এনসিপি জুলাইকে কুক্ষিগত করেছে: শরিফ ওসমান
Published: 24th, May 2025 GMT
এনসিপি জুলাইকে কুক্ষিগত করেছে বলে মন্তব্য করেছেন ইনকিলাব মঞ্চ মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদী।
তিনি বলেছেন, “এনসিপির ভুল তিনটা। এনসিপি জুলাইকে কুক্ষিগত করেছে, অনেকেই তারা দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে গেছে এবং এই ঐক্য মূলত নষ্ট করেছে এনসিপি।”
শনিবার (২৪ মে) সকাল সাড়ে ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত দেশের চলমান সংকট মোকাবিলায় জুলাই জনতার জাতীয় ঐক্য বিনির্মাণে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
আরো পড়ুন:
চবিতে নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাতিলের দাবি
১৯ বছর পর বোদা উপজেলা বিএনপির সম্মেলন
তিনি এক উপদেষ্টার উদ্দেশ্যে বলেন, “মন চাইলেই পোস্ট দেন। ৩ ঘণ্টা পর ডিলেট দেন। পরে এসে ক্ষমা চান। ভাই, আপনি যদি আবেগী হন, তাহলে নাটক করেন, আর্ট করেন। আপনাকে উপদেষ্টা কে হতে বলেছে?”
তিনি আরো বলেন, “জুলাই ঘোষণাপত্র না হলে জুলাই শহীদ পরিবার কিংবা যারা এই আন্দোলনে শরিক হয়েছেন, তাদের ভারত আর আওয়ামী লীগ কচুকাটা করবে। জুলাই ঘোষণাপত্র হলে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। এই সরকারের মধ্যে যারা আওয়ামী লীগকে চান, তাদের নৈতিক পরাজয় হয়েছে নিষিদ্ধের মাধ্যমে। তাদের চূড়ান্ত পরাজয় হবে জুলাই সনদ তৈরি হলে।”
মুখপাত্র বলেন, “সরকার ও সেনাবাহিনী এই মুহূর্তে মুখোমুখি অবস্থান করছে। সেনাপ্রধান যে বক্তব্য দিয়েছে সেটি স্পষ্ট একটি রাজনৈতিক বক্তব্য। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অনেক অফিসার আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগী। বর্তমান সেনাপ্রধান আপনি এভাবে রাজনৈতিক বক্তব্য দিতে পারেন না। সম্ভবত আমাদের সেনাবাহিনী একটি ইনস্টিটিউশনালি একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যে দলই আগামীতে ক্ষমতায় আসবে তাদের সেনাবাহিনীকে বলে আসতে হবে।”
মুখপাত্র আরো বলেন, “এই সরকারের মধ্যে কেউ কেউ ৫ বছর ক্ষমতায় থাকতে চান। এইটায় এই সরকারের বড় দায়। ড.
বিএনপির উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “আপনারা কেন জুলাইয়ের রাজনীতি করলেন না। আমরা এনসিপিকে পরে ধরব। আপনারা বলুন, জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে হবে, না হয় ঢাকা শহর অচল করে দিতে হবে।”
“এই সরকারে একজন স্যূটকেস গুছিয়ে বসে আছেন, যিনি অপেক্ষা করছেন কখন ড. ইউনূস পদত্যাগ করবেন। ড. ইউনূস পদত্যাগ করলেই তিনি প্রধান উপদেষ্টা হবেন, ” যুক্ত করেন বিন হাদী।
এ সময় তিনি বর্তমান সরকারকে পুনর্গঠন করে একটি জাতীয় সরকার গঠনের আহ্বান জানান।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জ ত য় ন গর ক প র ট এই সরক র র এনস প
এছাড়াও পড়ুন:
গোখাদ্যের দাম বাড়ায় বিপদে খামারি
গোখাদ্যের লাগামহীন দাম বাড়াতে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে গরু পালনকারী খামারিরা বিপদে পড়েছেন। আসছে ঈদুল আজহার জন্য প্রস্তুত গরু বিক্রি করে লোকসানের আশঙ্কা করছেন অনেকে।
গরুর জন্য প্রস্তুত খাবারে ব্যবহৃত কাঁচামালের দাম বাড়ার কারণে খাবারের উচ্চমূল্যের কথা জানিয়েছেন খাদ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের মালিকরা।
কিছুদিন পরে কোরবানির ঈদ। এরই মধ্যে দফায় দফায় বেড়েছে গোখাদ্যের দাম। এতে বেকায়দায় পড়েছেন খামারিরা। উপজেলার অনেক খামারেই দানাদার খাবারের পরিবর্তে ঘাস জাতীয় খাবার দেওয়া হচ্ছে গবাদি পশুকে। অপরদিকে হঠাৎ গোখাদ্যের দাম বাড়ার ফলে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন দুগ্ধ উৎপাদনকারী খামারিরাও। দীর্ঘদিন ধরে দুধের দাম না বাড়লেও বেড়েছে খাদ্যের দাম। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রস্তুত গোখাদ্যের দাম কেজিপ্রতি ৫৫ থেকে ৬৫ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। এর দাম এক মাসের ব্যবধানে কেজিপ্রতি ৭-৮ টাকা বেড়েছে। গোখাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত ঘাস বড় গোলাই (আঁটি) ৯৫ থেকে ১০০ টাকা এবং ছোট গোলাই ৫০ থেকে ৫৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অথচ দুই মাস আগে একই পরিমাণ ঘাস ৬৫ থেকে ৭০ এবং ছোট গোলাই ৩৫ টাকা দরে বিক্রি হতো।
গোয়ালন্দ পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বিজয়বাবুর পাড়া মহল্লার খামারি আব্দুল বারেক মোল্লা জানান, বিগত কয়েক বছর ধরে দুধের দাম ৫০-৬০ টাকা লিটার চলছে। দুধের দাম বাড়েনি। অথচ গোখাদ্যের দাম প্রতিনিয়ত বেড়ে চলছে। দুই সপ্তাহ আগেও এক বস্তা (৩৭ কেজি) ভুসির দাম ছিল এক হাজার ৫০০ টাকা, তা এখন এক হাজার ৮০০ টাকা দিয়ে কিনতে হচ্ছে। অর্থাৎ কেজিপ্রতি আট টাকার বেশি বেড়েছে। তিনি আরও জানান, তাঁর মোট ৯টি গাভি রয়েছে। এর মধ্যে চারটি গাভি দুধ দেয়। এ পরিস্থিতিতে তিনি প্রতিনিয়ত লোকসানের মুখে পড়ছেন। এভাবে চলতে থাকলে খামার টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে না।
একই এলাকার খামারি তাজেল মোল্লা জানান, তৈরি গোখাদ্যের দাম বেশি হওয়ায় তিনি তা গরুকে খাওয়াতে পারেন না। ভুসিরও অনেক দাম। এছাড়া খড় তো পাওয়াই যাচ্ছে না। তিনি আরও জানান, তাঁর কোনো আবাদি জমি নেই। ছয়টি গাভির ছোট একটি খামার তাঁর। খামার থেকে যা আয় হয়, তা দিয়ে চলে সংসার। গোখাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন তিনি। গরুগুলোকে আগের মতো খাবার দিতে পারছেন না। গরুকে ঠিকমতো খাবার দিতে গেলে সংসারে টানাপোড়েন শুরু হয়ে যায়। গোখাদ্যের দাম বাড়ায় তাদের মতো অনেক খামারি খামারের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন।
উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের দক্ষিণ চরপাঁচুরিয়া গ্রামের কৃষক হাবিব শেখ জানান, তিনি দীর্ঘদিন ধরে গরু পালন করেন। তাঁর খামারে ১৪টি ষাঁড় গরু রয়েছে। সবক’টিই এবারের কোরবানির ঈদে বিক্রির আশা করছেন। গোখাদ্যের দাম অতিরিক্ত বেড়ে যাওয়ায় গরু পালনে খরচ বেড়ে গেছে, সেই তুলনায় দাম পাবেন কিনা জানেন না। কাঙ্ক্ষিত দাম না পেলে আগামীতে হয়তো গরুর খামার টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে না।
উপজেলার তেনাপচা গ্রামে প্রতিষ্ঠিত অ্যামপ্রোল অ্যাগ্রো কমপ্লেক্সের স্বত্বাধিকারী এসএম জসিম উদ্দিন বলেন, তিনি তাঁর খামারের গরুর জন্য নানান ধরনের পুষ্টির সংমিশ্রণে নিজেই গোখাদ্য তৈরি করে থাকেন। এরজন্য তাঁকে বাজার থেকে বিভিন্ন ধরনের কাঁচামাল কিনতে হয়। গোখাদ্যের দাম বাড়ার জন্য কোনো সিন্ডিকেট নেই। কাঁচামালের দাম বেড়ে গেলে এমনিতেই গোখাদ্যের দাম বেড়ে যায়।
গোয়ালন্দ ফিড মিলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেখ মো. নজরুল ইসলাম জানান, কোরবানির ঈদ আসছে। প্রতিটি খামারিই তাদের গরুর খাবার বাড়িয়েছেন। এ কারণে স্বাভাবিকের চেয়ে গোখাদ্যের চাহিদাও বেড়েছে। এছাড়া গোখাদ্যসংশ্লিষ্ট অন্যান্য পণ্যের দামও বেড়েছে। এসব কারণে গোখাদ্যের দাম কিছুটা বেড়েছে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা শাহাদাৎ হোসেন জানান, গোখাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় প্রাণিসম্পদ বিভাগের পক্ষ থেকে খামারিদের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের গোখাদ্যের পরিবর্তে কাঁচা ঘাস ও অন্যান্য খাবার খাওয়ানোর পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।