Prothomalo:
2025-07-03@12:39:27 GMT

নৌকায় একাই আটলান্টিক পাড়ি

Published: 3rd, July 2025 GMT

মাত্র ২১ বছর বয়সে আটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি দিয়ে তিনটি রেকর্ড গড়েছেন যুক্তরাজ্যের তরুণী জারা লকলান। ২৪ ফুট লম্বা একটি নৌকা নিয়ে নিজেই বৈঠা চালিয়ে তিনি পর্তুগাল থেকে দক্ষিণ আমেরিকার ফরাসি গায়ানায় পৌঁছান তিনি। ৪ হাজার ৩৬৬ মাইল পাড়ি দিতে তাঁর সময় লেগেছে ৯৭ দিন ১০ ঘণ্টা ২০ মিনিট।

এই অবিশ্বাস্য যাত্রার মধ্য দিয়ে একসঙ্গে তিনটি গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড গড়েছেন জারা। রেকর্ডগুলো হলো—এই পথে একা বৈঠা চালিয়ে পৌঁছানো প্রথম নারী তিনি। ইউরোপ থেকে দক্ষিণ আমেরিকায় একা পাড়ি দেওয়া সবচেয়ে কম বয়সী ব্যক্তি তিনি। বিশ্বে কোনো মহাসাগর একা পাড়ি দেওয়া সবচেয়ে কম বয়সী নারীও তিনি।

জারার জন্ম যুক্তরাষ্ট্রে হলেও বড় হয়েছেন যুক্তরাজ্যে। শারীরিক সক্ষমতা বাড়াতে তিনি ভর্তি হয়েছিলেন সামরিক কলেজে। পরে লাফবারো ইউনিভার্সিটিতে পদার্থবিদ্যা নিয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি নৌকা (রোয়িং) চালাতে শুরু করেন।

২০২৪ সালের ২৭ অক্টোবর পর্তুগালের লাগোস শহর থেকে যাত্রা শুরুর আগে প্রস্তুতির জন্য মাত্র তিন মাস সময় পেয়েছিলেন জারা। তিন মাসে তিনি রোয়িং শিখেছেন, পৃষ্ঠপোষক জোগাড় করেছেন এবং ৮০০ কেজি খাদ্য, সরঞ্জামসহ নৌকাটি প্রস্তুত করেছেন। তাঁর যাত্রা শুরুর পর প্রথম ৪০ দিন ছিল ভয়াবহ। এই সময়ে ঝড়, প্রতিকূল বাতাস আর ধীর অগ্রগতি তাঁকে হতাশায় ফেলে দিয়েছিল।

প্রতিদিন অন্তত ১৭ ঘণ্টা বৈঠা চালিয়েছেন জারা। কখনোই টানা চার ঘণ্টার বেশি ঘুমাননি। ৪০তম দিনে একবার নৌকাটি উল্টে গিয়েছিল, তখন তাঁর মুঠোফোন ভেঙে যায়। এরপর বাকি ৫৭ দিন কেটেছে একদম নিঃসঙ্গতায়।

বেশ কিছু ভয়ংকর অভিজ্ঞতা হয়েছে জারার। একবার ব্যারাকুডা মাছ পায়ে কামড় দেয়, আরেকবার রক্তের গন্ধ পেয়ে হাঙর ঘুরে বেড়িয়েছে তাঁর চারপাশে। এসব বিপদ সত্ত্বেও এই তরুণী বলেন, ‘আমি পুরো অভিজ্ঞতাটা দারুণ উপভোগ করেছি। ভাবিনি এতটা ভালো লাগবে।’

এই দীর্ঘ ভ্রমণ জারাকে ধৈর্য, সাহস ও নিজের মানসিক শক্তিকে চিনতে শিখিয়েছে। ভবিষ্যতে নতুন রেকর্ড গড়ার ইচ্ছা আছে তাঁর। তবে আপাতত অন্য কোনো দুঃসাহসিক অভিযানের কথা ভাবছেন।

গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস জারার অর্জনকে ‘অফিশিয়ালি অ্যামেজিং!’ বলে মন্তব্য করেছে।

সূত্র: গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র কর ড

এছাড়াও পড়ুন:

সতীর্থ জোটার মৃত্যুতে রোনালদোর আবেগঘন বার্তা

ফুটবল মাঠে একসঙ্গে যাদের দৌড়, জয়, উদযাপন আর ট্রফি ভাগাভাগির সম্পর্ক একদিন সেই পথেই এসে থামে দুঃখের সীমানা। এবার সেই করুণ বিদায়ের সাক্ষী হলেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো।

দিয়েগো জোটার হঠাৎ মৃত্যুর খবরে ভেঙে পড়েছেন তিনি। লিখেছেন এক হৃদয়বিদারক বার্তা। যেখানে কেবল একজন সতীর্থের চলে যাওয়া নয়, হারিয়ে গেছে সম্পর্ক, স্মৃতি আর জীবনের এক অধ্যায়।

আজ বৃহস্পতিবার (০৩ জুলাই) স্পেনের জামোরা প্রদেশে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান জোটা ও তার ভাই আন্দ্রে সিলভা। গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে আগুন ধরে যায় এবং মুহূর্তেই নিভে যায় দুটি প্রতিভাময় জীবন।

আরো পড়ুন:

অকালেই নিভে গেল দিয়েগো জোটার জীবনপ্রদীপ

ভারতের কোচের পদত্যাগ

জোটা মাত্র ২৮ বছর বয়সে পাড়ি জমালেন না ফেরার দেশে। যেখানে ঠিক দুই সপ্তাহ আগেই বিয়ে করেছিলেন দীর্ঘদিনের প্রেমিকা রুতে কার্দোসোকে। তাদের তিনটি সন্তান এখন অনাথ, স্ত্রী নিঃস্ব আর ফুটবল ভুবন শোকাচ্ছন্ন।

এই ঘটনায় নিজের সামাজিক মাধ্যমে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো লেখেন, “সবকিছু যেন অবিশ্বাস্য। এইতো সেদিন আমরা একসাথে জাতীয় দলে খেলেছি, আর এখন তোমার শোকবার্তা লিখছি! তোমার স্ত্রী, সন্তান ও পরিবারের জন্য আমি দোয়া করি। তুমি তাদের হৃদয়ে আজীবন বেঁচে থাকবে। শান্তিতে ঘুমাও দিয়েগো, শান্তিতে ঘুমাও আন্দ্রে। তোমাদের আমরা ভীষণ মিস করব।”

রোনালদোর পাশাপাশি শোক প্রকাশ করেছেন জোটার আরেক জাতীয় দলসঙ্গী রুবেন নেভেস। তার কথায়, “তারা বলে তুমি তখনই হারাও, যখন মানুষ তোমাকে ভুলে যায়। আমি তোমাকে ভুলবো না, দিয়েগো।”

২০১৯ সাল থেকে জাতীয় দলে একসঙ্গে খেলা জোটা ও রোনালদো ছিলেন মাঠের আক্রমণভাগের প্রধান অস্ত্র। উয়েফা নেশন্স লিগ জয় হোক বা প্রীতি ম্যাচের গোল উৎসব; জোটা ছিলেন সেই সব মুহূর্তের নীরব নায়ক। ক্লাব পর্যায়ে লিভারপুলের জার্সিতে তিনি জয় করেছেন প্রিমিয়ার লিগসহ নানা শিরোপা।

আজ সেই প্রাণচঞ্চল স্ট্রাইকার নেই। মাঠের গ্যালারিতে যিনি উদযাপনের সুর তুলতেন, আজ তার জন্য ফুটবলবিশ্ব নীরব। স্মৃতির পাতা জুড়ে থেকে যাবেন দিয়েগো জোটা; একজন ফুটবলার, একজন বাবা, একজন সতীর্থ, আর হাজারো হৃদয়ের ভালোবাসা। 

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ