চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং টার্মিনাল পরিচালনা করবে নৌবাহিনী
Published: 3rd, July 2025 GMT
চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল বা এনসিটি পরিচালনার দায়িত্ব আগামী ছয় মাসের জন্য নৌবাহিনীকে দেওয়া হচ্ছে। গতকাল বুধবার ঢাকার সচিবালয়ে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এক বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এ কথা জানান নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন।
এর আগে গত মঙ্গলবার অর্থনৈতিক বিষয়–সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়। এরপরই
বুধবার বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের বৈঠকে নৌবাহিনীকে বন্দরের এই টার্মিনাল পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালে জাহাজ থেকে গ্যান্ট্রি ক্রেন দিয়ে আমদানি করা কনটেইনার নামানো হয়। আবার রপ্তানি পণ্যবাহী কনটেইনার ক্রেনের সাহায্যে জাহাজে তোলা হয়। এ ছাড়া টার্মিনালের চত্বরে কনটেইনার সংরক্ষণ, স্থানান্তর ও কনটেইনার খুলে পণ্য খালাস দেওয়া হয়।
সচিবালয়ে গতকাল বৈঠক শেষে নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.
চট্টগ্রাম বন্দরের এই টার্মিনাল ১৭ বছর ধরে দেশীয় বেসরকারি প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে আসছে। বর্তমানে এনসিটি পরিচালনাকারী দেশীয় প্রতিষ্ঠান সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেডের চুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে ৬ জুলাই। এর পরদিন অর্থাৎ ৭ জুলাই থেকে নৌবাহিনী এই টার্মিনাল পরিচালনার জন্য দায়িত্ব পাচ্ছে।
নৌপরিবহন উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেন, ১৬–১৭ বছর ধরে যে কোম্পানি এই টার্মিনালে কাজ করছে, তারাও নৌবাহিনীকে সহযোগিতা করবে বলে জানিয়েছে। নৌবাহিনী বা যে–ই পরিচালনা করুক, কারও চাকরি যাবে না। কাউকে বাদ দেওয়া হবে না।
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এই টার্মিনালে জেটি আছে পাঁচটি। এই পাঁচ জেটিতে চারটি সমুদ্রগামী জাহাজ ও অভ্যন্তরীণ নৌপথে চলাচলকারী একটি জাহাজ ভিড়তে পারে। এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় টার্মিনাল। জাহাজ থেকে কনটেইনার ওঠানো-নামানো, স্থানান্তরসহ নানা কাজ হয় এই টার্মিনালে।
আওয়ামী লীগের শাসনামলে নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল সংযুক্ত আরব আমিরাতের ডিপি ওয়ার্ল্ডের হাতে ছেড়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার সেই প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়েছে। প্রকল্পের সময়সীমা অনুযায়ী, আগামী নভেম্বর মাসে এই চুক্তি হবে।
বিশ্বব্যাংকের সহযোগী ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশন (আইএফসি) এই টার্মিনালে ট্রানজেকশন অ্যাডভাইজার বা বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করছে। সেই চুক্তির আগপর্যন্ত টার্মিনালের পরিচালনার ভার থাকবে নৌবাহিনীর হাতে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এই ট র ম ন ল ন পর বহন উপদ ষ ট
এছাড়াও পড়ুন:
ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়ি নিয়ে প্রশ্ন, পরীক্ষা বাতিল
খুলনা সরকারি বিএল কলেজের একাদশ শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষায় শেখ মুজিবুর রহমানের ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়ি নিয়ে প্রশ্ন করায় পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে।
বুধবার সমাজবিজ্ঞান প্রথম ও দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষায় সৃজনশীল পদ্ধতির প্রশ্নটি করা হয়। এছাড়া পুরো প্রশ্নে আরও কিছু ভুল ছিল। পরীক্ষা শুরুর দেড় ঘণ্টা পর বিষয়টি নজরে আসলে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে দ্রুত প্রশ্ন ফেরত নেওয়া হয়।
এরপর প্রথমে পরীক্ষা স্থগিত এবং পরে বাতিল করা হয়। পরীক্ষার প্রশ্ন তৈরির সঙ্গে জড়িত সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নিত্য রঞ্জন সরকারকে শোকজ করা করেছে কলেজ প্রশাসন। ঘটনা তদন্তে ইসলামী ইতিহাস বিভাগের বিভাগীয় প্রধান আবু তালেককে প্রধান করে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও শিক্ষার্থীরা জানান, বুধবার দুপুর ২টায় একাদশ শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষার সমাজবিজ্ঞান প্রথম ও দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষা ছিল। কলেজের একাডেমিক ভবন-১ এ (ইন্টারমিডিয়েট ভবন) নির্ধারিত সময়ে পরীক্ষা শুরু হয়। দেখা গেছে, প্রশ্ন শুরু হয়েছে ৫ নম্বর থেকে, এরপর ৬, এরপর ১ নম্বর, পরপর ২, ৩ ক্রমিক।
প্রশ্নের ৯ নম্বরে ছিল “জনাব রিয়াজ তার নাতনিকে নিয়ে ধানমন্ডির ৩২নং বাড়ি পরিদর্শনে যান। সেখানে একজন মহান নেতার ছবির সামনে দাঁড়িয়ে বলেন, এই ছবিটি আমাদের সেই প্রিয় নেতার, যিনি ১৯৬৬ সালে কিছু দাবি পেশ করেছিলেন। আর এগুলো ছিল আমাদের প্রাণের দাবি, প্রত্যাশিত স্বপ্ন পূরণের চাবিকাঠি। পরবর্তীতে এ দাবিগুলো মুক্তিকামী জনতার মধ্যে গভীর উদ্দীপনার সৃষ্টি করে।”। এর ওপর প্রশ্ন ছিল ৪টি প্রশ্ন ছিল।
বুধবার কক্ষ পরিদর্শকের দায়িত্বে ছিলেন বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শেখ জহিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘প্রথমে ৩০ নম্বরের এমসিকিউ শেষ হয়। এরপর ৭০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষার প্রশ্ন বিতরণ করা হয়। প্রশ্নটি পড়ে দেখতে গিয়ে সিরিয়াল এলোমেলো দেখে চোখে লাগে। পরে পুরো প্রশ্ন পড়ে দেখি ভেতরে এসব লেখা। তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি অধ্যক্ষকে জানালে তিনি প্রশ্ন নিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেন। আমি প্রশ্ন সংগ্রহ করে প্রশাসনের কাছে জমা দিয়েছি।’
বিএল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক সেখ হুমায়ুন কবির বলেন, শুধু ৯ নম্বর নয়, প্রশ্নের ক্রমিকে, ৪, ৭, ৯ ও ১১ নম্বর প্রশ্নের ভেতরেও ভুল ছিল। কয়েকটি প্রশ্নের সঙ্গে উদ্দীপকের মিল ছিল না। প্রশ্ন পেয়ে ছাত্র-ছাত্রীরা হাসাহাসি শুরু করেন। বিষয়টি নজরে আসার পর প্রশ্ন প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। পরে পরীক্ষাটি বাতিল করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বিএল কলেজের প্রশ্ন সারাদেশে অনেক কলেজ ফলো করে, টেস্ট পেপারে ছাপা হয়। একজন শিক্ষক কিভাবে এতো ভুল করল এটা জানতে তাকে শোকজ করা হয়েছে। এছাড়া ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিনি বলেন, কয়েকটি নমুনা রাখা হয়েছে। বাকি প্রশ্ন নষ্ট করা হয়েছে।
কলেজে গিয়ে প্রশ্ন তৈরির সঙ্গে জড়িত নিত্য রঞ্জন সরকারকে পাওয়া যায়নি। ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন দিলে তিনি ফোন ধরেননি। বক্তব্য জানতে চেয়ে তাকে ক্ষুদে বার্তা পাঠানো হয়েছে।