Prothomalo:
2025-05-21@06:03:27 GMT

Untitled May 21, 2025 05:50 am

Published: 21st, May 2025 GMT

ভারতীয় লেখক, আইনজীবী ও অধিকারকর্মী বানু মুশতাক মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক বুকার পুরস্কার জিতেছেন। ছোটগল্পের সংকলন ‘হার্ট ল্যাম্প’ এর জন্য তাঁকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।

৭৭ বছর বয়সী বানু মুশতাক কান্নাড়া ভাষায় লেখালেখি করেন। এই ভাষার লেখকদের মধ্যে তিনি প্রথমবারের মতো মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কারটি পেলেন।

লন্ডনের টেট মডার্ন গ্যালারিতে পুরস্কার গ্রহণ অনুষ্ঠানে বানু মুশতাক বলেন, ‘এই মুহূর্তটা যেন এক আকাশজুড়ে হাজারো জোনাকি একসঙ্গে জ্বলে ওঠার মতো— যা ক্ষণিক, উজ্জ্বল এবং ভয়াবহ রকমের যৌথ প্রচেষ্টা প্রসূত।’

তিনি আরও বলেন, ‘মহান এই সম্মান আমি কোনো ব্যক্তি হিসেবে গ্রহণ করছি না, বরং এমন এক কণ্ঠস্বর হিসেবে গ্রহণ করছি, যা আরও বহু কণ্ঠের সঙ্গে সমবেতভাবে উচ্চারিত হয়েছে।’

বানু মুশতাকের ছোটগল্পের সংকলন কান্নাড়া ভাষা থেকে ইংরেজিতে অনুবাদ করেছেন দীপা ভাস্তি। গল্প বাছাইয়ে তিনি বানু মুশতাককে সাহায্য করেছেন। পুরস্কারের অর্থমূল্য ৫০ হাজার পাউন্ড (৬৭ হাজার ডলার), যা অনুবাদক দীপা ভাস্তির সঙ্গে তিনি সমানভাবে ভাগ করে নেবেন।

‘হার্ট ল্যাম্প’-এ ১২টি গল্প সংকলিত হয়েছে, যেগুলো ১৯৯০ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে প্রকাশিত হয়েছে। গল্পগুলোতে দক্ষিণ ভারতের মুসলিম সমাজের দৈনন্দিন জীবন ফুটে উঠেছে। গল্পগুলোতে বিশেষ করে নারী ও কিশোরীদের অভিজ্ঞতাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

বানু মুশতাকের গল্পগুলোর পরতে পরতে শুষ্ক ও কোমল রসবোধ, বুদ্ধিদীপ্ত ও কথ্যভাষায় লেখার ভঙ্গি এবং পিতৃতন্ত্র, জাতিভেদ এবং ধর্মীয় রক্ষণশীলতার তীব্র সমালোচনা লক্ষ্য করা যায়। সমালোচকেরা ‘হার্ট ল্যাম্প’ সংকলনের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।

বানু মুশতাক ভারতের দক্ষিণ-পশ্চিমের কর্ণাটক রাজ্যে বসবাস করেন। নারী অধিকার রক্ষায় সক্রিয় ভূমিকা এবং বৈষম্যবিরোধী আইনগত লড়াইয়ের জন্য তিনি সুপরিচিত।

জুরি বোর্ড তাঁর গল্পের প্রাণচঞ্চল দাদিমা থেকে শুরু করে বিভ্রান্ত ধর্মীয় নেতৃবৃন্দের চরিত্রগুলোকে ‘টিকে থাকার এবং প্রতিরোধের বিস্ময়কর প্রতিচ্ছবি’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

অনুষ্ঠানে বানু মুশতাক বলেন,‘আমার [এই সংকলনের] গল্পগুলো নারীদের ঘিরেই আবর্তিত হয়েছে। ধর্ম, সমাজ এবং রাজনীতি কীভাবে তাঁদের থেকে নিঃশর্ত আনুগত্য দাবি করে, এর মাধ্যমে তাঁদের ওপর কীভাবে অমানবিক নিষ্ঠুরতা চালানো হয়— এ সব গল্পে আমি তা বর্ণনা করতে চেষ্টা করেছি। নারীদের কেবল অধীনস্থ রূপেই কীভাবে গড়ে তোলা হয়, আমি গল্পগুলোতে তা দেখাতে চেয়েছি।’

বিচারকমণ্ডলীর সভাপতি ম্যাক্স পোর্টার ‘হার্ট ল্যাম্প’-কে ‘ইংরেজি পাঠকদের জন্য সত্যিকারের নতুন কিছু’ বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, ‘এটি একটি বিপ্লবাত্মক (র‍্যাডিক্যাল) অনুবাদ, যা ভাষার গতিপথ বদলে দেয়, ভিন্ন ভিন্ন ইংরেজির মধ্যে নতুন রূপ ও ছোঁয়া তৈরি করে। এটি আমাদের অনুবাদের ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করে এবং বিস্তৃত করে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রস ক র ত হয় ছ অন ব দ কর ছ ন ম শত ক স কলন

এছাড়াও পড়ুন:

Untitled May 21, 2025 05:50 am

ভারতীয় লেখক, আইনজীবী ও অধিকারকর্মী বানু মুশতাক মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক বুকার পুরস্কার জিতেছেন। ছোটগল্পের সংকলন ‘হার্ট ল্যাম্প’ এর জন্য তাঁকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।

৭৭ বছর বয়সী বানু মুশতাক কান্নাড়া ভাষায় লেখালেখি করেন। এই ভাষার লেখকদের মধ্যে তিনি প্রথমবারের মতো মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কারটি পেলেন।

লন্ডনের টেট মডার্ন গ্যালারিতে পুরস্কার গ্রহণ অনুষ্ঠানে বানু মুশতাক বলেন, ‘এই মুহূর্তটা যেন এক আকাশজুড়ে হাজারো জোনাকি একসঙ্গে জ্বলে ওঠার মতো— যা ক্ষণিক, উজ্জ্বল এবং ভয়াবহ রকমের যৌথ প্রচেষ্টা প্রসূত।’

তিনি আরও বলেন, ‘মহান এই সম্মান আমি কোনো ব্যক্তি হিসেবে গ্রহণ করছি না, বরং এমন এক কণ্ঠস্বর হিসেবে গ্রহণ করছি, যা আরও বহু কণ্ঠের সঙ্গে সমবেতভাবে উচ্চারিত হয়েছে।’

বানু মুশতাকের ছোটগল্পের সংকলন কান্নাড়া ভাষা থেকে ইংরেজিতে অনুবাদ করেছেন দীপা ভাস্তি। গল্প বাছাইয়ে তিনি বানু মুশতাককে সাহায্য করেছেন। পুরস্কারের অর্থমূল্য ৫০ হাজার পাউন্ড (৬৭ হাজার ডলার), যা অনুবাদক দীপা ভাস্তির সঙ্গে তিনি সমানভাবে ভাগ করে নেবেন।

‘হার্ট ল্যাম্প’-এ ১২টি গল্প সংকলিত হয়েছে, যেগুলো ১৯৯০ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে প্রকাশিত হয়েছে। গল্পগুলোতে দক্ষিণ ভারতের মুসলিম সমাজের দৈনন্দিন জীবন ফুটে উঠেছে। গল্পগুলোতে বিশেষ করে নারী ও কিশোরীদের অভিজ্ঞতাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

বানু মুশতাকের গল্পগুলোর পরতে পরতে শুষ্ক ও কোমল রসবোধ, বুদ্ধিদীপ্ত ও কথ্যভাষায় লেখার ভঙ্গি এবং পিতৃতন্ত্র, জাতিভেদ এবং ধর্মীয় রক্ষণশীলতার তীব্র সমালোচনা লক্ষ্য করা যায়। সমালোচকেরা ‘হার্ট ল্যাম্প’ সংকলনের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।

বানু মুশতাক ভারতের দক্ষিণ-পশ্চিমের কর্ণাটক রাজ্যে বসবাস করেন। নারী অধিকার রক্ষায় সক্রিয় ভূমিকা এবং বৈষম্যবিরোধী আইনগত লড়াইয়ের জন্য তিনি সুপরিচিত।

জুরি বোর্ড তাঁর গল্পের প্রাণচঞ্চল দাদিমা থেকে শুরু করে বিভ্রান্ত ধর্মীয় নেতৃবৃন্দের চরিত্রগুলোকে ‘টিকে থাকার এবং প্রতিরোধের বিস্ময়কর প্রতিচ্ছবি’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

অনুষ্ঠানে বানু মুশতাক বলেন,‘আমার [এই সংকলনের] গল্পগুলো নারীদের ঘিরেই আবর্তিত হয়েছে। ধর্ম, সমাজ এবং রাজনীতি কীভাবে তাঁদের থেকে নিঃশর্ত আনুগত্য দাবি করে, এর মাধ্যমে তাঁদের ওপর কীভাবে অমানবিক নিষ্ঠুরতা চালানো হয়— এ সব গল্পে আমি তা বর্ণনা করতে চেষ্টা করেছি। নারীদের কেবল অধীনস্থ রূপেই কীভাবে গড়ে তোলা হয়, আমি গল্পগুলোতে তা দেখাতে চেয়েছি।’

বিচারকমণ্ডলীর সভাপতি ম্যাক্স পোর্টার ‘হার্ট ল্যাম্প’-কে ‘ইংরেজি পাঠকদের জন্য সত্যিকারের নতুন কিছু’ বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, ‘এটি একটি বিপ্লবাত্মক (র‍্যাডিক্যাল) অনুবাদ, যা ভাষার গতিপথ বদলে দেয়, ভিন্ন ভিন্ন ইংরেজির মধ্যে নতুন রূপ ও ছোঁয়া তৈরি করে। এটি আমাদের অনুবাদের ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করে এবং বিস্তৃত করে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ