স্টার নই, আমি একজন অভিনেতা: বোমান ইরানি
Published: 20th, May 2025 GMT
বোমান ইরানি। বলিউড অভিনেতা ও নির্মাতা। ৭৮তম কান চলচ্চিত্র উৎসবের বাণিজ্যিক শাখায় (মার্সে দু ফিল্ম) অনুপম খের পরিচালিত ছবি ‘তানভি দ্য গ্রেট’ প্রদর্শিত হয়েছে। এ সিনেমায় অভিনয় করেছেন বোমান ইরানি। ছবিটি নিয়েই পৃথিবীর অন্যতম বড় চলচ্চিত্র উৎসবে আসা। কান সাগরপারে কথা হয় তাঁর সঙ্গে....
কানে আপনাকে দেখে সত্যিই ভালো লাগছে। ‘তানভি দ্য গ্রেট’ নিয়ে প্রচুর প্রশংসা হচ্ছে। এই অভিজ্ঞতা কেমন?
(হাসি) কানে আসা সবসময়ই এক অন্যরকম অভিজ্ঞতা। তবে এবার ‘থানভি দ্য গ্রেট’ নিয়ে এসেছি, যেটা আমার বন্ধু অনুপম খেরের প্রথম নির্মাণ। ওর ছবি মানে আমারও ছবি। তাই এই ছবিতে আমি শুধু অভিনেতা নই। এটা আমার আত্মার একটি কাজ। অনুপম খেরের পরিচালনায় কাজ করাটা নিজের ঘরেই অভিনয় করার মতো ছিল। গল্পটা যেমন শক্তিশালী, তেমনি বাস্তব ও স্পর্শকাতর। এমন একটা ছবি কানে প্রদর্শিত হওয়াটা সত্যিই আনন্দের।
আপনি অনেক দেরিতে চলচ্চিত্রে এসেছেন। মুম্বাইয়ের ফটোগ্রাফার থেকে আজ কানের লালগালিচায়– যাত্রাটা কেমন ছিল?
কঠিন, কিন্তু সুন্দর। আমার ক্যারিয়ার শুরু হয় থিয়েটার দিয়ে, তারপর বিজ্ঞাপন, তারপর সিনেমা। ৪০-এর কাছাকাছি বয়সে বলিউডে পা রাখি। প্রথম বড় ব্রেক ‘মুন্নাভাই এমবিবিএস’। তারপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি। আমি বিশ্বাস করি, বয়স কোনো বাধা নয়। যদি আপনি মনপ্রাণ দিয়ে চেষ্টা করেন, সঠিক সময় এলে সঠিক দরজা খুলবেই। আমারও খুলেছে। এখনও বলিউডে কাজ করছি। কানে সিনেমা নিয়ে ঘুরছি।
সিনেমায় আপনার চরিত্রগুলো সবসময়ই খুব আলাদা হয়– “৩ ইডিয়টস”-এর ভাইরাস, “মুন্নাভাই”-এর ডিন, “হাউজফুল”-এর কৌতুকপূর্ণ চরিত্র… চরিত্র নির্বাচন করেন কীভাবে?
আমি চেষ্টা করি এমন চরিত্র বেছে নিতে, যা মানুষ মনে রাখবে। কমেডি হোক বা সিরিয়াস, চরিত্রে যদি স্তর থাকে, গল্পে যদি প্রাণ থাকে– তবেই করি। আমি স্টার নই, একজন অভিনেতা। আমি মনে করি স্টার হলো আপনি চরিত্র হয়ে উঠতে পারবেন না। কিন্তু যদি অভিনেতা হন তা হলে আপনার সামনে দুয়ার খোলা। তবে এজন্য আমাকে গল্প চাই, সংলাপ চাই, আর একটা ভালো পরিচালক পেতে হবে।
অনুপম খের আপনার খুব কাছের বন্ধু। দারুণ অভিনেতা। তাঁর পরিচালনায় অভিনয়ের অভিজ্ঞতা কেমন?
অনুপম তো একজন দুর্দান্ত অভিনেতা, সেটা আমরা জানি। কিন্তু পরিচালক হিসেবে তিনি আমাকে চমকে দিয়েছেন। প্রতিটি দৃশ্যের গভীরতা, আবেগের সূক্ষ্মতা এবং চরিত্রের ভেতরের দ্বন্দ্ব বোঝাতে উনি যেভাবে আমাদের দিকনির্দেশনা দিয়েছেন, তা অনবদ্য। প্রথম দিনেই অনুপম বললেন, ‘এটা অভিনয় নয়, এটা উপলব্ধি করতে হবে।’ তখন বুঝলাম ও দারুণ কিছু বানাবে। বানিয়েছেও।
‘থানভি দ্য গ্রেট’ ছাড়াও কি আপনার কাছে আরও কোনো নতুন কাজের খবর জানতে পারি?
হ্যাঁ, আমি এখন নিজের লেখা ও পরিচালনায় একটি ছবি প্রস্তুত করছি। গল্পটা আমার বহুদিনের স্বপ্ন। সেইসঙ্গে একটা আন্তর্জাতিক প্রজেক্টের কথাবার্তাও চলছে। তবে আমি কখনো তাড়াহুড়া করি না। ভালো কিছুই করতে চাই।
বর্তামান সময়ের বলিউডের প্রজেক্ট নিয়ে নানা আলোচনা সমালোচনা হয়। এখনকার বলিউডকে আপনি কীভাবে দেখেন?
বলিউড এখন একটা পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। গল্পভিত্তিক সিনেমার চাহিদা বেড়েছে। দর্শক এখন কনটেন্ট-চালিত ছবি দেখতে চায়, বড় নাম নয়। এটা খুবই ইতিবাচক পরিবর্তন। ওটিটি প্ল্যাটফর্মও অনেক নতুন প্রতিভাকে জায়গা দিচ্ছে। সব ইন্ডাষ্ট্রিতেই পরিবর্তন ও থমকে যাওয়ার ব্যাপারটি থাকে। সেটা সাময়িক। বলিউড তার নিজস্ব গতিতেই চলবে।
আপনি তরুণদের জন্য “স্পাইরাল বাউন্ড” নামে এক স্ক্রিপ্ট রাইটিং ইনিশিয়েটিভও চালাচ্ছেন। একটু বলবেন?
হ্যাঁ, স্ক্রিপ্ট লেখার গুরুত্ব আমি বুঝি। “স্পাইরাল বাউন্ড” একটা এমন প্ল্যাটফর্ম, যেখানে লেখকরা শিখতে পারে কীভাবে আন্তর্জাতিক মানের স্ক্রিপ্ট তৈরি করা যায়। আমি চাই, নতুন প্রজন্ম গল্প বলার ক্ষমতা অর্জন করুক– এই শিল্পটা তাঁদের হাতেই এগিয়ে যাবে।
জীবনের এই পর্যায়ে দাঁড়িয়ে, আপনি নিজেকে কোথায় দেখতে পান?
আমি এখনও শিখছি। প্রতিটি দিন, প্রতিটি চরিত্র, প্রতিটি সেট– সবই আমাকে নতুন কিছু শেখায়। আমি শুধু চাই ভালো গল্পে কাজ করে যেতে, নতুন প্রজন্মকে উৎসাহ দিতে এবং ভালো মানুষ হিসেবে বাঁচতে।
আপনার কথাগুলো অনুপ্রেরণাদায়ক। ধন্যবাদ এত সুন্দর সময় ও অনুভূতির জন্য। বাংলাদেশের দর্শকদের নিয়ে কিছু বলার আছে?
ধন্যবাদ। বাংলাদেশ আমাদের প্রতিবেশী। বাংলাদেশের সব দর্শককে আমার ভালোবাসা জানিয়ে দিও।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ক ন চলচ চ ত র উৎসব চর ত র পর চ ল আপন র
এছাড়াও পড়ুন:
সোহানকে না রাখার যে ব্যাখ্যা দিলেন প্রধান নির্বাচক
ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়মিত পারফর্ম করছেন নুরুল হাসান সোহান। তার নেতৃত্বে গ্লোবাল সুপার লিগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল রংপুর রাইডার্স। জাতীয় দলে ডাক পাওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও শ্রীলঙ্কা সিরিজের ওয়ানডে দলে তাকে রাখা হয়নি নির্বাচক প্যানেলের পক্ষ থেকে।
সোমবার মিরপুরে সংবাদ সম্মেলন করে দল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন নির্বাচক প্যানেলের আরেক সদস্য আব্দুর রাজ্জাক। সোহানকে না রাখার একটি অন্যতম কারণ, স্কোয়াডে তিনজন উইকেটরক্ষক না রাখা।
প্রধান নির্বাচক বলেন, “সোহানের ব্যাপারটা হচ্ছে, তিনি আমাদের বিবেচনায় আছেন। কিন্তু একই দলে আমরা একাধিক উইকেটকিপার নিতে পারি না এই পজিশনে। কারণ, শেষ সিরিজে লিটন দাস ছিলেন না। আপনারা জানেন, সে সময় তিনি একটু খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলেন। একটা সময় তিনি ছিলেন আমাদের সেরা ফিনিশারদের একজন। সেই কারণে এবং তিনি এখন টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়কও হয়েছেন।”
আরো পড়ুন:
তৃতীয় ওপেনার হিসেবে দলে নাঈম শেখ, সৌম্যকে কড়া বার্তা
পাঁচ বোলার নিয়েও আপত্তি নেই হাবিবুলের
“নুরুল হাসান সোহান অবশ্যই আমাদের বিবেচনায় আছেন। তিনি একজন কার্যকরী খেলোয়াড়, বিশেষ করে ছয়-সাত নম্বর ব্যাটিং পজিশনে। তাই তাকেও আমরা ভবিষ্যতে দলে দেখতে পাবো বলে আশা করছি। এবং কোনো একজন খেলোয়াড়কে ভালোভাবে দেখার জন্য সামনে এশিয়া কাপের আগে শ্রীলঙ্কা সিরিজ, এরপর পাকিস্তানের সঙ্গে দেশের মাঠে ম্যাচ, তারপর ভারতের সঙ্গে সিরিজ; এই পুরো সময়কে আমরা কাজে লাগাতে চাই। যাতে করে আমরা যাদের যাচাই করা দরকার, তাদের ভালোভাবে দেখে নিতে পারি।”
সোহান সর্বশেষ ঢাকা লিগে ৫০০-এর বেশি রান করেছেন। করেছেন দুটি সেঞ্চুরি ও দুটি ফিফটি। তাকে সর্বশেষ ওয়ানডেতে দেখা গেছে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে। সেই থেকে জাতীয় দলের কোনো ফরম্যাটেই আর জায়গা পাননি।
প্রধান নির্বাচক আরও বলেন, “সাথে এটাও যোগ করতে চাই যে সোহানের সামনে একটি সুযোগ আছে। যদিও সেটা আন্তর্জাতিক ম্যাচ নয়, তবে বড় একটি আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে তিনি অংশ নিতে পারেন। ফলে, যারা এই শ্রীলঙ্কা সফরে যেতে পারছেন না, তাদের অনেকে ওই টুর্নামেন্টে খেলবেন। এটা যদিও একই মানের না, তবু কাছাকাছি পর্যায়ের হোয়াইট-বল ক্রিকেটে অংশগ্রহণের সুযোগ তৈরি হচ্ছে। এতে করে আমরা সবাইকে আরও ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করতে পারবো এবং যারা এই সিরিজে নেই, তাদের জন্যও একটা বড় সুযোগ তৈরি হয়েছে।”
ঢাকা/রিয়াদ/আমিনুল