ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদী বলেছেন, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) জুলাইকে কুক্ষিগত করেছে। তাঁদের অনেকেই দুর্নীতিগ্রস্ত। জুলাইয়ের ঐক্য মূলত নষ্ট করেছে এনসিপি।

আজ শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনে এক সংবাদ সম্মেলনে ওসমান হাদী এসব কথা বলেন।

সংবাদ সম্মেলনে ইনকিলাব মঞ্চের পক্ষ থেকে জাতীয় সরকার অথবা জাতীয় ঐক্য কাউন্সিল গঠনের দাবি জানান ওসমান হাদী। তিনি বলেন, এই সরকার জুলাই গণহত্যার বিচার, মৌলিক সংস্কার ও দ্রুততম সময়ে নির্বাচনের আয়োজন করবে।

জাতীয় সরকারের রূপরেখা উল্লেখ করে ওসমান হাদী বলেন, এই সরকারের প্রধান থাকবেন অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। যেখানে প্রতিটি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি থাকবেন। তাঁরা মন্ত্রী বা উপদেষ্টা নয়, বরং ওয়াচডগ (পর্যবেক্ষক) হিসেবে কাজ করবেন। জাতীয় সরকার বা জাতীয় কাউন্সিল গঠনে বিএনপি, জামায়াত বা অন্য কোনো রাজনৈতিক দল অসহযোগিতা করলে তাদের জাতির কাছে জবাবদিহি করতে হবে।

এই মুহূর্তে প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগ করলে দেশে গৃহযুদ্ধ শুরু হবে উল্লেখ করে ওসমান হাদী বলেন, এমন পরিস্থিতির দায় দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোকে নিতে হবে।

উপদেষ্টাদের অনেকে আওয়ামী লীগের হয়ে মধ্যস্থতার চেষ্টা করছেন উল্লেখ করে ওসমান হাদী বলেন, ফ্যাসিস্ট পালালেও তার দোসররা এখনো পুলিশ থেকে প্রশাসনে বিরাজমান। এমনকি উপদেষ্টাদের অনেকের বক্তব্য বিভিন্ন সময়ে সন্দেহ সৃষ্টি করে। উপদেষ্টাদের অনেকে চাইছেন, কোনোভাবে যাতে আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে নিয়ে আসা যায়।

জুলাই ঘোষণাপত্র জারি না হলে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের কার্যকারিতা তৈরি হবে না উল্লেখ করে ওসমান হাদী বলেন, তারা চূড়ান্ত নিষিদ্ধ হবে বিচারিক প্রক্রিয়ায় ট্রাইব্যুনালের রায়ের মাধ্যমে। কিন্তু তার আগে নির্বাচন হয়ে গেলে পরবর্তী যেকোনো রাজনৈতিক দল দিল্লির পরামর্শে আওয়ামী লীগের নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে পারে। তখন জুলাই–যোদ্ধাদের ধরে ধরে ফাঁসিতে ঝোলানো হবে। তিনি বলেন, ‘আমরা এই বিপদ থেকে মুক্তি পেতে জুলাই ঘোষণাপত্র চাই। আগামী এক সপ্তাহজুড়ে জুলাই ঘোষণাপত্রের জন্য আমরা জনগণের দ্বারে দ্বারে যাব।’

সরকার জুলাই ঘোষণাপত্রের নিশ্চয়তা না দিলে বাংলাদেশের কোনো বিচারক আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের রায় দেবে না উল্লেখ করে ওসমান হাদী বলেন, ‘এই কাজ অত্যন্ত বিপজ্জনক। কিন্তু আমরা মনে করি, আমাদের জীবনের বিনিময়ে হলেও যদি এই দেশ বেঁচে যায়, তাহলে আমাদের আর কোনো আফসোস থাকবে না।’

উপদেষ্টাদের কেউ কেউ অধ্যাপক ইউনূসের ভাবমূর্তিকে ব্যবহার করে পাঁচ বছর পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকতে চায় উল্লেখ করে ওসমান হাদী বলেন, উপদেষ্টাদের এমন মনোভাবই সরকারের জন্য কাল হয়েছে। সরকার এত সংস্কার কাদের নিয়ে করবে? তাদের প্রধান দায়িত্ব হলো, জুলাই গণহত্যার বিচার, মৌলিক সংস্কার ও দ্রুত নির্বাচনের আয়োজন। সরকারকে অন্য বক্তব্য থকে বের হয়ে এসে নিজেদের দায়িত্ব পালন করতে হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: উপদ ষ ট দ র ওসম ন হ দ জন ত ক দ দ র অন ক র জন ত ক সরক র আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

যুক্তরাজ্য, কানাডা ও ফ্রান্সের তীব্র সমালোচনা নেতানিয়াহুর

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার কেয়ার স্টারমার এবং ফ্রান্স ও কানাডার নেতাদের তীব্র সমালোচনা করেছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। তিনি বলেছেন, এই নেতারা ‘চান হামাস ক্ষমতায় থাকুক।’

তিনি স্টারমার, ইমানুয়েল ম্যাক্রন এবং মার্ক কার্নিকে “গণহত্যাকারী, ধর্ষক, শিশুহত্যাকারী ও অপহরণকারীদের” পক্ষ নেওয়ার অভিযোগও করেছেন।

বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনে ইসরায়েলি দূতাবাসের কর্মীদের উপর হামলার পর নেতানিয়াহু বক্তব্য রাখছিলেন। কয়েকদিন আগে, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স এবং কানাডা গাজায় ইসরায়েলি আক্রমণের তীব্র নিন্দা জানিয়েছিল এবং মানবিক পরিস্থিতিকে ‘অসহনীয়’ বলে বর্ণনা করেছিল।

ওয়াশিংটনে ইসরায়েলি দূতাবাসের কর্মীদের উপর হামলার ঘটনায় অবশ্য নিন্দা জানিয়েছে ডাউনিং স্ট্রিট ওয়াশিংটন। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার কেয়ার এক পোস্টে বলেছেন, ইহুদি-বিদ্বেষকে “আমাদের অবশ্যই নির্মূল করতে হবে।”

১৯ মাস আগে গাজায় ইসরায়েলি হামলার প্রতি সমর্থন জানিয়েছিল ইহুদিবাদী দেশটির ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও কানাডা। তবে সম্প্রতি ইসরায়েল গাজায় সবধরনের আন্তর্জাতিক ত্রাণের প্রবেশ বন্ধ করে দেয় এবং সাধারণ মানুষের ওপর নির্বিচারে হামলা শুরু করে। এ ঘটনায় ইসরায়েলের তীব্র সমালোচনা করে যুক্তরাজ্য, কানাডা ও ফ্রান্স। ইসরায়েল যদি পথ পরিবর্তন না করে তবে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেওয়ার হুমকি দিয়েছিল তিনটি দেশ। ইতিমধ্যে যুক্তরাজ্য ইসরায়েলের সঙ্গে সম্ভাব্য বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা স্থগিত করেছে।

বৃহস্পতিবার নেতানিয়াহু তিন দেশের সমালোচনা করে বলেছেন, “আমি প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রন, প্রধানমন্ত্রী কার্নি এবং প্রধানমন্ত্রী স্টারমারকে বলছি, যখন গণহত্যাকারী, ধর্ষক, শিশু হত্যাকারী ও অপহরণকারীরা আপনাদের ধন্যবাদ জানায়, তখন আপনারা ন্যায়বিচারের ভুল দিকে আছেন। আপনারা মানবতার ভুল দিকে আছেন এবং আপনারা ইতিহাসের ভুল দিকে আছেন।”
 

ঢাকা/শাহেদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আমরা প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগ চাচ্ছি না, রোডম্যাপ দাবি করেছি: সালাহউদ্দিন আহমেদ
  • হাইতিতে সন্ত্রাসীদের হামলায় শিশুসহ ৫০ জন নিহত
  • গাজায় নিহতের সংখ্যা ৫৩ হাজার ৮০০ ছাড়াল
  • নির্বাচনের সঙ্গে গণহত্যা ও শেখ হাসিনার বিচারের রোডম্যাপ চান
  • নির্বাচনের সঙ্গে গণহত্যা, শেখ হাসিনার বিচারের রোডম্যাপ চান
  • যুক্তরাজ্য, কানাডা ও ফ্রান্সের তীব্র সমালোচনা নেতানিয়াহুর
  • জেলেনস্কির পর হোয়াইট হাউসে নাস্তানাবুদ হলেন দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট
  • শ্বেতাঙ্গ গণহত্যা নিয়ে মিথ্যা অভিযোগ ট্রাম্পের, পরিস্থিতি সামলে নিলেন রামাফোসা
  • বৈঠকে রামাফোসার কাছে দক্ষিণ আফ্রিকায় ‘শ্বেত গণহত্যার’ মিথ্যা অভিযোগ ট্রাম্পের