বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষে পুরোপুরি অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার সম্ভব নয়। আমরা হয়তো ভবিষ্যতের নির্বাচিত সরকারের কাছে একটি আংশিকভাবে পুনর্গঠিত অর্থনীতি দিয়ে যাব। তবে ভবিষ্যতে যে রাজনৈতিক সরকার ক্ষমতায় আসবে, তারা এই অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়া চলমান রাখবে, এটিই আমাদের প্রত্যাশা।’

আজ বুধবার গুলশানের এক হোটেলে এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। ‘বাংলাদেশে আর্থিক খাতের উন্নয়ন’ শীর্ষক সেমিনারটি যৌথভাবে আয়োজন করে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই), বাংলাদেশ ব্যাংক ও ইন্টারন্যাশনাল গ্রোথ সেন্টার (আইজিসি)।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আরও বলেন, ‘যত দিন আমরা রাজনৈতিক ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ করতে না পারব, তত দিন অর্থনৈতিক বিকেন্দ্রীকরণও সম্ভব হবে না। যদিও এই সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর নির্ভরশীল।’

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন পিআরআইয়ের চেয়ারম্যান জাইদি সাত্তার। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পিআরআইয়ের প্রধান অর্থনীতিবিদ আশিকুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো.

হাবিবুর রহমান।

মূল প্রবন্ধে বলা হয়, ২০২৪ সালের হিসাবে ব্যাংকিং ব্যবস্থার মোট আমানতের প্রায় ৪২ শতাংশ মাত্র শূন্য দশমিক ১ শতাংশ ব্যাংক হিসাবধারীর কাছে আছে। তাঁদের প্রত্যেকের হিসাবে ১ কোটি টাকা বা তার বেশি অর্থ জমা আছে।

পিআরআইয়ের প্রধান অর্থনীতিবিদ আশিকুর রহমান বলেন, এই তথ্য ইঙ্গিত দেয়, বাংলাদেশের সম্পদ ব্যাপকভাবে পুঞ্জীভূত হয়েছে। দেশের খুব অল্পসংখ্যক মানুষের হাতে সম্পদের বড় অংশ আছে।

সেমিনারে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেন, ‘বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন থেকে কমে ২০ বিলিয়ন ডলার হয়েছিল। প্রায় ২ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা সিস্টেম থেকে বের হয়ে গেছে। এই টাকাগুলো এখন দেশের বাইরে। এ কারণে আমানতের প্রবৃদ্ধি কমে গেছে। তাই আমাদের অর্থনীতিকে সেই খেসারত দিতে হচ্ছে।’

গভর্নর আরও বলেন, এখন প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে রিজার্ভ পুনর্গঠন করা। প্রবাসী আয়, রপ্তানি ও বৈদেশিক অর্থায়নের মাধ্যমে ধীরে ধীরে অর্থনীতিকে আবার চাঙা করতে হবে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন ২৭ বিলিয়ন ডলার। এটি শিগগিরই ৩০ বিলিয়ন ডলারের দিকে যাবে।

গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘আমরা ক্যাশলেস (নগদবিহীন লেনদেন) তথা অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনীতির দিকে এগোতে চাই। ইতিমধ্যে ২০ হাজার এজেন্ট কার্যক্রম চালাচ্ছে, যা শিগগিরই ২৬ হাজার ছাড়িয়ে যাবে। এই ধারাকে জোরদার করা গেলে ক্ষুদ্রঋণে বড় পরিবর্তন আসবে।’

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক আনিস উর রহমান, পিআরআইয়ের নির্বাহী পরিচালক খুরশিদ আলম ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র রহম ন সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষে পুরোপুরি অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার করা সম্ভব নয়: বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষে পুরোপুরি অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার সম্ভব নয়। আমরা হয়তো ভবিষ্যতের নির্বাচিত সরকারের কাছে একটি আংশিকভাবে পুনর্গঠিত অর্থনীতি দিয়ে যাব। তবে ভবিষ্যতে যে রাজনৈতিক সরকার ক্ষমতায় আসবে, তারা এই অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়া চলমান রাখবে, এটিই আমাদের প্রত্যাশা।’

আজ বুধবার গুলশানের এক হোটেলে এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। ‘বাংলাদেশে আর্থিক খাতের উন্নয়ন’ শীর্ষক সেমিনারটি যৌথভাবে আয়োজন করে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই), বাংলাদেশ ব্যাংক ও ইন্টারন্যাশনাল গ্রোথ সেন্টার (আইজিসি)।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আরও বলেন, ‘যত দিন আমরা রাজনৈতিক ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ করতে না পারব, তত দিন অর্থনৈতিক বিকেন্দ্রীকরণও সম্ভব হবে না। যদিও এই সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর নির্ভরশীল।’

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন পিআরআইয়ের চেয়ারম্যান জাইদি সাত্তার। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পিআরআইয়ের প্রধান অর্থনীতিবিদ আশিকুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. হাবিবুর রহমান।

মূল প্রবন্ধে বলা হয়, ২০২৪ সালের হিসাবে ব্যাংকিং ব্যবস্থার মোট আমানতের প্রায় ৪২ শতাংশ মাত্র শূন্য দশমিক ১ শতাংশ ব্যাংক হিসাবধারীর কাছে আছে। তাঁদের প্রত্যেকের হিসাবে ১ কোটি টাকা বা তার বেশি অর্থ জমা আছে।

পিআরআইয়ের প্রধান অর্থনীতিবিদ আশিকুর রহমান বলেন, এই তথ্য ইঙ্গিত দেয়, বাংলাদেশের সম্পদ ব্যাপকভাবে পুঞ্জীভূত হয়েছে। দেশের খুব অল্পসংখ্যক মানুষের হাতে সম্পদের বড় অংশ আছে।

সেমিনারে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেন, ‘বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন থেকে কমে ২০ বিলিয়ন ডলার হয়েছিল। প্রায় ২ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা সিস্টেম থেকে বের হয়ে গেছে। এই টাকাগুলো এখন দেশের বাইরে। এ কারণে আমানতের প্রবৃদ্ধি কমে গেছে। তাই আমাদের অর্থনীতিকে সেই খেসারত দিতে হচ্ছে।’

গভর্নর আরও বলেন, এখন প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে রিজার্ভ পুনর্গঠন করা। প্রবাসী আয়, রপ্তানি ও বৈদেশিক অর্থায়নের মাধ্যমে ধীরে ধীরে অর্থনীতিকে আবার চাঙা করতে হবে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন ২৭ বিলিয়ন ডলার। এটি শিগগিরই ৩০ বিলিয়ন ডলারের দিকে যাবে।

গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘আমরা ক্যাশলেস (নগদবিহীন লেনদেন) তথা অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনীতির দিকে এগোতে চাই। ইতিমধ্যে ২০ হাজার এজেন্ট কার্যক্রম চালাচ্ছে, যা শিগগিরই ২৬ হাজার ছাড়িয়ে যাবে। এই ধারাকে জোরদার করা গেলে ক্ষুদ্রঋণে বড় পরিবর্তন আসবে।’

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক আনিস উর রহমান, পিআরআইয়ের নির্বাহী পরিচালক খুরশিদ আলম ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ