নড়াইলের কালিয়া উপজেলায় বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবদুল লতিফের গাড়িবহরে হামলা-ভাঙচুর ও মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় মামলা হয়েছে। এতে জেলা বিএনপির সভাপতি বিশ্বাস জাহাঙ্গীর আলমের অনুসারী কালিয়া উপজেলা ও নড়াগাতী থানা বিএনপির ৭৫ জন নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়েছে।

গতকাল শুক্রবার রাতে উপজেলার বেন্দারচর গ্রামের গোলাম কিবরিয়া বাদী হয়ে নড়াগাতী থানায় মামলাটি করেন। গোলাম কিবরিয়া নিজেকে কালিয়া উপজেলা বিএনপির সহ-যুগ্ম সম্পাদক পরিচয় দিয়েছেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা ১০০ থেকে ১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন কালিয়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ওয়াহিদুজ্জামান, সহসভাপতি আসজাদুর রহমান (মিঠু), নড়াগাতী থানা বিএনপির সভাপতি মতিয়ার রহমান খান, সাধারণ সম্পাদক বুলবুল কবির, সহসভাপতি নওশের বিশ্বাস, কালিয়া উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক কামাল সিদ্দিকী, উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক রাকিবুজ্জামান প্রমুখ।

গতকাল দুপুরে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে নড়াগাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল রাতে মামলা হয়েছে। ইতিমধ্যে এক আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

আরও পড়ুননড়াইল বিএনপির সভাপতির অনুসারীদের বিরুদ্ধে দলীয় নেতার গাড়িবহরে হামলার অভিযোগ১৮ মে ২০২৫

মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, ১৮ মে কালিয়া উপজেলায় একটি ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপি নেতা আবদুল লতিফ। ওই দিন দুপুরে তিনি চাপাইল সেতু ঘাটে পৌঁছালে কালিয়া উপজেলা ও পৌর বিএনপির নেতা-কর্মীরা তাঁকে অভ্যর্থনা জানান। পরে শতাধিক মোটরসাইকেল ও একটি মাইক্রোবাসে ১৫০ থেকে ২০০ নেতা-কর্মী শোভাযাত্রা করে উপজেলার বেন্দারচরের উদ্দেশে রওনা হন। বেলা দুইটার দিকে গাড়িবহরটি নড়াগাতী থানার যোগানিয়া বাজার এলাকায় পৌঁছালে মামলার আসামিরা অস্ত্র নিয়ে রাস্তায় গাছের গুঁড়ি ফেলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেন। আবদুল লতিফ ও তাঁর অনুসারী নেতা-কর্মীদের হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করেন। আবদুল লতিফের অনুসারী নেতা-কর্মীদের কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম করার পাশাপাশি বাদীপক্ষের মোট ২৮টি গাড়ি ভাঙচুর ও একটি গাড়ি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেন আসামিরা।

১৮ মে বিএনপি নেতা আবদুল লতিফের গাড়িবহরে হামলার ঘটনার পর ওই দিন রাতেই সংবাদ সম্মেলন করেন তাঁর অনুসারী কালিয়া উপজেলা ও পৌর বিএনপির নেতা-কর্মীরা। সংবাদ সম্মেলনে জেলা বিএনপির সভাপতি বিশ্বাস জাহাঙ্গীর আলমের অনুসারী নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে হামলার দায় দেওয়া হয়।

পরদিন পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করে সভাপতির অনুসারী নেতা-কর্মীরা হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেন। তাঁরা দাবি করেন, গাড়িবহরে থাকা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে পরিকল্পিতভাবে ওই ঘটনা ঘটিয়েছে। তাঁর প্রমাণস্বরূপ ভিডিও ফুটেজ তাঁদের কাছে আছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব এনপ র স র গ ড় বহর কর ম দ র র অন স র কর ম র উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

দুই শীর্ষ তালেবান নেতার বিরুদ্ধে আইসিসির গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) আফগানিস্তানের তালেবানের দুই শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে দেশটির নারী ও কিশোরীদের নানাভাবে দমন–পীড়নের অভিযোগ আনা হয়েছে।

আইসিসি গতকাল মঙ্গলবার বলেছেন, আফগানিস্তানে ২০২১ সালে তালেবান ক্ষমতায় আসে। এর পর থেকে দেশটিতে নারী ও কিশোরীদের প্রতি যে আচরণ করা হয়েছে, তাতে তালেবানের সর্বোচ্চ নেতা হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা এবং দেশটির প্রধান বিচারপতি আবদুল হাকিম হাক্কানির বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের অভিযোগের ‘যুক্তিসংগত ভিত্তি’ রয়েছে।

তালেবান ক্ষমতায় আসার পর নারী ও কিশোরীদের ওপর একের পর এক বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে ১২ বছরের বেশি বয়সী মেয়েদের পড়াশোনার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং অনেক চাকরি থেকে নারীদের বিরত রাখা।

আফগানিস্তানে পুরুষ অভিভাবক ছাড়া নারীরা কত দূর ভ্রমণ করতে পারবে, সে বিষয়ে কড়াকড়ি আরোপ করেছে তালেবান। এমনকি জনসমক্ষে নারীদের কথা বলার বিষয়েও নির্দেশনা জারি করেছে তারা।

এক বিবৃতিতে আইসিসি জানিয়েছে, আফগানিস্তানের জনগণের ওপর কিছু নিয়ম ও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে তালেবান। তবে তারা নারী ও কিশোরীদের বিশেষভাবে লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছে এবং তাদের মৌলিক অধিকার ও স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত করেছে। জাতিসংঘ এসব বিধিনিষেধকে ‘লিঙ্গবৈষম্য’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।

আইসিসির গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে তালেবান। তারা বলেছে, তালেবান এই আদালতকে স্বীকৃতি দেয় না। আদালতের এমন পরোয়ানাকে ‘সুস্পষ্ট শত্রুতামূলক পদক্ষেপ’ এবং ‘বিশ্বজুড়ে মুসলমানদের বিশ্বাসের প্রতি অপমান’।

তালেবান সরকারের দাবি, তারা আফগানিস্তানের সংস্কৃতি ও ইসলামি আইন অনুযায়ী নিজস্ব ব্যাখ্যার ভিত্তিতে নারীদের অধিকারকে সম্মান করে।

গণহত্যা, মানবতাবিরোধী অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধের মতো গুরুতর অপরাধের তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনতে কাজ করে আইসিসি। কোনো দেশ এই অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনতে না পারলে বা বিচার করতে না চাইলে আইসিসি এ উদ্যোগ নেয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ