ইউক্রেনের লুহানস্ক পুরোপুরি দখলে নেওয়ার দাবি রাশিয়ার
Published: 1st, July 2025 GMT
ইউক্রেনের পুরো লুহানস্ক অঞ্চল দখলে নেওয়ার বলে দাবি করেছে রাশিয়া। দেশটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় লুহানস্ক পুরোপুরি রুশ বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে।
মঙ্গলবার (১ জুলাই) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এই দাবি সত্য হলে এটি হবে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেন আক্রমণ শুরু করার তিন বছরেরও বেশি সময় পরে রাশিয়ার প্রথম সম্পূর্ণভাবে দখল করা ইউক্রেনীয় অঞ্চল।
আরো পড়ুন:
৫০০ ধরনের ড্রোন-ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ইউক্রেনে রাশিয়ার ভয়াবহ হামলা
ন্যাটোর হেগ সম্মেলন: থাকছেন কারা? আলোচ্যসূচিতে প্রধান্য কীসে কীসে
গতকাল সোমবার (৩০ জুন) লুহানস্কে নিযুক্ত রুশ কর্মকর্তা লিওনিড পাসেচনিক দাবি করেন, ‘লুহানস্ক অঞ্চল এখন সম্পূর্ণরূপে রাশিয়ার দখলে রয়েছে।’ এই অঞ্চলটি ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে রাশিয়া যে চারটি ইউক্রেনীয় অঞ্চল একতরফাভাবে রাশিয়ার অন্তর্ভুক্ত করেছিল, তার একটি।
তবে এই দাবি নিয়ে এখনো ইউক্রেন সরকার বা কিয়েভের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য আসেনি।
এর আগে গত ২০ জুন সেন্ট পিটার্সবার্গ অর্থনৈতিক ফোরামে পুতিন জানান, তিনি ইউক্রেনের পুরো ভূখণ্ড রাশিয়ার অন্তর্ভুক্ত করতে চান।
পুতিন বলেন, “আমি বহুবার বলেছি, রুশ ও ইউক্রেনীয় জনগণ এক জাতি। এই দৃষ্টিকোণ থেকে পুরো ইউক্রেনই আমাদের।” তিনি আরো বলেন, “রুশ সেনারা যেখানেই পা রাখে, তা-ই রাশিয়ার।”
ইউক্রেনীয় ডীপ স্টেট ম্যাপ অনুসারে, ২০২৫ সালের ২৮ জুন পর্যন্ত রাশিয়া ইউক্রেনের এক লাখ ১৩ হাজার ৫৮৮ বর্গকিলোমিটার এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে, যা গত দুই মাসে ৯৪৩ বর্গকিলোমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে।
ক্রেমলিন ইতিমধ্যে স্পষ্টভাবে বলেছে, তারা শান্তিতে আগ্রহী। তবে শর্ত হচ্ছে ইউক্রেনকে চারটি সম্পূর্ণ অঞ্চল থেকে সরে যেতে হবে-যেগুলোর বেশিরভাগই এখন রাশিয়ার দখলে। এগুলোকে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আইনিভাবে রাশিয়ার অংশ হিসেবে ঘোষণা করেছেন।
অন্যদিকে ইউক্রেন ও তার ইউরোপীয় মিত্ররা বলছেন, এই শর্তগুলো আত্মসমর্পণের শামিল। রাশিয়া আসলেই শান্তি চায় না। ইউক্রেনের এক-পঞ্চমাংশ অঞ্চলের রুশ নিয়ন্ত্রণ তারা কখনোই মেনে নেবে না।
সোমবার (৩০ জুন) ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদন অনুসারে, রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকাগুলোর মধ্যে রয়েছে-ক্রিমিয়া, লুহানস্ক, ডোনেস্ক, জাপোরিঝিয়া ও খেরসন অঞ্চলের ৭০ শতাংশের বেশি এলাকা, খারকিভ, সুমি ও দনিপ্রোপেত্রোভস্ক অঞ্চলের কিছু অংশ। এর মধ্যে এবার লুহানস্ক অঞ্চলটি পুরোপুরি দখলের দাবি করল রাশিয়া।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র শ য় ইউক র ন য দ ধ ইউক র ন ইউক র ন র
এছাড়াও পড়ুন:
পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসা ভিনগ্রহের বস্তু নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ইলন মাস্ক
গত জুলাই মাসে শনাক্ত হওয়া রহস্যময় ‘৩আই/অ্যাটলাস’ নামের আন্তনাক্ষত্রিক বস্তুর পরিচয় নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে বিজ্ঞানীদের মধ্যে। আমাদের সৌরজগতের মধ্যে থাকা বস্তুটি এমন আচরণ করছে, যা বিজ্ঞানীরা আগে কখনো দেখেননি। কারও ধারণা এটি ধূমকেতু, আবার কারও মতে ভিনগ্রহ থেকে আসা মহাকাশযান। উৎস ও পরিচয় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানাতে না পারলেও বস্তুটি পৃথিবীর জন্য কোনো হুমকি নয় বলে ধারণা করছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। তবে যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতনামা জ্যোতির্বিজ্ঞানী অভি লোব অভিযোগ করেছেন, নাসা বস্তুটির বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গোপন করছে। বিশাল আকারের অতিদ্রুতগামী মহাজাগতিক বস্তুটি অস্বাভাবিক রাসায়নিক উপাদান নিঃসরণ করছে, যা বিজ্ঞানের প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করছে। অনেকের ধারণা, ৩আই/অ্যাটলাস কোনো কৃত্রিম উৎস থেকে তৈরি হতে পারে। এবার এই বিতর্কে নাম লিখিয়েছেন মহাকাশ সংস্থা স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইলন মাস্ক।
জনপ্রিয় মার্কিন পডকাস্ট দ্য জো রোগান এক্সপেরিয়েন্সে ইলন মাস্ক ৩আই/অ্যাটলাস নামের আন্তনাক্ষত্রিক বস্তু সম্পর্কে নিজের ভাবনা প্রকাশ করেছেন। বস্তুটি কোনো ভিনগ্রহের মহাকাশযান হতে পারে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ইলন মাস্ক বলেন, ‘আপনি যদি এটিকে সম্পূর্ণ নিকেল দিয়ে তৈরি করেন, তবে তা হবে একটি অত্যন্ত ভারী মহাকাশযান। এটি এমন একটি যান হতে পারে, যা একটি মহাদেশকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারে। তার চেয়েও খারাপ কিছু ঘটাতে পারে। যদি আমি ভিনগ্রহের কোনো প্রমাণ সম্পর্কে জানতে পারি, তাহলে কথা দিচ্ছি আপনার অনুষ্ঠানে আসব। আর এখানেই তা প্রকাশ করব।’
অভি লোবের দাবি, আন্তনাক্ষত্রিক বস্তুটি পৃথিবীর ওপর নজরদারি করতে পাঠানো ভিনগ্রহের কোনো মহাকাশযান হতে পারে। অস্বাভাবিক লেজযুক্ত বস্তুটি প্রতি সেকেন্ডে চার গ্রাম নিকেল নিঃসরণ করছে; যদিও সেখানে কোনো লোহার উপস্থিতি নেই। ধূমকেতুর ক্ষেত্রে এমন আচরণ আগে দেখা যায়নি।
জো রোগান তাঁর আলোচনায় ধূমকেতুর রহস্যময় বৈশিষ্ট্যের ওপর জোর দেন। ধূমকেতুর গ্যাসের মেঘে নিকেলের উপস্থিতি উল্লেখ করেন। এই ধাতু পৃথিবীতে প্রধানত শিল্পক্ষেত্রে ব্যবহৃত সংকর ধাতুতে পাওয়া যায়। অন্যদিকে ইলন মাস্ক নিকেলের উপস্থিতির একটি পার্থিব ব্যাখ্যা দেন। তিনি বলেন, অনেক ধূমকেতু ও গ্রহাণু প্রাথমিকভাবে নিকেল দিয়ে তৈরি। পৃথিবীতে যেখানে নিকেলখনি দেখা যায়, সেখানে আসলে অতীতে নিকেলসমৃদ্ধ কোনো গ্রহাণু বা ধূমকেতু আঘাত করেছিল।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া