দৈনিকভিত্তিক শ্রমিকদের মজুরি বাড়ছে ১৫০-২২৫ টাকা পর্যন্ত
Published: 23rd, May 2025 GMT
সরকারি দপ্তরে দৈনিকভিত্তিক সাময়িক শ্রমিকদের মজুরি আগামী ১ জুলাই থেকে বাড়ছে। এবার মজুরি বাড়ছে ১৫০ থেকে ২২৫ টাকা পর্যন্ত।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ গতকাল বৃহস্পতিবার এ–সংক্রান্ত পরিপত্র জারি করেছে। সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ, সংস্থা এবং রাষ্ট্রায়ত্ত ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে জরুরি কাজ সম্পাদনের জন্য সাময়িকভাবে দৈনিকভিত্তিতে শ্রমিকদের জন্য এই পরিপত্র প্রযোজ্য।
পরিপত্র অনুযায়ী, ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকায় নিয়মিত দক্ষ ও অনিয়মিত অদক্ষ শ্রমিকের মজুরি দৈনিক মজুরি হবে ৮০০ টাকা। এত দিন এ এলাকায় নিয়মিত দক্ষ শ্রমিকের মজুরি ছিল ৬০০ টাকা আর অনিয়মিত অদক্ষ শ্রমিকের মজুরি ছিল ৫৭৫ টাকা। অর্থাৎ মজুরি বাড়ছে ২০০ থেকে ২২৫ টাকা পর্যন্ত।
বিভাগীয় শহর ও সিটি করপোরেশন এলাকায় নিয়মিত দক্ষ ও অনিয়মিত অদক্ষ শ্রমিকের মজুরি নির্ধারণ করা হয়েছে ৭৫০ টাকা। এত দিন যা ছিল যথাক্রমে ৬০০ ও ৫৫০ টাকা। এ ক্ষেত্রে শ্রমিকের মজুরি বাড়ছে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা।
জেলা ও উপজেলা এলাকায় নিয়মিত দক্ষ ও অনিয়মিত অদক্ষ শ্রমিকের মজুরি ধরা হয়েছে ৭০০ টাকা। এত দিন নিয়মিত দক্ষ শ্রমিকের মজুরি ছিল ৫৫০ টাকা আর অনিয়মিত অদক্ষ শ্রমিকের মজুরি ৫০০ টাকা। তাঁদের মজুরি বাড়ছে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা।
যেসব শর্তের কথা উল্লেখ করা হয়, তার মধ্যে রয়েছে ‘দৈনিকভিত্তিতে সাময়িক শ্রমিক নিয়োজিতকরণ নীতিমালা, ২০২৫’ অনুযায়ী শ্রমিক নিয়োগ, মজুরি প্রদান, উপযুক্ত কর্মপরিবেশ নিশ্চিতসহ অন্যান্য নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে। এ ছাড়া শ্রমিকের সংখ্যা যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত হতে হবে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অধিদপ্তর, পরিদপ্তর, দপ্তর, সংস্থার অনুকূলে বাজেটে দেওয়া বরাদ্দ থেকে এ ব্যয় বহন করতে হবে। দৈনিক মজুরির হারে মাসিকভিত্তিক শ্রমিক নিয়োগ করা যাবে না। এ বিষয়ে কোনো অনিয়ম পরিলক্ষিত হলে বিল পরিশোধকারী কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে। এ ব্যয়ের ক্ষেত্রে যাবতীয় আর্থিক বিধিবিধান যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে।
মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দপ্তর, রাষ্ট্রায়ত্ত ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের জরুরি কাজের জন্য গত এপ্রিলে ‘দৈনিকভিত্তিতে সাময়িক শ্রমিক নিয়োজিতকরণ নীতিমালা ২০২৫’ জারি করে সরকার। নীতিমালা অনুযায়ী, জন্মসূত্রে বাংলাদেশের নাগরিক ১৮ থেকে ৫৮ বছর বয়সের মানসিক ও শারীরিকভাবে সক্ষম যে কেউ এ নীতিমালার আওতায় সাময়িক শ্রমিক হিসেবে যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। শুধু দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে সাময়িকভাবে এ ধরনের শ্রমিক নিয়োগ দেওয়া যাবে। এ জন্য কোনো ধরনের পদ সৃষ্টি করা যাবে না। এ ধরনের শ্রমিকদের মাসে ২২ দিনের বেশি নিয়োগ করা যাবে না।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার
রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।
সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।
ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’