কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছেছে ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ। ৩২ দল থেকে ৮ দলে নেমে এসেছে এই প্রতিযোগিতা। এখন কোয়ার্টার ফাইনালের ৪ ম্যাচ, সেমিফাইনালের ২ ম্যাচ, ফাইনালসহ আরও ৭টি ম্যাচ বাকি ক্লাব বিশ্বকাপে। তবে গোলসংখ্যায় এরই মধ্যে বিশ্বকাপ ফুটবলকে পেছনে ফেলেছে ক্লাব বিশ্বকাপ।

যুক্তরাষ্ট্রে চলতি ক্লাব বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বে খেলা হয়েছে ৪৮ ম্যাচ, আর শেষ ষোলোয় ৮ ম্যাচ—সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ৫৬ ম্যাচ খেলা হয়েছে। এই ৫৬ ম্যাচে গোলসংখ্যা ১৭৩টি। অর্থাৎ ম্যাচ প্রতি গড়ে ৩.

০৮টি করে গোল হয়েছে।

আরও পড়ুনবার্সেলোনার বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার দুটি তারিখ পেল রিয়াল১২ ঘণ্টা আগে

১৯৩০ সালে শুরু হওয়া বিশ্বকাপ ফুটবলের প্রথম আসরে খেলেছে ১৩ দল। চার বছর পরের আসরে ১৬ দল, মাঝে দুটি আসরে দলসংখ্যা কমলেও ১৯৫৪ থেকে ১৯৭৮ পর্যন্ত বিশ্বকাপে ১৬টি করে দল অংশ নিয়েছে। ১৯৮২ থেকে ১৯৯৪ বিশ্বকাপ পর্যন্ত খেলেছে ২৪ দল। এরপর ১৯৯৮ সালে প্রথমবারের মতো ৩২ দল নিয়ে আয়োজিত হয় বিশ্বকাপ। এত দিন পর্যন্ত বিশ্বকাপে ৩২ দল দেখা গেলেও ২০২৬ বিশ্বকাপে অংশ নেবে ৪৮টি দল।

এবারের ক্লাব বিশ্বকাপে যেহেতু ৩২ দল অংশ নিয়েছে, তাই গোলের তুলনাটাও করা হয়েছে ৩২ দল নিয়ে আয়োজিত বিশ্বকাপের সঙ্গে। ১৭১ গোল হয়েছে ১৯৯৮ বিশ্বকাপে, ২০১৪ বিশ্বকাপের আগপর্যন্ত এটাই ছিল বিশ্বকাপের এক আসরে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড। ব্রাজিলে আয়োজিত ২০১৪ বিশ্বকাপেও দেখা গেছে ১৭১টি গোল। ২০২২ কাতার বিশ্বকাপে এসেছে ভেঙেছে এই যৌথ রেকর্ড। আর্জেন্টিনার জেতা এই বিশ্বকাপে হয়েছে ১৭২ গোল।

অর্থাৎ লিওনেল মেসিদের জেতা কাতার বিশ্বকাপে ৬৪ ম্যাচ মিলিয়ে যত গোল হয়েছে, এবারের বিশ্বকাপে ৭ ম্যাচ বাকি থাকতেই তার চেয়ে বেশি গোল হয়েছে।

আরও পড়ুনরিয়ালের কাছে হারে জুভেন্টাসের ১০ খেলোয়াড় যে কারণে মাঠ ছাড়তে চেয়েছেন১৫ ঘণ্টা আগে

২০০২ বিশ্বকাপে হয়েছে ১৬১ গোল, ২০০৬ বিশ্বকাপে ১৪৭ গোল, ২০১০ বিশ্বকাপে ১৪৫ গোল, ২০১৮ বিশ্বকাপে ১৬৯ গোল। সব কটি বিশ্বকাপই ছিল ৬৪ ম্যাচের। এর মধ্যে ম্যাচপ্রতি গোল গড়ে খুব স্বাভাবিকভাবেই কাতার বিশ্বকাপ এগিয়ে। প্রতি ম্যাচে ২.৬৯টি করে গোল হয়েছে কাতার বিশ্বকাপে। তবে অংশ নেওয়া দলের সংখ্যা ও ম্যাচসংখ্যা হিসাবের বাইরে রাখলে বিশ্বকাপের ইতিহাসে ম্যাচপ্রতি গোলসংখ্যায় ১৯৫৪ বিশ্বকাপ এগিয়ে। সুইজারল্যান্ডে আয়োজিত সেই বিশ্বকাপে ২৬ ম্যাচে হয়েছিল ১৪০ গোল। ম্যাচপ্রতি গোল ছিল ৫.৪৮!

এবারের ক্লাব বিশ্বকাপে দেশের গোলসংখ্যা হিসাবে ব্রাজিলই এগিয়ে। শেষ ষোলোয় ৬টি গোল করেছেন ব্রাজিলের খেলোয়াড়েরা। গ্রুপ পর্ব মিলিয়ে এবার ক্লাব বিশ্বকাপে ব্রাজিলিয়ান খেলোয়াড়দের কাছ থেকে ২৪ গোল দেখা গেছে। ১৯ গোল নিয়ে এ তালিকার দুইয়ে আর্জেন্টিনার খেলোয়াড়েরা। ১৩ গোল নিয়ে তৃতীয় ইংল্যান্ডের খেলোয়াড়েরা। ফ্রান্স ও পর্তুগালের খেলোয়াড়দের গোলসংখ্যা সমান ১২টি করে। জার্মানি ও স্পেনের খেলোয়াড়েরা করেছেন ৯টি করে গোল।

মহাদেশ বিচারে এবারের ক্লাব বিশ্বকাপে গোলে ইউরোপ এগিয়ে। এই মহাদেশের খেলোয়াড়েরা করেছেন ৮২ গোল। ৫২ গোল নিয়ে দুইয়ে দক্ষিণ আমেরিকা। ১৫ গোল নিয়ে তৃতীয় আফ্রিকা।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র ক ল ব ব শ বক প ক ত র ব শ বক প ব শ বক প র গ লস খ য গ ল হয় ছ আয় জ ত ফ ইন ল

এছাড়াও পড়ুন:

কক্সবাজারের সাবেক ডিসি ও জেলা জজসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে বিচার শুরুর আদেশ

জালিয়াতির একটি মামলায় কক্সবাজারের সাবেক জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. রুহুল আমিন; সাবেক জেলা ও দায়রা জজ মো. সাদিকুল ইসলাম তালুকদারসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন আদালত। মাতারবাড়ীতে তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পে ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণের ২৩ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে করা মামলা থেকে ডিসির নাম বাদ দিতে এ জালিয়াতি হয় বলে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তদন্তে উঠে আসে। আজ মঙ্গলবার চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মিজানুর রহমান এই মামলায় অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন।

দুদকের আইনজীবী কাজী ছানোয়ার আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে এই মামলার বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। এর আগে আসামিরা নিজেদের নির্দোষ দাবি করে অভিযোগ গঠন থেকে অব্যাহতির আবেদন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত অভিযোগ গঠন করেন। আগামী ৩ আগস্ট থেকে মামলার সাক্ষ্য শুরু হবে।

কাজী ছানোয়ার আহমদ আরও বলেন, কক্সবাজারের সাবেক ডিসি রুহুল আমিন ২০১৭ সালে দুর্নীতির মামলায় কারাগারে যান। পরে তিনি জামিনে বের হন। এর আগে তাঁকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। সাবেক জেলা ও দায়রা জজ সাদিকুল ইসলাম বর্তমানে অবসরে রয়েছেন। অন্য তিন আসামি হলেন কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের আইনজীবী মোস্তাক আহমদ চৌধুরী, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নাজির স্বপন কান্তি পাল এবং আদালতের স্টেনোগ্রাফার জাফর আহমদ। আজ শুনানির সময় আদালতের কাঠগড়ায় পাঁচ আসামি উপস্থিত ছিলেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ১৯ নভেম্বর কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতে মাতারবাড়ীর বাসিন্দা এ কে এম কায়সারুল ইসলাম চৌধুরী এই দুর্নীতির ঘটনায় তৎকালীন জেলা প্রশাসক মো. রুহুল আমিনকে প্রধান আসামি করে ২৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দেন দুদককে। তবে মামলার পরপরই তৎকালীন জেলা ও দায়রা জজ সাদিকুল ইসলাম তালুকদার দুদকের প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো কাগজপত্র থেকে ১ নম্বর আসামি রুহুল আমিনের নাম বাদ দিয়ে তা পাঠান। বিষয়টি জানাজানির পর বাদী কায়সারুল একই আদালতে রুহুল আমিন, সাদিকুল ইসলামসহ সাতজনের বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগে আরেকটি মামলা করেন। সেই মামলার তদন্ত শেষে দুদকের চট্টগ্রাম কার্যালয়ের উপপরিচালক রিয়াজউদ্দিন গত বছরের ১ জুলাই পাঁচজনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন।

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৪ সালের ১৯ নভেম্বর বাদীপক্ষের আইনজীবী মোস্তাক আহমদ চৌধুরী মামলার সব নথিপত্র আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা ফরিদ আহমদের কাছে দাখিল করেন। পরদিন (২০ নভেম্বর) সকালে আদালতের কর্মচারী সৈয়দ আকবর নথিপত্র কক্সবাজার ডাকঘরে জমা দেওয়ার জন্য রওনা দিলে তাঁকে আবার আদালতে ফিরিয়ে এনে খামটি স্টেনোগ্রাফার জাফর আহমদের মাধ্যমে জেলা ও দায়রা জজের কাছে পাঠানো হয়। পরে নানা কৌশলে আবেদন থেকে জেলা প্রশাসকের নাম বাদ দেওয়া হয়।

তদন্তে আরও উঠে আসে, ফৌজদারি দরখাস্ত রেজিস্ট্রারে ২৮ জন আসামির নাম থাকলেও পরে ৩টি পৃষ্ঠা পাল্টে ১ নম্বর আসামি হিসেবে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. জাফর আলমের নাম বসানো হয় এবং বাদীর স্বাক্ষর জাল করে ২৮ জনের জায়গায় ২৭ জনকে আসামি দেখিয়ে দুদকে নথি পাঠানো হয়। এই জাল স্বাক্ষরের বিষয়টি সিআইডির হস্তলিপি বিশারদের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে।

দুদক ও আদালত সূত্র জানায়, মাতারবাড়ী তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য ১ হাজার ৪১৪ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। ক্ষতিপূরণ বাবদ বরাদ্দ ছিল ২৩৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে চিংড়িঘের বাবদ ৪৬ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়। ওই অর্থের মধ্যে মনগড়া ২৫টি ঘের দেখিয়ে ১৯ কোটি ৮২ লাখ টাকার বেশি তুলে আত্মসাৎ করা হয়। আরও বিভিন্ন উপায়ে আত্মসাৎ করা হয় টাকা। ২০১৪ সালের ১৮ নভেম্বর প্রথম আলোতে ‘শুরুতে লুট ২২ কোটি টাকা’ শিরোনামে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এর পরদিন মামলাটি দায়ের হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নতুন রাউলের গোল, শতভাগ সাফল্য নিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে রিয়াল
  • কক্সবাজারের সাবেক ডিসি ও জেলা জজসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে বিচার শুরুর আদেশ