সরকারি দপ্তরে দৈনিকভিত্তিক সাময়িক শ্রমিকদের মজুরি আগামী ১ জুলাই থেকে বাড়ছে। এবার মজুরি বাড়ছে ১৫০ থেকে ২২৫ টাকা পর্যন্ত।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ গতকাল বৃহস্পতিবার এ–সংক্রান্ত পরিপত্র জারি করেছে। সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ, সংস্থা এবং রাষ্ট্রায়ত্ত ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে জরুরি কাজ সম্পাদনের জন্য সাময়িকভাবে দৈনিকভিত্তিতে শ্রমিকদের জন্য এই পরিপত্র প্রযোজ্য।

পরিপত্র অনুযায়ী, ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকায় নিয়মিত দক্ষ ও অনিয়মিত অদক্ষ শ্রমিকের মজুরি দৈনিক মজুরি হবে ৮০০ টাকা। এত দিন এ এলাকায় নিয়মিত দক্ষ শ্রমিকের মজুরি ছিল ৬০০ টাকা আর অনিয়মিত অদক্ষ শ্রমিকের মজুরি ছিল ৫৭৫ টাকা। অর্থাৎ মজুরি বাড়ছে ২০০ থেকে ২২৫ টাকা পর্যন্ত।

বিভাগীয় শহর ও সিটি করপোরেশন এলাকায় নিয়মিত দক্ষ ও অনিয়মিত অদক্ষ শ্রমিকের মজুরি নির্ধারণ করা হয়েছে ৭৫০ টাকা। এত দিন যা ছিল যথাক্রমে ৬০০ ও ৫৫০ টাকা। এ ক্ষেত্রে শ্রমিকের মজুরি বাড়ছে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা।

জেলা ও উপজেলা এলাকায় নিয়মিত দক্ষ ও অনিয়মিত অদক্ষ শ্রমিকের মজুরি ধরা হয়েছে ৭০০ টাকা। এত দিন নিয়মিত দক্ষ শ্রমিকের মজুরি ছিল ৫৫০ টাকা আর অনিয়মিত অদক্ষ শ্রমিকের মজুরি ৫০০ টাকা। তাঁদের মজুরি বাড়ছে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা।

যেসব শর্তের কথা উল্লেখ করা হয়, তার মধ্যে রয়েছে ‘দৈনিকভিত্তিতে সাময়িক শ্রমিক নিয়োজিতকরণ নীতিমালা, ২০২৫’ অনুযায়ী শ্রমিক নিয়োগ, মজুরি প্রদান, উপযুক্ত কর্মপরিবেশ নিশ্চিতসহ অন্যান্য নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে। এ ছাড়া শ্রমিকের সংখ্যা যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত হতে হবে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অধিদপ্তর, পরিদপ্তর, দপ্তর, সংস্থার অনুকূলে বাজেটে দেওয়া বরাদ্দ থেকে এ ব্যয় বহন করতে হবে। দৈনিক মজুরির হারে মাসিকভিত্তিক শ্রমিক নিয়োগ করা যাবে না। এ বিষয়ে কোনো অনিয়ম পরিলক্ষিত হলে বিল পরিশোধকারী কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে। এ ব্যয়ের ক্ষেত্রে যাবতীয় আর্থিক বিধিবিধান যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে।

মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দপ্তর, রাষ্ট্রায়ত্ত ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের জরুরি কাজের জন্য গত এপ্রিলে ‘দৈনিকভিত্তিতে সাময়িক শ্রমিক নিয়োজিতকরণ নীতিমালা ২০২৫’ জারি করে সরকার। নীতিমালা অনুযায়ী, জন্মসূত্রে বাংলাদেশের নাগরিক ১৮ থেকে ৫৮ বছর বয়সের মানসিক ও শারীরিকভাবে সক্ষম যে কেউ এ নীতিমালার আওতায় সাময়িক শ্রমিক হিসেবে যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। শুধু দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে সাময়িকভাবে এ ধরনের শ্রমিক নিয়োগ দেওয়া যাবে। এ জন্য কোনো ধরনের পদ সৃষ্টি করা যাবে না। এ ধরনের শ্রমিকদের মাসে ২২ দিনের বেশি নিয়োগ করা যাবে না।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

দুই শীর্ষ তালেবান নেতার বিরুদ্ধে আইসিসির গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) আফগানিস্তানের তালেবানের দুই শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে দেশটির নারী ও কিশোরীদের নানাভাবে দমন–পীড়নের অভিযোগ আনা হয়েছে।

আইসিসি গতকাল মঙ্গলবার বলেছেন, আফগানিস্তানে ২০২১ সালে তালেবান ক্ষমতায় আসে। এর পর থেকে দেশটিতে নারী ও কিশোরীদের প্রতি যে আচরণ করা হয়েছে, তাতে তালেবানের সর্বোচ্চ নেতা হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা এবং দেশটির প্রধান বিচারপতি আবদুল হাকিম হাক্কানির বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের অভিযোগের ‘যুক্তিসংগত ভিত্তি’ রয়েছে।

তালেবান ক্ষমতায় আসার পর নারী ও কিশোরীদের ওপর একের পর এক বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে ১২ বছরের বেশি বয়সী মেয়েদের পড়াশোনার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং অনেক চাকরি থেকে নারীদের বিরত রাখা।

আফগানিস্তানে পুরুষ অভিভাবক ছাড়া নারীরা কত দূর ভ্রমণ করতে পারবে, সে বিষয়ে কড়াকড়ি আরোপ করেছে তালেবান। এমনকি জনসমক্ষে নারীদের কথা বলার বিষয়েও নির্দেশনা জারি করেছে তারা।

এক বিবৃতিতে আইসিসি জানিয়েছে, আফগানিস্তানের জনগণের ওপর কিছু নিয়ম ও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে তালেবান। তবে তারা নারী ও কিশোরীদের বিশেষভাবে লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছে এবং তাদের মৌলিক অধিকার ও স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত করেছে। জাতিসংঘ এসব বিধিনিষেধকে ‘লিঙ্গবৈষম্য’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।

আইসিসির গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে তালেবান। তারা বলেছে, তালেবান এই আদালতকে স্বীকৃতি দেয় না। আদালতের এমন পরোয়ানাকে ‘সুস্পষ্ট শত্রুতামূলক পদক্ষেপ’ এবং ‘বিশ্বজুড়ে মুসলমানদের বিশ্বাসের প্রতি অপমান’।

তালেবান সরকারের দাবি, তারা আফগানিস্তানের সংস্কৃতি ও ইসলামি আইন অনুযায়ী নিজস্ব ব্যাখ্যার ভিত্তিতে নারীদের অধিকারকে সম্মান করে।

গণহত্যা, মানবতাবিরোধী অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধের মতো গুরুতর অপরাধের তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনতে কাজ করে আইসিসি। কোনো দেশ এই অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনতে না পারলে বা বিচার করতে না চাইলে আইসিসি এ উদ্যোগ নেয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ