হুতিদের সঙ্গে যুদ্ধে আমেরিকা কেন পিছু হটল
Published: 21st, May 2025 GMT
২০২৫ সালের বসন্তে লোহিত সাগর যুক্তরাষ্ট্র ও ইয়েমেনের হুতিদের মধ্যে একটা উত্তেজনাকর যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয়। তথাকথিত প্রতিরোধের অক্ষশক্তির অংশ হিসেবে হুতিরা আন্তর্জাতিক জাহাজে তাদের হামলার তীব্রতা বাড়িয়েছিল।
পরিস্থিতি মোকবিলায় হুতিদের বিরুদ্ধে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ‘অপারেশন রাফ রাইডার’ নামে বড় সামরিক অভিযান শুরু করেন। এর খরচ হয় এক বিলিয়ন ডলার।
উদ্দেশ্য ছিল হুতিদের সক্ষমতা ধ্বংস করে দেওয়া। যাহোক, অভিযান শুরুর দুই মাসের মাথায় ৬ মে ট্রাম্প অপ্রত্যাশিতভাবে ইসরায়েলকে এড়িয়ে হুতিদের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তির ঘোষণা দেন। এর মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র-ইয়েমেন সংঘাত কার্যত বন্ধ হয়ে গেল।
সামরিক ও কৌশলগত ব্যর্থতা২০২৫ সালের মার্চ মাসে শুরু হওয়া মার্কিন সামরিক অভিযানের উদ্দেশ্য ছিল হুতিদের ক্ষেপণাস্ত্রের মজুত, ড্রোন ও সামরিক অবকাঠামো ধ্বংস করে দেওয়া। কিন্তু বিপুল অর্থ ব্যয় ও আধুনিক সমরাস্ত্র ব্যবহারের পরও এই অভিযান কৌশলগত লক্ষ্যে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়। ‘অপারেশন রাফ রাইডার’-এর অংশ হিসেবে ইয়েমেনে আট শতাধিক স্থানে হামলা চালানো হয়। এতে হুতিদের সামরিক সক্ষমতার ওপর তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি।
ভূগর্ভস্থ ঘাঁটি ও ইরানের সমর্থনের ওপর নির্ভর করে হুতিরা কেবল টিকেই ছিল তা নয়, বরং বাণিজ্যিক ও সামরিক জাহাজের ওপর হামলা আরও বাড়িয়ে দেয়। হুতিদের এই আক্রমণে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যুক্তরাষ্ট্রের সামুদ্রিক আধিপত্যের ওপর বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করে। হুতিরা আরও সাহসী হয়ে ওঠে। এমনকি মার্কিন যুদ্ধজাহাজও বারবার হুতিদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়।
এই ব্যর্থতার একটি প্রধান কারণ হলো, যুক্তরাষ্ট্র এটিকে পুরোপুরিভাবে সামরিক কৌশল দিয়েই মোকাবিলা করতে চেয়েছে। কিন্তু কেবল সামরিক পদক্ষেপ দিয়ে লোহিত সাগর সংকটের সমাধান সম্ভব নয়। এর কারণ হলো, এই সংকটের শিকড় রয়েছে আঞ্চলিক উত্তেজনা ও ইয়েমেনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ের মধ্যে।
সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো আঞ্চলিক অংশীদারদের সঙ্গে সমন্বয়ের অভাবও এই ব্যর্থতাকে আরও গভীর করেছে। এর আগে বাইডেনের আমলে পরিচালিত ‘অপারেশন প্রসপারিটি গার্ডিয়ান’ অভিযানটিও ব্যর্থ হয়েছিল।
আরও পড়ুনহুতিদের থামানো যে কারণে অসম্ভব ১৫ জানুয়ারি ২০২৪যুদ্ধবিরতি চুক্তি: একটি ব্যর্থতার কেসস্টাডি৬ মে ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দেন, মার্কিন জাহাজে হামলা বন্ধের শর্তে যুক্তরাষ্ট্র ইয়েমেনে বোমা হামলা বন্ধ করবে।
ওমানের মধ্যস্থতায় হওয়া এই চুক্তি প্রথমে উত্তেজনা প্রশমনের একটি পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছিল। কিন্তু দ্রুতই এটিকে যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত পরাজয় হিসেবে ব্যাখ্যা করা হয়। হুতিরা মার্কিন জাহাজে হামলা বন্ধ করলেও ইসরায়েলের ওপর হামলা অব্যাহত রাখে। এটি চুক্তির সীমাবদ্ধতাকে স্পষ্ট করে। প্রধান মিত্র ইসরায়েলের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সমন্বয়ের ঘাটতিকেও খোলাসা করে।
ইসরায়েল ও দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে পাশ কাটিয়ে চুক্তির ঘোষণাটি ছিল নির্দিষ্টভাবেই বিস্ময়কর। এ সম্পর্কে ইসরায়েল একেবারেই কিছু জানত না। হুতিদের ক্ষেপণাস্ত্রে তেল আবিবের বেন গুরিয়ন বিমানবন্দর ক্ষতিগ্রস্ত হলে ইসরায়েল পাল্টা হিসেবে ইয়েমেনের হোদেইদা বন্দর ও সানা বিমানবন্দরে প্রতিশোধমূলক হামলা চালায়।
ট্রাম্প এই চুক্তিকে ইয়েমেন সংকটের অন্ধগলি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বের হয়ে আসা হিসেবে চিত্রিত করলেও তিনি জোর দিয়েই বলেন, এই সংঘাত এখনই শেষ হচ্ছে না। হুতি নেতা আবদুল-মালিক আল-হুতি চুক্তিটিকে ‘যুক্তরাষ্ট্রের বিশাল এক পরাজয়’ বলে অভিহিত করেন এবং এটিকে তাদের বিজয় হিসেবে চিত্রিত করেন। দ্য ইকোনমিস্ট এটিকে ‘আত্মা বিক্রির চুক্তি’ হিসেবে উল্লেখ করে। পত্রিকাটি বলে এর মধ্য দিয়ে ইয়েমেনে হুতিদের নিয়ন্ত্রণ আরও শক্তিশালী হবে।
ব্যর্থতার কারণহুতিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ট্রাম্পের ব্যর্থতার বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে। প্রথমত, সামরিক সমাধানের ওপর অতিনির্ভরতার কারণে অঞ্চলটির ভূরাজনৈতিক জটিলতাকে উপেক্ষা করা হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলা ইউরোপ ও উপসাগরীয় দেশগুলোকে ‘মুক্তভাবে চলাচলের’ সুযোগ করে দেয়। আর্থিক ও সামরিক দায়ভার অসংগতভাবে যুক্তরাষ্ট্রের কাঁধে গিয়ে পড়ে। অভিযানে আঞ্চলিক দেশগুলোর অংশগ্রহণে অনীহা এবং হুতিদের উচ্চমাত্রার প্রতিরোধক্ষমতা সংকটটিকে দীর্ঘস্থায়ী করে।
দ্বিতীয়ত, ট্রাম্প প্রশাসনের মধ্যকার সমন্বয়হীনতা ও অভিযান পরিচালনার অব্যবস্থাপনাও এর জন্য দায়ী। সামরিক পরিকল্পনা ভুলবশত সিগন্যাল অ্যাপে ফাঁস হয়ে যায়। এটি সমন্বয় ও ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে বড় একটা দুর্বলতার ইঙ্গিত দেয়। এর ফলে লোহিত সাগরে জাহাজ চলাচলের পথ পুনরুদ্ধারের জরুরি বিষয়টিও কমে যায়।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে হুতিদের বিরুদ্ধে পরিচালিত এ যুদ্ধ যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির কৌশলগত ব্যর্থতার একটি ধ্রুপদি উদাহরণ হিসেবে বিবেচিত হবে। এ যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র তার বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে। অন্যদিকে হুতিরা আরও শক্তিশালী ও আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠল।
পিটার রজার্স মিডল ইস্ট মনিটরের লেখক
মিডল ইস্ট মনিটর থেকে নেওয়া, ইংরেজি থেকে সংক্ষিপ্ত আকারে অনূদিত
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটে ৫৪ পদের চাকরি, করুন আবেদন
বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট জনবল নিয়োগে আবেদন চলছে। এ বিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের সময় বাড়ানো হয়েছিল। রাজস্ব খাতভুক্ত শূন্য পদে জনবল নিয়োগের জন্য প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিটি পুনর্নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি। বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটে ৫৪ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে। অনলাইনে আবেদনের সর্বশেষ সময়সীমা ছিল ৭-৯-২০২৫ তারিখ বিকেল ৫ টা। পরে সেটি বাড়িয়ে ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত করা হয়। এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, একাধিক পদে আবেদন করা যাবে তবে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লিখিত সকল পদের পরীক্ষা একই তারিখে হওয়ার সম্ভাবনা থাকায় প্রার্থীদের একাধিক পদে আবেদন না করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কর্তৃপক্ষ পদের সংখ্যা হ্রাস বৃদ্ধি করতে পারবে। গত ৪-৮-২০২৫ পত্রিকায় প্রকাশিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লিখিত অন্য শর্তাবলি অপরিবর্তিত থাকবে।
পদের নাম ও পদসংখ্যা—
১. উপসহকারী প্রকৌশলী (মেশিন ডিজাইন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট সেকশন)
পদসংখ্যা: ১
বেতন স্কেল: ১৬,০০০–৩৮,৬৪০ টাকা
২. সহকারী লাইব্রেরিয়ান
পদসংখ্যা: ১
বেতন স্কেল: ১২,৫০০-৩০,২৩০ টাকা
৩. বৈজ্ঞানিক সহকারী
পদসংখ্যা: ৫
বেতন স্কেল: ১১,০০০-২৬,৫৯০ টাকা
৪. জুনিয়র মাঠ সহকারী
পদসংখ্যা: ১২
বেতন স্কেল: ১০,২০০-২৪,৬৮০ টাকা
৫. উচ্চমান সহকারী
পদসংখ্যা: ৩
বেতন স্কেল: ১০,২০০-২৪,৬৮০ টাকা
৬. উচ্চমান সহকারী-কাম-ক্যাশিয়ার
পদসংখ্যা: ১
বেতন স্কেল: ১০,২০০-২৪,৬৮০ টাকা
আরও পড়ুন৪৭তম বিসিএস: প্রিলি পরীক্ষার আগের রাত ও পরীক্ষার দিন করণীয়৫ ঘণ্টা আগে৭. অডিটর:
পদসংখ্যা: ১
বেতন স্কেল: ১০,২০০-২৪,৬৮০ টাকা
৮. স্টোর কিপার
পদসংখ্যা: ১
বেতন স্কেল: ১০,২০০-২৪,৬৮০ টাকা
৯. সাঁট-মুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর
পদসংখ্যা: ৩
বেতন স্কেল: ১০,২০০-২৪,৬৮০ টাকা
১০ গুদামরক্ষক
পদসংখ্যা: ১
বেতন স্কেল: ৯,৩০০-২২,৪৯০ টাকা
আরও পড়ুনমেট্রোরেলে চাকরি, আবেদন পাঠাতে হবে ডাকে১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫১১. জুনিয়র ফিল্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট
পদসংখ্যা: ১
বেতন স্কেল: ৯,৩০০-২২,৪৯০ টাকা
১২. জুনিয়র ফিল্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট
পদসংখ্যা: ২
বেতন স্কেল: ৯,৩০০-২২,৪৯০ টাকা
১৩. অফিস সহকারী-কাম-কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক
পদসংখ্যা: ১০
বেতন স্কেল: ৯,৩০০-২২,৪৯০ টাকা
১৪. অফিস সহকারী-কাম-কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক
পদসংখ্যা: ১
বেতন স্কেল: ৯,৩০০-২২,৪৯০ টাকা
আরও পড়ুন৪৭তম বিসিএস প্রিলি পরীক্ষার্থীদের জন্য পিএসসির যত নির্দেশনা২ ঘণ্টা আগে১৫. অফিস সহায়ক
পদসংখ্যা: ১১
বেতন স্কেল: ৮,২৫০-২০,০১০ টাকা
আবেদনের বয়সসীমা
এ বছরের ৭ সেপ্টেম্বরে আবেদনকারীর বয়স ১৮ থেকে ৩২ বছরের মধ্যে হতে হবে।
আবেদনের প্রক্রিয়া
আগ্রহী প্রার্থীরা অনলাইনে (ওয়েবসাইটে) নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আবেদন করতে পারবেন।
আবেদনের শেষ সময় —
* আবেদন ফরম জমাদানের শেষ তারিখ ও সময়: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, বিকেল ৫টা।
আবেদন ফি—
আবেদনের পর যেকোনো টেলিটকের প্রিপেইড নম্বরের মাধ্যমে দুটি এসএমএস করে পরীক্ষার ফি বাবদ ১ নম্বর পদের জন্য ২২৩ (দুই শত তেইশ, ভ্যাট ২৩) টাকা, ২ নম্বর পদের জন্য ১৬৮ (ভ্যাটসহ) টাকা, ৩ থেকে ১৪ নম্বর পদের জন্য ১১২ (ভাটসহ একশ বারো) টাকা, ১৫ নম্বর পদের জন্য ৫৬ (ভ্যাটসহ) টাকা এবং অনগ্রসর নাগরিকদের জন্য সব গ্রেডে আবেদন ফি ৫০ (পঞ্চাশ) টাকা, টেলিটকের কমিশন চার্জ (ভ্যাটসহ) বাবদ ৬ (ছয়) টাকাসহ অফেরতযোগ্য মোট ৫৬ (ছাপ্পান্ন) টাকা অনধিক ৭২ (বাহাত্তর) ঘণ্টার মধ্যে জমা দিতে হবে।
পরীক্ষার তথ্য—
প্রবেশপত্র প্রাপ্তির বিষয়টি এবং পরীক্ষার তারিখ, সময় ও স্থান সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য পরবর্তীতে যোগ্য প্রার্থীদের মোবাইল ফোনে SMS এর মাধ্যমে এবং বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটের ওয়েবসাইটে জানানো হবে।
* আবেদনের বিস্তারিত দেখুন এখানে।
আরও পড়ুন১২ দিনের ছুটিতে যাচ্ছে সরকারি নিম্ন মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫