গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে সেনানিবাসে আশ্রয় গ্রহণকারী প্রসঙ্গে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেছে সেনাবাহিনী। 

বৃহস্পতিবার আইএসপিরের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে বিগত সরকারের পতনের পর কতিপয় কুচক্রী মহলের তৎপরতায় সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি হয়। ফলশ্রুতিতে, সরকারি দপ্তর, থানাসমূহে হামলা, রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও সমর্থকদের উপর আক্রমণ ও ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ, মব জাস্টিস, চুরি, ডাকাতিসহ বিবিধ বিশৃঙ্খলা দেখা যায়। এ ধরনের সংবেদনশীল ও নাজুক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে দেশের নাগরিকদের মনে নিরাপত্তাহীনতার জন্ম নেয়।এমতাবস্থায়, ঢাকাসহ দেশের প্রায় সকল সেনানিবাসে প্রাণ রক্ষার্থে কতিপয় রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গসহ বিভিন্ন শ্রেণীপেশার নাগরিকগণ আশ্রয় প্রার্থনা করেন। উদ্ভূত আকস্মিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে সেনানিবাসে আশ্রয়প্রার্থীদের পরিচয় যাচাই বাছাই করার চাইতে তাদের জীবন রক্ষা করা প্রাধান্য পেয়েছিল। এ প্রেক্ষিতে, ২৪ জন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, ০৫ জন বিচারক, ১৯ জন অসামরিক প্রশাসনের কর্মকর্তা, ৫১৫ জন পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্য, বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাসহ বিবিধ ১২ জন ও ৫১ জন পরিবার পরিজন (স্ত্রী ও শিশু) সহ সর্বমোট ৬২৬ জনকে বিভিন্ন সেনানিবাসে আশ্রয় প্রদান করা হয়েছিল।’

এতে বলা হয়, সেসময়ে শুধু মানবিক দায়বদ্ধতার কারণে আইন বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড থেকে আশ্রয় প্রার্থীদের জীবন রক্ষা করাই ছিল মুখ্য উদ্দেশ্য। পরিস্থিতি উন্নয়ন সাপেক্ষে, আশ্রয় গ্রহণকারীদের বেশিরভাগই ১/২ দিনের মধ্যেই সেনানিবাস ত্যাগ করেন এবং এর মধ্যে ০৫ জনকে তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ/মামলার ভিত্তিতে, যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিকট হস্তান্তর করা হয়।’

এতে বলা হয়, ‘সেনানিবাসে অবস্থানকারী ও আশ্রয় প্রার্থীদের ব্যাপারে গত ১৮ আগস্ট ২০২৪ তারিখে আইএসপিআর আনুষ্ঠানিক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয় এবং একই দিনে ১৯৩ জন ব্যক্তিবর্গের একটি তালিকা (৪৩২ জন সাধারণ পুলিশ সদস্য ও ১ জন এনএসআই সদস্য ব্যতীত) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রেরন করা হয়- যা ছিল একটি মীমাংসিত বিষয়। সেনানিবাসে আশ্রয়প্রার্থী এসব ব্যক্তি ও পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা ও জীবন রক্ষার্থে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে সাময়িক আশ্রয় দেওয়া হয়েছিল।’ 

আইএসপিরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘তৎকালীন বিরাজমান নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে আশ্রয় প্রার্থীদের জীবন বিপন্ন হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু দুঃখজনকভাবে কিছু স্বার্থান্বেষী মহল উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিভ্রান্তিকর সংবাদ ছড়িয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার পাশাপাশি জনগণের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে, জুলাই আগস্ট গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সেনানিবাসের অভ্যন্তরে প্রাণ রক্ষার্থে আশ্রয় গ্রহণকারী ৬২৬ জন ব্যক্তিবর্গের একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা (৪৩২ জন সাধারণ পুলিশ সদস্য ও ১ জন এনএসআই সদস্যসহ) এই প্রেস বিজ্ঞপ্তির সাথে সংযুক্ত করা হলো।’

এতে আরও বলা হয়, এমতাবস্থায় সকলকে এ ধরনের বিভ্রান্তিমূলক অপপ্রচার থেকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হচ্ছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি পেশাদারিত্ব, নিষ্ঠা ও আস্থার সাথে জাতির পাশে থাকার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করছে।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: গণঅভ য ত থ ন পর স থ ত রক ষ র সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে গুরুত্বপূর্ণ ৫ সিদ্ধান্ত

উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সরকার ৫টি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।

বৃহস্পতিবার (২২ মে) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের ২৯ তম সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

মৎস্য সুরক্ষা ও সংরক্ষণ (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫, সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, এবং জুলাই গণঅভ্যুত্থান শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন সংক্রান্ত অধ্যাদেশ নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছে।

আরো পড়ুন:

বৃষ্টি মাথায় কাকরাইলে তিন কারাখানার শ্রমিকদের অবস্থান

জবি শিক্ষার্থীদের অবস্থান: উপদেষ্টা মাহফুজের মাথায় বোতল নিক্ষেপ

এছাড়া বাংলাদেশ-নেদারল্যান্ডস সরকারের মধ্যে নৌ-প্রতিরক্ষা সহযোগিতা চুক্তি এবং সংস্কার কমিশনের বাস্তবায়নযোগ্য সুপারিশগুলোর কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। সব অধ্যাদেশ চূড়ান্ত অনুমোদনের আগে লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগে ভেটিং করা হবে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এই সিদ্ধান্তগুলোর বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় সার্বিক সমন্বয় করবে।

‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার এবং আহত ছাত্র-জনতার কল্যাণ ও পুনর্বাসন অধ্যাদেশ, ২০২৫’ এর মাধ্যমে ২০২৪ সালের জুলাই মাসে সংঘটিত গণঅভ্যুত্থানে শহীদ এবং আহতদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা, পুনর্বাসন এবং কল্যাণমূলক সুবিধা প্রদানের বিধান করা হবে বলে জানা গেছে।

‘সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮’ সংশোধন করে বিলুপ্ত ১৯৭৯ সালের বিশেষ আইনের বিধান যুক্ত সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর মাধ্যমে দাপ্তরিক কাজে বিঘ্ন সৃষ্টিকারী কর্মচারীকে তদন্ত ছাড়াই আট দিনের নোটিশে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া যাবে-এমন বিধান রয়েছে। এখন এটি রাষ্ট্রপতির অনুমতির পর অধ্যাদেশ আকারে প্রকাশ করবে সরকার।

ঢাকা/হাসান/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সেনানিবাসে প্রাণ রক্ষার্থে আশ্রয় নেওয়া ব্যক্তিদের প্রসঙ্গে সেনাবাহিনীর অবস্থান
  • গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সেনানিবাসে আশ্রয় নেওয়াদের তালিকা দিলো আইএসপিআর
  • অধ্যাপক ইউনূস পদত্যাগের বিষয়ে ভাবছেন: বিবিসি বাংলাকে নাহিদ
  • গণঅভ্যুত্থানের পর সেনানিবাসে আশ্রয় নেওয়া ৬২৬ জনের তালিকা দিল সেনাবাহিনী
  • ডিসেম্বরে নির্বাচন না দিলে সহযোগিতা অব্যাহত রাখা কঠিন হবে
  • উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে গুরুত্বপূর্ণ ৫ সিদ্ধান্ত
  • জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এমএ, এমএসএস, এমবিএ, এমএসসি, এম মিউজ পরীক্ষা, আবেদন শুরু
  • রাজধানীতে সেনাবাহিনীর অভিযানে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ১০
  • রাজধানীর মাটিকাটা এলাকায় সেনাবাহিনীর অভিযানে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ১০