নেত্রকোনার দুর্গাপুরে বিএনপির এক পক্ষের হামলায় অন্য পক্ষের একজন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া আহত হয়েছেন আরও অন্তত ছয়জন। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে উপজেলার বাকলজোড়া ইউনিয়নের আব্বাছনগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যক্তির নাম শফিকুল ইসলাম ওরফে সফু (৪০)। তিনি আব্বাছনগর গ্রামের বাসিন্দা এবং কাঠের মিলে কাজ করতেন।

এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা ও থানা-পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দুর্গাপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি হামিদুর রহমান (রাশেদ) আসন্ন ঈদ উপলক্ষে দুর্গাপুরে শুভেচ্ছা পোস্টার ও ছোট ছোট বিলবোর্ড পাঠান। তাঁর কর্মী-সমর্থকেরা গতকাল দুপুরে দুর্গাপুর বাজারসহ স্থানীয় বিএনপি কার্যালয়ে সেই পোস্টার ও বিলবোর্ড লাগাতে যান। দুর্গাপুর পৌরসভার পুলিশ মোড় এলাকায় বিলবোর্ড টানানোর সময় উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক জামাল উদ্দিন এতে বাধা দেন। পরে হামিদুর রহমান বিষয়টি দুর্গাপুর থানা পুলিশকে লিখিতভাবে জানান। এতে জামাল উদ্দিন আরও ক্ষিপ্ত হন। পরে তাঁর নেতৃত্বে রাত সাড়ে আটটার দিকে ২৫-৩০টি মোটরসাইকেলে এক দল লোক আব্বাছনগর গ্রামে গিয়ে হামিদুর রহমানের গ্রামের বাড়িতে হামলা চালান। তাঁরা আব্বাছনগর বাজারেও হামলা এবং ভাঙচুর করে। হামলায় হামিদুর রহমানের ভাতিজা শফিকুল ইসলাম নিহত হন। এ সময় আরও ছয়জন আহত হন।

নিহত ব্যক্তির স্বজনদের অভিযোগ, জামাল উদ্দিনের নেতৃত্বে মোটরসাইকেল ও একটি পিকআপে করে দেশি অস্ত্র এনে হামলা চালানো হয়। একপর্যায়ে তাঁরা গুলি ছোড়েন। শফিকুল পেটে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যান। খবর পেয়ে দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসানসহ পুলিশ সদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

শাকিল নামের হামিদুর রহমানের এক ভাতিজা বলেন, ‘গতকাল বেলা দেড়টার দিকে দুর্গাপুর পৌরসভার পুলিশ মোড় এলাকায় বিলবোর্ড টানাতে গেলে জামাল উদ্দিন ও তাঁর লোকজন বাধা দেন। তাঁরা আমাদের ৪০টি বেলবোর্ড ছিনিয়ে নিয়ে ভেঙে ফেলেন। এরপর আমরা থানায় লিখিত অভিযোগ দিই। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে রাতে জামাল উদ্দিন ও তাঁর সহযোগীরা আমাদের বাড়িঘরে হামলা ও আমার চাচাতো ভাই শফিকুলকে গুলি করে হত্যা করেছেন। এ ঘটনায় আমরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’

হামিদুর রহমান বিএনপির সাবেক হুইপ (পরে এলডিপি নেতা) আইনজীবী আবদুল করিম আব্বাছীর ভাতিজা। অপর পক্ষের জামাল উদ্দিন উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ইমাম হোসেন আবু চানের ছেলে।

এ ব্যাপারে জানতে অভিযুক্ত জামাল উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। ওসি মাহমুদুলের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। তবে রাত সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশ সুপার মির্জা সায়েম মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, গুলির ঘটনা ঘটেছে কি না, তা এখনো স্পষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। নিহত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে থানায় নেওয়া হচ্ছে। শুক্রবার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে। হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: হ ম দ র রহম ন ব এনপ র উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

সংগীতশিল্পী দীপ মারা গেছেন

র‍াস্টফ ব্যান্ডের ভোকাল আহরার মাসুদ মারা গেছেন। সেমাবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। ভক্তদের কাছে দীপ নামে পরিচিত ছিলেন আহরার মাসুদ। 

মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টায় ব্যান্ডের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে এ তথ্য জানানো হয়। তবে এ শিল্পীর মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি। 

আরো পড়ুন:

৫০ শয্যার থানচি হাসপাতাল চলছে একজন চিকিৎসকে

সিজেএফবি পারফরম্যান্স অ্যাওয়ার্ড ঘোষণা

রাস্টফ ব্যান্ডের ফেসবুক পেজে দীপের মৃত্যুর খবর জানিয়ে লেখা হয়, “এমন এক বেদনাদায়ক মুহূর্তে সঠিক শব্দ খুঁজে পাওয়া বা কোনো শব্দ খুঁজে পাওয়া—প্রায় অসম্ভব। প্রিয় ভোকালিস্ট, বন্ধু ও সহযাত্রী আহারার ‘দীপ’ মাসুদের মৃত্যুসংবাদ আমাদের স্তম্ভিত করেছে। আমরা শোকে ভেঙে পড়েছি, এখনো অবিশ্বাসের ভেতর ডুবে আছি। গত রাতেই তিনি আমাদের ছেড়ে চিরবিদায় নিয়েছেন।” 

দীপের শূন্যতা ব্যাখ্যা করে লেখা হয়, “তার পরিবার, বন্ধু ও প্রিয়জনদের প্রতি আমাদের অন্তরের সমবেদনা ও প্রার্থনা। আপনাদের মতো আমরাও এই অপূরণীয় ক্ষতি বোঝার চেষ্টা করছি, চেষ্টা করছি দীপের অসাধারণ প্রতিভাকে সম্মান জানাতে এবং তার চেয়েও বড় কথা—মানুষ হিসেবে তিনি আমাদের কাছে যে অমূল্য ছিলেন, তাকে স্মরণ করতে। এই কঠিন সময়ে সবার কাছে অনুরোধ, দয়া করে পরিবার ও কাছের মানুষদের ব্যক্তিগত পরিসরকে সম্মান করুন এবং তার আত্মার শান্তির জন্য প্রার্থনা করুন। শান্তিতে ঘুমাও, দীপ। তোমার শূন্যতা চিরকাল বেদনাময় হয়ে থাকবে।” 

তরুণদের কাছে জনপ্রিয় আরেকটি ব্যান্ড পাওয়ারসার্চও দীপের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে। ব্যান্ডের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে লেখা হয়েছে, “স্মরণ করছি আহরার মাসুদ দীপকে। কিছুক্ষণ আগে আমরা হারিয়েছি আমাদের প্রিয় ভাই, ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং এক সত্যিকারের শিল্পীকে। এক্লিপস, কার্ল, ক্যালিপসো ও সবশেষ রাস্টফ ব্যান্ডের অবিস্মরণীয় কণ্ঠ আহরার মাসুদ দীপ আমাদের মাঝে আর নেই। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।” 

পাওয়ারসার্চ আরো লেখেন, “আহরার মাসুদ দীপ শুধু একজন ভোকালিস্টই ছিলেন না, তিনি ছিলেন শক্তি, সৃজনশীলতা আর আবেগের প্রতীক, যিনি তার চারপাশের সবাইকে অনুপ্রাণিত করেছেন; একই সাথে তার অত্যন্ত নমনীয় ব্যবহার, যা সবাইকে তাঁর শুভাকাঙ্ক্ষীই করে ফেলত! শান্তিতে থাকো ভাই, তুমি সব সময় আমাদের গল্পের অংশ হয়ে থাকবে।”

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভোররাতে রণক্ষেত্র: নরসিংদীতে নিহত ১, গুলিবিদ্ধ ৫
  • গাজায় ২৬ হাজার শিশু তীব্র অপুষ্টির শিকার: জাতিসংঘ
  • গ্রাহকের কাছে পেয়ারা খেতে চায় জনতা ব্যাংকের কর্মকর্তা
  • গল্পটা এই ক্লাসরুম থেকেই শুরু: ইরফান সাজ্জাদ
  • রাশিয়ায় এক বাঙালি বিপ্লবীর খোঁজে
  • আপনার এত সাহস হয় কী করে, সাংবাদিককে নায়িকা
  • দুবাইয়ে বিকৃত যৌন ব্যবসা চক্রের প্রধানকে চিহ্নিত করল বিবিসির এক অনুসন্ধান
  • মহানবী (সা.)–এর ইন্তেকালের পরে শাসন নিয়ে যা ঘটেছে
  • কুবিতে নতুন ১৮ বিভাগ ও ৪ ইনস্টিটিউট চালুর সুপারিশ
  • সংগীতশিল্পী দীপ মারা গেছেন