প্রায় আড়াই মাস বন্ধ থাকার পর আগামীকাল রোববার ক্লাস শুরু হওয়ার কথা রয়েছে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট)। কিন্তু ক্লাসে না ফেরার সিদ্ধান্তে অনঢ় রয়েছে শিক্ষক সমিতি। লাঞ্ছিতকারীদের শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত ক্লাসে ফিরবেন না বলে জানিয়েছেন শিক্ষকরা। এ অবস্থায় কবে নাগাদ ক্লাস শুরু হবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়েছে।
কুয়েট প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৪ মে থেকে ক্লাস শুরু হওয়ার কথা। কিন্তু এখন নতুন করে জটিলতা দেখা দিয়েছে।
কুয়েট শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড.
কুয়েট শিক্ষকরা জানান, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি দুপুরে সংঘর্ষে কুয়েটের অনেক শিক্ষার্থী আহত হয়। ওই দিন বিকেল থেকে পরদিন বিকেল পর্যন্ত কুয়েটের মেডিকেল সেন্টারে বিদায়ী উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদকে অবরুদ্ধ করে রাখে কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থী। তারা বিদায়ী উপাচার্যসহ কয়েকজন শিক্ষককে মারধর, লাঞ্ছিত ও গালাগাল করে। পরবর্তীতে গত ২ মাসে আন্দোলন চলাকালে কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থী শিক্ষকদের নিয়ে কটূক্তি করে। এ নিয়ে শিক্ষকরা ক্ষুব্ধ।
কুয়েট শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. ফারুক হোসেন জানান, গত ১৮ এপ্রিল শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভায় অধ্যাপক ড. আবদুল্লা আল ফারুককে সভাপতি করে ৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটিকে শিক্ষকদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা ও তাদেরকে নিয়ে সাইবার বুলিংয়ের প্রতিটি ঘটনার তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করে একটি প্রতিবেদন তৈরি করার দায়িত্ব দেওয়া হয়। পরবর্তীতে দোষীদের বিচারের জন্য তা প্রশাসনের কাছে উপস্থাপন করা হবে।
এ ব্যাপারে কুয়েটের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী রাহাতুল ইসলাম বলেন, আমরা ইতোমধ্যে ভুল-ত্রুটির জন্য ক্ষমা চেয়ে ছাত্র কল্যাণ পরিচালকের দপ্তর ও ১৬টি বিভাগের প্রধানের দপ্তরে লিখিত চিঠি দিয়েছি। আমরা শিক্ষকদের সঙ্গে বিদ্বেষমূলক কোনো আচরণে যেতে চাই না। রোববার আবারও শিক্ষকদের কাছে গিয়ে আমরা ক্ষমা চাইবো।
তিনি বলেন, আমাদের আন্দোলন ছিল কুয়েটের উপাচার্যের বিরুদ্ধে, শিক্ষকদের বিরুদ্ধে আমরা কোনো আন্দোলন করিনি। ইতোমধ্যে ২ মাসেরও বেশি সময় ক্লাস-পরীক্ষা হয়নি। আমরা চাই দ্রুত ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হোক।
তবে এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য কুয়েটের অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হযরত আলীকে একাধিকবার মোবাইলে কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
কুয়েটের রেজিস্ট্রার মো. আনিসুর রহমান ভুঞাকেও একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
কুয়েটের ছাত্র কল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল্লাহ ইলিয়াছ আক্তার বলেন, উপাচার্য শুক্রবার ও শনিবার বিভিন্ন বিভাগের ডিনদের নিয়ে বৈঠক করেছেন। কিন্তু শিক্ষকরা ক্লাসে না যাওয়ার সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছেন। রোববার আবারও তিনি শিক্ষকদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: শ ক ষকদ র উপ চ র য শ ক ষকর
এছাড়াও পড়ুন:
ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় সোনিয়া-রাহুলকে আদালতের নোটিশ
ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলা সম্পর্কে আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগে কংগ্রেস নেতা–নেত্রীদের অভিমত শোনার সুযোগ দেওয়া হলো। দিল্লির রাউজ অ্যাভিনিউর বিশেষ আদালতের বিচারপতি আজ শুক্রবার এই কারণে কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধী, লোকসভার বিরোধী নেতা রাহুল গান্ধীসহ অন্য অভিযুক্তদের নোটিশ দিয়েছেন।
এই নেতা–নেত্রীদের বিরুদ্ধে ন্যাশনাল হেরাল্ড সংবাদপত্রের অর্থ ও সম্পত্তি বেআইনিভাবে হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) মামলা করেছে। অর্থ তছরুপ প্রতিরোধ আইনে (পিএমএলএ) দায়ের হওয়া ওই মামলায় সোনিয়া, রাহুলসহ অন্যান্য কংগ্রেস নেতার বিরুদ্ধে ইডি ইতিমধ্যেই অভিযোগপত্র দাখিল করেছে।
বিশেষ আদালত ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতার ২২৩ ধারায় সোনিয়া–রাহুলদের ওই নোটিশ পাঠানো হয়েছে। মামলার পরবর্তী শুনানি ৮ মে।
বিশেষ আদালতের বিচারপতি বিশাল গোগনে ওই নোটিশ জারি করে বলেন, মামলাটি আদালতের বিচারাধীন। অভিযোগপত্র দাখিলের পর তা আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আইন অনুযায়ী অভিযুক্তদের বক্তব্য শোনা প্রয়োজন। সেই অধিকার আইন তাঁদের দিয়েছে। ন্যায়বিচারের স্বার্থেই ওই অধিকার দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, এই অধিকার পিএমএলএ আইনের বিধানের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ নয়।
কংগ্রেসের পক্ষ থেকে শুরু থেকেই ওই মামলার বিরোধিতা করা হচ্ছে। কংগ্রেসের বক্তব্য, ন্যাশনাল হেরাল্ড কাগজ কংগ্রেস প্রতিষ্ঠা করেছিল। কংগ্রেস তা চালাতে টাকা খরচ করেছিল। কংগ্রেসের তরফে অ্যাসোসিয়েটেড জার্নালস লিমিটেড (এজেএল) সংস্থা ওই কাগজ চালাত।
কংগ্রেস বলছে, পরবর্তী সময়ে ইয়ং ইন্ডিয়ান সংস্থা এজেএল অধিগ্রহণ করে। ইয়ং ইন্ডিয়ান কোনো লাভজনক সংস্থা নয়, যা ছিল কংগ্রেসের, পরবর্তী সময়েও তা কংগ্রেসেরই আছে। একটি টাকাও হস্তান্তর হয়নি।
এই মামলা করেছিলেন বিজেপি নেতা সুব্রামানিয়াম স্বামী। তাঁর যুক্তি, কংগ্রেস রাজনৈতিক দল। তাই তারা কোনো বাণিজ্যিক সংস্থাকে ঋণ দিতে পারে না। কিন্তু কংগ্রেস ঋণ দিয়েছিল এজেএলকে। এবং ইয়ং ইন্ডিয়ান সংস্থা খুলে সেই সংস্থা অধিগ্রহণ করে নেয়। ইডি ইতিমধ্যেই ন্যাশনাল হেরাল্ডের দিল্লি, মুম্বাই ও পাটনার স্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে।