বাংলাদেশে মাল্টা আমদানি হয় মিসর, ভুটান, ভারত ও চীন থেকে। তবে মিসরের মাল্টা দুবাই হয়ে চট্টগ্রামে আসার নথি দেখে সন্দেহ দানা বাঁধে কাস্টমস কর্মকর্তাদের। গতকাল বুধবার দিবাগত রাতে কনটেইনার খুলে সেই সন্দেহ সত্যি হয়। মাল্টা নয়, ৪০ ফুট লম্বা কনটেইনারে ছিল সিগারেটের সারি সারি কার্টন।

কনটেইনারের অবস্থান শনাক্ত করে বুধবার দিবাগত রাত দুইটায় কার্টন বের করে গণনা শুরু করেন কর্মকতারা। আজ বৃহস্পতিবার গণনা শেষে কাস্টমস কর্মকর্তারা জানান, কনটেইনারটিতে ১ হাজার ২৫০ কার্টনে ছিল ১ কোটি ২৫ লাখ শলাকা বিদেশি সিগারেট। অবশ্য ৫ হাজার ৪১৮ কেজি মাল্টাও ছিল কনটেইনারে।

কাস্টমস কর্মকর্তারা জানান, সিগারেট আমদানিতে প্যাকেটের গায়ে বাংলায় ধূমপানবিরোধী সতর্কবার্তা লেখা থাকতে হয়। এই শর্ত মেনে আমদানি করলেও ৫৯৬ শতাংশ শুল্ক–কর দিতে হয়। অর্থাৎ সিগারেটের দাম ১০০ টাকা হলে শুল্ক–কর দিতে হবে ৫৯৬ টাকা। সেই হিসাবে জব্দ করা সিগারেটে সরকারের রাজস্ব দিতে হতো ৩০ কোটি টাকা। এই টাকা ফাঁকি দিতেই মিথ্যা ঘোষণার আশ্রয় নেয় আমদানিকারক।

পণ্য আমদানির নথি অনুযায়ী, ঢাকার মালিবাগের আহসান করপোরেশন এই সিগারেট আমদানি করে সংযুক্ত আরব আমিরাতের টুসিয়া ভেজিটেবল অ্যান্ড ফ্রুটস কোম্পানি থেকে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের তথ্যভান্ডার অনুযায়ী, গত বছর কোম্পানিটির কোনো ফল আমদানির নজির নেই। এমনকি যে ফল রপ্তানির তালিকায় যে প্রতিষ্ঠানের নাম দেওয়া হয়েছে, সেটিও গত বছর বাংলাদেশে কোনো ফল রপ্তানি করেনি।

আহসান করপোরেশনের পক্ষে পণ্য খালাসের দায়িত্বে ছিল ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরোয়ার্ডিং এজেন্ট দিবা ট্রেডিং লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো.

বায়েজিদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমদানিকারক আহসান করপোরেশনের প্রথম কাজ ছিল এটি। আমাদের প্রতিষ্ঠানের এক কর্মীর মাধ্যমে কাজটি আসে। কাগজপত্র ঠিক থাকায় কাজটি নিয়েছিলাম। এখন তো দেখছি আমদানিকারকের তথ্যের সঙ্গে বাস্তবে মিল নেই।’

চট্টগ্রাম কাস্টমসের উপকমিশনার কাজী রাইহানুজ জামান প্রথম আলোকে বলেন, চালানটিতে ৩০ কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন আমদানিকারক। তবে কাস্টমসের নজরদারিতে তা ধরা পড়েছে। এখন তদন্ত করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক স টমস

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকায় অটোমোবাইল ও কৃষি যন্ত্রপাতির প্রদর্শনী শুরু হচ্ছে শনিবার

ঢাকায় দুই দিনব্যাপী অটোমোবাইল ও কৃষি যন্ত্রপাতির প্রদর্শনী শুরু হচ্ছে আগামী শনিবার। এতে অটোমোবাইল, কৃষি যন্ত্রপাতিসহ হালকা প্রকৌশল খাতের ২৬টি স্টল থাকবে। পাশাপাশি শিল্পের সহায়ক প্রতিষ্ঠানের স্টল থাকবে আরও ১২টি। প্রদর্শনীর উদ্বোধন করবেন শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।

বাংলাদেশ অটোমোবাইলস অ্যাসেম্বলার্স অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন ও অ্যাগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সহযোগিতায় এই প্রদর্শনীর আয়োজন করছে বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই)। ঢাকার তেজগাঁও শিল্প এলাকায় এডিসন প্রাইম ভবনের ছাদে এই প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে। এই ভবনেই বিসিআইয়ের কার্যালয় অবস্থিত।

আজ বৃহস্পতিবার বিসিআই কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে দুই দিনব্যাপী এই প্রদর্শনী নিয়ে বিস্তারিত জানান চেম্বারটির সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী। আরও উপস্থিত ছিলেন অ্যাগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সভাপতি আলিমুল আহসান চৌধুরী, বিসিআইয়ের পরিচালক মো. শাহেদ আলম, এস এম শাহ আলম, জিয়া হায়দার প্রমুখ।

বিসিআইয়ের সভাপতি বলেন, হালকা প্রকৌশল খাতে বাংলাদেশে বর্তমানে ছোটবড় প্রায় ৫০ হাজার প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এই খাতে কাজ করেন ১০ লাখ মানুষ। হালকা প্রকৌশল খাতে স্থানীয় বাজার ১২ বিলিয়ন ডলারের হলেও দেশীয় উৎপাদকেরা অর্ধেক পূরণ করতে পারছেন। তা ছাড়া হালকা প্রকৌশল খাতের বৈশ্বিক বাজারের আকার প্রায় ৮ ট্রিলিয়ন ডলার। তিনি আরও বলেন, তৈরি পোশাক খাত আর বেশি মূল্য সংযোজন করতে পারবে না। ফলে আমাদের অর্থনীতিকে টেকসই করতে হলে আমাদের অন্য খাতে যেতে হবে। সে ক্ষেত্রে হালকা প্রকৌশল খাত পারে বড় সম্ভাবনার।

অ্যাগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সভাপতি আলিমুল আহসান চৌধুরী বলেন, প্রতিবছর কৃষিজমি কমছে। কৃষকের বয়স বাড়ছে, তার কারণ তরুণেরা খুব কম কৃষিকাজে আসছেন। বিশ্বের অনেক দেশেই মোট জনগোষ্ঠীর ১০ শতাংশের কম কৃষিকাজে নিয়োজিত। ১০ শতাংশ মানুষ বাকি ৯০ শতাংশের জন্য খাদ্য জোগান দিচ্ছে। সে কারণে যন্ত্রের ব্যবহার বাড়ছে। বাংলাদেশেও কৃষিকাজে যন্ত্রের ব্যবহার বাড়ছে। তবে বড় অংশই আমদানি করতে হচ্ছে।

আলিমুল আহসান চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে ১২০০ থেকে ১৫০০ কোটি টাকার কৃষি যন্ত্রপাতির বাজার আছে। তার মধ্যে দেশীয় কোম্পানিগুলো সরবরাহ করছে মাত্র ৪০০ থেকে ৪৫০ কোটি টাকার যন্ত্রাংশ। নীতিসহায়তা পেলে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বাড়বে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ