রাজনৈতিক অস্থিরতাসহ ব্যবসা ক্ষেত্রে নানা সংকটাবস্থার মধ্যেও হাজার কোটি টাকার বেশি নিট মুনাফা করেছে বেসরকারি খাতের দেশি দুই ব্যাংক ব্র্যাক এবং দ্য সিটি। ব্র্যাক ব্যাংক ২০২৪ সালে এককভাবে নিট ১ হাজার ২১৪ কোটি টাকা মুনাফা করেছে। দ্য সিটি ব্যাংক নিট মুনাফা করেছে ১ হাজার ১৪ কোটি টাকা । 
এতদিন বিদেশি ব্যাংকের ক্ষেত্রে হাজার কোটি টাকা মুনাফা অর্জনের কথা শোনা গেলেও এবারই প্রথম দেশি ব্যাংকের ক্ষেত্রে এই মাইলফলক অতিক্রমের তথ্য জানা গেছে। ব্যাংকিং খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, শুধু প্রতিষ্ঠানগত সাফল্য নয়, ব্র্যাক এবং সিটি ব্যাংকের এ অর্জন বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতেও রেকর্ড। 

এ বিষয়ে ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম রেজা ফরহাদ হোসেন বলেন, এ সাফল্য গ্রাহক, সমাজ ও দেশের প্রতি ব্র্যাক ব্যাংকের অবিচল প্রতিশ্রুতির উদাহরণ। বছরের পর বছর ধরে ধারাবাহিক সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ সব স্টেকহোল্ডারের কাছে ব্র্যাক ব্যাংক এখন এক আস্থার নাম। করপোরেট সুশাসন, কমপ্লায়েন্স এবং মূল্যবোধনির্ভর ব্যাংকিংয়ে ব্র্যাক ব্যাংক রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃত।
সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসরুর আরেফিন বলেন, মানুষ সিটি ব্যাংকের ওপর আস্থা রেখে আমানত রেখেছে। আয়-ব্যয়ের অনুপাত ৬০ শতাংশ থেকে কমে ৪২ শতাংশে এসেছে। ফলে মুনাফায় বড় উল্লম্ফন ঘটেছে। ব্যাংকে ঈর্ষণীয় পর্যায়ের সুশাসন রেকর্ড মুনাফা অর্জনে বড় ভূমিকা রেখেছে।

২০২৪ সালে ব্র্যাক ব্যাংকের নিট মুনাফায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ৭৩ শতাংশ। একই সময়ে দ্য সিটির মুনাফায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ৫৯ শতাংশ। উভয় ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ গত বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের সাড়ে ১২ শতাংশ করে বোনাস (স্টক) লভ্যাংশসহ মোট ২৫ শতাংশ হারে লভ্যাংশ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। 
আর্থিক হিসাব পর্যালোচনায় দেখা গেছে, সরকারি ট্রেজারি বিল ও বন্ডে বিনিয়োগ থেকে বড় অঙ্কের সুদ আয় ব্র্যাক ব্যাংক এবং সিটি ব্যাংকের মুনাফা বাড়াতে বড় ভূমিকা রেখেছে। ব্র্যাক ব্যাংক সরকারি বিল-বন্ডে বিনিয়োগে ২০২৩ সালে সুদ আয় করে ৫৩৪ কোটি টাকা, যা গত বছর বেড়ে ১ হাজার ৮১৮ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। সার্বিকভাবে ব্র্যাক ব্যাংক ঋণ দিয়ে গত বছর সুদ আয় করেছে ৫ হাজার ৮৭৫ কোটি টাকা, যা ২০২৩ সালের তুলনায় ৩৭ শতাংশ বেশি। বিপরীতে গ্রাহকের আমানতের বিপরীতে সুদ পরিশোধ করেছে ৪ হাজার ২১২ কোটি টাকা, যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় ৯৮ শতাংশ বেশি। 
সিটি ব্যাংকের মোট আয়ের ৬৪ শতাংশ এসেছে ঋণ থেকে পাওয়া সুদ থেকে। ট্রেজারি বিল ও বন্ড থেকে এসেছে ১৯ শতাংশ। ফি এবং এলসি কমিশন থেকে এসেছে ১২ শতাংশ। বাকি ৫ শতাংশ এসেছে বন্ড, ডিভিডেন্ড এবং শেয়ারবাজার থেকে। 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

পণ্য রপ্তানিতে বিলিয়ন ডলারের কাছে ইয়াংওয়ান, অর্ধবিলিয়ন ছাড়িয়ে হা-মীম, মণ্ডল ও ডিবিএল

বাংলাদেশ থেকে পণ্য রপ্তানিতে শীর্ষ অবস্থানটি দক্ষিণ কোরীয় ব্যবসায়ী কিহাক সাংয়ের মালিকানাধীন ইয়াংওয়ান করপোরেশনের। এই তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে দেশীয় ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি এ কে আজাদের মালিকানাধীন হা-মীম গ্রুপ।

ইয়াংওয়ান ও হা-মীম ছাড়াও রপ্তানিতে সেরা দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় থাকা বাকি আট শিল্প গ্রুপ হচ্ছে মণ্ডল গ্রুপ, ডিবিএল গ্রুপ, অনন্ত, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ, স্কয়ার গ্রুপ, পলমল গ্রুপ, প্যাসিফিক জিনস গ্রুপ ও মাইক্রো ফাইবার গ্রুপ।

সেরা দশে থাকা নয়টি শিল্প গ্রুপের রপ্তানির ৯০ থেকে ১০০ শতাংশই তৈরি পোশাক। এই তালিকায় ব্যতিক্রম শুধু প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ। কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য থেকে শুরু করে জুতা, আসবাব, প্লাস্টিক ও হালকা প্রকৌশল পণ্য—প্রায় সবই আছে শিল্প গ্রুপটির রপ্তানির তালিকায়।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ২০২৪-২৫ অর্থবছরের রপ্তানি পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে প্রথম আলো বাংলাদেশের রপ্তানি খাতের শীর্ষ ১০ শিল্পগোষ্ঠীর এই তালিকা তৈরি করেছে। এনবিআরের পরিসংখ্যান থেকে স্থানীয় বা প্রচ্ছন্ন রপ্তানি ও নমুনা রপ্তানি বাদ দিয়ে প্রকৃত রপ্তানির হিসাব নেওয়া হয়েছে।

এনবিআরের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশ থেকে মোট ৪৬ দশমিক ৫৭ বিলিয়ন বা ৪ হাজার ৬৫৭ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এর মধ্যে শীর্ষ দশ গ্রুপের সম্মিলিত রপ্তানির পরিমাণ ৫ দশমিক ২৫ বিলিয়ন বা ৫২৫ কোটি মার্কিন ডলার, যা মোট রপ্তানির ১১ শতাংশ।

গত ২০২৪–২৫ অর্থবছরে শীর্ষ ১০ রপ্তানিকারক শিল্পগোষ্ঠী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পণ্য রপ্তানিতে বিলিয়ন ডলারের কাছে ইয়াংওয়ান, অর্ধবিলিয়ন ছাড়িয়ে হা-মীম, মণ্ডল ও ডিবিএল
  • লরা উলভার্ট: হিমালয়ের চূড়ায় এক নিঃসঙ্গ শেরপা
  • বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক অলিম্পিক চ্যাম্পিয়নের মৃত্যু
  • শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা
  • যশোরে জিআই পণ্য খেজুর গুড় তৈরির রস সংগ্রহে গাছ প্রস্তুতির উদ্বোধন