ঢাকার সব থেকে অভিজাত আবাসিক এলাকা হিসেবে একসময় পরিচিত ছিল ওয়ারী। ওয়ারীতে থাকতেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কবি-সাহিত্যিক, চিকিৎসক, প্রকৌশলীসহ একঝাঁক সাংস্কৃতিক কর্মী। সেই সময় ওয়ারীর রাস্তাগুলো ছিল প্রশস্ত। রাস্তা ঘেঁষে ছিল একতলা–দোতলা বাড়ি। বাড়ির দেয়াল পেরোলে আঙিনা। আঙিনায় ফুল, ফল ও সবজির চাষ—এই ছিল ওয়ারীর প্রতিটি বাড়ির সাধারণ চিত্র। চার শ বছর পেরোনো এই ঢাকা শহরের সব থেকে অভিজাত আবাসিক এলাকাটি বর্তমানে তার জৌলুশ হারিয়েছে। কিন্তু ওয়ারীজুড়ে মোগল স্থাপত্যকলার নিদর্শন, দুর্লভ বাগান ও একতলা বাড়ির সাবেকি রূপ এখনো টিকে আছে।

ব্রিটিশ সরকার ঢাকা মিউনিসিপ্যালিটি গঠনের ১৪ বছর পর ১৮৮০ সালে সরকারি কর্মকর্তাদের আবাসনের কথা ভেবে ৭০১ একর জায়গা অধিগ্রহণ করেন ওয়ারীতে। প্লটের জন্য জমি নির্ধারিত হয় ১ বিঘা। তবে কিছু কিছু প্লটের আয়তন ছিল দুই বিঘা। ওয়ারীর র‍্যানকিন স্ট্রিটের ৩৭ নম্বর বাড়িটি ছিল দুই বিঘা জমির ওপর। ৫ মে সকাল সোয়া ১০টার দিকে বাড়িটির সামনে গিয়ে দেখা যায়, দুই বিঘা আয়তনের প্লটটি এখন দুই মালিকানায় বিভক্ত। দুটি বাড়ির একটির হোল্ডিং নম্বর ৩৭ আরেকটির ৩৭/১।

স্থানীয় প্রবীণ ব্যক্তিরা জানান, পাকিস্তান আমলে দুটি বাড়ি মিলে একটি দোতলা বাড়ি ছিল, যা ‘নন্দী ডাক্তারের বাড়ি’ নামে পরিচিত ছিল। এখন নন্দী বাড়ির সামনের অংশ ভেঙে গড়ে তোলা হয়েছে বহুতল ভবন। সেই ভবনে বাণিজ্যিক কার্যক্রমও চলে। তবে দুই বাড়ির বহুতল ভবনের মাঝে ডা.

নন্দীর দোতলা বাড়ির আদি অংশটি এখনো টিকে আছে।

সুমন ধর ৩৭/১ বাড়িটির ব্যবস্থাপকের দায়িত্বে আছেন। তিনি বলেন, ‘বাড়িটি পাকিস্তান আমলে নন্দী ডাক্তারের বাড়ি নামে পরিচিত ছিল। বাড়ির মালিকের কাছ থেকে শুনেছি। এই দুটি বাড়ি মিলে একটি বাড়ি ছিল। দুই বাড়ির মাঝখানে ওই চুন-সুরকির অংশটি আদি বাড়ির নিদর্শন।’

পাকিস্তান আমলে ওয়ারীর র‍্যানকিন স্ট্রিটের ৩৭ নম্বর দোতলা বাড়িটি বরাদ্দ পান পাকিস্তান গণপরিষদ সদস্য, কংগ্রেস নেতা, ভবেশ চন্দ্র নন্দী। চিকিৎসক মন্মথ নাথ নন্দী ১৯৫৩ বা ৫৪ সালের দিকে বাড়িটি তাঁর কাছ থেকে কিনে নেন। তিনি সম্পর্কে ভবেশ নন্দীর জ্ঞাতি ভাই ছিলেন। তবে চিকিৎসক মন্মথ নাথ নন্দী বাড়িটিতে ওঠার আগে থেকেই ঢাকার সর্বজনপ্রিয় চিকিৎসক এবং সামাজিক-সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিতি ছিলেন।

নান্দনিক স্থাপত্যশৈলীর আধুনিক অ্যাপার্টমেন্টও আছে লারমিনি স্ট্রিটে। ১৪ তলা আবাসিক ভবনটির প্রতিটি তলায় রয়েছে ফুল আর অর্কিডের বাগান

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: চ ক ৎসক পর চ ত

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকার প্রথম পরিকল্পিত আবাসিক এলাকা এখন যেমন

ঢাকার সব থেকে অভিজাত আবাসিক এলাকা হিসেবে একসময় পরিচিত ছিল ওয়ারী। ওয়ারীতে থাকতেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কবি-সাহিত্যিক, চিকিৎসক, প্রকৌশলীসহ একঝাঁক সাংস্কৃতিক কর্মী। সেই সময় ওয়ারীর রাস্তাগুলো ছিল প্রশস্ত। রাস্তা ঘেঁষে ছিল একতলা–দোতলা বাড়ি। বাড়ির দেয়াল পেরোলে আঙিনা। আঙিনায় ফুল, ফল ও সবজির চাষ—এই ছিল ওয়ারীর প্রতিটি বাড়ির সাধারণ চিত্র। চার শ বছর পেরোনো এই ঢাকা শহরের সব থেকে অভিজাত আবাসিক এলাকাটি বর্তমানে তার জৌলুশ হারিয়েছে। কিন্তু ওয়ারীজুড়ে মোগল স্থাপত্যকলার নিদর্শন, দুর্লভ বাগান ও একতলা বাড়ির সাবেকি রূপ এখনো টিকে আছে।

ব্রিটিশ সরকার ঢাকা মিউনিসিপ্যালিটি গঠনের ১৪ বছর পর ১৮৮০ সালে সরকারি কর্মকর্তাদের আবাসনের কথা ভেবে ৭০১ একর জায়গা অধিগ্রহণ করেন ওয়ারীতে। প্লটের জন্য জমি নির্ধারিত হয় ১ বিঘা। তবে কিছু কিছু প্লটের আয়তন ছিল দুই বিঘা। ওয়ারীর র‍্যানকিন স্ট্রিটের ৩৭ নম্বর বাড়িটি ছিল দুই বিঘা জমির ওপর। ৫ মে সকাল সোয়া ১০টার দিকে বাড়িটির সামনে গিয়ে দেখা যায়, দুই বিঘা আয়তনের প্লটটি এখন দুই মালিকানায় বিভক্ত। দুটি বাড়ির একটির হোল্ডিং নম্বর ৩৭ আরেকটির ৩৭/১।

স্থানীয় প্রবীণ ব্যক্তিরা জানান, পাকিস্তান আমলে দুটি বাড়ি মিলে একটি দোতলা বাড়ি ছিল, যা ‘নন্দী ডাক্তারের বাড়ি’ নামে পরিচিত ছিল। এখন নন্দী বাড়ির সামনের অংশ ভেঙে গড়ে তোলা হয়েছে বহুতল ভবন। সেই ভবনে বাণিজ্যিক কার্যক্রমও চলে। তবে দুই বাড়ির বহুতল ভবনের মাঝে ডা. নন্দীর দোতলা বাড়ির আদি অংশটি এখনো টিকে আছে।

সুমন ধর ৩৭/১ বাড়িটির ব্যবস্থাপকের দায়িত্বে আছেন। তিনি বলেন, ‘বাড়িটি পাকিস্তান আমলে নন্দী ডাক্তারের বাড়ি নামে পরিচিত ছিল। বাড়ির মালিকের কাছ থেকে শুনেছি। এই দুটি বাড়ি মিলে একটি বাড়ি ছিল। দুই বাড়ির মাঝখানে ওই চুন-সুরকির অংশটি আদি বাড়ির নিদর্শন।’

পাকিস্তান আমলে ওয়ারীর র‍্যানকিন স্ট্রিটের ৩৭ নম্বর দোতলা বাড়িটি বরাদ্দ পান পাকিস্তান গণপরিষদ সদস্য, কংগ্রেস নেতা, ভবেশ চন্দ্র নন্দী। চিকিৎসক মন্মথ নাথ নন্দী ১৯৫৩ বা ৫৪ সালের দিকে বাড়িটি তাঁর কাছ থেকে কিনে নেন। তিনি সম্পর্কে ভবেশ নন্দীর জ্ঞাতি ভাই ছিলেন। তবে চিকিৎসক মন্মথ নাথ নন্দী বাড়িটিতে ওঠার আগে থেকেই ঢাকার সর্বজনপ্রিয় চিকিৎসক এবং সামাজিক-সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিতি ছিলেন।

নান্দনিক স্থাপত্যশৈলীর আধুনিক অ্যাপার্টমেন্টও আছে লারমিনি স্ট্রিটে। ১৪ তলা আবাসিক ভবনটির প্রতিটি তলায় রয়েছে ফুল আর অর্কিডের বাগান

সম্পর্কিত নিবন্ধ