ব্যাংক খাতে ব্যাপক সংস্কারের প্রয়োজন বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদ, ব্যাংকার, বাণিজ্যসংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ ও সরকারি কর্মকর্তারা। তাঁরা বলেন, বিশ্বব্যাপী আর্থিক প্রবণতার পরিবর্তন, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ট্যারিফ চাপ এবং বিশ্বব্যাংকের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে উল্লেখিত বাস্তবতাগুলো বাংলাদেশের ব্যাংক খাতের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে।

সম্প্রতি ঢাকায় ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স, বাংলাদেশ (আইসিসিবি) আয়োজিত ‘গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ট্রেন্ডস অ্যান্ড রিফর্মস: ইমপ্লিকেশনস ফর বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভা হয়। সেখানে বক্তারা এসব কথা বলেন।

আইসিসিবি সভাপতি মাহবুবুর রহমান বলেন, যুক্তরাষ্ট্র নতুন করে যেসব শুল্ক আরোপ করতে যাচ্ছে, সেগুলোর পূর্ণ বাস্তবায়ন হলে রপ্তানি আয় কমে যাবে, বৈদেশিক মুদ্রার সংকট দেখা দেবে। এতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ আরও বাড়বে। তাই আর্থিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে দ্রুত সংস্কার জরুরি।

আইসিসিবির সহসভাপতি এ কে আজাদ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্কের প্রভাব মোকাবিলায় আইসিসিবি ও বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। এ ছাড়া রাজনৈতিক অস্থিরতার সময় ক্ষতিগ্রস্ত কারখানাগুলোর বিমা দাবি নিষ্পত্তির বিষয়েও নজর দেওয়ার প্রতি মত দেন তিনি।

আইসিসি গ্লোবাল ব্যাংকিং কমিশনের চেয়ারম্যান ফ্লোরিয়ান উইট বলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মূলধন পুনঃবিনিয়োগ এবং খেলাপি ঋণ কমানো জরুরি। ব্যাংক একীভূত হলে বড় ও স্থিতিশীল ব্যাংক গড়ে ওঠে। ইসলামি ও দুর্বল বেসরকারি ব্যাংকগুলোর জন্য ফরেনসিক অডিটের পরামর্শও দেন তিনি।

সংস্কার কার্যক্রম শুরু হয়েছে, তবে এর ফলাফল মূল্যায়নের সময় এখনো আসেনি—অনুষ্ঠানে এমন মন্তব্য করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো.

জাকির হোসাইন চৌধুরী।

ঢাকা ব্যাংক এবং বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের চেয়ারম্যান আবদুল হাই সরকার বলেন, সব পক্ষ একসঙ্গে কাজ করলে বাংলাদেশ পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারবে।

এ ছাড়া বক্তব্য দেন ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান সেলিম আর এফ হোসেন, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের এমডি এনামুল হক, এইচএসবিসি বাংলাদেশের সিইও মাহবুব উর রহমান, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের অধ্যাপক শাহ মো. আহসান হাবিব, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) বিনিয়োগ কর্মকর্তা বিদ্যুৎ কুমার সাহা প্রমুখ।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আইস স ব

এছাড়াও পড়ুন:

ধোনি-কোহলির শেষ লড়াইয়ে রেকর্ডের বন্যা

এমনিতেই ম্যাচটার উত্তাপ ছিল ভিন্ন। আইপিএলে মহেন্দ্র সিং ধোনি ও বিরাট কোহলির শেষ মুখোমুখি লড়াই বলে কথা! ৪৩ বছর বয়সী ধোনীর যে আগামী মৌসুমে খেলার কোন সম্ভাবনাই নেই। ম্যাচটি ছিল রেকর্ডের মালা গাঁথা। এক বিরাট স্পর্শ করলেন ৬টি রেকর্ড। অন্যদিকে রোমারিও শেফার্ড করলেন এই মৌসুমের দ্রুততম হাফসেঞ্চুরি। তাতেই শনিবার (৩ মে) ধোনীর চেন্নাই সুপার কিংসকে ২ রানে হারায় বিরাটের রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু।

ঘরের মাঠ চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে টস হেরে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নামতে হয় বেঙ্গালুরুকে। শনিবার রাতে ম্যাচের ১৭.৪ ওভার শেষে স্বাগতিকদের সংগ্রহ ছিল ৫ উইকেটে ১৫৭ রান। এই সময় ক্রিজে আসেন শেফার্ড। বাদবাকি ১৪ বলের সবটাই এই ক্যারিবিয়ান একাই খেললেন। করলেন যৌথভাবে আইপিএলের ইতিহাসের দ্বিতীয় দ্রুততম অর্ধশতক।

আরো পড়ুন:

চেন্নাইয়ের ঘরে বিষাদের বাজনা, ধোনির চোখে বিদায়ের আভা

ধোনি ম‌্যাজিকে পাঁচ ম‌্যাচ পর চেন্নাইয়ের জয়

সবচেয়ে দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড যশস্বী জয়সোয়ালের (১৩ বলে)। চেন্নাইয়ের বিপক্ষে শেষ ২ ওভারে বেঙ্গালুরু তুলেছে ৫৪ রান। আইপিএলে ইনিংসের শেষ ২ ওভারে এত রান আগে কখনো হয়নি। একটা সময়ে ১৮০ হবে কি না সেই শঙ্কায় থাকা বেঙ্গালুরু তাতে পায় ২১৩ রানের বিশাল পুঁজি।

শেফার্ডের ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে টিম ডেভিডের সঙ্গে ১৫ বলে ৫৬ রানের জুটি গড়েছেন, যেখানে ক্যারিবিয়ানের অবদান ১৪ বলে ৫৩। এই জুটিতে মাত্র একটি বল খেলার সুযোগ পেয়েছেন ডেভিড। যেহেতু শেফার্ড বাকি থাকা ১৪টি বলই খেলেছেন, তাই সেটিও তার পাওয়ার কথা না। তবে ১৯তম ওভারে খলিল আহমেদের একটি নো বল করায় সেই সুযোগ পেয়েছেন।

চেন্নাইয়ের হয়ে শেষ দুই ওভার বোলিং করেছেন খলিল ও পাথিরানা। ইনিংসের ১৯তম ওভারে খলিলের এক ওভারেই শেফার্ড তোলেন ৩৩ (একটি নোসহ)। আইপিএলে চেন্নাইয়ের হয়ে খেলা কোনো বোলারের করা এটিই সবচেয়ে খরুচে ওভার। এরপর পাতিরানার শেষ ওভারে দেন ২৪।

শেষ ২ ওভারে এদিন শেফার্ড নিয়েছেন ৫২। টি-টোয়েন্টিতে শেষ ২ ওভারে এর চেয়ে বেশি রান কেউ কোনো দিন নিতে পারেননি। সমান ৫২ রানই তুলেছিলেন নেপালের দীপেন্দ্র সিং ঐরি।

রান তাড়ায় ১৭ বছরের কিশোর আয়ুশ মাত্রের ৪৮ বলে ৯৪ রানের ইনিংস আর জাদেজার সঙ্গে তার ৬৪ বলে ১১৪ রানের জুটি পথে রাখে চেন্নাইকে। তবে সপ্তদশ ওভারে আয়ুশ ও ডেওয়াল্ড ব্রেভিসকে টানা দুই বলে ফেরান লুঙ্গি এনগিডি। তখন ক্রিজে যান ধোনি।

চেন্নাইয়ের সম্ভাবনা তখনও ভালোমতোই জিইয়ে আছে। ২১ বলে প্রয়োজন ৪২ রান। জাদেজা একটি ছক্কা মারেন ওই ওভারেই। ১৯তম ওভারে দারুণ এক শটে ছক্কা মারেন ধোনিও। তবে অন্য ডেলিভারিগুলোয় বড় শট খেলতে পারেননি চেন্নাই অধিনায়ক।

শেষ ওভারে প্রয়োজন পড়ে ১৫ রানের। প্রথম দুই বলে জাদেজা ও ধোনি নিতে পারেন কেবল সিঙ্গেল। তৃতীয় বলে লো ফুল টস ডেলিভারিতে এলবিডব্লিউ হয়ে যান ধোনি। ওই ছক্কার পরও ৮ বল খেলে কেবল ১২ রান করতে পারেন ৪৩ বছর বয়সী কিংবদন্তি। এরপর দায়ালের সে নো বলে ছক্কা, তবে এই পেসার শেষ তিন বলে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ান। বেঙ্গালুরুর জয় দুই রানে। বিফলে জাদেজার ৪৫ বলে ৭৭ রানের ইনিংস।

শীর্ষে থাকা বেঙ্গালুরুর সংগ্রহ ১১ ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট। অন্যদিকে সমান সংখ্যক ম্যাচে মাত ৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তলানিতে চেন্নাই।

ঢাকা/নাভিদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ