বর্ষাকাল শুরু হওয়ার সাথে সাথে, বৃষ্টি এবং আর্দ্র আবহাওয়ার কারণে চুল ও ত্বকে অনেক সমস্যা দেখা দেয়। কিছু প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিলে এসব সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। 

ত্বক সুস্থ রাখতে ফেসপ্যাকগুলি খুবই কার্যকর। বাজারে বিভিন্ন ধরণের ফেসপ্যাক পাওয়া গেলেও, ঘরে তৈরি ফেসপ্যাক ব্যবহার করাই ভালো। বর্ষাকালে ত্বক ভালো রাখতে যেসব ঘরোয়া ফেসপ্যাক তৈরি করতে পারেন-

মুলতানি মাটি এবং গোলাপ জলের প্যাক
মুলতানি মাটি অতিরিক্ত তেল শোষণ করে এবং ত্বকের ছিদ্র খুলে দিতে সাহায্য করে, যা বর্ষার সময় খুব গুরুত্বপূর্ণ। গোলাপ জলের প্রদাহ-বিরোধী এবং শীতল বৈশিষ্ট্য রয়েছে। ২ টেবিল চামচ মুলতানি মাটির সাথে ২ টেবিল চামচ গোলাপ জল মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। ত্বকে লাগিয়ে ১৫-২০ মিনিট রাখুন। এরপর ধুয়ে ফেলুন।

নিম এবং হলুদের ফেসপ্যাক
নিমের অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য বর্ষাকালে ব্রণ এবং ত্বকের সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে। হলুদ প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা দেয় এবং প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। তাজা নিম পাতা বেটে নিন অথবা নিমের গুঁড়ো ব্যবহার করতে পারেন। এর সঙ্গে এক চিমটি হলুদ এবং পানির সাথে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। ১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। 

বেসন, দই এবং হলুদের প্যাক
এই ফেসপ্যাকটি ত্বক এক্সফোলিয়েট এবং তেল নিয়ন্ত্রণ করে। বর্ষাকালে মিশ্র বা তৈলাক্ত ত্বকের জন্য এটি অত্যন্ত উপকারী। ২ টেবিল চামচ বেসন, ১ টেবিল চামচ দই এবং এক চিমটি হলুদ মিশিয়ে মুখে লাগান। শুকালে পানি দিয়ে আলতো করে ঘষে ঘষে মুছে ফেলুন।

চন্দন এবং গোলাপ জলের প্যাক
চন্দনের অ্যান্টিসেপটিক বৈশিষ্ট্য বর্ষাকালের সাধারণ ফুসকুড়ি এবং ত্বকের ব্রণ প্রতিরোধে সহায়তা করে। গোলাপ জল ত্বক হাইড্রেট এবং সতেজ করে। গোলাপ জলের সাথে চন্দনের গুঁড়ো মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে মুখে লাগান। শুকানোর পরে ধুয়ে ফেলুন। 

অ্যালোভেরা এবং শসার কুলিং প্যাক
আর্দ্র আবহাওয়ায় জ্বালাপোড়া বা সংবেদনশীল ত্বকের জন্য এই ফেসপ্যাকটি আদর্শ। অ্যালোভেরা ত্বককে হাইড্রেট করতে সাহায্য করে, অন্যদিকে শসা ত্বককে প্রশমিত করে । তাজা অ্যালোভেরা জেল এবং শসার রস মিশিয়ে নিন। ১৫-২০ মিনিট লাগিয়ে রেখে ধুয়ে ফেলুন। 
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: গ ল প জল র বর ষ ক ল ত বক র

এছাড়াও পড়ুন:

কুমিল্লায় বাড়িতে হামলা করে ৩ জনকে পিটিয়ে হত্যা

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় মোবাইল চুরিকে কেন্দ্র করে একটি বাড়িতে হামলা করে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে একই পরিবারের তিনজনকে হত্যা করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) সকাল ৯টার দিকে উপজেলার কড়ইবাড়ী গ্রামে তাদের পিটিয়ে হত্যা করা হয়।

নিহতরা হলেন, রুবি বেগম (৫৮), তার ছেলে রাসেল (৩৫) ও মেয়ে জোনাকি আক্তার (২৭)। রাসেলের ভাবি রুমা আক্তার গুরুতর আহত হয়ে মুরাদনগর উপজেলা কমপ্লেক্স হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

স্থানীয়রা জানান, নিহত রুবি বেগমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় মাদক কারবারসহ বিভিন্ন অভিযোগ অর্ধশতাধিক মামলা রয়েছে। তার পরিবার দীর্ঘ দিন ধরে মাদক কারবার, চাঁদাবাজি ও নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত। সম্প্রতি এলাকায় মোবাইল চুরির ঘটনা নিয়ে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এতে রুবি বেগম ও তার ছেলে রাসেল কয়েকজনকে মারধর করেন। এরই জের ধরে বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) সকালে শতাধিক গ্রামবাসী লাঠিসোঁটা নিয়ে তাদের বাড়িতে হামলা চালায়। এলোপাতাড়ি মারধরের একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে রুবি, রাসেল ও জোনাকি মারা যায়।

আরো পড়ুন:

প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গিয়ে প্রাণ গেল স্কুলছাত্রের

গাজায় ‘গণহত্যার অর্থনীতি’ থেকে লাভবান মাইক্রোসফট-অ্যামাজনসহ যত কোম্পানি

নিহত রাসেলের স্ত্রী মীম আক্তার বলেন, “আমাদের দোকানের এক কর্মচারী কয়েক দিন আগে বশির মিয়ার বাড়ি থেকে মোবাইল চুরি করে বলে অভিযোগ ওঠে। ওই ঘটনার জের ধরে বশির ও তার লোকজন আমাদের কর্মচারীদের আটকে রেখে নির্যাতন করেন। পরে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বার সালিশে বিষয়টি মীমাংসা করে দেন। কিছু বুঝে ওঠার আগে বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) সকালে আমাদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে আমার স্বামী, শাশুড়ি ও ননদকে পিটিয়ে মেরে ফেলে।’’ তিনি এ হত্যার বিচার দাবি করেন। 

মীম আক্তার বলেন, ‘‘আমার শাশুড়ির পরিবার তিন বছর আগে মাদক কারবারি ছেড়ে দিয়েছেন।’’ 

স্থানীয় মানবাধিকারকর্মী ও শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম বলেন, “চুরি বা মাদক— যে অভিযোগই থাকুক, কোনোভাবে কাউকে এভাবে পিটিয়ে মারা যায় না। এটা কেবল আইনহীনতা নয় বরং মানবতাবিরোধী আচরণ।”

বাঙ্গরা বাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুর রহমান বলেন, “নিহত রুবি বেগমের বিরুদ্ধে ৮২টি মামলা রয়েছে। এই পরিবার মাদক কারবারে জড়িত। সেই ক্ষোভ থেকে গ্রামবাসী এ হামলা চালিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারা এতে জড়িত তা শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করতে অভিযান চলছে।”

কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) নজির আহমেদ খান বলেন, “নিহতদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা থাকলেও কাউকে হত্যার অধিকার কারো নেই। আইন নিজের হাতে তুলে নেয়া দণ্ডনীয় অপরাধ। ইতোমধ্যে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। জড়িতদের আইনের আওতায় আনার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।”

এ ঘটনার পর কড়ইবাড়ী গ্রামে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। অনেকে ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। নিহতদের স্বজনরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
 

ঢাকা/রুবেল/বকুল 

সম্পর্কিত নিবন্ধ