সংসার করা নিয়ে আদালতে স্বামী–স্ত্রীর ঝগড়া, শাড়িতে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা
Published: 25th, May 2025 GMT
ঝালকাঠিতে আদালতের কক্ষে পরনের শাড়িতে কেরোসিন ঢালার পর আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন এক নারী। তবে আদালতে উপস্থিত পুলিশ ও বিচারপ্রার্থীরা তাৎক্ষণিক ছুটে এসে আগুন দেওয়া থেকে তাঁকে নিবৃত্ত করলে কোনো অঘটন ঘটেনি। আজ রোববার দুপুরে নলছিটি সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের (চতুর্থ তলা) আসামিদের কাঠগড়ার সামনে এ ঘটনা ঘটে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, নলছিটি উপজেলার দপদিপয়া ইউনিয়নের কয়া গ্রামের এইচ এম শাহ আলমের মেয়ে নুসরাত জাহান (২১) তাঁর স্বামী আল আমিনের বিরুদ্ধে চলতি বছরের ২৮ এপ্রিল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন। ওই মামলায় বর্তমানে আল আমিন কারাগারে আছেন। মামলাটি করার পরই আল আমিন তাঁর স্ত্রীকে তালাকের নোটিশ দেন। আজ মামলাটির ধার্য তারিখে বাদী নুসরাত জাহান তাঁর স্বামী আল আমিনের সঙ্গে পুনরায় সংসার করার জন্য জামিনের আবেদন করেন। কিন্তু স্বামী আল আমিন নুসরাতের সঙ্গে সংসার করতে চান না।
প্রত্যক্ষদর্শী ও আইনজীবী সূত্রে জানা যায়, আদালতের বিচারক মিরাজুল ইসলাম এজলাসে ওঠার আগে সংসার করা নিয়ে কাঠগড়ার সামনে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বাদানুবাদ হয়। একপর্যায়ে কাঠগড়ার সামনে নিজের পরনের শাড়িতে কেরোসিন ঢালেন নুসরাত জাহান। এরপর তিনি ম্যাচ বের করে শরীরে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। তবে আদালতে উপস্থিত পুলিশ ও বিচারপ্রার্থীরা তাৎক্ষণিক তাঁকে নিবৃত্ত করেন।
পরে আদালতের বিচারকের নির্দেশে ওই নারীকে পুলিশি হেফাজতে রাখা হয়। এদিকে স্বামী আল আমিনের জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান আদালতের বিচারক মিরাজুল ইসলাম। আজ বিকেলে আদালত পুলিশ ওই নারীকে পরিবারের জিম্মায় দিয়েছে।
নুসরাত জাহানের আইনজীবী হোসেন আকন খোকন বলেন, আদালতের বিচারক এজলাসে ওঠার আগেই কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই তিনি এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। স্বামী তালাকের নোটিশ দেওয়া সত্ত্বেও পুনরায় সংসার করার দাবিতে স্বামীর জামিন চেয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছেন।
আদালত পুলিশের পরিদর্শক পুলক চন্দ্র রায় বলেন, পুলিশের তৎপরতায় কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। মানবিক কারণে ওই নারীকে পরিবারের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স স র কর
এছাড়াও পড়ুন:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বাবাকে হত্যায় ছেলের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে বাবাকে হত্যার দায়ে ছেলে জসিম মিয়াকে (৪৩) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এর পাশাপাশি তাকে ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরো এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) বেলা ১১টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা ও দায়রা জজ মো. শহিদুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন।
আরো পড়ুন:
ভারতীয় ভ্যাকসিন-বীজ বিক্রি করায় ৪ প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা
শেরপুরে বালু উত্তোলন: ৯ জনকে কারাদণ্ড
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ১৪ আগস্ট দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের জিনোদপুর ইউনিয়নের কাঁঠালিয়া গ্রামে পাট কাটা নিয়ে লিল মিয়ার (৭৫) সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয় তার ছেলে জসিম উদ্দিনের। একপর্যায়ে ঘর থেকে কাঠ নিয়ে এসে বাবার মাথায় উপর্যুপরি আঘাত করেন জসিম উদ্দিন। এতে রক্তাক্ত হয়ে বৃদ্ধ লিল মিয়া মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী মমতাজ বেগম বাদী হয়ে নবীনগর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করলে জসিম উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ জসিম উদ্দিনকে দায়ী করে ২০২৪ সালের ৩০ এপ্রিল আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। একই বছরের ২৭ আগস্ট একমাত্র আসামির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ আমলে নেওয়া হয় এবং ২০২৪ সালের ৭ অক্টোবর তার বিরুদ্ধে পেনাল কোডের ৩০২/৩২৩ ধারায় চার্জ গঠন করা হয়। সাক্ষ্য-প্রমাণ ও যুক্তি-তর্ক শেষে আজ আদালত জসিমকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরো এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট ফখরুদ্দিন খান সন্তোষ প্রকাশ করে বলেছেন, এ রায়ের মাধ্যমে বাদী ন্যায়বিচার পেয়েছেন।
তবে, আসামিপক্ষের আইনজীবী নাজমুল হক রিটন বলেছেন, এ রায়ে আমরা সংক্ষুব্ধ। উচ্চ আদালতে এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে।
ঢাকা/পলাশ/রফিক