আদালতে এসে অসুস্থ হয়ে পড়লেন পরীমনি, পেছাল মামলার শুনানি
Published: 26th, May 2025 GMT
আদালতে অসুস্থ হয়ে পড়ায় ঢাকা বোট ক্লাবে মারধর ও শ্লীলতাহানির অভিযোগে চিত্রনায়িকা পরীমনির করা মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের শুনানি পিছিয়েছে। আগামী ৯ সেপ্টেম্বর সাক্ষ্য গ্রহণের পরবর্তী দিন রেখেছেন আদালত।
আজ সোমবার ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৯ এই দিন ঠিক করেন। প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন পরীমনির আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত।
আইনজীবী নীলাঞ্জনা বলেন, মারধর ও শ্লীলতাহানির মামলায় চিত্রনায়িকা পরীমনি আগেই আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। আজ তাঁকে জেরা করার দিন ঠিক ছিল। পরীমনি সকালে আদালতে হাজির হন। আদালত তাঁকে বেলা তিনটার দিকে আবার আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেন।
পরীমনির আইনজীবী বলেন, আদালতের আদেশ অনুযায়ী পরীমনি বেলা তিনটার দিকে আদালতে হাজির হন। কিন্তু অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাঁর পক্ষ থেকে আদালতের কাছে সময় চেয়ে আবেদন করা হয়। আদালত আবেদন মঞ্জুর করে ৯ সেপ্টেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ঠিক করেছেন।
আইনজীবী নীলাঞ্জনা জানান, পরীমনি সকালে আসার পর থেকে আদালত চত্বরেই গাড়ির ভেতরে অবস্থান করেছিলেন। এতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন।
এর আগে এ মামলায় ২০২২ সালের ২৯ নভেম্বর পরীমনি আদালতে সাক্ষ্য দেন। আজ শুনানির সময় আসামি নাসির ইউ মাহমুদ, তুহিন সিদ্দিকী ও শাহ শহিদুল আলম আদালতে হাজির ছিলেন।
আরও পড়ুনব্যবসায়ী নাসিরের মামলায় জামিন পেলেন পরীমনি২৫ জুন ২০২৪বোট ক্লাবে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে ব্যবসায়ী নাসিরসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে ২০২১ সালের ১৪ জুন সাভার থানায় মামলা করেন পরীমনি। মামলাটি তদন্ত করে ২০২১ সালের ৬ সেপ্টেম্বর নাসির, তুহিন সিদ্দিকী ও শাহ শহিদুল আলমের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। অভিযোগপত্র আমলে নেন আদালত। ২০২২ সালের ১৮ মে তিন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৯।
মামলায় পরীমনি অভিযোগ করেন, ২০২১ সালের ৮ জুন রাতে তাঁকে কৌশলে সাভারের বিরুলিয়ায় ঢাকা বোট ক্লাবে ডেকে নিয়ে যান তাঁর পূর্বপরিচিত তুহিন। সেখানে তাঁকে জোর করে মদ পান করানোর চেষ্টা করেন নাসির। একপর্যায়ে তাঁকে ধর্ষণ ও হত্যার চেষ্টা চালানো হয়।
এদিকে ওই ঘটনায় মারধর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে ২০২২ সালের ১৮ জুলাই ঢাকার আদালতে নালিশি মামলা করেন ব্যবসায়ী নাসির। এ মামলায় জামিনে আছে পরীমনি।
এ ছাড়া মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় পরীমনিসহ তিনজনের বিচার চলছে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০-এ। মামলাটি সাক্ষ্য গ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে।
আরও পড়ুনপরীমনির বিরুদ্ধে মাদক আইনে মামলা০৫ আগস্ট ২০২১.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আইনজ ব
এছাড়াও পড়ুন:
ফরিদপুরে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড
ফরিদপুরে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে আসাদ ওরফে বাচ্চু শেখ (৪৩) নামের এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে তাঁকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আজ বুধবার বেলা একটার দিকে জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক শামীমা পারভীন এ রায় দেন।
রায়ের সময় একমাত্র আসামি আসাদ শেখ কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। রায়ের পর তাঁকে পুলিশি প্রহরায় জেলা কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ অনুযায়ী, ২০২২ সালের জুলাই মাসে ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার ভাটিকান্দি গ্রামের মৃত মতিয়ার শেখের মেয়ে শান্তার সঙ্গে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার কানাই মাতুব্বরের বাড়ি গ্রামের বাসিন্দা ছাত্তার শেখের ছেলে আসাদের বিয়ে হয়। এ দম্পতি ফরিদপুর সদরের অম্বিকাপুর ইউনিয়নের দিরাজতুল্লা মাতুব্বরের ডাঙ্গী গ্রামের ইদ্রিসের অ্যাগ্রো ফার্মে কাজ করতেন। ওই ফার্মে শান্তা ছিলেন শ্রমিক এবং আসাদ ছিলেন সুপারভাইজার। ফার্মের একটি আবাসিক কক্ষে থাকতেন তাঁরা। ২০২২ সালের ২৬ মে বেলা ১১টার দিকে ওই কক্ষ থেকে শান্তার মরদেহ উদ্ধার করে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার পুলিশ। ঘটনার পর তিনি পলাতক ছিলেন।
ঘটনার দুই দিন পর ২০২২ সালের ২৮ অক্টোবর শান্তার মা জরিনা বেগম বাদী হয়ে শান্তার স্বামী আসাদকে আসামি করে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় যৌতুকের দাবিতে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগে একটি মামলা করেন। মামলায় আসাদকে গ্রেপ্তার করা হয়। ২০২৩ সালের ১৬ জুলাই আসাদকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ।
বিচারপ্রক্রিয়া শেষে আজ রায় ঘোষণা করা হলো। এ বিষয়ে ফরিদপুর নারী ও শিশু নিযাতন দমন ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি গোলাম রব্বানী ভূঁইয়া বলেন, আদালতের এ রায় যুগান্তকারী। এর ফলে সমাজে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রী নির্যাতন ও হত্যার প্রবণতা কমে আসবে। এ রায় দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও সমাজের শৃঙ্খলা রক্ষায় সহায়ক হবে।
নিহত শান্তা আসামি আসাদের তৃতীয় স্ত্রী। আসাদের বিরুদ্ধে প্রথম স্ত্রীকেও হত্যার অভিযোগ আছে। এ বিষয়ে রাজবাড়ী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে তাঁর বিরুদ্ধে আরেকটি হত্যা মামলা বিচারাধীন।