট; সফিয়া জাহির, কবি; সৈয়দ হিলাল সাইফ, সাংবাদিক ও ছড়াকার; ড. রায়হান রশিদ, আইনজীবী ও অধিকারকর্মী; ড. নওরীন তামান্না, আইনজীবী ও অধিকারকর্মী ও শিক্ষক; ওয়ার্দা ইসলাম, আইনজীবী ও অধিকারকর্মী; মুরসালিন মিজান, সাংবাদিক; তুষার আহমেদ, অধিকারকর্মী; হামিদ মোহাম্মদ, সাংবাদিক ও কবি; আকতার জামান, লেখক; দেলোয়ার হোসেন, সাংবাদিক; জাহানারা নুরী, সাংবাদিক; বাঁধন মুন্সি, ব্লগার ও অ্যাক্টিভিস্ট; মারজান প্রধান, অধিকারকর্মী; আজম খান, ব্লগার ও অ্যাক্টিভিস্ট; বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. নূরুন নবী, একুশে পদকপ্রাপ্ত লেখক ও বিজ্ঞানী; বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. জিনাত নবী, বিজ্ঞানী ও সমাজচিন্তক; বীর মুক্তিযোদ্ধা তাজুল ইমাম, গীতিকার-সুরকার ও কণ্ঠশিল্পী; বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ মাহমুদউল্লাহ, কলামিস্ট; বীর মুক্তিযোদ্ধা সুব্রত বিশ্বাস, কলামিস্ট;  কুলদা রায়, কথাসাহিত্যিক; হাসানআল আব্দুল্লাহ, কবি ও প্রাবন্ধিক; শীলা মোস্তফা, কবি; অধ্যাপক ড. নীরু কে. নাহার, লেখক ও শিক্ষক; ড. মো. আবু নাসের রাজীব, অধ্যাপক; ড. রায়হান জামিল, শিক্ষাবিদ-গবেষক ও লেখক; সেজান মাহমুদ, লেখক, গীতিকার, কলামিস্ট ও চিকিৎসাবিজ্ঞানী; সুলতানা রহমান, সাংবাদিক ও উপস্থাপক;  মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান, সাংবাদিক ও লেখক; লুৎফুন নাহার লতা, লেখক ও অভিনয়শিল্পী; ফারজাহান রহমান শাওন, ডিরেক্টর, সেন্টার ফর টিচিং অ্যান্ড লার্নিং; ফকির ইলিয়াস, কবি; ফারহানা ইলিয়াস তুলি, কবি; সৈয়দ জাকির আহমেদ রনি, অভিনেতা ও নাট্যকর্মী; ড. আঞ্জুমান এ ইসলাম, পানি ও পরিবেশ প্রকৌশলী, গবেষক ও কলামিস্ট; ওবায়দুল্লাহ মামুন, লেখক ও গবেষক; স্বপ্নীল ফিরোজ, কবি; খালেদ সরফুদ্দীন, কবি; স্মৃতি ভদ্র, কথাসাহিত্যিক ও শিক্ষক; তৈমুর ফারুক তুষার, সাংবাদিক ও উপস্থাপক; বিকাশ মজুমদার, অধিকারকর্মী।

বিবৃতিতে আরও সই করেন- পুষ্পিতা অনিন্দিতা, অধিকারকর্মী; মিনহাজ আহমেদ, লেখক; মনজুর কাদের, লেখক; জি এইচ আরজু, সাংস্কৃতিককর্মী ও সংগঠক; মিথুন আহমেদ, সাংস্কৃতিককর্মী ও সংগঠক; সিসিলিয়া মোরাল, সাংস্কৃতিককর্মী ও সংগঠক;  সাবিনা নীরু, আবৃত্তিশিল্পী ও সাংস্কৃতিককর্মী; আবু সাইদ রতন, লেখক; মুজাহিদ আনসারী, কলামিস্ট; দেলওয়ার এলাহী, কবি ও সংস্কৃতিকর্মী; কৌশিক আহমেদ, সাংবাদিক ও প্রাবন্ধিক; আসলাম আহমাদ খান, সাংবাদিক ও লেখক; ক্ল্যারা রোজারিও, আবৃত্তিশিল্পী; এ্যানি ফেরদৌস, সাংস্কৃতিক সংগঠক প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আজ কবি ও সংগঠক বাপ্পি সাহা’র জন্মদিন
  • রংপুরে শিশু পুনর্বাসনকেন্দ্রে মানসিক-যৌন নির্যাতনের অভিযোগে আদালতের মামলা
  • যুক্তরাষ্ট্রে উড়োজাহাজে সহযাত্রীর ওপর আক্রমণের অভিযোগে ভারতীয় বংশোদ্ভূত তরুণ গ্রেপ্তার
  • বরিশালে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা
  • নিম্ন আদালতের বিচারকদের নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলাসংক্রান্ত ১১৬ অনুচ্ছেদ নিয়ে রুল শুনানি মুলতবি
  • আরো ৮ জনের করোনা শনাক্ত
  • চানখাঁরপুলের মামলায় অভিযোগ গঠন বিষয়ে আদেশ ১৪ জুলাই
  • ‘সাংবাদিক নির্যাতন-বাকস্বাধীনতা হরণের’ নিন্দা জানালেন ৮৮ প্রবাসী সাংবাদিক-অধিকারকর্মী
  • ‘সাংবাদিক নির্যাতন-বাকস্বাধীনতা হরণের’ নিন্দা জানাল ৮৮ প্রবাসী সাংবাদিক-অধিকারকর্মী
  • ইস্টল্যান্ড ইনস্যুরেন্সের ১০% নগদ লভ্যাংশ অনুমোদন