নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিলসহ চার দফা দাবিতে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসমাবেশ শুরু হয়েছে। শনিবার সকাল ৯টায় রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এ সমাবেশ শুরু হয়। সমাবেশ চলবে দুপুর ১টা পর্যন্ত।

সকাল থেকেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গিয়ে দেখা যায়, ঢাকা ও আশপাশের এলাকা থেকে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীরা বাসে ও পায়ে হেঁটে সমাবেশে আসছেন। সকাল থেকেই কোনো মিছিল আসতে শুরু করে শাহবাগের দিক থেকে, কোনোটি দোয়েল চত্বরের দিক থেকে, আবার কোনোটি আসে নীলক্ষেতের দিক থেকে। সমাবেশে অংশ নিতে আসা নেতাকর্মীদের ভিড়ে ভোর থেকে শাহবাগ ও আশপাশের এলাকায় যান চলাচল সীমিত হয়ে আসে।

সমাবেশে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় সদস্য মাহমুদ বিন হোসাইন বলেন, হেফাজতে ইসলামের কর্মীরা পবিত্র কোরআনবিরোধী যেকোনো কর্মকাণ্ড রুখতে সর্বোচ্চ ত্যাগ শিকার করতে প্রস্তুত। আজকের সমাবেশ তারই প্রমাণ। অবিলম্বে নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাতিল করতে হবে।

আশুলিয়ার একটি মাদ্রাসার শিক্ষার্থী সাইদুল হাসান জানান, সমাবেশ উপলক্ষ্যে তার মাদ্রাসায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। ওই মাদ্রাসার কাফিয়া শ্রেণি থেকে দাওরায়ে হাদিস শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় সব শিক্ষার্থী সমাবেশে এসেছেন বলে জানান তিনি।

এর আগে সমাবেশের শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করা হয়। এতে সভাপতিত্বে করছেন হেফাজতের আমির মাওলানা শাহ্ মুহিব্বুল্লাহ্ বাবুনগরী। সমাবেশে দেশের শীর্ষস্থানীয় আলেমদের বক্তব্য দেওয়ার কথা রয়েছে।

হেফাজতে ইসলামের দায়িত্বশীল নেতারা জানিয়েছেন, আজকের মহাসমাবেশের মুখ্য দাবি মূলত চারটি। এর মধ্যে প্রধান দাবি হচ্ছে, অনতিবিলম্বে হেফাজত নেতাদের নামে থাকা সব মামলা প্রত্যাহার। সংগঠনটির হিসাবমতে, সারা দেশে হেফাজত নেতাদের নামে প্রায় ৩০০টি মামলা রয়েছে। এ ছাড়া ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে হত্যাকাণ্ড, ২০২১ সালের মার্চে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা সফর ঘিরে হত্যাকাণ্ড, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডের বিচার। এরপর যথাক্রমে নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিল, সংবিধানের প্রস্তাবনায় আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস পুনর্বহাল করা, ফিলিস্তিন ও ভারতে মুসলিম গণহত্যা ও নিপীড়ন বন্ধের দাবিগুলো থাকবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সম ব শ ইসল ম র

এছাড়াও পড়ুন:

নাজুক সড়কে ভাড়া দ্বিগুণ

জলাবদ্ধতা প্রকল্পের কাজ চলছে মির্জা খালের বহদ্দারহাট মোড় থেকে চান মিয়া সড়কেও। বুধবার এ এলাকাটি সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, এখানকার অবস্থা একেবারে ভয়াবহ। এমনিতে জলাবদ্ধতা প্রকল্পের কারণে সড়কে যানবাহন চলাচলে ব্যাঘাত ঘটছে, তার ওপর সড়কটির অবস্থা খুবই নাজুক। সড়কে কার্পেটিংয়ের চিহ্ন মাত্র নেই। সড়কজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় গর্ত। চান মিয়া সড়ক ও আশপাশের এলাকাটি নগরীর অন্যতম ঘিঞ্জি এলাকাগুলোর একটি। কিন্তু সড়কের দুরবস্থা ও জলাবদ্ধতার কারণে অনেকেই এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছেন। বহদ্দারহাট বাজার ফেলে কয়েকশ গজ যাওয়ার পর দেখা গেল খাল থেকে মাটি অপসারণ করা হচ্ছে এক্সক্যাভেটর দিয়ে। এ জন্য খালে মাটির বাঁধ দিয়ে পানি চলাচল বন্ধ রেখে সেই পানি পাইপের মাধ্যমে সরাসরি রাস্তায় ফেলা হচ্ছে। সেই পানিতে সড়কের অবস্থা কাহিল।
এক দশকেরও বেশি সময় ধরে চান মিয়া রোডে সিএনজি অটোরিকশা চালান প্রিয়তোষ চৌধুরী। তিনি সমকালকে বলেন, ‘চান মিয়া সড়কে যানবাহন চলাচলের মতো অবস্থা নেই। এমনিতেই সড়কটির খারাপ অবস্থা। জলাবদ্ধতা প্রকল্পের কারণে আরও নাজুক অবস্থা হয়েছে। কেউ কোনো কাজ করেন না। আমরা গাড়ি চালকরাই মাঝেমধ্যে বড় বড় গর্ত ইট-কংকর দিয়ে ভরাট করে যানবাহন চালু রেখেছি।’
শমসেরপাড়া এলাকার বাসিন্দা মো. ইলিয়াস নামে জানান, ‘বহদ্দারহাট মোড় থেকে কিছুদিন আগেও টেম্পু ভাড়া ছিল ১০ টাকা। এখন সড়কের দুরবস্থার কারণে দ্বিগুণ ২০ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হচ্ছে। আগে এই পথ যেতে রিকশা ভাড়া ছিল ৩০ টাকা। এখন নেওয়া হয় ৫০ থেকে ৬০ টাকা। এ থেকেই বোঝা যায় সড়কটির কী করুণ দশা।’
প্রকল্পের ওই অংশে কাজ পাওয়া এইচএন এন্টারপ্রাইজের সাই ইঞ্জিনিয়ার সাজ্জাদুল আলম সমকালকে বলেন, ‘খালের মাটি দ্রুত অপসারণ করে রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। বর্ষার আগেই যাতে কাজ শেষ করা যায়, সে জন্য দিনরাত কাজ চলছে।’ খালে বাঁধ দেওয়ার কারণে বৃষ্টি হলে কী অবস্থা হবে? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা বাঁধের পাশে এক্সক্যাভেটর রেখেছি। বৃষ্টিপাতের কারণে জলাবদ্ধতার শঙ্কা দেখা দিলে এক্সক্যাভেটর দিয়ে বাঁধ অপসারণ করে পানি চলাচলের সুযোগ করে দেওয়া হবে।’
চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে ১৪ হাজার ৩৪৯ কোটি টাকা ব্যয়ে চারটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে তিন সংস্থা। এর মধ্যে সিডিএ দুটি, সিটি করপোরেশন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড একটি করে প্রকল্পের কাজ চলছে। প্রকল্পগুলোর কাজ চলছে ৫ থেকে ১১ বছর ধরে। ইতোমধ্যে খরচ হয়েছে ৮ হাজার ৩১২ কোটি টাকা। প্রকল্পগুলোর কাজ এখন প্রায় শেষ পর্যায়ে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ