ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ছাত্র শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যার ঘটনায় বিচারের দাবি, উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ এবং প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদের বিচারের দাবিতে দুই ঘণ্টা শাহবাগ মোড় অবরোধ করেছে ছাত্রদল। সাম্য হত্যার বিচার না পেলে সারাদেশ অচল করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তারা।

আজ মঙ্গলবার দুপুর তিনটার দিকে রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে অবরোধ দেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির অবরোধে নেতৃত্ব দেন। তাদেরকে স্লোগান দিতে দেখা যায়। পরে বিকাল পাঁচটার দিকে তারা শাহবাগ মোড় ছেড়ে চলে যান। 

এদিকে শাহবাগ অবরোধে সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বাধ্য হয়ে বাসযাত্রীরা নেমে গন্তব্যের দিকে হাঁটা শুরু করেন। 

অবরোধ চলাকালে ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, ‘আমরা সাতদিন ধরে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি। এরপর কোনো অশান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করতে হলে এর দায় অন্তর্বর্তী সরকারকে নিতে হবে। সাম্য হত্যার বিচার না পেলে আমরা ঢাকা অচল করে দেব। সারাদেশ অচল করে দেব। আমরা সরকারকে সময় দিচ্ছি। দ্রুত প্রকৃত খুনিদের গ্রেপ্তার করুন।’

ছাত্রদল সভাপতি আরও বলেন, ‘তাৎক্ষণিকভাবে যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তারা সাম্যের প্রকৃত খুনি কি না, তা আমরা জানি না। সরকার আমাদের আশ্বস্ত করতে পারছে না। সাম্য হত্যা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। বরং সারাদেশে আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি ঘটেছে। অবস্থা খুব নাজুক।’

রাকিব বলেন, জুলাই-আগস্টের সুবিধাভোগী যারা সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে রয়েছে, ‘তাদের সংগঠন রয়েছে তারা আজ পর্যন্ত সাম্য হত্যার জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায়ও দুঃখ প্রকাশ করেননি। আমরা তাদের ধিক্কার জানাই। যারা পারভেজ-সাম্য হত্যার পর সামান্য সহানুভূতি প্রদর্শন করে না, তাদের প্রতি আমরা কোনো সহানুভূতি প্রদর্শন করব না।’ 

প্রায় দুই ঘণ্টা অবরোধের পর বিকেল পৌনে ৫টার দিকে রাজধানীর শাহবাগ মোড় ছেড়ে দেয় ছাত্রদল। তারা মিছিল নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে শহীদ মিনারে গিয়ে কর্মসূচি শেষ করেন।

গত ১৩ মে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে নিহত হন শাহরিয়ার আলম সাম্য। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের এ এফ রহমান হল ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সাম্যর মৃত্যুর পর থেকে উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ এবং প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করছেন ছাত্রদল নেতারা। প্রতিদিনই তারা কর্মসূচি পালন করছেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ছ ত রদল স ম য হত য র শ হব গ ম ড় ছ ত রদল র সরক র আহম দ অবর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

ইসরায়েলিদের হামলা-নির্যাতন: অতিষ্ঠ বেদুইন পরিবারগুলো ছাড়ছে পশ্চিম তীর

ইসরায়েলের সেনাদের আশ্রয়–প্রশ্রয়ে অবৈধ ইহুদি বসতি স্থাপনকারীদের নির্যাতন, হামলা ও হয়রানিতে অতিষ্ঠ হয়ে অধিকৃত পশ্চিম তীরের অন্তত ৫০টি ফিলিস্তিনি বেদুইন পরিবার তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ও স্থানীয় মানবাধিকার সংগঠনের বরাতে এ তথ্য জানা গেছে।

ফিলিস্তিনের সরকারি বার্তা সংস্থা ওয়াফা জানায়, গতকাল শুক্রবার সকালে জেরিকোর উত্তর-পশ্চিমে আরব মলেইহাত বেদুইন জনগোষ্ঠীর ৩০টি পরিবারকে জোরপূর্বক সেখান থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। আগের দিন গত বৃহস্পতিবারও সেখান থেকে ২০টি পরিবার সরে যেতে বাধ্য হয়।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে পশ্চিম তীরে দখলদার ইসরায়েলি সেনা ও অবৈধ বসতি স্থাপনকারীদের হামলা বেড়েই চলেছে।

জোরপূর্বক উচ্ছেদের শিকার হওয়ার আগে ওই এলাকায় ৮৫টি বেদুইন পরিবারের প্রায় ৫০০ জনের বসবাস ছিল।

স্থানীয় অধিকার সংগঠন ‘আল-বাইদার অর্গানাইজেশন ফর দ্য ডিফেন্স অব বেদুইন রাইটস’-এর পরিচালক হাসান মলেইহাত জানান, বছরের পর বছর ধরে কোনো সহায়তা ছাড়াই টিকে থাকার চেষ্টা করে আসছিল এ পরিবারগুলো। তবে শেষ পর্যন্ত তারা এলাকা ছাড়তে বাধ্য হয়।

বছরের পর বছর ধরে কোনো সহায়তা ছাড়াই টিকে থাকার চেষ্টা করে আসছিল বেদুইন পরিবারগুলো। তবে শেষ পর্যন্ত তারা এলাকা ছাড়তে বাধ্য হয়।হাসান মলেইহাত, ‘আল-বাইদার অর্গানাইজেশন ফর দ্য ডিফেন্স অব বেদুইন রাইটস’-এর পরিচালক

ওয়াফাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আলিয়া মলেইহাত নামের এক বেদুইন নারী জানান, সশস্ত্র ইহুদি বসতি স্থাপনকারীরা বন্দুক দেখিয়ে তাঁকে ও আশপাশের পরিবারগুলোকে হুমকি দেন। পরে জেরিকোর দক্ষিণের আকবাত জাবর শরণার্থী শিবিরে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন তাঁরা।

একই সম্প্রদায়ের বাসিন্দা সাত সন্তানের বাবা মাহমুদ মলেইহাত (৫০) বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘আমরা আর সহ্য করতে পারছিলাম না, তাই চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। অস্ত্রধারী বসতি স্থাপনকারীরা আমাদের ওপর হামলা চালান আর ইসরায়েলি সেনাবাহিনী তাঁদের রক্ষা করে। আমরা কিছুই করতে পারি না।’

ইসরায়েলি হামলার মুখে শরণার্থীশিবির ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছেন ফিলিস্তিনিরা। পশ্চিম তীরের জেনিনে

সম্পর্কিত নিবন্ধ