চার দাবিতে সোহরাওয়ার্দীতে হেফাজতে ইসলামের মহাসমাবেশ শুরু
Published: 3rd, May 2025 GMT
নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিলসহ চার দফা দাবিতে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসমাবেশ শুরু হয়েছে। শনিবার সকাল ৯টায় রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এ সমাবেশ শুরু হয়। সমাবেশ চলবে দুপুর ১টা পর্যন্ত।
সকাল থেকেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গিয়ে দেখা যায়, ঢাকা ও আশপাশের এলাকা থেকে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীরা বাসে ও পায়ে হেঁটে সমাবেশে আসছেন। সকাল থেকেই কোনো মিছিল আসতে শুরু করে শাহবাগের দিক থেকে, কোনোটি দোয়েল চত্বরের দিক থেকে, আবার কোনোটি আসে নীলক্ষেতের দিক থেকে। সমাবেশে অংশ নিতে আসা নেতাকর্মীদের ভিড়ে ভোর থেকে শাহবাগ ও আশপাশের এলাকায় যান চলাচল সীমিত হয়ে আসে।
সমাবেশে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় সদস্য মাহমুদ বিন হোসাইন বলেন, হেফাজতে ইসলামের কর্মীরা পবিত্র কোরআনবিরোধী যেকোনো কর্মকাণ্ড রুখতে সর্বোচ্চ ত্যাগ শিকার করতে প্রস্তুত। আজকের সমাবেশ তারই প্রমাণ। অবিলম্বে নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাতিল করতে হবে।
আশুলিয়ার একটি মাদ্রাসার শিক্ষার্থী সাইদুল হাসান জানান, সমাবেশ উপলক্ষ্যে তার মাদ্রাসায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। ওই মাদ্রাসার কাফিয়া শ্রেণি থেকে দাওরায়ে হাদিস শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় সব শিক্ষার্থী সমাবেশে এসেছেন বলে জানান তিনি।
এর আগে সমাবেশের শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করা হয়। এতে সভাপতিত্বে করছেন হেফাজতের আমির মাওলানা শাহ্ মুহিব্বুল্লাহ্ বাবুনগরী। সমাবেশে দেশের শীর্ষস্থানীয় আলেমদের বক্তব্য দেওয়ার কথা রয়েছে।
হেফাজতে ইসলামের দায়িত্বশীল নেতারা জানিয়েছেন, আজকের মহাসমাবেশের মুখ্য দাবি মূলত চারটি। এর মধ্যে প্রধান দাবি হচ্ছে, অনতিবিলম্বে হেফাজত নেতাদের নামে থাকা সব মামলা প্রত্যাহার। সংগঠনটির হিসাবমতে, সারা দেশে হেফাজত নেতাদের নামে প্রায় ৩০০টি মামলা রয়েছে। এ ছাড়া ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে হত্যাকাণ্ড, ২০২১ সালের মার্চে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা সফর ঘিরে হত্যাকাণ্ড, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডের বিচার। এরপর যথাক্রমে নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিল, সংবিধানের প্রস্তাবনায় আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস পুনর্বহাল করা, ফিলিস্তিন ও ভারতে মুসলিম গণহত্যা ও নিপীড়ন বন্ধের দাবিগুলো থাকবে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
আবু সাঈদ হত্যা মামলায় রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্যসহ ৩০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যায় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য মো. হাসিবুর রশীদসহ ৩০ আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। এই মামলায় ২৭ আগস্ট সূচনা বক্তব্যের দিন ধার্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল–২।
বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-২ বুধবার অভিযোগ গঠন ও সূচনা বক্তব্যের দিন ধার্য করেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারক মো. মঞ্জুরুল বাছিদ ও বিচারক নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর।
পরে বিকেলে ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রসিকিউটর মো. মিজানুল ইসলাম বলেন, আবু সাঈদের মামলায় রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য হাসিবুরসহ ৩০ জনের বিরুদ্ধ হওয়া মামলায় অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। এই মামলায় সূচনা বক্তব্য ও সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে ২৭ ও ২৮ আগস্ট।
এই মামলায় ৩০ আসামির মধ্যে ছয়জন গ্রেপ্তার আছেন। তাঁরা হলেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম, সাবেক সহকারী রেজিস্ট্রার রাফিউল হাসান, রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের সাবেক চুক্তিভিত্তিক কর্মচারী মো. আনোয়ার পারভেজ, পুলিশের সাবেক সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আমির হোসেন, সাবেক কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায় ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা ইমরান চৌধুরী ওরফে আকাশ।
বাকি ২৪ জন আসামি পলাতক। তাঁরা হলেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য মো. হাসিবুর রশীদ, গণিত বিভাগের সাবেক সহযোগী অধ্যাপক মো. মশিউর রহমান, লোকপ্রশাসন বিভাগের সাবেক সহযোগী অধ্যাপক আসাদুজ্জামান মণ্ডল, চিকিৎসক মো. সরোয়ার হোসেন, সাবেক সহকারী রেজিস্ট্রার মো. হাফিজুর রহমান, সাবেক সেকশন অফিসার মো. মনিরুজ্জামান পলাশ, রংপুর মহানগর পুলিশের (আরপিএমপি) সাবেক কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান, সাবেক উপকমিশনার মো. আবু মারুফ হোসেন, সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. শাহ নূর আলম পাটোয়ারী, সাবেক সহকারী কমিশনার মো. আরিফুজ্জামান, সাবেক পরিদর্শক (নিরস্ত্র) রবিউল ইসলাম, সাবেক এসআই (নিরস্ত্র) বিভূতিভূষণ রায়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি পোমেল বড়ুয়া, সাধারণ সম্পাদক মাহাফুজুর রহমান, সহসভাপতি ফজলে রাব্বি ও আখতার হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক সেজান আহম্মেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক ধনঞ্জয় কুমার, দপ্তর সম্পাদক বাবুল হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাসুদুল হাসান, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এমএলএসএস মোহাম্মদ নুরুন্নবী মণ্ডল ও আমির হোসেন, নিরাপত্তা প্রহরী নুর আলম মিয়া ও অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর মো. মাহাবুবার রহমান।