কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে দুধকুমার নদের পাশে ৫০০ মিটার বাঁধের ব্লকে ধস দেখা দিয়েছে। নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার আগেই কয়েকদিনের বৃষ্টিতে ব্লকগুলো ধসে যায়। বন্যার আগে বাঁধের এ অবস্থায় আতঙ্ক দেখা দিয়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে। নিম্নমানের কাজ হওয়ায় ব্লক ধসে গেছে বলে অভিযোগ তাদের।
বাঁধের কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রকল্প ব্যবস্থাপক আরিফুল ইসলাম। তাঁর দাবি, প্রকল্পের কাজ চলমান থাকায় এ ক্ষতি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের। এলাকার পানি নিষ্কাশনের জন্য কোনো ইউড্রেন না থাকায় বৃষ্টির পানি সুড়ঙ্গ হয়ে প্রবেশ করে বাঁধের কিছু অংশে ধস দেখা দিয়েছে। নদীর পানি কমলে তা মেরামত করা হবে বলে জানান তিনি।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দুধকুমার নদী ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়নের লক্ষ্যে ২০২১ সালের ১০ আগস্ট একনেকের বৈঠকে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৯২ কোটি ৬৮ লাখ টাকা; যা বিভিন্ন প্যাকেজে বর্তমানে কুড়িগ্রাম পাউবোর তত্ত্বাবধানে বাস্তবায়িত হচ্ছে। এর একটি হলো দুধকুমার নদের ডান তীর রক্ষা বাঁধ। পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাস্তবায়নে এ কাজে ১০ কোটি ৪২ লাখ ৫৫ হাজার ৭৩৩ টাকা বরাদ্দ হয়। চর ভূরুঙ্গামারী ইউনিয়নের ইসলামপুর এলাকায় ৫০০ মিটার বাঁধটি নির্মাণে কাজ পায় ঢাকার মগবাজারের টিআই-পিভিএল-জেডআই জেভি নামের প্রতিষ্ঠান।
গত বুধবার দুপুরে চর ভূরুঙ্গামারী ইউনিয়নের ইসলামপুর মৌজার প্রকল্প এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, বাঁধের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এর মধ্যে কয়েকদিনের টানা বৃষ্টির পানিতে বাঁধের কিছু অংশ ধসে গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা লুৎফর রহমান বলেন, নদীভাঙন প্রতিরোধে বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হলে আশায় বুক বেঁধেছিলাম। কাজ শেষ না হতেই বাঁধ ধসে পড়েছে। সামান্য বৃষ্টিতে যদি বাঁধ ধসে যায় ভারী বৃষ্টি হলে কী হবে। তাদের দাবি, যাতে আগামীতে ব্লক বসানোর কাজ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নজরদারিতে রেখে যেন কাজ শেষ করে।
একই এলাকার এনামুল ও রাসেদের অভিযোগ, কাজের মনিটরিং ব্যবস্থা দুর্বল থাকায় যথাযথ ডাম্পিং না করে সিসি ব্লক বসানো হয়েছে। এ কারণে সামান্য বৃষ্টিতে বাঁধে ধস দেখা দিয়েছে।
কুড়িগ্রাম পাউবোর উপ-সহকারী প্রকৌশলী রাফিয়া আখতার জানান, বিষয়টি নিয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কথা হয়েছে। প্রকল্পের কাজ চলমান থাকায় দায়িত্ব তাদের। বাঁধের ধসে যাওয়া অংশ মেরামত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: প রকল প
এছাড়াও পড়ুন:
রোহিঙ্গাদের ব্যঙ্গ করলেন ভারতের প্রধান বিচারপতি
রোহিঙ্গাদের নিয়ে ব্যঙ্গ করলেন ভারতের প্রধান বিচারপতি সূর্য কান্ত। পাঁচজন নিখোঁজ রোহিঙ্গার সন্ধান চাওয়ার দাবিতে করা একটি আবেদনের ব্যঙ্গ করে তিনি বলেছেন, অবৈধ অভিবাসীদের জন্য কি দেশের লাল গালিচা বিছিয়ে দেওয়া উচিত?
মঙ্গলবার ভারতের সর্বোচ্চ আদালতে পেশ করা একটি আবেদনে হেফাজত থেকে পাঁচজন রোহিঙ্গার নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছিল। এতে বলা হয়েছিল, আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে রোহিঙ্গাদের দেশ থেকে বহিষ্কার করা উচিত।
ওই আবেদনের শুনানিতে প্রধান বিচারপতি বলেন, “প্রথমে, আপনি প্রবেশ করেন, আপনি অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করেন। আপনি একটি সুড়ঙ্গ খনন করেন অথবা বেড়া অতিক্রম করেন...তারপর আপনি বলেন, এখন আমি প্রবেশ করেছি, আপনার আইন আমার উপর প্রযোজ্য হবে। আপনি বলেন, আমার খাবারের অধিকার আছে, আমার আশ্রয়ের অধিকার আছে, আমার সন্তানদের শিক্ষার অধিকার আছে। আমরা কি এইভাবে আইনকে প্রসারিত করতে চাই?”
তিনি বলেন, “আমাদের দেশেও দরিদ্র মানুষ আছে। তারা নাগরিক। তারা কি কিছু সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার অধিকারী নয়? তাদের উপর কেন মনোযোগ দেওয়া হবে না?”
রোহিঙ্গাদের ভারত শরণার্থী হিসাবে ঘোষণা করেনি উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, সরকার “যদি কোনো শরণার্থীর আইনি মর্যাদা না দেয় এবং কেউ অনুপ্রবেশকারী হয় ও সে অবৈধভাবে প্রবেশ করে, তাহলে কি আমাদের সেই ব্যক্তিকে এখানে রাখার বাধ্যবাধকতা আছে? উত্তর ভারতে আমাদের একটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর সীমান্ত রয়েছে। যদি কোনো অনুপ্রবেশকারী আসে, তাহলে কি আমরা তাদের লাল গালিচা বিছিয়ে স্বাগত জানাই?”
ঢাকা/শাহেদ